Ajker Patrika

পূর্বাচল নতুন শহর: ২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি, ঠিকাদারের কাজ বন্ধ

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৪, ০৯: ৩৯
Thumbnail image

গাজীপুরের কালীগঞ্জে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণকাজে সেনা কল্যাণ সংস্থার নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ২ কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাদের কার্যালয় ভাঙচুর করে এবং ২০-৩০ হাজার ইট লুট করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহতাব উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযোগকারী জহুরুল হক বলেন, রাজউক অনুমোদিত পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে বাংলাদেশ সেনা কল্যাণ সংস্থা অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও সারফেস ড্রেন নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে। এ কাজে সহায়তা করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাস্টার বিল্ডার্স। প্রতিষ্ঠানটি পূর্বাচলের ১০২ নম্বর সড়কের ১৫ নম্বর প্লট এলাকায় অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও সারফেস ড্রেন নির্মাণ করছে। সম্প্রতি স্থানীয় অর্ণব ও সেলিম মেম্বারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী মাস্টার বিল্ডার্সের কর্মকর্তার কাছে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ওখানকার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয়। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ২টার দিকে অর্ণব ও সেলিম মেম্বারের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল নিয়ে মাস্টার বিল্ডার্সের কার্যালয়ে হানা দেয়। তারা অফিসের দরজা-জানালার কাচ, চেয়ার-টেবিল, ফ্যান ভাঙচুর করে এবং নির্মাণকাজের জন্য রাখা ২০-৩০ হাজার ইট লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই তিনি অর্ণব, সেলিম মেম্বারসহ ১০-১৫ জনের নামে কালীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু দুই সপ্তাহ পেরোলেও পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। 

জহুরুল হক আরও বলেন, ‘অর্ণবের নাম বাদ দিয়ে এজাহার দিতে বলেন থানার ওসি। অর্ণবই সবকিছুর হোতা। অর্ণবের নাম বাদ না দেওয়ায় পুলিশ মামলা নেয়নি। তারা কোনো আসামিও ধরেনি। ঘটনার পর থেকে ভয়ে আমাদের লোকজন সেখানে কোনো কাজ করতে পারছে না।’

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি বলেন, ‘আমি কারও নাম বাদ দিতে কাউকে বলিনি।’

মাস্টার বিল্ডার্সের সহকারী ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিলেও মামলা রেকর্ড না করায় গত মঙ্গলবার আমরা গাজীপুর পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁকে সবকিছু জানিয়েছি। তিনি আমাদের আইনি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।’

গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেন, ‘অভিযোগকারী পক্ষের লোকজন আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। আমি তাঁদের সব রকম আইনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি। দেশটা মগের মুল্লুক নয়। তাঁদের কাজ শুরু করতে বলেছি। প্রয়োজনে সেখানে পুলিশি পাহারা দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্ণব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, অভিযোগটি মিথ্যা ও সাজানো। অর্ণব বলেন, ‘থানা-পুলিশ তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি।’ তদন্তে সত্যতা না পাওয়ার কথা পুলিশের কে বলেছেন, জানতে চাইলে তিনি নাম বলতে রাজি হননি।

অভিযুক্ত সেলিম বলেন, ‘আমাদের সুনাম নষ্ট করার ষড়যন্ত্র এটি। আমরা ঘটনার বিষয়ে কিছু জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত