শাইখ সিরাজ

আমি ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেছি এবং বড় হয়েছি। শৈশবের দেখা ঢাকা শহরের সঙ্গে বর্তমানের এই শহরকে মেলানো যায় না। কী অদ্ভুত সুন্দর ছিল এই শহর! আমার শৈশবে ঢাকা ছিল সবুজ এক শহর। সে সময় আমার বসবাসের এলাকা খিলগাঁও ছিল মূলত একটা গ্রাম। বিশ্ব রোডের ধারে বিশাল অরণ্যশোভিত নানা ধরনের বনজ ও ফলদ গাছগাছালির সমারোহে সবুজ এক বসতি ছিল। গাছপালায় এত ঘন ছিল যে সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়তেই অন্ধকার নেমে আসত।
বিকেলবেলায় শিয়ালের ডাক শোনা যেত। কাছেই ছিল তেজগাঁও বিমানবন্দর। বিমান ল্যান্ডিং বা উড়ে যাওয়ার সময় শব্দ শুনে আকাশের দিকে তাকালে গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে কখনো কখনো ঢাউস আকারের বিমান চোখে পড়ত ঠিকই, কিন্তু গাছের ডালপালা, পাতার কারণে পূর্ণ বিমান দেখাটা কখনো সম্ভব হতো না। গাছপালায় এতটাই ঘন ছিল প্রকৃতি। মনে পড়ে, রাস্তাঘাটে হাঁটার সময় খুব সাবধানে থাকতাম, এই বুঝি কোনো গাছের ডাল থেকে মৌমাছি তেড়ে আসে। প্রাকৃতিকভাবেই নানা ফুলের গাছে ভরা ছিল খিলগাঁও। ফলে মৌমাছি বাসা বাঁধত গাছে গাছে।
আমাদের খিলগাঁও উন্নয়নের ধারায় আসে কমলাপুর রেলস্টেশন নির্মাণের সময়। তখন শুনেছি এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রেলস্টেশন হবে কমলাপুর রেলস্টেশন। রেললাইনের পাশাপাশি হবে ১০০ ফুটের বড় রাস্তা। শহর উন্নয়নে সারি সারি গাছ কেটে ফেলা হলো। এভাবেই প্রয়োজনের তাগিদে শহর বড় হতে থাকল। বাড়তে থাকল মানুষ। বাড়তে থাকল স্থাপনা। বুড়িগঙ্গার টলটলে পানি আমরাও দেখেছি।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দূষিত হলো বুড়িগঙ্গা। ধূসর হলো ঢাকা শহর। আমরাই ঢাকাকে নষ্ট করে ফেলেছি। ঢাকাকে ফের বাসযোগ্য করে তুলতে হলে অবশ্যই সবুজ করতে হবে। এখানে যেভাবে বেড়ে উঠছে ইট-কাঠ-পাথরের জঞ্জাল, সেভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে না সবুজ।
পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো অনেক আগে থেকেই সবুজায়নের তাগিদ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যেমন জাপান ১৯৯৭ সালে কিয়োটো প্রটোকলের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব মোকাবিলার জন্য ভবন নির্মাণের সময় ছাদে ও কার্নিশে বাধ্যতামূলক প্রশস্ত বাগান গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়। তারা ছাদে সবুজের চাষ করাটাকে আইন পাস করে বাধ্যতামূলক করেছে। প্রতিটি বাড়ির ছাদে গাছ লাগানোকে করা হয়েছে অপরিহার্য। কারণ বসবাসের শহরটিকে সুরক্ষিত করতে হবে। গড়তে হবে অক্সিজেনের খামার।
মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তুলতে হবে। কিন্তু আমাদের এখানে সেই পরিবেশটা নেই। আমরা যখন বাড়ি বা অট্টালিকা তৈরি করি, তখন বাড়ির ছাদটা যে সবুজ হওয়া দরকার, এই চিন্তাটা আমাদের থাকে না। দুয়েকজন বাড়ি নির্মাণের সময় ছাদকৃষির বিষয়টি মাথায় রাখেন। বহুমুখী চিন্তা থেকেই তিনি বাড়ি নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে ছাদকৃষিতে সাজিয়ে তোলেন। গত কয়েক বছরে ঢাকাকে সবুজ নগরে পরিণত করতে একটা উদ্যোগ নিয়েছি। চ্যানেল আইয়ে ছাদকৃষি বিষয়ে অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে নগরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নিরন্তর।
শুধু যে শহর সবুজ হচ্ছে, তা নয়, নিরাপদ খাদ্যের প্রশ্নে অনেকেই ছাদকৃষিতে ভরসা করছেন। ইতিমধ্যে অনেকে ছাদকৃষির মাধ্যমে সফল হয়েছেন। আমি দেখেছি ছাদে লাউ, ঝিঙে, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজরসহ বিভিন্ন সবজিসহ আম, পেয়ারা, মাল্টা, আখ, ডালিম, জাম্বুরা, কামরাঙা, জামরুলসহ নানান ফলের চাষ করে পারিবারিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
চ্যানেল আইয়ে আমি প্রায় তিন শতাধিক ছাদকৃষি পর্ব প্রচার করেছি। দেখেছি অবসরে চলে যাওয়া সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, কিংবা ব্যবসায়ী-শিল্পপতি নিজেদের অবসর সময়টাকে ফলপ্রসূ করে তুলছেন ছাদে এক টুকরো ছাদকৃষির সঙ্গে যুক্ত হয়ে। তাঁরা বলেছেন, ছাদকৃষি দিয়েছে আত্মিক প্রশান্তি। যাঁর নিজস্ব ভবন ও ছাদ রয়েছে, তাঁরা নিজেদের ছাদে একস্তর বা দ্বিস্তরবিশিষ্ট ছাদকৃষি গড়ে তুলছেন।
আবার যাঁদের নিজস্ব বাড়ির ছাদ নেই, তাঁরা বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলে ছাদের একপাশে বা বারান্দায় গড়ে তুলেছেন নিজস্ব ছাদকৃষি। এই ছাদকৃষি দিয়ে তিনি খাদ্যের চাহিদা পূরণ করছেন, মিটছে পারিবারিক পুষ্টি, পাচ্ছেন মানসিক প্রশান্তি। পাশাপাশি পালন করছেন একটা জাতীয় দায়িত্ব। শহরকে সবুজায়নে সহায়তা করছেন। নগরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করছেন।
সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত বাড়ির মালিকেরা ছাদকৃষি করলে হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন। গত ১৪ জুন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানিয়েছেন। এটিকে আমি দেখছি আমাদের ছাদকৃষি আন্দোলনের প্রাথমিক অর্জন হিসেবে। এই ছাদকৃষি ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা রকম সংগঠন। ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের পারস্পরিক যোগাযোগের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। সবার চাওয়া ইট-কাঠ-পাথরের শহরটিকে বাসযোগ্য ও সবুজ শহরে পরিণত করা।
‘ছাদকৃষি’ প্রসঙ্গে সে সময়টাতে অনেকেই আমার বিরোধিতা করেছিলেন। বলছিলেন, ছাদকৃষিতে ছাদের ক্ষতি হবে এবং এটি একটি অসম্ভব বিষয়। ছাদকৃষির জন্য ছাদ ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, টব বা ড্রামে মাটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে—এ বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত আমি তুলে ধরি। পাশাপাশি তুলে ধরি, ছাদকৃষির বিভিন্ন কৌশল ও প্রযুক্তি।
এক দশকে দেশ-বিদেশের বহু ছাদকৃষি ও নগরকৃষির উদাহরণ আমি তুলে ধরেছি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ছাদকৃষি ছড়িয়েছে শহর থেকে শহরে। সাত-আট বছর আগেও ওপর থেকে ঢাকা শহরকে দেখলে ধূসর এক শহর মনে হতো। এখন সবুজের পরিমাণ বেড়েছে। পাশাপাশি ছাদকৃষি ঘিরে নানা রকম কার্যক্রমের সূচনা হয়েছে। সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে ‘ছাদকৃষি’ কার্যক্রম।
‘ছাদকৃষি’ নিয়ে গবেষণার সূচনা করেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. শেখ আল আহসান নাহিদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মাহবুব ইসলাম। ধীরে ধীরে ছাদকৃষি হয়ে ওঠে একটা আন্দোলনের নাম।
এটিকে মানুষের মাঝে আরও বেশি পরিসরে ছড়িয়ে দিতে দাবি ওঠে, যাঁরা ছাদকৃষি করবেন সিটি করপোরেশন যেন তাঁদের হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ছাড় দেয়। মনে আছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের ১০ শতাংশ হোল্ডিং কর মওকুফের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশনের ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের এমন দাবি ছিল, যা ‘ছাদকৃষি’ অনুষ্ঠানে বহুবার তুলে ধরেছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামকেও আমি জানিয়েছি ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের দাবির প্রসঙ্গটি।
