Ajker Patrika

এ যেন পিঠার মেলা

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ১৪
এ যেন পিঠার মেলা

সারি সারি চুলা। সেগুলোর ওপর ভাপা পিঠার হাঁড়ি কিংবা মাটির খোলা। সারি সারি চুলা দেখে মনে হতে পারে অনেক নারী হয়তো এখানে বসে পিঠা বিক্রি করছেন। কিন্তু না। দোকানের মালিক একজনই। তিনি মাসুম আলী। অন্য নারীরা পিঠা বানান পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে। তাঁদের সঙ্গে থাকেন মাসুমের স্ত্রী মুর্শিদা বেগম। তিনিও পিঠা বানান।

পিঠার ক্রেতা সামলাতে থাকেন মুর্শিদার বাবা মকসেদ আলী। পিঠা বানানোর এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীরাই পিঠার মূল ক্রেতা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হল ও তাপসী রাবেয়া হলের মাঝামাঝি স্থানে মাসুম-মুর্শিদার পিঠার দোকান। দোকানের ছাউনি নেই। চুলার পাশে খোলা আকাশের নিচে মাদুর আর পলিথিন বিছিয়ে বসতে দেওয়া হয় ক্রেতাদের। শীতের শুরু থেকে বর্ষার আগ পর্যন্ত রোজ বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলে পিঠা বিক্রি। সেখানে মেলে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটা, পাকোয়ান বা তেলের পিঠা।

শীত শেষে বন্ধ হয় ভাপা পিঠা। তখন অন্য তিন পিঠার সঙ্গে যোগ হয় কালাইয়ের রুটি। এখন চিতই পিঠার সঙ্গে দেওয়া হয় সাত রকমের ভর্তা। এই দোকানে প্রতিটি ভাপা পিঠা ১০ টাকা, চিতই ৫ টাকা, পাটিসাপটা ও পাকোয়ান পিঠা পাওয়া যায় ১৫ টাকায়। আর ১০ টাকাতে মেলে সাত রকমের ভর্তা। চিংড়ি, শুঁটকি, কালোজিরা, ধনেপাতা, সরিষা, বেগুন ও মরিচের ভর্তার স্বাদে পিঠা খেতে ভিড় জমান মানুষ।

বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাসুম আগে ভবনে রং করার কাজ করতেন। আট বছর আগে বহুতল ভবন থেকে পড়ে মেরুদণ্ড ভেঙে যায় তাঁর। তারপর আর ভারী কাজ করতে পারেন না। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বেকায়দায় পড়েন তিনি। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে ক্যাম্পাসে এসে শুরু করেন পিঠার ব্যবসা। শুরু করেছিলেন একটা চুলা নিয়ে। চাহিদা মেটাতে প্রথম বছরেই চুলা বাড়িয়ে সাতটি করতে হয় তাঁকে।

এখন বছর বছর মাসুমের চুলার সংখ্যা বেড়ে চলেছে। কয়েক দিন আগে ২১টি চুলা নিয়ে পিঠা বিক্রি শুরু করেন তিনি। এখন রোজ বেচাবিক্রি প্রায় ১০ হাজার টাকা। আটজন নারীর পারিশ্রমিকসহ সব খরচ বাদ দিয়েও ভালো লাভ হচ্ছে মাসুম ও মুর্শিদার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত