
আজকের পত্রিকা: কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এক রাতের মধ্যে বিএনপির সব নেতা-কর্মীকে মুক্তি দিতে চাওয়ার পরও দলটি নির্বাচনে আসতে রাজি হয়নি। আপনি কী বলবেন?
রুমিন ফারহানা: কৃষিমন্ত্রী একজন সজ্জন ব্যক্তি। তিনি চ্যানেল-২৪-এ সাক্ষাৎকারে যা সত্য, তা-ই বলেছেন। আমরা জানি, বিএনপির একটা অংশকে ভেঙে একটা বিকল্প বিএনপি গঠন করে নির্বাচনে আনার চেষ্টা সরকারের ছিল। কৃষিমন্ত্রীর যে বক্তব্য, এক রাতে সব নেতাকে মুক্তির প্রস্তাবে বিএনপি রাজি হয়নি, এটা সেই সত্যটাকে আরও বেশি মজবুত করে। এতে প্রমাণিত হয়, সব নেতাকেই কিন্তু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল—আপনারা মুক্তি পাবেন, তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। নেতাদের বিরুদ্ধে সরকারের দেওয়া সব মামলা আসলে মিথ্যা, বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই মামলাগুলো করা হয়েছে বিএনপিকে চাপে ফেলার জন্যই।
কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য আরও স্পষ্ট করে, বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। কে জামিন পাবেন আর কে পাবেন না, কোন মামলায় জামিন দেওয়া হবে এবং কোনটায় দেওয়া হবে না—এর সবকিছু আসলে নির্ধারিত হয় সরকারের পক্ষ থেকে। তা না হলে সরকার এ প্রস্তাব কীভাবে দিতে পারে? মুক্তি দেওয়ার সরকার কে? কারণ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জামিন পাওয়া না-পাওয়া নির্ভর করে বিচার বিভাগের ওপর। মন্ত্রীর বক্তব্যেও স্পষ্ট হয়, সরকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এ ঘটনায় সরকারের দেউলিয়াত্বও প্রকাশ পেয়েছে।
আরেকটি বিষয়, বিএনপিকে নিয়ে অনেক সময় অনেক কথা আমরা শুনে থাকি, যেমন বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি ক্লাব, এ পার্টিটি কিছু বাম-ডানদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব অপবাদ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব সময় বলা হয়। কিন্তু এ ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগকে পঁচাত্তর সালের পর ভাঙা সম্ভব হলেও, বিএনপিকে ভাঙা গেল না।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি এখন যে ধারায় আন্দোলন করছে, তাতে সাফল্য আসবে বলে মনে করেন?
রুমিন ফারহানা: নিশ্চয় সাফল্য আসবে। তবে হয়তো সময় লাগবে। একটি গণতান্ত্রিক সরকার আর একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন কিন্তু একই রকম হয় না। জনগণের ভোটের মাধ্যমে যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তারা কিন্তু রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ, বিচার বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার এবং রাষ্ট্রের সংস্থাগুলোকে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করে না। কিন্তু একটা অগণতান্ত্রিক সরকার, যাদের পক্ষে সাধারণ মানুষের সমর্থন নেই এবং জনগণের প্রতি কোনো জবাবদিহি নেই, তারা যাচ্ছেতাই করে থাকে।
বিএনপির এখনকার লড়াইটা সরকার এবং পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে। আমাদের পাশের একটি দেশ কীভাবে এই সরকারের পক্ষে শুধু নগ্নভাবে নয়, তাদের ক্ষমতায় রাখার জন্য যা কিছু করা দরকার, তার সবকিছুই করেছে। তাই অল্প সময়ের মধ্যে সুফল আসবে—এমনটি ভাবলে ভুল হবে।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি কেন আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করল না?
রুমিন ফারহানা: আমরা ২০১৮ সালে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। সেই নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, তাঁর ওপর যেন আস্থা রাখা হয়। আমরা দেখেছি, সেটার ফল কী ভয়াবহ হয়েছিল। আগের রাতে নির্বাচন হয়ে গিয়েছিল।
২০১৮ সালের নির্বাচন একটা বিষয়কে ইঙ্গিত করে, আর তা হলো প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণ সব জায়গায় নেই। বিভিন্ন আসনে যাঁরা নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন, তাঁরা অর্থ, পেশিশক্তি, প্রশাসনকে ব্যবহার করে মধ্যরাতেই নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁরা ১৫ বছরে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। আপনারা হয়তো দেখেছেন, এবারের নির্বাচনী হলফনামায় একেকজনের শত শত গুণ সম্পদ বেড়েছে।
‘সুজন’সহ বিদেশি গণমাধ্যম কিন্তু একই কথা বলেছে। তাই ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বিএনপির জন্য ভালো হয়নি। দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না এবং বাংলাদেশে সেই সংস্কৃতি আমরা সবাই গড়তে পারিনি, সেটার একটা বড় প্রমাণ হলো ২০১৮ সালের নির্বাচন। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের প্রহসন ও পিঠা ভাগাভাগির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
আজকের পত্রিকা: আপনি বলছেন, এই সরকার নির্বাচিত নয়। তারপরও তো পুরো মেয়াদে ক্ষমতায় থাকছে। আগামী নির্বাচনেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আবার পাঁচ বছরের ধাক্কায় পড়ে যাবে না তো দেশ?
রুমিন ফারহানা: এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয়, ২০১৪ ও ২০১৮ সাল এবং ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওই দুটি নির্বাচনের পর কিন্তু ভিসা নীতি বা স্যাংশন আসেনি। বিশ্ব গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ না পাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আমরা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যে কানাঘুষা শুনতে পাচ্ছি, সেটা এর আগে শুনতে পাইনি। শ্রম আইন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে কিন্তু এতটা সোচ্চার হতে দেখিনি। যেটা আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি।
আজকের পত্রিকা: তার মানে বিদেশনির্ভরতাই বিএনপির আন্দোলনের একটা বড় উপাদান?
রুমিন ফারহানা: না। আমরা আমাদের শক্তিতেই লড়ছি। তবে আমি সব সময় স্পষ্টভাবে বলি, আমাদের মহাসচিবও কথাটি বলেছেন, যারা গণতন্ত্র, বাক্স্বাধীনতা, মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলে, তারা কিন্তু দিন শেষে আমাদের একধরনের মানসিক শক্তি দেয়। আমাদের ভরসা, আস্থা ও লড়াইয়ের জায়গা হলো, দেশের মানুষ। বাইরে থেকে এসে কেউ আমাদের গণতন্ত্র দিয়ে যাবে, সে আশা আমরা কখনো করি না। কিন্তু এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশ গ্লোবাল ভিলেজের একটা অংশ। এই জায়গা থেকে বলা যায়, তারা যে পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে, সেগুলো সরকারের জন্য চাপ হিসেবে কাজ করছে।
আজকের পত্রিকা: সরকার তো চাপ মোকাবিলাও করতে পারছে। কিন্তু বিএনপি কি তার সাংগঠনিক শক্তিকে বাড়াতে পারছে?
রুমিন ফারহানা: ১৫ বছর ধরে যাঁরা বিএনপি করেছেন, তাঁরা মামলা, হামলা, খুন-গুম, পুলিশের নির্যাতন, এলাকায় থাকতে না পারা, চাকরি-ব্যবসা হারানো ছাড়া কিছুই পাননি। কিন্তু এখন পর্যন্ত দলটাকে তাঁরা আঁকড়ে ধরে আছেন। আমাদের কর্মীরা জান বাজি রেখে এ লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন। কর্মীদের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে। আমরা তাঁদের জিজ্ঞেস করেছি, আপনারা কি মনে করেন নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত? তাঁরা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ‘আমরা ১৫ বছর ধরে কষ্ট করেছি, সামনে আরও কষ্ট করতে রাজি আছি। কিন্তু কোনো পাতানো খেলায় আমাদের দল অংশ নেবে না, সেটা আমরা চাই।’
আজকের পত্রিকা: আপনি বলেছেন, আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। কিন্তু সম্প্রতি একটা ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এটা স্ববিরোধী নয় কি?
রুমিন ফারহানা: বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, কিন্তু একই সঙ্গে সত্য, জামিন পেতে হলে বা মামলায় লড়তে হলে ওই বিভাগের দ্বারস্থ হতে হয়। আমাদের পার্টির বক্তব্য, রাষ্ট্রের সংস্থাগুলোকে দলীয়করণ করা হয়েছে। এখন পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই বলছে, এ ঘটনা বিএনপি করেছে। তাহলে পুলিশ কী তদন্ত করবে?
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্রেনে যারা আগুন দিয়েছে, তারা রেলকর্মীর পোশাক পরা ছিল। আমাদের প্রশ্ন, ১৫ মিনিট ধরে তিনটি বগি পুড়ল। একটা যাত্রীও শিকল ধরে ট্রেনটা থামাতে পারলেন না। ট্রেনের গার্ডরাও কেন শিকল টানতে পারলেন না? তাঁরা তো চারটা জীবনকে রক্ষা করতে পারতেন। এই প্রশ্নগুলোর তো সুরাহা হওয়া দরকার। পুলিশ তো আগেই বলেছে, এটা বিএনপি করেছে। আমাদের হাতে আর কী থাকতে পারে? কার কাছে বিচার পাব!
আজকের পত্রিকা: অনেকে বলেন, বিএনপি চলছে লন্ডনের নির্দেশে। বিএনপি এভাবে অনলাইন নির্দেশনায় সফল হতে পারবে কি?
রুমিন ফারহানা: এ বিষয়ে আমার দ্বিমত আছে। আমরা যতগুলো মিটিংয়ে অংশ নিয়েছি, তাতে দেখেছি, আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদের মতামত নেন, কথা শোনেন, আলোচনা করেন; তারপর একটা সিদ্ধান্ত নেন। সুতরাং সিদ্ধান্ত লন্ডন থেকে আসে বা এককভাবে তিনি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন, সেটা ভুল কথা।
আর অনলাইনের মাধ্যমে যে দলটাকে চালাতে হচ্ছে, সে দায়টা কার? এ দায় তো সরকারকেই নিতে হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ঘরবন্দী করে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে সরকার। সেই কারণে তারেক রহমানকে পরিশ্রম করে ১৫-১৬ ঘণ্টা স্কাইপিতে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে।
তবে এত বাধাবিপত্তির পরেও স্কাইপির মাধ্যমে দূর থেকে দল চালানো নিশ্চয় কঠিন। কিন্তু বিএনপি তো সফলভাবে সেই কঠিন কাজটা করছে। তাঁর দলের প্রতি কমিটমেন্ট, ভালোবাসা এবং সর্বোপরি নানা অত্যাচারের পরেও দলকে টিকিয়ে রাখার যে ব্যাকুল সংগ্রাম আমরা দেখি, সেটাই আমাদের কাছে আশার জায়গা।

আজকের পত্রিকা: কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এক রাতের মধ্যে বিএনপির সব নেতা-কর্মীকে মুক্তি দিতে চাওয়ার পরও দলটি নির্বাচনে আসতে রাজি হয়নি। আপনি কী বলবেন?
রুমিন ফারহানা: কৃষিমন্ত্রী একজন সজ্জন ব্যক্তি। তিনি চ্যানেল-২৪-এ সাক্ষাৎকারে যা সত্য, তা-ই বলেছেন। আমরা জানি, বিএনপির একটা অংশকে ভেঙে একটা বিকল্প বিএনপি গঠন করে নির্বাচনে আনার চেষ্টা সরকারের ছিল। কৃষিমন্ত্রীর যে বক্তব্য, এক রাতে সব নেতাকে মুক্তির প্রস্তাবে বিএনপি রাজি হয়নি, এটা সেই সত্যটাকে আরও বেশি মজবুত করে। এতে প্রমাণিত হয়, সব নেতাকেই কিন্তু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল—আপনারা মুক্তি পাবেন, তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। নেতাদের বিরুদ্ধে সরকারের দেওয়া সব মামলা আসলে মিথ্যা, বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই মামলাগুলো করা হয়েছে বিএনপিকে চাপে ফেলার জন্যই।
কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য আরও স্পষ্ট করে, বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। কে জামিন পাবেন আর কে পাবেন না, কোন মামলায় জামিন দেওয়া হবে এবং কোনটায় দেওয়া হবে না—এর সবকিছু আসলে নির্ধারিত হয় সরকারের পক্ষ থেকে। তা না হলে সরকার এ প্রস্তাব কীভাবে দিতে পারে? মুক্তি দেওয়ার সরকার কে? কারণ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জামিন পাওয়া না-পাওয়া নির্ভর করে বিচার বিভাগের ওপর। মন্ত্রীর বক্তব্যেও স্পষ্ট হয়, সরকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এ ঘটনায় সরকারের দেউলিয়াত্বও প্রকাশ পেয়েছে।
আরেকটি বিষয়, বিএনপিকে নিয়ে অনেক সময় অনেক কথা আমরা শুনে থাকি, যেমন বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি ক্লাব, এ পার্টিটি কিছু বাম-ডানদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব অপবাদ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব সময় বলা হয়। কিন্তু এ ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগকে পঁচাত্তর সালের পর ভাঙা সম্ভব হলেও, বিএনপিকে ভাঙা গেল না।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি এখন যে ধারায় আন্দোলন করছে, তাতে সাফল্য আসবে বলে মনে করেন?
রুমিন ফারহানা: নিশ্চয় সাফল্য আসবে। তবে হয়তো সময় লাগবে। একটি গণতান্ত্রিক সরকার আর একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন কিন্তু একই রকম হয় না। জনগণের ভোটের মাধ্যমে যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তারা কিন্তু রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ, বিচার বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার এবং রাষ্ট্রের সংস্থাগুলোকে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করে না। কিন্তু একটা অগণতান্ত্রিক সরকার, যাদের পক্ষে সাধারণ মানুষের সমর্থন নেই এবং জনগণের প্রতি কোনো জবাবদিহি নেই, তারা যাচ্ছেতাই করে থাকে।
বিএনপির এখনকার লড়াইটা সরকার এবং পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে। আমাদের পাশের একটি দেশ কীভাবে এই সরকারের পক্ষে শুধু নগ্নভাবে নয়, তাদের ক্ষমতায় রাখার জন্য যা কিছু করা দরকার, তার সবকিছুই করেছে। তাই অল্প সময়ের মধ্যে সুফল আসবে—এমনটি ভাবলে ভুল হবে।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি কেন আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করল না?
রুমিন ফারহানা: আমরা ২০১৮ সালে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। সেই নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, তাঁর ওপর যেন আস্থা রাখা হয়। আমরা দেখেছি, সেটার ফল কী ভয়াবহ হয়েছিল। আগের রাতে নির্বাচন হয়ে গিয়েছিল।
২০১৮ সালের নির্বাচন একটা বিষয়কে ইঙ্গিত করে, আর তা হলো প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণ সব জায়গায় নেই। বিভিন্ন আসনে যাঁরা নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন, তাঁরা অর্থ, পেশিশক্তি, প্রশাসনকে ব্যবহার করে মধ্যরাতেই নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁরা ১৫ বছরে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। আপনারা হয়তো দেখেছেন, এবারের নির্বাচনী হলফনামায় একেকজনের শত শত গুণ সম্পদ বেড়েছে।
‘সুজন’সহ বিদেশি গণমাধ্যম কিন্তু একই কথা বলেছে। তাই ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বিএনপির জন্য ভালো হয়নি। দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না এবং বাংলাদেশে সেই সংস্কৃতি আমরা সবাই গড়তে পারিনি, সেটার একটা বড় প্রমাণ হলো ২০১৮ সালের নির্বাচন। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের প্রহসন ও পিঠা ভাগাভাগির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
আজকের পত্রিকা: আপনি বলছেন, এই সরকার নির্বাচিত নয়। তারপরও তো পুরো মেয়াদে ক্ষমতায় থাকছে। আগামী নির্বাচনেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আবার পাঁচ বছরের ধাক্কায় পড়ে যাবে না তো দেশ?
