Ajker Patrika

সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ২০: ০৭
সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্র

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির হাত ধরে নিত্যনতুন অস্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাড়ছে। এ পর্যন্ত যেসব ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা হয়েছে তাদের মধ্যে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট সবচেয়ে উন্নত। বিশ্বের সব ক্ষেপণাস্ত্রসম্পন্ন দেশ এটি বানাচ্ছে, তবে কারটা কোন পর্যায়ে আছে তা স্পষ্ট নয়। এ অবস্থায় গত আগস্টে চীন পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন হারপারসনিক রকেট উৎক্ষেপণ করেছে বলে জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক পত্রিকা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি)।

এফটির ১৭ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনা সামরিক বাহিনী চলতি বছরের আগস্টে মহাশূন্যে একটি হাইপারসনিক রকেট উৎক্ষেপণ করেছে, যা গন্তব্যে পৌঁছার আগে পৃথিবী ঘুরে এসেছে। এটি তারা দুইবার করেছে, প্রথমবার গন্তব্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয়বার সফল হয়।

এ খবর প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ ও সামরিক বিশেষজ্ঞরা। প্রতিক্রিয়ায় খবরটি অস্বীকার করে চীন। মহাশূন্যে হাইপারসনিক রকেটের বদলে পুনর্ব্যবহারযোগ্য মহাকাশযান পাঠানোর দাবি করেছে চীন।

চীনের আত্মপক্ষ সমর্থনকে বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেছেন জেফরি লুইস। ক্যালিফোর্নিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের ‘পূর্ব এশিয়া অস্ত্র হ্রাস কর্মসূচির’ এ পরিচালক বলেন, চীনের হাইপারসনিক বা এফওবিএস পরীক্ষার যে কথা উঠেছে, তা অসত্য হওয়ার কারণ নেই। কারণ এটি করার সক্ষমতা এবং কৌশলগত তাড়া রয়েছে দেশটির।

তবে এফটির দাবি এবং চীনের অস্বীকার—দুই সত্য বলে মনে করেন অ্যারন স্টেইন। ফিলাডেলফিয়ার ফরেন পলিসি ইনস্টিটিউটের এ পরিচালক ব্যাপারটি বিশ্লেষণ করে বলেন, পুনর্ব্যবহারযোগ্য মহাশূন্যযান এবং হাইপারসনিক রকেটের মধ্যে বলতে গেলে কোনো তফাৎ নেই। প্রচলিত রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র নজরদারির যে রাডার রয়েছে, তাকে উভয়ে ফাঁকি দিতে পারে।

মহাশূন্যে রকেট পাঠানোর বিষয়টি নতুন নয়। গত শতকে সোভিয়েত রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের সময় মহাশূন্যে এ ধরনের রকেট পাঠানো শুরু করে রাশিয়া। তবে তাতে চীনের সংযোজন হলো। নতুন ধরনের প্রযুক্তি, যার কারণে রকেট বা মহাশূন্যযানটি ঠিক কোন পথে কোন গন্তব্যে পৌঁছাবে তা বুঝে ওঠা অসম্ভব।

আগামী এক দশকে অর্থনৈতিক দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে পারে চীন। তবে সামরিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে চীনের আরও সময় লাগতে পারে। অথচ এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও সামরিক সক্ষমতা বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে মিত্রদের সামরিক সহায়তা দিচ্ছে। বিষয়টি বেইজিংকে ভাবাচ্ছে। কারণ বিশ্ব-নেতৃত্ব দিতে হলে আর দশটি বিষয়ের মতো সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন অপরিহার্য।

সামরিক প্রতিযোগিতা শেষ পর্যন্ত কারও জন্যই সুফল বয়ে আনে না। তাই অস্ত্র প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নতুন চুক্তি দরকার। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকেই বিশ্বাস ও আন্তরিকতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে বলে মত বিশ্লেষকদের। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত