Ajker Patrika

ঈদের আনন্দদক্ষিণের ঘরে ঘরে

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
ঈদের আনন্দদক্ষিণের ঘরে ঘরে

‘পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের মৎস্যজীবীদের আজ ঈদ। ঈদের আনন্দে উল্লাস করছি আমরা।’ আনন্দে আত্মহারা পটুয়াখালীর আলীপুর মৎস্যবন্দরের ব্যবসায়ী আনসার উদ্দিন মোল্লা। 
বহুদিনের চাওয়া পূরণ হওয়ায় শুধু মৎস্যচাষি নয়, ঈদের খুশি যেন দক্ষিণের প্রতিটি ঘরে। এই এক সেতু যে কত শ্রেণি-পেশার মানুষকে কতভাবে সুবিধা করে দেবে, সেটা তারাই বুঝছে, হিসাবও করছে। সে অনুযায়ী পরিকল্পনাও শুরু হয়েছে।

ব্যবসায়ী আনসার উদ্দিনের হিসাবটা যেমন, ‘মহিপুর আলীপুর থেকে ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলে মাছ সরবরাহ করতে ভোগান্তির সীমা ছিল না। ফেরি বিড়ম্বনায় যথাসময় ট্রাক পাওয়া যেত না। আবার পাওয়া গেলেও ভাড়া বেশি নিত। ঘাটে দেরি হওয়ায় অনেক সময় মাছ পচে যেত। পচা মাছ অর্ধেক দামেও বিক্রি করতে হতো কখনো। পদ্মা সেতু চালু হয়েছে, উপকূলের মৎস্য খাতে এখন একটি বিপ্লব ঘটবে।’

শুধু মৎস্য খাত নয়; কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য সব খাতেই সুবিধা হবে। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী এলাকার তরমুজচাষি শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হয়েছে, এর চেয়ে আনন্দ আর কিছু নাই। ঢাকা বা উত্তরাঞ্চলের মানুষ রাঙ্গাবালীর তরমুজকে সব তরমুজের রাজা মনে করে। এখানে তরমুজের ফলনও ভালো হয়। কিন্তু এখানকার চাষিরা তেমন দাম পান না। কারণ সরাসরি তরমুজ আমরা আড়তদারের কাছে বিক্রি করতে পারি না। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা শহরে সরাসরি তরমুজ নিয়ে যেতে পারব। দামও আশা করি ভালো পাওয়া যাবে। দিনে দিনে ঢাকায় তরমুজ নিয়ে আবার ওই দিনই বাড়ি ফিরতে পারব।’

পটুয়াখালী হাসপাতাল এলাকার অ্যাম্বুলেন্সচালক সাজিদুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হইয়া গেল। রোগীরা যখন পদ্মা সেতু দিয়া যাইবে, প্রধানমন্ত্রীরে দোয়া করতে করতে যাইবে। কারণ পদ্মা সেতু আমাগো কী দরকার ছিল, তা এই এলাকারা জানে।’

পর্যটন খাতও পরিকল্পনা সাজাচ্ছে তাদের মতো করে। ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘কুয়াকাটার কাঁটা হয়েছিল পদ্মা নদী। সে দুঃখ এখন ঘুচে গেছে। শুধু পদ্মা সেতুর অভাবে অসংখ্য পর্যটক দীর্ঘ নৌপথ পাড়ি দিয়ে কুয়াকাটা আসতে চায়নি। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত একসময় ছিল ১৩টি ফেরি। সব ফেরির অবসান হয়েছে আগেই। বাকি ছিল পদ্মা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসায়ীদের আজ আনন্দের দিন।’

সেই আনন্দের উদ্‌যাপন শুরু হয়ে গেছে। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম হওলাদার বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় আমরা পর্যটকদের জন্য ৫০ পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট দিয়েছি। এখন পর্যটকরা সকালে ঢাকা থেকে রওনা দিলে মাত্র ৫ থেকে ৬ ঘণ্টায় কুয়াকাটা পৌঁছাতে পারবে। এখন পর্যটক বাড়বে কয়েক গুণ।’

এই সেতু দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থায় নবদিগন্তের সূচনা করবে মন্তব্য করে পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার ঘটবে এবং বিনিয়োগ বাড়বে। আগমন ঘটবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দর ঘিরে ইতিমধ্যে দেশের বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকেরা বিনিয়োগ করার জন্য জমি কিনেছেন ও কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত