Ajker Patrika

ইটভাটার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

বুড়িচং ও চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ১৩
ইটভাটার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বৃষ্টিতে কুমিল্লায় বুড়িচংয়ের ইটভাটাগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার প্রায় ২০টি ইটভাটায় পানি জমেছিল। এতে কাঁচা ইটগুলো বৃষ্টির পানিতে গলে নষ্ট হয়েছে।

ভাটায় গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকেরা নষ্ট হওয়া ইটগুলো সরিয়ে নিচ্ছেন। শ্রমিকদের একটি অংশ ভাটায় জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের জন্য কোদাল হাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

আলী আকবর ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘অক্টোবর থেকে ইটভাটায় কাজ শুরু করি। মাত্র ভাটা গুছিয়ে ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ শুরু করি। ঠিক সেই মুহূর্তে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে আবার ইটভাটা ঠিক করতে আরও অনেক টাকা খরচ হবে। এমন দুর্যোগে আগে কখনো পড়িনি।’

উপজেলার ইটভাটার মালিকেরা জানান, বৃষ্টিতে ৯০ ভাগ কাঁচা ইট সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এটা তাঁদের জন্য অনেক বড় ক্ষতি।

কুমিল্লা জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি এমরানুর রহমান ভূইয়া বলেন, যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে ইটভাটা প্রস্তুত করতে আরও সাত থেকে দশদিন লাগবে। এতে একদিকে বাড়তি অর্থের দরকার, হবে অন্যদিকে সময়ও নষ্ট হবে।

কুমিল্লা জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন ভূইয়া বলেন, ‘জেলায় প্রায় ৩০০ ইটভাটা রয়েছে। তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে ৩০০ ইটভাটায় শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ভাটার মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’

এদিকে ৩দিনের বৃষ্টিতে চৌদ্দগ্রামে ৪৩টি ইটভাটায় কাচা ইটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার ইটভাটাগুলো ঘুরে জানা গেছে, বেশির ভাগ ইটভাটায় চুলায় আগুন দিয়ে ইট পোড়ানো কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু টানা বর্ষণে কাচা ইটগুলো বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। বুধবার সকাল থেকে আকাশে রোঁদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অনেক ইটভাটায় আবারও ইট তৈরির কাজ শুরু করতে দেখা গেছে।

সিটিজেন ইটভাটার মালিক কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম শাহিন জানান, টানা ৩ দিনের বর্ষণে তাঁর ইটভাটায় প্রায় ৫ লাখ টাকার কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া তাঁর ভাটার চুলার আগুনও নিভে যায়। এতে করে তাঁকে ২০ লাখ টাকার মতো লোকসান গুনতে হয়েছে।

তিনি বলেন,এমনিতেই রড, সিমেন্টের দাম বৃদ্ধিতে ইট ব্যবসায়ীদের দুর্দিন চলছে। বেচা-বিক্রিও কম। তার ওপর অসময়ের বৃষ্টিতে আরও লোকসান গুনতে হচ্ছে।

চৌদ্দগ্রাম ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্যানেল মেয়র সাইফুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। আগে প্রতি টন কয়লা ৮ হাজার টাকা দরে কেনা যেত। কিন্তু চলতি বছর থেকে প্রতি টন কয়লা ২২ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। তার ওপরে অসময়ের বৃষ্টিতে প্রায় ৪৩টি ইটভাটায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মালিক সমিতির সভাপতি বেলাল হোসেন জানান, উপজেলার বেশির ভাগ মালিককে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ভাটার ব্যবসা করতে হচ্ছে। প্রতিটি কাঁচা ইট তৈরিতে শ্রমিককে ১ টাকা করে দিতে হয়। টানা ৩দিনের বর্ষণে প্রতিটি ইটভাটায় ৫ থেকে ৬ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে। ভাটাগুলোর চুলা নিভে গেছে। প্রতিটি চুলায় আগুন দিতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ওপরে খরচ হয়।

বেলাল হোসেন, যে সব মালিক ব্যাংক ঋণ নিয়ে ইটভাটার ব্যবসা করছেন তাঁদের আগামী ৩ মাসের সুদ যেন মওকুফ করা হয় সরকারের কাছে সেই দাবি জানাচ্ছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

পিপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ৪৯ জন সহকারী পিপির

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

শান্ত যে কারণে টি-টোয়েন্টি দলে, মিরাজ কেন নেই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত