Ajker Patrika

একীভূত হচ্ছে দুর্বল আর্থিকপ্রতিষ্ঠানও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
একীভূত হচ্ছে দুর্বল আর্থিকপ্রতিষ্ঠানও

অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঋণ জালিয়াতিতে নিমজ্জিত দুর্বল ব্যাংকের পর এবার দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও (এনবিএফআই) একীভূত করার পথে হাঁটছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে ক্ষেত্রে দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সবল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার চিন্তা করা হচ্ছে। এর কার্যকারিতা নিরূপণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি কমিটি কাজ করছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

কয়েক বছর ধরে ব্যাংকিং খাতের নাজুক অবস্থার ছাপ পড়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও। এরই মধ্যে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রায় দেউলিয়া হয়েছে। পিপলস 
লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংসহ আরও কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে রীতিমতো বিপর্যস্ত গ্রাহকের জীবন। আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে অনিয়ম করেছেন, পুরো খাত এখন তার জের টানছে। পি কে হালদারের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় ছিল—এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যে কারণে সার্বিকভাবে এ খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। প্রায় দেউলিয়া হতে বসা এসব প্রতিষ্ঠানকে টেনে তুলতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে এসব প্রতিষ্ঠানে স্বাধীন পর্ষদ দেওয়া হয়েছে। তারপরও এগুলোকে টেনে তোলা কঠিন বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকের পাশাপাশি নাজুক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আরেকটি সবল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত করার পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু এনবিএফআই একত্র করা হলে অপারেশনাল খরচ কমাতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক ঋণ অনিয়ম কমিয়ে আনবে। এসব ঋণ অনিয়মের ফলে খাতটিতে তারল্যসংকট তৈরি হয়েছে।

জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ কিছু দুর্বল এনবিএফআইকে সম্ভাব্য একীভূতকরণ এবং অধিগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে বলেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, এরই মধ্যে ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছে। তারা নিজেরা করবে (একীভূত)। না হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেবে। এনবিএফআইকেও একীভূত করতে নির্দেশনা রয়েছে। ব্যাংকের মতো তারাও নিজেরাই করবে। নয়তো পিসিএ অনুযায়ী করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অপর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান একীভূত করতে প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতেই একীভূতকরণ বা অধিগ্রহণ শুরু করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

দেশের ব্যাংকবহির্ভূত দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি এখন ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণও খারাপ হয়ে পড়ছে। ফলে এ খাতে খেলাপি ঋণ বাড়ছেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা বেড়েছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা, যা এই খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের ২৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত