Ajker Patrika

জিনিসপত্রের দাম

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০২২, ১০: ০৮
জিনিসপত্রের দাম

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্বত্রই দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। এই প্রচণ্ড গরমে যখন একটি ঠান্ডা পানীয় দিয়ে গলা ভেজানোর কথা কেউ ভাবছেন, তখন 

২০০ মিলিলিটারের একটি ঠান্ডা পানীয়ের দাম ৫ টাকা বেড়ে গেছে শুনে তিনি কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়াবেন। ডিম নিয়ে তো ফেসবুকজুড়ে রসিকতা চলছেই। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেদ্ধ ডিম পোস্ট করে বলছেন, ‘আজ ডিম নিয়ে নাশতা করেছি।’ মানে, ‘আজ হাজির বিরিয়ানি খেয়েছি’—ভাবটা অনেকটা সে রকম আরকি।

আগে ‘মাছের বাজারে আগুন’ কথাটা শুনলে মন দমে যেত। এখন সয়ে গেছে। এই আগুন নেভানোর চেষ্টা না করে আগুনের পথ ধরে হেঁটেই মাছ কিনতে হয়। ছোট মাছের কেজি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। আপাত সস্তা মাছ বলতে পাঙাশ আর তেলাপিয়ার কথাই বলা হয়ে থাকে। তারাও আড়মোড়া দিয়ে জেগে উঠছে। হয়তো-বা নিজেদের সর্বহারা মনে করে বাজারে বিপ্লব আনতে চাইছে তারা। রুই-কাতল সম্ভবত দামি মাছের মধ্যে সবচেয়ে কম দামি মাছ। এখনো ২০০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা কেজি দরে তারা বাজারের থলেতে ঢুকে যাচ্ছে। গরিবের প্রোটিনের উৎস ব্রয়লার মুরগির দামও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। কোরবানির ঈদের পর গরুর মাংসের দাম কিছুটা কমেছিল। জ্বালানির ছোঁয়া তারাও পেয়েছে, আবার তারা ফিরে গেছে সেই দামে, যে দামে মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য দেশের অনেক মানুষেরই নেই।

এ তো গেল বাজারের কথা। ইট-সিমেন্ট-লোহা নিয়ে যাঁদের কারবার, তাঁরাও বুঝতে পারছেন, ওই খাতে খরচ অনেক বাড়বে। আসবাব কেনার কথা ভাবছেন যিনি, তিনি হয়তো আফসোস করছেন, আর কিছুদিন আগে কেন কিনে ফেললেন না! পরিবহন ভাড়া নিয়ে নতুন করে কিছু নাই-বা বললাম। ঢাকাসহ বড় বড় শহরে ফাস্ট ফুড বা রেস্তোরাঁয় যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে মানুষের। তাঁদের গায়েও এসে লাগবে খাবারের দামে আগুনের ছিটে—অজুহাত গম, আটা, ময়দার দাম বেড়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজারই মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু বাজারে যদি সিন্ডিকেটের থাবা থাকে এবং সরকারের কাছে সেই সিন্ডিকেটকে শায়েস্তা করার মতো কোনো রসদই না থাকে, তখন অসৎ ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো। তাঁরা যেকোনো সময় যেকোনোভাবে দাম বাড়িয়ে দিতে পারেন। এ জন্য কোথাও কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। আমরা নিশ্চয়ই পেঁয়াজ আর তেলের রূপকথার গল্পগুলো আবার শুনে নিলেই বিষয়টির মাজেজা বুঝতে পারব।

মুশকিল হলো, যিনি ব্যবসায়ী, তিনিই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষক, যিনি বাসের মালিক, তিনিই বাসশ্রমিক নেতা, যিনি সংসদ সদস্য, তিনিই কোনো বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক—এ রকম সাংঘর্ষিক অবস্থা যদি বিকশিত হতে থাকে, তাহলে আমজনতা শুধু বাজেট কর্তন করে বেঁচে থাকার ন্যূনতম চেষ্টাই করতে পারবে। আর কিছু নয়। এ অবস্থা বেশি দিন চললে তা কারও জন্য সুখবর নিয়ে আসবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নতুন বেতনকাঠামো আসছে, পে কমিশন গঠন

ব্যাংকে চোখ বেঁধে গ্রাহককে হাতুড়িপেটা, পায়ের নখ তোলার চেষ্টা

‘সোজা কথা, যারে ভালো লাগবে তারে কোপামু’

শুল্ক ছাড়া যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানির সুযোগ পেল ভারত

সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়াতে পারে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া—শক্তিতে কে বেশি এগিয়ে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত