মামুনুর রশীদ

বসন্তকালের নয়া উৎসবের শহর কলকাতায় এসেছি ১৯ ফেব্রুয়ারি। এবারের আগমনের উদ্দেশ্য একুশে ফেব্রুয়ারি পালন। আমন্ত্রণ করেছে ভাষা ও চেতনা সমিতি, কর্ণধার হচ্ছেন লেখক-অধ্যাপক ইমান-উল-হক। একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে মুক্তমঞ্চে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে ২৫ বছর ধরে। ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে বাংলা ভাষার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এখানে সমবেত হন। এবারের উদ্বোধনের দায়িত্ব পালন করেছি আমি।
অন্যান্য বছরে শুধু ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে একুশের ভোরে প্রভাতফেরি করে অনুষ্ঠান শেষ হতো। এবারে তা তিন দিন করা হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আলোচনা অনুষ্ঠান, সংগীত, আবৃত্তি, নাটক, নৃত্যানুষ্ঠান শেষ হয় রাত ১২টায়। আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনজনই নাটকের মানুষ। মনোজ মিত্র, দেবাশীষ মজুমদার এবং আমি। ২০ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন বিকেল সোয়া ৫টায়। উদ্বোধনী আলোচনায় ভাষার শক্তি, ভাষার প্রতি দায়িত্ব এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে মূলত একটিই বক্তৃতা হলো। আমার বক্তৃতার পরই শুরু হয় একুশের গান। প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পীরা সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়, যাঁর ‘আমি বাংলায় গান গাই’ বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে অনেক দিন ধরেই মাতিয়ে রেখেছে। বেশ কটি গান গাইলেন প্রতুল। গানের ফাঁকে ফাঁকে কথাও বললেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তিনি কবিয়াল রমেশ শীলের গানের পুনঃ সুরারোপ করেও গাইলেন। এরপর গানে, নৃত্যে, আবৃত্তিতে অনুষ্ঠান চলতে লাগল। এভাবেই রাত গভীর হলো, ভোরের প্রভাতফেরিতে আবার ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি...’ গেয়ে শেষ হলো।
কলকাতায় তখন ভোরের আলো। ঢাকার একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপনের তুলনায় কলকাতায় এই আয়োজন ছোট হলেও নানা দিক থেকেই তা তাৎপর্যপূর্ণ। দেশভাগের সেই করুণ এবং নারকীয় অধ্যায়ের পর এক বাংলা যখন দ্বিখণ্ডিত হলো, তখন মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে দুটি রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। নিঃসঙ্গ, বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোর সঙ্গে রইল মাতৃভাষা বাংলা। ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিন্দি। অন্য অনেক ভাষার সঙ্গে বাংলা রইল মাতৃভাষা হিসেবে। ইংরেজি প্রবল দাপটে রাজত্ব করে চলল। অদ্ভুত এক রাষ্ট্রের দুটি ডানা। একটির সঙ্গে আরেকটির দূরত্ব বারো শ মাইল।
১৯৪৭-এর পর বছর না ঘুরতেই পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ঘোষণা দিয়ে দিল উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। অথচ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলা। আচমকা পাকিস্তানের নিয়োগপ্রাপ্ত গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঘোষণায় চমকে গেল পূর্ব বাংলার মানুষ। ক্ষুব্ধ মানুষ এই ঘোষণায় সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রটা বুঝতে পারল। সেই থেকে শুরু হলো লড়াই। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, বিশেষ করে ছাত্রদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল প্রতিবাদের আগুন। সেই আগুন ১৯৫২ সাল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল সবখানে। শেষ পর্যন্ত একুশে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তাদের চেহারাটা নগ্ন করেই ফেলল। প্রাণ দিলেন ভাষাসংগ্রামীরা।
পাকিস্তানি শাসকেরা আপাতত থামল, কিন্তু ষড়যন্ত্র, নিপীড়ন শেষ হলো না। গণতান্ত্রিক সব আন্দোলন স্তব্ধ করে দিয়ে ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করা হলো। আন্দোলন শুরু হলো নতুন পর্যায়ে। ভাষা ও সংস্কৃতিকে সংকুচিত করার সব পথই অবলম্বন করে একটি জাতিরাষ্ট্রের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলো ধর্মরাষ্ট্র। কিন্তু বাঙালিরা তা মানল না। শেষ পর্যন্ত সামরিক শাসন ও শক্তিকে পর্যুদস্ত করে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্ম হলো। এক রক্তাক্ত অভ্যুত্থান ও যুদ্ধের মধ্যেই বাংলা ভাষা বিজয়ী হলো, রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেল বাংলা।
