নাফিসা চৌধুরী
একটা রাস্তা। দুই দিকে সারি সারি একতলা বাড়ি। সব বাড়ির গঠন প্রায় এক। সেই সব বাড়ির সব ঘরের ঢালাই দেওয়া ছাদ ছিল না, কিছু ঘরের ওপর টিন দেওয়া ছিল, মাঝে পাকা করা সরু গলি। এই রাস্তার সব বাড়িকে সংক্ষেপে বলা হতো ‘মহল্লা’।
এই মহল্লার সব বাড়ির লোকজন একে অপরকে এমনকি তাদের আত্মীয়স্বজনকে ভালোভাবে চিনত। কারও বাড়িতে বিশেষ কোনো মেহমান এলে সিরামিকের কাপ-পিরিচ, প্লেট-বাঁটি এমনকি টি-টেবিল আদান-প্রদান হতো, যেন মহল্লার সবাই মিলে একটা একান্নবর্তী পরিবার।
আমার ছোটবেলা শুরু হয় এমনই এক মহল্লার নিজ বাড়িতে। তখন সবার বাড়িতে কমবেশি গাছপালা ছিল। বাড়ির গলির ভেতরেই দেখা যেত আমগাছ, খেজুরগাছ, বেলগাছ। কেউ সেই গলিতে একটু মাটির অংশ রেখে বিভিন্ন সবজির গাছ লাগাত। আমাদের বাড়িতে ছিল মহল্লার একমাত্র টেলিফোন। মহল্লার কমবেশি সবার জরুরি কলের জন্য আমাদের বাড়ির ফোনটি ব্যবহার করা হতো।
আমাদের, মানে বাড়ির ছোট্ট ছানাপোনাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল, যেমন—ওমুক কাকার তমুক কল করেছে, তাকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসা, মহল্লার রাস্তার দুই মাথায় মুদি দোকান থেকে খুচরো জিনিসপত্র এনে দেওয়া, কিছু রান্না করলে প্রতিবেশীদের বাড়িতে দিয়ে আসা ইত্যাদি। কী মধুর স্মৃতি!
প্রতিবছর, বিশেষত এই রমজান মাসে ছোট্টবেলার হাজারো স্মৃতি মনে পড়ে যায়। রোজার মাসে ইফতার করার পর দুষ্টুমি করে ভিক্ষুক সেজে মহল্লার ছেলেমেয়েরা মিলে একেক বাড়ির দরজায় খটখট করে বা বেল বাজিয়ে দৌড়ে পালাতাম। ছোটবেলায় বলা হতো—বাচ্চারা দিনে যে যতবার খাবে, ততগুলো রোজা হবে, যেন ছোটদের মন খারাপ না হয়। আর আমরাও সরল বিশ্বাসে বেশি করে খেতাম আর অন্য বাড়ির কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতাম দিনে কয়টা করে রোজা রেখেছি।
চাঁদরাতে ইফতারে খেজুর আর পানি মুখে নিয়েই সবাই ঈদের চাঁদ দেখার জন্য রাস্তায় চলে আসত, কেউ ছাদে উঠে যেত। ঈদের সরু সুন্দর চাঁদ দেখে আমাদের সে কী উল্লাস! মা, চাচি, মামি, দাদি সবাই ঈদের রান্নার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিত আর আমরা বসে পড়তাম মেহেদি লাগাতে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা এতটা যান্ত্রিক, ব্যস্ত আর বিভিন্ন দুর্ঘটনা দেখে এত অবিশ্বাসী হয়ে গেছি যে পাশের ফ্ল্যাটে কে থাকে তার খোঁজও রাখি না। ছোট্টবেলায় মহল্লার সব মানুষের সঙ্গে সেই আন্তরিকতা, সৌহার্দ্য, হৃদ্যতা খুব মনে পড়ে। আমাদের এই যে সব দিন চলে গেছে, হয়তো একেবারের জন্যই চলে গেছে।
রমজান ও ঈদের মাহাত্ম্য যেন আমরা উপলব্ধি করতে পারি আর সব ভুলে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দে ঈদ উদ্যাপন করতে পারি।
লেখক: সংস্কৃতিকর্মী