রুমিন ফারহানা: এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয়, ২০১৪ ও ২০১৮ সাল এবং ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওই দুটি নির্বাচনের পর কিন্তু ভিসা নীতি বা স্যাংশন আসেনি। বিশ্ব গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ না পাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আমরা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যে কানাঘুষা শুনতে পাচ্ছি, সেটা এর আগে শুনতে পাইনি। শ্রম আইন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে কিন্তু এতটা সোচ্চার হতে দেখিনি। যেটা আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি।
আজকের পত্রিকা: তার মানে বিদেশনির্ভরতাই বিএনপির আন্দোলনের একটা বড় উপাদান?
রুমিন ফারহানা: না। আমরা আমাদের শক্তিতেই লড়ছি। তবে আমি সব সময় স্পষ্টভাবে বলি, আমাদের মহাসচিবও কথাটি বলেছেন, যারা গণতন্ত্র, বাক্স্বাধীনতা, মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলে, তারা কিন্তু দিন শেষে আমাদের একধরনের মানসিক শক্তি দেয়। আমাদের ভরসা, আস্থা ও লড়াইয়ের জায়গা হলো, দেশের মানুষ। বাইরে থেকে এসে কেউ আমাদের গণতন্ত্র দিয়ে যাবে, সে আশা আমরা কখনো করি না। কিন্তু এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশ গ্লোবাল ভিলেজের একটা অংশ। এই জায়গা থেকে বলা যায়, তারা যে পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে, সেগুলো সরকারের জন্য চাপ হিসেবে কাজ করছে।
আজকের পত্রিকা: সরকার তো চাপ মোকাবিলাও করতে পারছে। কিন্তু বিএনপি কি তার সাংগঠনিক শক্তিকে বাড়াতে পারছে?
রুমিন ফারহানা: ১৫ বছর ধরে যাঁরা বিএনপি করেছেন, তাঁরা মামলা, হামলা, খুন-গুম, পুলিশের নির্যাতন, এলাকায় থাকতে না পারা, চাকরি-ব্যবসা হারানো ছাড়া কিছুই পাননি। কিন্তু এখন পর্যন্ত দলটাকে তাঁরা আঁকড়ে ধরে আছেন। আমাদের কর্মীরা জান বাজি রেখে এ লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন। কর্মীদের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে। আমরা তাঁদের জিজ্ঞেস করেছি, আপনারা কি মনে করেন নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত? তাঁরা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ‘আমরা ১৫ বছর ধরে কষ্ট করেছি, সামনে আরও কষ্ট করতে রাজি আছি। কিন্তু কোনো পাতানো খেলায় আমাদের দল অংশ নেবে না, সেটা আমরা চাই।’
আজকের পত্রিকা: আপনি বলেছেন, আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। কিন্তু সম্প্রতি একটা ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এটা স্ববিরোধী নয় কি?
রুমিন ফারহানা: বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, কিন্তু একই সঙ্গে সত্য, জামিন পেতে হলে বা মামলায় লড়তে হলে ওই বিভাগের দ্বারস্থ হতে হয়। আমাদের পার্টির বক্তব্য, রাষ্ট্রের সংস্থাগুলোকে দলীয়করণ করা হয়েছে। এখন পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই বলছে, এ ঘটনা বিএনপি করেছে। তাহলে পুলিশ কী তদন্ত করবে?
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্রেনে যারা আগুন দিয়েছে, তারা রেলকর্মীর পোশাক পরা ছিল। আমাদের প্রশ্ন, ১৫ মিনিট ধরে তিনটি বগি পুড়ল। একটা যাত্রীও শিকল ধরে ট্রেনটা থামাতে পারলেন না। ট্রেনের গার্ডরাও কেন শিকল টানতে পারলেন না? তাঁরা তো চারটা জীবনকে রক্ষা করতে পারতেন। এই প্রশ্নগুলোর তো সুরাহা হওয়া দরকার। পুলিশ তো আগেই বলেছে, এটা বিএনপি করেছে। আমাদের হাতে আর কী থাকতে পারে? কার কাছে বিচার পাব!
আজকের পত্রিকা: অনেকে বলেন, বিএনপি চলছে লন্ডনের নির্দেশে। বিএনপি এভাবে অনলাইন নির্দেশনায় সফল হতে পারবে কি?
রুমিন ফারহানা: এ বিষয়ে আমার দ্বিমত আছে। আমরা যতগুলো মিটিংয়ে অংশ নিয়েছি, তাতে দেখেছি, আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদের মতামত নেন, কথা শোনেন, আলোচনা করেন; তারপর একটা সিদ্ধান্ত নেন। সুতরাং সিদ্ধান্ত লন্ডন থেকে আসে বা এককভাবে তিনি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন, সেটা ভুল কথা।
আর অনলাইনের মাধ্যমে যে দলটাকে চালাতে হচ্ছে, সে দায়টা কার? এ দায় তো সরকারকেই নিতে হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ঘরবন্দী করে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে সরকার। সেই কারণে তারেক রহমানকে পরিশ্রম করে ১৫-১৬ ঘণ্টা স্কাইপিতে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে।
তবে এত বাধাবিপত্তির পরেও স্কাইপির মাধ্যমে দূর থেকে দল চালানো নিশ্চয় কঠিন। কিন্তু বিএনপি তো সফলভাবে সেই কঠিন কাজটা করছে। তাঁর দলের প্রতি কমিটমেন্ট, ভালোবাসা এবং সর্বোপরি নানা অত্যাচারের পরেও দলকে টিকিয়ে রাখার যে ব্যাকুল সংগ্রাম আমরা দেখি, সেটাই আমাদের কাছে আশার জায়গা।

আজকের পত্রিকা: কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এক রাতের মধ্যে বিএনপির সব নেতা-কর্মীকে মুক্তি দিতে চাওয়ার পরও দলটি নির্বাচনে আসতে রাজি হয়নি। আপনি কী বলবেন?
রুমিন ফারহানা: কৃষিমন্ত্রী একজন সজ্জন ব্যক্তি। তিনি চ্যানেল-২৪-এ সাক্ষাৎকারে যা সত্য, তা-ই বলেছেন। আমরা জানি, বিএনপির একটা অংশকে ভেঙে একটা বিকল্প বিএনপি গঠন করে নির্বাচনে আনার চেষ্টা সরকারের ছিল। কৃষিমন্ত্রীর যে বক্তব্য, এক রাতে সব নেতাকে মুক্তির প্রস্তাবে বিএনপি রাজি হয়নি, এটা সেই সত্যটাকে আরও বেশি মজবুত করে। এতে প্রমাণিত হয়, সব নেতাকেই কিন্তু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল—আপনারা মুক্তি পাবেন, তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। নেতাদের বিরুদ্ধে সরকারের দেওয়া সব মামলা আসলে মিথ্যা, বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই মামলাগুলো করা হয়েছে বিএনপিকে চাপে ফেলার জন্যই।
কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য আরও স্পষ্ট করে, বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। কে জামিন পাবেন আর কে পাবেন না, কোন মামলায় জামিন দেওয়া হবে এবং কোনটায় দেওয়া হবে না—এর সবকিছু আসলে নির্ধারিত হয় সরকারের পক্ষ থেকে। তা না হলে সরকার এ প্রস্তাব কীভাবে দিতে পারে? মুক্তি দেওয়ার সরকার কে? কারণ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জামিন পাওয়া না-পাওয়া নির্ভর করে বিচার বিভাগের ওপর। মন্ত্রীর বক্তব্যেও স্পষ্ট হয়, সরকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এ ঘটনায় সরকারের দেউলিয়াত্বও প্রকাশ পেয়েছে।
আরেকটি বিষয়, বিএনপিকে নিয়ে অনেক সময় অনেক কথা আমরা শুনে থাকি, যেমন বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি ক্লাব, এ পার্টিটি কিছু বাম-ডানদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব অপবাদ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব সময় বলা হয়। কিন্তু এ ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগকে পঁচাত্তর সালের পর ভাঙা সম্ভব হলেও, বিএনপিকে ভাঙা গেল না।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি এখন যে ধারায় আন্দোলন করছে, তাতে সাফল্য আসবে বলে মনে করেন?
রুমিন ফারহানা: নিশ্চয় সাফল্য আসবে। তবে হয়তো সময় লাগবে। একটি গণতান্ত্রিক সরকার আর একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন কিন্তু একই রকম হয় না। জনগণের ভোটের মাধ্যমে যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তারা কিন্তু রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ, বিচার বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার এবং রাষ্ট্রের সংস্থাগুলোকে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করে না। কিন্তু একটা অগণতান্ত্রিক সরকার, যাদের পক্ষে সাধারণ মানুষের সমর্থন নেই এবং জনগণের প্রতি কোনো জবাবদিহি নেই, তারা যাচ্ছেতাই করে থাকে।
বিএনপির এখনকার লড়াইটা সরকার এবং পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে। আমাদের পাশের একটি দেশ কীভাবে এই সরকারের পক্ষে শুধু নগ্নভাবে নয়, তাদের ক্ষমতায় রাখার জন্য যা কিছু করা দরকার, তার সবকিছুই করেছে। তাই অল্প সময়ের মধ্যে সুফল আসবে—এমনটি ভাবলে ভুল হবে।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি কেন আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করল না?
রুমিন ফারহানা: আমরা ২০১৮ সালে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। সেই নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, তাঁর ওপর যেন আস্থা রাখা হয়। আমরা দেখেছি, সেটার ফল কী ভয়াবহ হয়েছিল। আগের রাতে নির্বাচন হয়ে গিয়েছিল।
২০১৮ সালের নির্বাচন একটা বিষয়কে ইঙ্গিত করে, আর তা হলো প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণ সব জায়গায় নেই। বিভিন্ন আসনে যাঁরা নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন, তাঁরা অর্থ, পেশিশক্তি, প্রশাসনকে ব্যবহার করে মধ্যরাতেই নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁরা ১৫ বছরে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। আপনারা হয়তো দেখেছেন, এবারের নির্বাচনী হলফনামায় একেকজনের শত শত গুণ সম্পদ বেড়েছে।
‘সুজন’সহ বিদেশি গণমাধ্যম কিন্তু একই কথা বলেছে। তাই ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বিএনপির জন্য ভালো হয়নি। দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না এবং বাংলাদেশে সেই সংস্কৃতি আমরা সবাই গড়তে পারিনি, সেটার একটা বড় প্রমাণ হলো ২০১৮ সালের নির্বাচন। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের প্রহসন ও পিঠা ভাগাভাগির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
আজকের পত্রিকা: আপনি বলছেন, এই সরকার নির্বাচিত নয়। তারপরও তো পুরো মেয়াদে ক্ষমতায় থাকছে। আগামী নির্বাচনেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আবার পাঁচ বছরের ধাক্কায় পড়ে যাবে না তো দেশ?
রুমিন ফারহানা: এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয়, ২০১৪ ও ২০১৮ সাল এবং ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওই দুটি নির্বাচনের পর কিন্তু ভিসা নীতি বা স্যাংশন আসেনি। বিশ্ব গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ না পাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আমরা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যে কানাঘুষা শুনতে পাচ্ছি, সেটা এর আগে শুনতে পাইনি। শ্রম আইন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে কিন্তু এতটা সোচ্চার হতে দেখিনি। যেটা আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি।
আজকের পত্রিকা: তার মানে বিদেশনির্ভরতাই বিএনপির আন্দোলনের একটা বড় উপাদান?