পশ্চিমবঙ্গেও তার ঢেউ এসে লেগেছিল। বাংলা ভাষাভাষী মানুষের হৃদয় আর্দ্র হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। আলাপ-আলোচনা, তর্কবিতর্ক, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন—সবটা মিলিয়ে আন্দোলনের পথ বন্ধ হয়নি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও যে কখনো রক্তে রঞ্জিত হয়নি, তা নয়। কিন্তু গণতন্ত্রে একটা আপসের জায়গা থাকে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যেও একটা সহনীয় সংঘাত থাকে। তাই মধ্যবিত্তের চর্চায় বাংলা ভাষাকে তেমন কোনো বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি। তবে শ্রেণিসংগ্রাম তীব্র হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতার উত্থান হয়েছে, ধর্ম কখনো বাড়াবাড়ি ধরনের পর্যায়ে চলে গেছে। একটা সময় ভাষাকে তাই আশ্রয় করতে হয়েছে। সমৃদ্ধ এই ভাষা ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে ভাষার লড়াইটাও গৌণ থেকে মুখ্য হয়েছে।
দুই বাংলায় বহু বছর ধরে একটি গুরুতর সমস্যায় জর্জরিত তা হলো—বহু ধারার শিক্ষাব্যবস্থা। মূলত ইংরেজি শিক্ষা। দুটি দেশেই হাজার হাজার কিন্ডারগার্টেন, ইংরেজি স্কুল, বেসরকারি ইংরেজি বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিভক্ত শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের গুরুতর সংকট সৃষ্টি করেছে ধর্মীয় শিক্ষা। অনাধুনিক বিজ্ঞান ও যুক্তিহীন এই ব্যবস্থা মানুষকে পেছনের দিকে নিয়ে চলেছে।
মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভ করেও পৃথিবীর প্রতিটি দেশে একটি ভিন্ন ভাষার শিক্ষা প্রয়োজন হয়। আজকের দিনে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ যেখানে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে ইংরেজি, ফারসি, জার্মান বা স্প্যানিশ ভাষার একটি-দুটি জানতেই হবে। কিন্তু প্রথম থেকেই শিশুকে যদি অন্য ভাষায় শিক্ষিত করতে হয়, তাহলে শুরুতেই সে নিজ সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই বিচ্ছিন্নতা তাকে আজীবন নিঃসঙ্গ করে তোলে। ভিন্ন ভাষার সংস্কৃতিকে আমল করতে গিয়ে সে একধরনের নৈরাশ্যের এবং নৈরাজ্যের মধ্যে পড়ে যায়। ফলে তার প্রয়োজন হয়ে পড়ে অভিবাসন। এই অভিবাসন তাকে করে তোলে এক ‘নেই’ রাজ্যের নাগরিক। মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন এই নেই রাজ্যের নাগরিক তাই উন্নত প্রযুক্তিতে ডুব দিয়ে দেশহারা, সংস্কৃতিহারা মানুষ হয়ে যায়। বাংলার মতো উন্নত সংস্কৃতির মানুষ বাজার অর্থনীতির কবলে পড়ে উদ্ভট এক ভোগবাদী সমাজেই ঢুকে পড়ে। তার নিত্যসঙ্গী তখন ইন্টারনেটের কবলে পড়া প্রযুক্তি। মূলত সে নিঃসঙ্গ, ভোগবাদী প্রাণহীন, আবেগহীন এক কঙ্কাল। তাই যেকোনো ভাষাভাষী মানুষের এই সংস্কৃতিবিচ্ছিন্নতা এক ভয়াবহ সংকটের সৃষ্টি করে।
বাঙালির মধ্যে ইংরেজিপ্রীতির এক অকারণ হীনম্মন্যতা রয়েছে বহুদিন ধরেই। ইংরেজিতে কথা বলতে পারলে সে নিজেকে কুলীন ভাবতে শুরু করে।অভিভাবকেরাও খুবই খুশি হন যখন তাঁর সন্তান ইংরেজি ভালো বলে, বাংলা না বললেও তাঁরা দুঃখিত হন না। এই প্রবণতা যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে, তার ভূরি ভূরি প্রমাণ আমাদের সমাজে আছে। বাংলা সাহিত্য, বাংলা গান, নাটক, চিত্রকলা, চলচ্চিত্র পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় যথেষ্ট এগিয়ে। আমাদের গর্ব করার অনেক কিছুই আছে সেখানে। কোনোই কারণ নেই হীনম্মন্যতায় ভোগার।
ভাষা ও চেতনা সমিতির এই অনুষ্ঠানমালায় বক্তৃতায়, গানে, আবৃত্তিতে, নৃত্যে এসব কথাই বারবার ভিন্নভাবে বলা হলো। একুশে ফেব্রুয়ারিতেও স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে একই কথা বলা হয় নানাভাবে, নানা আয়োজনে। অনেকেই বলবেন, এসব জানা কথা, কী লাভ তাতে? ইমান-উল-হক বারবার অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় বলছিলেন ভালো কথাও, প্রয়োজনীয় কথাও বারবার বলতে হয়। আমিও বলি। না হলে খারাপ কথার বাজারে ভালো কথা হারিয়ে যায়। বাংলা ভাষা দিব্যি ছড়িয়ে যাক তার মহিমা নিয়ে।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

বসন্তকালের নয়া উৎসবের শহর কলকাতায় এসেছি ১৯ ফেব্রুয়ারি। এবারের আগমনের উদ্দেশ্য একুশে ফেব্রুয়ারি পালন। আমন্ত্রণ করেছে ভাষা ও চেতনা সমিতি, কর্ণধার হচ্ছেন লেখক-অধ্যাপক ইমান-উল-হক। একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে মুক্তমঞ্চে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে ২৫ বছর ধরে। ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে বাংলা ভাষার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এখানে সমবেত হন। এবারের উদ্বোধনের দায়িত্ব পালন করেছি আমি।
অন্যান্য বছরে শুধু ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে একুশের ভোরে প্রভাতফেরি করে অনুষ্ঠান শেষ হতো। এবারে তা তিন দিন করা হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আলোচনা অনুষ্ঠান, সংগীত, আবৃত্তি, নাটক, নৃত্যানুষ্ঠান শেষ হয় রাত ১২টায়। আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনজনই নাটকের মানুষ। মনোজ মিত্র, দেবাশীষ মজুমদার এবং আমি। ২০ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন বিকেল সোয়া ৫টায়। উদ্বোধনী আলোচনায় ভাষার শক্তি, ভাষার প্রতি দায়িত্ব এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে মূলত একটিই বক্তৃতা হলো। আমার বক্তৃতার পরই শুরু হয় একুশের গান। প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পীরা সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়, যাঁর ‘আমি বাংলায় গান গাই’ বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে অনেক দিন ধরেই মাতিয়ে রেখেছে। বেশ কটি গান গাইলেন প্রতুল। গানের ফাঁকে ফাঁকে কথাও বললেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তিনি কবিয়াল রমেশ শীলের গানের পুনঃ সুরারোপ করেও গাইলেন। এরপর গানে, নৃত্যে, আবৃত্তিতে অনুষ্ঠান চলতে লাগল। এভাবেই রাত গভীর হলো, ভোরের প্রভাতফেরিতে আবার ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি...’ গেয়ে শেষ হলো।
কলকাতায় তখন ভোরের আলো। ঢাকার একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপনের তুলনায় কলকাতায় এই আয়োজন ছোট হলেও নানা দিক থেকেই তা তাৎপর্যপূর্ণ। দেশভাগের সেই করুণ এবং নারকীয় অধ্যায়ের পর এক বাংলা যখন দ্বিখণ্ডিত হলো, তখন মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে দুটি রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। নিঃসঙ্গ, বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোর সঙ্গে রইল মাতৃভাষা বাংলা। ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিন্দি। অন্য অনেক ভাষার সঙ্গে বাংলা রইল মাতৃভাষা হিসেবে। ইংরেজি প্রবল দাপটে রাজত্ব করে চলল। অদ্ভুত এক রাষ্ট্রের দুটি ডানা। একটির সঙ্গে আরেকটির দূরত্ব বারো শ মাইল।
১৯৪৭-এর পর বছর না ঘুরতেই পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ঘোষণা দিয়ে দিল উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। অথচ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলা। আচমকা পাকিস্তানের নিয়োগপ্রাপ্ত গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঘোষণায় চমকে গেল পূর্ব বাংলার মানুষ। ক্ষুব্ধ মানুষ এই ঘোষণায় সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রটা বুঝতে পারল। সেই থেকে শুরু হলো লড়াই। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, বিশেষ করে ছাত্রদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল প্রতিবাদের আগুন। সেই আগুন ১৯৫২ সাল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল সবখানে। শেষ পর্যন্ত একুশে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তাদের চেহারাটা নগ্ন করেই ফেলল। প্রাণ দিলেন ভাষাসংগ্রামীরা।
পাকিস্তানি শাসকেরা আপাতত থামল, কিন্তু ষড়যন্ত্র, নিপীড়ন শেষ হলো না। গণতান্ত্রিক সব আন্দোলন স্তব্ধ করে দিয়ে ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করা হলো। আন্দোলন শুরু হলো নতুন পর্যায়ে। ভাষা ও সংস্কৃতিকে সংকুচিত করার সব পথই অবলম্বন করে একটি জাতিরাষ্ট্রের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলো ধর্মরাষ্ট্র। কিন্তু বাঙালিরা তা মানল না। শেষ পর্যন্ত সামরিক শাসন ও শক্তিকে পর্যুদস্ত করে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্ম হলো। এক রক্তাক্ত অভ্যুত্থান ও যুদ্ধের মধ্যেই বাংলা ভাষা বিজয়ী হলো, রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেল বাংলা।
পশ্চিমবঙ্গেও তার ঢেউ এসে লেগেছিল। বাংলা ভাষাভাষী মানুষের হৃদয় আর্দ্র হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। আলাপ-আলোচনা, তর্কবিতর্ক, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন—সবটা মিলিয়ে আন্দোলনের পথ বন্ধ হয়নি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও যে কখনো রক্তে রঞ্জিত হয়নি, তা নয়। কিন্তু গণতন্ত্রে একটা আপসের জায়গা থাকে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যেও একটা সহনীয় সংঘাত থাকে। তাই মধ্যবিত্তের চর্চায় বাংলা ভাষাকে তেমন কোনো বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি। তবে শ্রেণিসংগ্রাম তীব্র হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতার উত্থান হয়েছে, ধর্ম কখনো বাড়াবাড়ি ধরনের পর্যায়ে চলে গেছে। একটা সময় ভাষাকে তাই আশ্রয় করতে হয়েছে। সমৃদ্ধ এই ভাষা ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে ভাষার লড়াইটাও গৌণ থেকে মুখ্য হয়েছে।
দুই বাংলায় বহু বছর ধরে একটি গুরুতর সমস্যায় জর্জরিত তা হলো—বহু ধারার শিক্ষাব্যবস্থা। মূলত ইংরেজি শিক্ষা। দুটি দেশেই হাজার হাজার কিন্ডারগার্টেন, ইংরেজি স্কুল, বেসরকারি ইংরেজি বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিভক্ত শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের গুরুতর সংকট সৃষ্টি করেছে ধর্মীয় শিক্ষা। অনাধুনিক বিজ্ঞান ও যুক্তিহীন এই ব্যবস্থা মানুষকে পেছনের দিকে নিয়ে চলেছে।
মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভ করেও পৃথিবীর প্রতিটি দেশে একটি ভিন্ন ভাষার শিক্ষা প্রয়োজন হয়। আজকের দিনে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ যেখানে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে ইংরেজি, ফারসি, জার্মান বা স্প্যানিশ ভাষার একটি-দুটি জানতেই হবে। কিন্তু প্রথম থেকেই শিশুকে যদি অন্য ভাষায় শিক্ষিত করতে হয়, তাহলে শুরুতেই সে নিজ সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই বিচ্ছিন্নতা তাকে আজীবন নিঃসঙ্গ করে তোলে। ভিন্ন ভাষার সংস্কৃতিকে আমল করতে গিয়ে সে একধরনের নৈরাশ্যের এবং নৈরাজ্যের মধ্যে পড়ে যায়। ফলে তার প্রয়োজন হয়ে পড়ে অভিবাসন। এই অভিবাসন তাকে করে তোলে এক ‘নেই’ রাজ্যের নাগরিক। মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন এই নেই রাজ্যের নাগরিক তাই উন্নত প্রযুক্তিতে ডুব দিয়ে দেশহারা, সংস্কৃতিহারা মানুষ হয়ে যায়। বাংলার মতো উন্নত সংস্কৃতির মানুষ বাজার অর্থনীতির কবলে পড়ে উদ্ভট এক ভোগবাদী সমাজেই ঢুকে পড়ে। তার নিত্যসঙ্গী তখন ইন্টারনেটের কবলে পড়া প্রযুক্তি। মূলত সে নিঃসঙ্গ, ভোগবাদী প্রাণহীন, আবেগহীন এক কঙ্কাল। তাই যেকোনো ভাষাভাষী মানুষের এই সংস্কৃতিবিচ্ছিন্নতা এক ভয়াবহ সংকটের সৃষ্টি করে।
বাঙালির মধ্যে ইংরেজিপ্রীতির এক অকারণ হীনম্মন্যতা রয়েছে বহুদিন ধরেই। ইংরেজিতে কথা বলতে পারলে সে নিজেকে কুলীন ভাবতে শুরু করে।অভিভাবকেরাও খুবই খুশি হন যখন তাঁর সন্তান ইংরেজি ভালো বলে, বাংলা না বললেও তাঁরা দুঃখিত হন না। এই প্রবণতা যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে, তার ভূরি ভূরি প্রমাণ আমাদের সমাজে আছে। বাংলা সাহিত্য, বাংলা গান, নাটক, চিত্রকলা, চলচ্চিত্র পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় যথেষ্ট এগিয়ে। আমাদের গর্ব করার অনেক কিছুই আছে সেখানে। কোনোই কারণ নেই হীনম্মন্যতায় ভোগার।
ভাষা ও চেতনা সমিতির এই অনুষ্ঠানমালায় বক্তৃতায়, গানে, আবৃত্তিতে, নৃত্যে এসব কথাই বারবার ভিন্নভাবে বলা হলো। একুশে ফেব্রুয়ারিতেও স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে একই কথা বলা হয় নানাভাবে, নানা আয়োজনে। অনেকেই বলবেন, এসব জানা কথা, কী লাভ তাতে? ইমান-উল-হক বারবার অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় বলছিলেন ভালো কথাও, প্রয়োজনীয় কথাও বারবার বলতে হয়। আমিও বলি। না হলে খারাপ কথার বাজারে ভালো কথা হারিয়ে যায়। বাংলা ভাষা দিব্যি ছড়িয়ে যাক তার মহিমা নিয়ে।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব
মামুনুর রশীদ

বসন্তকালের নয়া উৎসবের শহর কলকাতায় এসেছি ১৯ ফেব্রুয়ারি। এবারের আগমনের উদ্দেশ্য একুশে ফেব্রুয়ারি পালন। আমন্ত্রণ করেছে ভাষা ও চেতনা সমিতি, কর্ণধার হচ্ছেন লেখক-অধ্যাপক ইমান-উল-হক। একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে মুক্তমঞ্চে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে ২৫ বছর ধরে। ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে বাংলা ভাষার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এখানে সমবেত হন। এবারের উদ্বোধনের দায়িত্ব পালন করেছি আমি।