একটা রাস্তা। দুই দিকে সারি সারি একতলা বাড়ি। সব বাড়ির গঠন প্রায় এক। সেই সব বাড়ির সব ঘরের ঢালাই দেওয়া ছাদ ছিল না, কিছু ঘরের ওপর টিন দেওয়া ছিল, মাঝে পাকা করা সরু গলি। এই রাস্তার সব বাড়িকে সংক্ষেপে বলা হতো ‘মহল্লা’।
এই মহল্লার সব বাড়ির লোকজন একে অপরকে এমনকি তাদের আত্মীয়স্বজনকে ভালোভাবে চিনত। কারও বাড়িতে বিশেষ কোনো মেহমান এলে সিরামিকের কাপ-পিরিচ, প্লেট-বাঁটি এমনকি টি-টেবিল আদান-প্রদান হতো, যেন মহল্লার সবাই মিলে একটা একান্নবর্তী পরিবার।
আমার ছোটবেলা শুরু হয় এমনই এক মহল্লার নিজ বাড়িতে। তখন সবার বাড়িতে কমবেশি গাছপালা ছিল। বাড়ির গলির ভেতরেই দেখা যেত আমগাছ, খেজুরগাছ, বেলগাছ। কেউ সেই গলিতে একটু মাটির অংশ রেখে বিভিন্ন সবজির গাছ লাগাত। আমাদের বাড়িতে ছিল মহল্লার একমাত্র টেলিফোন। মহল্লার কমবেশি সবার জরুরি কলের জন্য আমাদের বাড়ির ফোনটি ব্যবহার করা হতো।
আমাদের, মানে বাড়ির ছোট্ট ছানাপোনাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল, যেমন—ওমুক কাকার তমুক কল করেছে, তাকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসা, মহল্লার রাস্তার দুই মাথায় মুদি দোকান থেকে খুচরো জিনিসপত্র এনে দেওয়া, কিছু রান্না করলে প্রতিবেশীদের বাড়িতে দিয়ে আসা ইত্যাদি। কী মধুর স্মৃতি!
প্রতিবছর, বিশেষত এই রমজান মাসে ছোট্টবেলার হাজারো স্মৃতি মনে পড়ে যায়। রোজার মাসে ইফতার করার পর দুষ্টুমি করে ভিক্ষুক সেজে মহল্লার ছেলেমেয়েরা মিলে একেক বাড়ির দরজায় খটখট করে বা বেল বাজিয়ে দৌড়ে পালাতাম। ছোটবেলায় বলা হতো—বাচ্চারা দিনে যে যতবার খাবে, ততগুলো রোজা হবে, যেন ছোটদের মন খারাপ না হয়। আর আমরাও সরল বিশ্বাসে বেশি করে খেতাম আর অন্য বাড়ির কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতাম দিনে কয়টা করে রোজা রেখেছি।
চাঁদরাতে ইফতারে খেজুর আর পানি মুখে নিয়েই সবাই ঈদের চাঁদ দেখার জন্য রাস্তায় চলে আসত, কেউ ছাদে উঠে যেত। ঈদের সরু সুন্দর চাঁদ দেখে আমাদের সে কী উল্লাস! মা, চাচি, মামি, দাদি সবাই ঈদের রান্নার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিত আর আমরা বসে পড়তাম মেহেদি লাগাতে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা এতটা যান্ত্রিক, ব্যস্ত আর বিভিন্ন দুর্ঘটনা দেখে এত অবিশ্বাসী হয়ে গেছি যে পাশের ফ্ল্যাটে কে থাকে তার খোঁজও রাখি না। ছোট্টবেলায় মহল্লার সব মানুষের সঙ্গে সেই আন্তরিকতা, সৌহার্দ্য, হৃদ্যতা খুব মনে পড়ে। আমাদের এই যে সব দিন চলে গেছে, হয়তো একেবারের জন্যই চলে গেছে।
রমজান ও ঈদের মাহাত্ম্য যেন আমরা উপলব্ধি করতে পারি আর সব ভুলে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দে ঈদ উদ্যাপন করতে পারি।
লেখক: সংস্কৃতিকর্মী
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