রুমিন ফারহানা: না। আমরা আমাদের শক্তিতেই লড়ছি। তবে আমি সব সময় স্পষ্টভাবে বলি, আমাদের মহাসচিবও কথাটি বলেছেন, যারা গণতন্ত্র, বাক্স্বাধীনতা, মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলে, তারা কিন্তু দিন শেষে আমাদের একধরনের মানসিক শক্তি দেয়। আমাদের ভরসা, আস্থা ও লড়াইয়ের জায়গা হলো, দেশের মানুষ। বাইরে থেকে এসে কেউ আমাদের গণতন্ত্র দিয়ে যাবে, সে আশা আমরা কখনো করি না। কিন্তু এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশ গ্লোবাল ভিলেজের একটা অংশ। এই জায়গা থেকে বলা যায়, তারা যে পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে, সেগুলো সরকারের জন্য চাপ হিসেবে কাজ করছে।
আজকের পত্রিকা: সরকার তো চাপ মোকাবিলাও করতে পারছে। কিন্তু বিএনপি কি তার সাংগঠনিক শক্তিকে বাড়াতে পারছে?
রুমিন ফারহানা: ১৫ বছর ধরে যাঁরা বিএনপি করেছেন, তাঁরা মামলা, হামলা, খুন-গুম, পুলিশের নির্যাতন, এলাকায় থাকতে না পারা, চাকরি-ব্যবসা হারানো ছাড়া কিছুই পাননি। কিন্তু এখন পর্যন্ত দলটাকে তাঁরা আঁকড়ে ধরে আছেন। আমাদের কর্মীরা জান বাজি রেখে এ লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন। কর্মীদের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে। আমরা তাঁদের জিজ্ঞেস করেছি, আপনারা কি মনে করেন নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত? তাঁরা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ‘আমরা ১৫ বছর ধরে কষ্ট করেছি, সামনে আরও কষ্ট করতে রাজি আছি। কিন্তু কোনো পাতানো খেলায় আমাদের দল অংশ নেবে না, সেটা আমরা চাই।’
আজকের পত্রিকা: আপনি বলেছেন, আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। কিন্তু সম্প্রতি একটা ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এটা স্ববিরোধী নয় কি?
রুমিন ফারহানা: বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, কিন্তু একই সঙ্গে সত্য, জামিন পেতে হলে বা মামলায় লড়তে হলে ওই বিভাগের দ্বারস্থ হতে হয়। আমাদের পার্টির বক্তব্য, রাষ্ট্রের সংস্থাগুলোকে দলীয়করণ করা হয়েছে। এখন পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই বলছে, এ ঘটনা বিএনপি করেছে। তাহলে পুলিশ কী তদন্ত করবে?
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্রেনে যারা আগুন দিয়েছে, তারা রেলকর্মীর পোশাক পরা ছিল। আমাদের প্রশ্ন, ১৫ মিনিট ধরে তিনটি বগি পুড়ল। একটা যাত্রীও শিকল ধরে ট্রেনটা থামাতে পারলেন না। ট্রেনের গার্ডরাও কেন শিকল টানতে পারলেন না? তাঁরা তো চারটা জীবনকে রক্ষা করতে পারতেন। এই প্রশ্নগুলোর তো সুরাহা হওয়া দরকার। পুলিশ তো আগেই বলেছে, এটা বিএনপি করেছে। আমাদের হাতে আর কী থাকতে পারে? কার কাছে বিচার পাব!
আজকের পত্রিকা: অনেকে বলেন, বিএনপি চলছে লন্ডনের নির্দেশে। বিএনপি এভাবে অনলাইন নির্দেশনায় সফল হতে পারবে কি?
রুমিন ফারহানা: এ বিষয়ে আমার দ্বিমত আছে। আমরা যতগুলো মিটিংয়ে অংশ নিয়েছি, তাতে দেখেছি, আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদের মতামত নেন, কথা শোনেন, আলোচনা করেন; তারপর একটা সিদ্ধান্ত নেন। সুতরাং সিদ্ধান্ত লন্ডন থেকে আসে বা এককভাবে তিনি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন, সেটা ভুল কথা।
আর অনলাইনের মাধ্যমে যে দলটাকে চালাতে হচ্ছে, সে দায়টা কার? এ দায় তো সরকারকেই নিতে হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ঘরবন্দী করে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে সরকার। সেই কারণে তারেক রহমানকে পরিশ্রম করে ১৫-১৬ ঘণ্টা স্কাইপিতে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে।
তবে এত বাধাবিপত্তির পরেও স্কাইপির মাধ্যমে দূর থেকে দল চালানো নিশ্চয় কঠিন। কিন্তু বিএনপি তো সফলভাবে সেই কঠিন কাজটা করছে। তাঁর দলের প্রতি কমিটমেন্ট, ভালোবাসা এবং সর্বোপরি নানা অত্যাচারের পরেও দলকে টিকিয়ে রাখার যে ব্যাকুল সংগ্রাম আমরা দেখি, সেটাই আমাদের কাছে আশার জায়গা।

আজকের পত্রিকা: কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এক রাতের মধ্যে বিএনপির সব নেতা-কর্মীকে মুক্তি দিতে চাওয়ার পরও দলটি নির্বাচনে আসতে রাজি হয়নি। আপনি কী বলবেন?