অন্যান্য বছরে শুধু ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে একুশের ভোরে প্রভাতফেরি করে অনুষ্ঠান শেষ হতো। এবারে তা তিন দিন করা হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আলোচনা অনুষ্ঠান, সংগীত, আবৃত্তি, নাটক, নৃত্যানুষ্ঠান শেষ হয় রাত ১২টায়। আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনজনই নাটকের মানুষ। মনোজ মিত্র, দেবাশীষ মজুমদার এবং আমি। ২০ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন বিকেল সোয়া ৫টায়। উদ্বোধনী আলোচনায় ভাষার শক্তি, ভাষার প্রতি দায়িত্ব এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে মূলত একটিই বক্তৃতা হলো। আমার বক্তৃতার পরই শুরু হয় একুশের গান। প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পীরা সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়, যাঁর ‘আমি বাংলায় গান গাই’ বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে অনেক দিন ধরেই মাতিয়ে রেখেছে। বেশ কটি গান গাইলেন প্রতুল। গানের ফাঁকে ফাঁকে কথাও বললেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তিনি কবিয়াল রমেশ শীলের গানের পুনঃ সুরারোপ করেও গাইলেন। এরপর গানে, নৃত্যে, আবৃত্তিতে অনুষ্ঠান চলতে লাগল। এভাবেই রাত গভীর হলো, ভোরের প্রভাতফেরিতে আবার ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি...’ গেয়ে শেষ হলো।
কলকাতায় তখন ভোরের আলো। ঢাকার একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপনের তুলনায় কলকাতায় এই আয়োজন ছোট হলেও নানা দিক থেকেই তা তাৎপর্যপূর্ণ। দেশভাগের সেই করুণ এবং নারকীয় অধ্যায়ের পর এক বাংলা যখন দ্বিখণ্ডিত হলো, তখন মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে দুটি রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। নিঃসঙ্গ, বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোর সঙ্গে রইল মাতৃভাষা বাংলা। ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিন্দি। অন্য অনেক ভাষার সঙ্গে বাংলা রইল মাতৃভাষা হিসেবে। ইংরেজি প্রবল দাপটে রাজত্ব করে চলল। অদ্ভুত এক রাষ্ট্রের দুটি ডানা। একটির সঙ্গে আরেকটির দূরত্ব বারো শ মাইল।
১৯৪৭-এর পর বছর না ঘুরতেই পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ঘোষণা দিয়ে দিল উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। অথচ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলা। আচমকা পাকিস্তানের নিয়োগপ্রাপ্ত গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঘোষণায় চমকে গেল পূর্ব বাংলার মানুষ। ক্ষুব্ধ মানুষ এই ঘোষণায় সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রটা বুঝতে পারল। সেই থেকে শুরু হলো লড়াই। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, বিশেষ করে ছাত্রদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল প্রতিবাদের আগুন। সেই আগুন ১৯৫২ সাল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল সবখানে। শেষ পর্যন্ত একুশে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তাদের চেহারাটা নগ্ন করেই ফেলল। প্রাণ দিলেন ভাষাসংগ্রামীরা।
পাকিস্তানি শাসকেরা আপাতত থামল, কিন্তু ষড়যন্ত্র, নিপীড়ন শেষ হলো না। গণতান্ত্রিক সব আন্দোলন স্তব্ধ করে দিয়ে ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করা হলো। আন্দোলন শুরু হলো নতুন পর্যায়ে। ভাষা ও সংস্কৃতিকে সংকুচিত করার সব পথই অবলম্বন করে একটি জাতিরাষ্ট্রের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলো ধর্মরাষ্ট্র। কিন্তু বাঙালিরা তা মানল না। শেষ পর্যন্ত সামরিক শাসন ও শক্তিকে পর্যুদস্ত করে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্ম হলো। এক রক্তাক্ত অভ্যুত্থান ও যুদ্ধের মধ্যেই বাংলা ভাষা বিজয়ী হলো, রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেল বাংলা।
পশ্চিমবঙ্গেও তার ঢেউ এসে লেগেছিল। বাংলা ভাষাভাষী মানুষের হৃদয় আর্দ্র হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। আলাপ-আলোচনা, তর্কবিতর্ক, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন—সবটা মিলিয়ে আন্দোলনের পথ বন্ধ হয়নি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও যে কখনো রক্তে রঞ্জিত হয়নি, তা নয়। কিন্তু গণতন্ত্রে একটা আপসের জায়গা থাকে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যেও একটা সহনীয় সংঘাত থাকে। তাই মধ্যবিত্তের চর্চায় বাংলা ভাষাকে তেমন কোনো বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি। তবে শ্রেণিসংগ্রাম তীব্র হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতার উত্থান হয়েছে, ধর্ম কখনো বাড়াবাড়ি ধরনের পর্যায়ে চলে গেছে। একটা সময় ভাষাকে তাই আশ্রয় করতে হয়েছে। সমৃদ্ধ এই ভাষা ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে ভাষার লড়াইটাও গৌণ থেকে মুখ্য হয়েছে।
দুই বাংলায় বহু বছর ধরে একটি গুরুতর সমস্যায় জর্জরিত তা হলো—বহু ধারার শিক্ষাব্যবস্থা। মূলত ইংরেজি শিক্ষা। দুটি দেশেই হাজার হাজার কিন্ডারগার্টেন, ইংরেজি স্কুল, বেসরকারি ইংরেজি বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিভক্ত শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের গুরুতর সংকট সৃষ্টি করেছে ধর্মীয় শিক্ষা। অনাধুনিক বিজ্ঞান ও যুক্তিহীন এই ব্যবস্থা মানুষকে পেছনের দিকে নিয়ে চলেছে।
মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভ করেও পৃথিবীর প্রতিটি দেশে একটি ভিন্ন ভাষার শিক্ষা প্রয়োজন হয়। আজকের দিনে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ যেখানে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে ইংরেজি, ফারসি, জার্মান বা স্প্যানিশ ভাষার একটি-দুটি জানতেই হবে। কিন্তু প্রথম থেকেই শিশুকে যদি অন্য ভাষায় শিক্ষিত করতে হয়, তাহলে শুরুতেই সে নিজ সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই বিচ্ছিন্নতা তাকে আজীবন নিঃসঙ্গ করে তোলে। ভিন্ন ভাষার সংস্কৃতিকে আমল করতে গিয়ে সে একধরনের নৈরাশ্যের এবং নৈরাজ্যের মধ্যে পড়ে যায়। ফলে তার প্রয়োজন হয়ে পড়ে অভিবাসন। এই অভিবাসন তাকে করে তোলে এক ‘নেই’ রাজ্যের নাগরিক। মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন এই নেই রাজ্যের নাগরিক তাই উন্নত প্রযুক্তিতে ডুব দিয়ে দেশহারা, সংস্কৃতিহারা মানুষ হয়ে যায়। বাংলার মতো উন্নত সংস্কৃতির মানুষ বাজার অর্থনীতির কবলে পড়ে উদ্ভট এক ভোগবাদী সমাজেই ঢুকে পড়ে। তার নিত্যসঙ্গী তখন ইন্টারনেটের কবলে পড়া প্রযুক্তি। মূলত সে নিঃসঙ্গ, ভোগবাদী প্রাণহীন, আবেগহীন এক কঙ্কাল। তাই যেকোনো ভাষাভাষী মানুষের এই সংস্কৃতিবিচ্ছিন্নতা এক ভয়াবহ সংকটের সৃষ্টি করে।
বাঙালির মধ্যে ইংরেজিপ্রীতির এক অকারণ হীনম্মন্যতা রয়েছে বহুদিন ধরেই। ইংরেজিতে কথা বলতে পারলে সে নিজেকে কুলীন ভাবতে শুরু করে।অভিভাবকেরাও খুবই খুশি হন যখন তাঁর সন্তান ইংরেজি ভালো বলে, বাংলা না বললেও তাঁরা দুঃখিত হন না। এই প্রবণতা যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে, তার ভূরি ভূরি প্রমাণ আমাদের সমাজে আছে। বাংলা সাহিত্য, বাংলা গান, নাটক, চিত্রকলা, চলচ্চিত্র পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় যথেষ্ট এগিয়ে। আমাদের গর্ব করার অনেক কিছুই আছে সেখানে। কোনোই কারণ নেই হীনম্মন্যতায় ভোগার।
ভাষা ও চেতনা সমিতির এই অনুষ্ঠানমালায় বক্তৃতায়, গানে, আবৃত্তিতে, নৃত্যে এসব কথাই বারবার ভিন্নভাবে বলা হলো। একুশে ফেব্রুয়ারিতেও স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে একই কথা বলা হয় নানাভাবে, নানা আয়োজনে। অনেকেই বলবেন, এসব জানা কথা, কী লাভ তাতে? ইমান-উল-হক বারবার অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় বলছিলেন ভালো কথাও, প্রয়োজনীয় কথাও বারবার বলতে হয়। আমিও বলি। না হলে খারাপ কথার বাজারে ভালো কথা হারিয়ে যায়। বাংলা ভাষা দিব্যি ছড়িয়ে যাক তার মহিমা নিয়ে।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

বসন্তকালের নয়া উৎসবের শহর কলকাতায় এসেছি ১৯ ফেব্রুয়ারি। এবারের আগমনের উদ্দেশ্য একুশে ফেব্রুয়ারি পালন। আমন্ত্রণ করেছে ভাষা ও চেতনা সমিতি, কর্ণধার হচ্ছেন লেখক-অধ্যাপক ইমান-উল-হক। একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে মুক্তমঞ্চে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে ২৫ বছর ধরে। ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে বাংলা ভাষার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এখানে সমবেত হন। এবারের উদ্বোধনের দায়িত্ব পালন করেছি আমি।
অন্যান্য বছরে শুধু ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে একুশের ভোরে প্রভাতফেরি করে অনুষ্ঠান শেষ হতো। এবারে তা তিন দিন করা হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আলোচনা অনুষ্ঠান, সংগীত, আবৃত্তি, নাটক, নৃত্যানুষ্ঠান শেষ হয় রাত ১২টায়। আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনজনই নাটকের মানুষ। মনোজ মিত্র, দেবাশীষ মজুমদার এবং আমি। ২০ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন বিকেল সোয়া ৫টায়। উদ্বোধনী আলোচনায় ভাষার শক্তি, ভাষার প্রতি দায়িত্ব এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে মূলত একটিই বক্তৃতা হলো। আমার বক্তৃতার