রুমিন ফারহানা: কৃষিমন্ত্রী একজন সজ্জন ব্যক্তি। তিনি চ্যানেল-২৪-এ সাক্ষাৎকারে যা সত্য, তা-ই বলেছেন। আমরা জানি, বিএনপির একটা অংশকে ভেঙে একটা বিকল্প বিএনপি গঠন করে নির্বাচনে আনার চেষ্টা সরকারের ছিল। কৃষিমন্ত্রীর যে বক্তব্য, এক রাতে সব নেতাকে মুক্তির প্রস্তাবে বিএনপি রাজি হয়নি, এটা সেই সত্যটাকে আরও বেশি মজবুত করে। এতে প্রমাণিত হয়, সব নেতাকেই কিন্তু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল—আপনারা মুক্তি পাবেন, তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। নেতাদের বিরুদ্ধে সরকারের দেওয়া সব মামলা আসলে মিথ্যা, বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই মামলাগুলো করা হয়েছে বিএনপিকে চাপে ফেলার জন্যই।
কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য আরও স্পষ্ট করে, বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। কে জামিন পাবেন আর কে পাবেন না, কোন মামলায় জামিন দেওয়া হবে এবং কোনটায় দেওয়া হবে না—এর সবকিছু আসলে নির্ধারিত হয় সরকারের পক্ষ থেকে। তা না হলে সরকার এ প্রস্তাব কীভাবে দিতে পারে? মুক্তি দেওয়ার সরকার কে? কারণ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জামিন পাওয়া না-পাওয়া নির্ভর করে বিচার বিভাগের ওপর। মন্ত্রীর বক্তব্যেও স্পষ্ট হয়, সরকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এ ঘটনায় সরকারের দেউলিয়াত্বও প্রকাশ পেয়েছে।
আরেকটি বিষয়, বিএনপিকে নিয়ে অনেক সময় অনেক কথা আমরা শুনে থাকি, যেমন বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি ক্লাব, এ পার্টিটি কিছু বাম-ডানদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব অপবাদ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব সময় বলা হয়। কিন্তু এ ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগকে পঁচাত্তর সালের পর ভাঙা সম্ভব হলেও, বিএনপিকে ভাঙা গেল না।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি এখন যে ধারায় আন্দোলন করছে, তাতে সাফল্য আসবে বলে মনে করেন?
রুমিন ফারহানা: নিশ্চয় সাফল্য আসবে। তবে হয়তো সময় লাগবে। একটি গণতান্ত্রিক সরকার আর একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন কিন্তু একই রকম হয় না। জনগণের ভোটের মাধ্যমে যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তারা কিন্তু রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ, বিচার বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার এবং রাষ্ট্রের সংস্থাগুলোকে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করে না। কিন্তু একটা অগণতান্ত্রিক সরকার, যাদের পক্ষে সাধারণ মানুষের সমর্থন নেই এবং জনগণের প্রতি কোনো জবাবদিহি নেই, তারা যাচ্ছেতাই করে থাকে।
বিএনপির এখনকার লড়াইটা সরকার এবং পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে। আমাদের পাশের একটি দেশ কীভাবে এই সরকারের পক্ষে শুধু নগ্নভাবে নয়, তাদের ক্ষমতায় রাখার জন্য যা কিছু করা দরকার, তার সবকিছুই করেছে। তাই অল্প সময়ের মধ্যে সুফল আসবে—এমনটি ভাবলে ভুল হবে।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি কেন আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করল না?
রুমিন ফারহানা: আমরা ২০১৮ সালে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। সেই নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, তাঁর ওপর যেন আস্থা রাখা হয়। আমরা দেখেছি, সেটার ফল কী ভয়াবহ হয়েছিল। আগের রাতে নির্বাচন হয়ে গিয়েছিল।
২০১৮ সালের নির্বাচন একটা বিষয়কে ইঙ্গিত করে, আর তা হলো প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণ সব জায়গায় নেই। বিভিন্ন আসনে যাঁরা নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন, তাঁরা অর্থ, পেশিশক্তি, প্রশাসনকে ব্যবহার করে মধ্যরাতেই নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁরা ১৫ বছরে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। আপনারা হয়তো দেখেছেন, এবারের নির্বাচনী হলফনামায় একেকজনের শত শত গুণ সম্পদ বেড়েছে।
‘সুজন’সহ বিদেশি গণমাধ্যম কিন্তু একই কথা বলেছে। তাই ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বিএনপির জন্য ভালো হয়নি। দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না এবং বাংলাদেশে সেই সংস্কৃতি আমরা সবাই গড়তে পারিনি, সেটার একটা বড় প্রমাণ হলো ২০১৮ সালের নির্বাচন। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের প্রহসন ও পিঠা ভাগাভাগির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
আজকের পত্রিকা: আপনি বলছেন, এই সরকার নির্বাচিত নয়। তারপরও তো পুরো মেয়াদে ক্ষমতায় থাকছে। আগামী নির্বাচনেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আবার পাঁচ বছরের ধাক্কায় পড়ে যাবে না তো দেশ?
রুমিন ফারহানা: এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয়, ২০১৪ ও ২০১৮ সাল এবং ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওই দুটি নির্বাচনের পর কিন্তু ভিসা নীতি বা স্যাংশন আসেনি। বিশ্ব গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ না পাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আমরা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যে কানাঘুষা শুনতে পাচ্ছি, সেটা এর আগে শুনতে পাইনি। শ্রম আইন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে কিন্তু এতটা সোচ্চার হতে দেখিনি। যেটা আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি।
আজকের পত্রিকা: তার মানে বিদেশনির্ভরতাই বিএনপির আন্দোলনের একটা বড় উপাদান?
রুমিন ফারহানা: না। আমরা আমাদের শক্তিতেই লড়ছি। তবে আমি সব সময় স্পষ্টভাবে বলি, আমাদের মহাসচিবও কথাটি বলেছেন, যারা গণতন্ত্র, বাক্স্বাধীনতা, মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলে, তারা কিন্তু দিন শেষে আমাদের একধরনের মানসিক শক্তি দেয়। আমাদের ভরসা, আস্থা ও লড়াইয়ের জায়গা হলো, দেশের মানুষ। বাইরে থেকে এসে কেউ আমাদের গণতন্ত্র দিয়ে যাবে, সে আশা আমরা কখনো করি না। কিন্তু এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশ গ্লোবাল ভিলেজের একটা অংশ। এই জায়গা থেকে বলা যায়, তারা যে পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে, সেগুলো সরকারের জন্য চাপ হিসেবে কাজ করছে।
আজকের পত্রিকা: সরকার তো চাপ মোকাবিলাও করতে পারছে। কিন্তু বিএনপি কি তার সাংগঠনিক শক্তিকে বাড়াতে পারছে?
রুমিন ফারহানা: ১৫ বছর ধরে যাঁরা বিএনপি করেছেন, তাঁরা মামলা, হামলা, খুন-গুম, পুলিশের নির্যাতন, এলাকায় থাকতে না পারা, চাকরি-ব্যবসা হারানো ছাড়া কিছুই পাননি। কিন্তু এখন পর্যন্ত দলটাকে তাঁরা আঁকড়ে ধরে আছেন। আমাদের কর্মীরা জান বাজি রেখে এ লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন। কর্মীদের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে। আমরা তাঁদের জিজ্ঞেস করেছি, আপনারা কি মনে করেন নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত? তাঁরা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ‘আমরা ১৫ বছর ধরে কষ্ট করেছি, সামনে আরও কষ্ট করতে রাজি আছি। কিন্তু কোনো পাতানো খেলায় আমাদের দল অংশ নেবে না, সেটা আমরা চাই।’
আজকের পত্রিকা: আপনি বলেছেন, আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। কিন্তু সম্প্রতি একটা ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এটা স্ববিরোধী নয় কি?
রুমিন ফারহানা: বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, কিন্তু একই সঙ্গে সত্য, জামিন পেতে হলে বা মামলায় লড়তে হলে ওই বিভাগের দ্বারস্থ হতে হয়। আমাদের পার্টির বক্তব্য, রাষ্ট্রের সংস্থাগুলোকে দলীয়করণ করা হয়েছে। এখন পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই বলছে, এ ঘটনা বিএনপি করেছে। তাহলে পুলিশ কী তদন্ত করবে?
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্রেনে যারা আগুন দিয়েছে, তারা রেলকর্মীর পোশাক পরা ছিল। আমাদের প্রশ্ন, ১৫ মিনিট ধরে তিনটি বগি পুড়ল। একটা যাত্রীও শিকল ধরে ট্রেনটা থামাতে পারলেন না। ট্রেনের গার্ডরাও কেন শিকল টানতে পারলেন না? তাঁরা তো চারটা জীবনকে রক্ষা করতে পারতেন। এই প্রশ্নগুলোর তো সুরাহা হওয়া দরকার। পুলিশ তো আগেই বলেছে, এটা বিএনপি করেছে। আমাদের হাতে আর কী থাকতে পারে? কার কাছে বিচার পাব!
আজকের পত্রিকা: অনেকে বলেন, বিএনপি চলছে লন্ডনের নির্দেশে। বিএনপি এভাবে অনলাইন নির্দেশনায় সফল হতে পারবে কি?
রুমিন ফারহানা: এ বিষয়ে আমার দ্বিমত আছে। আমরা যতগুলো মিটিংয়ে অংশ নিয়েছি, তাতে দেখেছি, আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদের মতামত নেন, কথা শোনেন, আলোচনা করেন; তারপর একটা সিদ্ধান্ত নেন। সুতরাং সিদ্ধান্ত লন্ডন থেকে আসে বা এককভাবে তিনি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন, সেটা ভুল কথা।
আর অনলাইনের মাধ্যমে যে দলটাকে চালাতে হচ্ছে, সে দায়টা কার? এ দায় তো সরকারকেই নিতে হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ঘরবন্দী করে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে সরকার। সেই কারণে তারেক রহমানকে পরিশ্রম করে ১৫-১৬ ঘণ্টা স্কাইপিতে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে।
তবে এত বাধাবিপত্তির পরেও স্কাইপির মাধ্যমে দূর থেকে দল চালানো নিশ্চয় কঠিন। কিন্তু বিএনপি তো সফলভাবে সেই কঠিন কাজটা করছে। তাঁর দলের প্রতি কমিটমেন্ট, ভালোবাসা এবং সর্বোপরি নানা অত্যাচারের পরেও দলকে টিকিয়ে রাখার যে ব্যাকুল সংগ্রাম আমরা দেখি, সেটাই আমাদের কাছে আশার জায়গা।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ছিলেন। বিএনপির সাম্প্রতিক আন্দোলন নিয়ে
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ছিলেন। বিএনপির সাম্প্রতিক আন্দোলন নিয়ে
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ছিলেন। বিএনপির সাম্প্রতিক আন্দোলন নিয়ে
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ছিলেন। বিএনপির সাম্প্রতিক আন্দোলন নিয়ে
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