পরই শুরু হয় একুশের গান। প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পীরা সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়, যাঁর ‘আমি বাংলায় গান গাই’ বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে অনেক দিন ধরেই মাতিয়ে রেখেছে। বেশ কটি গান গাইলেন প্রতুল। গানের ফাঁকে ফাঁকে কথাও বললেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তিনি কবিয়াল রমেশ শীলের গানের পুনঃ সুরারোপ করেও গাইলেন। এরপর গানে, নৃত্যে, আবৃত্তিতে অনুষ্ঠান চলতে লাগল। এভাবেই রাত গভীর হলো, ভোরের প্রভাতফেরিতে আবার ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি...’ গেয়ে শেষ হলো।
কলকাতায় তখন ভোরের আলো। ঢাকার একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপনের তুলনায় কলকাতায় এই আয়োজন ছোট হলেও নানা দিক থেকেই তা তাৎপর্যপূর্ণ। দেশভাগের সেই করুণ এবং নারকীয় অধ্যায়ের পর এক বাংলা যখন দ্বিখণ্ডিত হলো, তখন মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে দুটি রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। নিঃসঙ্গ, বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোর সঙ্গে রইল মাতৃভাষা বাংলা। ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিন্দি। অন্য অনেক ভাষার সঙ্গে বাংলা রইল মাতৃভাষা হিসেবে। ইংরেজি প্রবল দাপটে রাজত্ব করে চলল। অদ্ভুত এক রাষ্ট্রের দুটি ডানা। একটির সঙ্গে আরেকটির দূরত্ব বারো শ মাইল।
১৯৪৭-এর পর বছর না ঘুরতেই পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ঘোষণা দিয়ে দিল উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। অথচ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলা। আচমকা পাকিস্তানের নিয়োগপ্রাপ্ত গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঘোষণায় চমকে গেল পূর্ব বাংলার মানুষ। ক্ষুব্ধ মানুষ এই ঘোষণায় সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রটা বুঝতে পারল। সেই থেকে শুরু হলো লড়াই। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, বিশেষ করে ছাত্রদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল প্রতিবাদের আগুন। সেই আগুন ১৯৫২ সাল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল সবখানে। শেষ পর্যন্ত একুশে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তাদের চেহারাটা নগ্ন করেই ফেলল। প্রাণ দিলেন ভাষাসংগ্রামীরা।
পাকিস্তানি শাসকেরা আপাতত থামল, কিন্তু ষড়যন্ত্র, নিপীড়ন শেষ হলো না। গণতান্ত্রিক সব আন্দোলন স্তব্ধ করে দিয়ে ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করা হলো। আন্দোলন শুরু হলো নতুন পর্যায়ে। ভাষা ও সংস্কৃতিকে সংকুচিত করার সব পথই অবলম্বন করে একটি জাতিরাষ্ট্রের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলো ধর্মরাষ্ট্র। কিন্তু বাঙালিরা তা মানল না। শেষ পর্যন্ত সামরিক শাসন ও শক্তিকে পর্যুদস্ত করে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্ম হলো। এক রক্তাক্ত অভ্যুত্থান ও যুদ্ধের মধ্যেই বাংলা ভাষা বিজয়ী হলো, রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেল বাংলা।
পশ্চিমবঙ্গেও তার ঢেউ এসে লেগেছিল। বাংলা ভাষাভাষী মানুষের হৃদয় আর্দ্র হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। আলাপ-আলোচনা, তর্কবিতর্ক, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন—সবটা মিলিয়ে আন্দোলনের পথ বন্ধ হয়নি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও যে কখনো রক্তে রঞ্জিত হয়নি, তা নয়। কিন্তু গণতন্ত্রে একটা আপসের জায়গা থাকে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যেও একটা সহনীয় সংঘাত থাকে। তাই মধ্যবিত্তের চর্চায় বাংলা ভাষাকে তেমন কোনো বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি। তবে শ্রেণিসংগ্রাম তীব্র হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতার উত্থান হয়েছে, ধর্ম কখনো বাড়াবাড়ি ধরনের পর্যায়ে চলে গেছে। একটা সময় ভাষাকে তাই আশ্রয় করতে হয়েছে। সমৃদ্ধ এই ভাষা ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে ভাষার লড়াইটাও গৌণ থেকে মুখ্য হয়েছে।
দুই বাংলায় বহু বছর ধরে একটি গুরুতর সমস্যায় জর্জরিত তা হলো—বহু ধারার শিক্ষাব্যবস্থা। মূলত ইংরেজি শিক্ষা। দুটি দেশেই হাজার হাজার কিন্ডারগার্টেন, ইংরেজি স্কুল, বেসরকারি ইংরেজি বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিভক্ত শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের গুরুতর সংকট সৃষ্টি করেছে ধর্মীয় শিক্ষা। অনাধুনিক বিজ্ঞান ও যুক্তিহীন এই ব্যবস্থা মানুষকে পেছনের দিকে নিয়ে চলেছে।
মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভ করেও পৃথিবীর প্রতিটি দেশে একটি ভিন্ন ভাষার শিক্ষা প্রয়োজন হয়। আজকের দিনে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ যেখানে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে ইংরেজি, ফারসি, জার্মান বা স্প্যানিশ ভাষার একটি-দুটি জানতেই হবে। কিন্তু প্রথম থেকেই শিশুকে যদি অন্য ভাষায় শিক্ষিত করতে হয়, তাহলে শুরুতেই সে নিজ সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই বিচ্ছিন্নতা তাকে আজীবন নিঃসঙ্গ করে তোলে। ভিন্ন ভাষার সংস্কৃতিকে আমল করতে গিয়ে সে একধরনের নৈরাশ্যের এবং নৈরাজ্যের মধ্যে পড়ে যায়। ফলে তার প্রয়োজন হয়ে পড়ে অভিবাসন। এই অভিবাসন তাকে করে তোলে এক ‘নেই’ রাজ্যের নাগরিক। মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন এই নেই রাজ্যের নাগরিক তাই উন্নত প্রযুক্তিতে ডুব দিয়ে দেশহারা, সংস্কৃতিহারা মানুষ হয়ে যায়। বাংলার মতো উন্নত সংস্কৃতির মানুষ বাজার অর্থনীতির কবলে পড়ে উদ্ভট এক ভোগবাদী সমাজেই ঢুকে পড়ে। তার নিত্যসঙ্গী তখন ইন্টারনেটের কবলে পড়া প্রযুক্তি। মূলত সে নিঃসঙ্গ, ভোগবাদী প্রাণহীন, আবেগহীন এক কঙ্কাল। তাই যেকোনো ভাষাভাষী মানুষের এই সংস্কৃতিবিচ্ছিন্নতা এক ভয়াবহ সংকটের সৃষ্টি করে।
বাঙালির মধ্যে ইংরেজিপ্রীতির এক অকারণ হীনম্মন্যতা রয়েছে বহুদিন ধরেই। ইংরেজিতে কথা বলতে পারলে সে নিজেকে কুলীন ভাবতে শুরু করে।অভিভাবকেরাও খুবই খুশি হন যখন তাঁর সন্তান ইংরেজি ভালো বলে, বাংলা না বললেও তাঁরা দুঃখিত হন না। এই প্রবণতা যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে, তার ভূরি ভূরি প্রমাণ আমাদের সমাজে আছে। বাংলা সাহিত্য, বাংলা গান, নাটক, চিত্রকলা, চলচ্চিত্র পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় যথেষ্ট এগিয়ে। আমাদের গর্ব করার অনেক কিছুই আছে সেখানে। কোনোই কারণ নেই হীনম্মন্যতায় ভোগার।
ভাষা ও চেতনা সমিতির এই অনুষ্ঠানমালায় বক্তৃতায়, গানে, আবৃত্তিতে, নৃত্যে এসব কথাই বারবার ভিন্নভাবে বলা হলো। একুশে ফেব্রুয়ারিতেও স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে একই কথা বলা হয় নানাভাবে, নানা আয়োজনে। অনেকেই বলবেন, এসব জানা কথা, কী লাভ তাতে? ইমান-উল-হক বারবার অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় বলছিলেন ভালো কথাও, প্রয়োজনীয় কথাও বারবার বলতে হয়। আমিও বলি। না হলে খারাপ কথার বাজারে ভালো কথা হারিয়ে যায়। বাংলা ভাষা দিব্যি ছড়িয়ে যাক তার মহিমা নিয়ে।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বসন্তকালের নয়া উৎসবের শহর কলকাতায় এসেছি ১৯ ফেব্রুয়ারি। এবারের আগমনের উদ্দেশ্য একুশে ফেব্রুয়ারি পালন। আমন্ত্রণ করেছে ভাষা ও চেতনা সমিতি, কর্ণধার হচ্ছেন লেখক-অধ্যাপক ইমান-উল-হক। একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে মুক্তমঞ্চে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে ২৫ বছর ধরে।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বসন্তকালের নয়া উৎসবের শহর কলকাতায় এসেছি ১৯ ফেব্রুয়ারি। এবারের আগমনের উদ্দেশ্য একুশে ফেব্রুয়ারি পালন। আমন্ত্রণ করেছে ভাষা ও চেতনা সমিতি, কর্ণধার হচ্ছেন লেখক-অধ্যাপক ইমান-উল-হক। একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে মুক্তমঞ্চে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে ২৫ বছর ধরে।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বসন্তকালের নয়া উৎসবের শহর কলকাতায় এসেছি ১৯ ফেব্রুয়ারি। এবারের আগমনের উদ্দেশ্য একুশে ফেব্রুয়ারি পালন। আমন্ত্রণ করেছে ভাষা ও চেতনা সমিতি, কর্ণধার হচ্ছেন লেখক-অধ্যাপক ইমান-উল-হক। একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে মুক্তমঞ্চে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে ২৫ বছর ধরে।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বসন্তকালের নয়া উৎসবের শহর কলকাতায় এসেছি ১৯ ফেব্রুয়ারি। এবারের আগমনের উদ্দেশ্য একুশে ফেব্রুয়ারি পালন। আমন্ত্রণ করেছে ভাষা ও চেতনা সমিতি, কর্ণধার হচ্ছেন লেখক-অধ্যাপক ইমান-উল-হক। একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে মুক্তমঞ্চে এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে ২৫ বছর ধরে।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