সারা পৃথিবী এখন সোচ্চার ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচারের বিষয়ে। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর জীব ও প্রাণের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এ কারণে কৃষিকেই সবচেয়ে বেশি মুখোমুখি হতে হচ্ছে পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে। এই বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে কৃষির সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। মাটি ও পানির সংকটের মধ্য থেকেই ফলিয়ে নিতে হবে কাঙ্ক্ষিত ফসল।
বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা পরিবর্তিত জলবায়ু মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়নে কৃষিকে যুক্ত করার এই অ্যাপ্রোচটিকে বলছে, ‘ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার’। এটি কোনো কৌশল নয়। বলা যায়, কৃষিকে টিকিয়ে রাখার সম্মিলিত প্রয়াস। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশ জোরেশোরে ছাদকৃষি ও নগরকৃষি নিয়ে তাদের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত।
তরুণদের জন্য ছাদকৃষি হতে পারে নতুন উদ্যোগের ক্ষেত্র। ছাদকৃষির এই প্রসারকে বাণিজ্যিক রূপ দিতে নেওয়া যায় নতুন নতুন উদ্যোগ। মহল্লার কিছু ছাদ বেছে নিয়ে তাতে অরগানিক ছাদকৃষি করে উৎপাদিত ফল-ফসল বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ফ্রান্সে দেখেছি রেস্তোরাঁর ছাদে উৎপাদিত তরতাজা শাক-সবজি দিয়ে খাবার তৈরি করে বিক্রি করতে। এতে গ্রাহক যেমন গাছ থেকে সবজি তোলার স্বাদ পাচ্ছেন, তেমনি পাচ্ছেন সতেজ সবজির স্বাদ।
এই প্রজন্মের প্রকৌশলবিদ্যার শিক্ষার্থীরাও নগরকৃষির বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তমাল অ্যাগ্রোপলিস নামে একটা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেছিলেন। বুয়েটের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশনে উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছিল। দেখলাম তাঁরাও স্থাপত্য কলাকৌশলে কৃষিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তবে নগর সবুজায়নে ছাদকৃষি বা নগরকৃষির বিকল্প নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহর বড় হতে থাকবে। শহরের আশপাশের কৃষিজমিতে গড়ে উঠবে শহরের স্থাপনা। তাই পৃথিবীর সবুজ বজায় রাখতে হলে শহরের স্থাপনার ছাদগুলোকে সবুজ করতে হবে। নিরাপদ খাদ্যের তাগিদেই শুধু নয়, পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ছাদকৃষি তথা নগরকৃষিকেও সমান গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই

আমি ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেছি এবং বড় হয়েছি। শৈশবের দেখা ঢাকা শহরের সঙ্গে বর্তমানের এই শহরকে মেলানো যায় না। কী অদ্ভুত সুন্দর ছিল এই শহর! আমার শৈশবে ঢাকা ছিল সবুজ এক শহর। সে সময় আমার বসবাসের এলাকা খিলগাঁও ছিল মূলত একটা গ্রাম। বিশ্ব রোডের ধারে বিশাল অরণ্যশোভিত নানা ধরনের বনজ ও ফলদ গাছগাছালির সমারোহে সবুজ এক বসতি ছিল। গাছপালায় এত ঘন ছিল যে সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়তেই অন্ধকার নেমে আসত।
বিকেলবেলায় শিয়ালের ডাক শোনা যেত। কাছেই ছিল তেজগাঁও বিমানবন্দর। বিমান ল্যান্ডিং বা উড়ে যাওয়ার সময় শব্দ শুনে আকাশের দিকে তাকালে গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে কখনো কখনো ঢাউস আকারের বিমান চোখে পড়ত ঠিকই, কিন্তু গাছের ডালপালা, পাতার কারণে পূর্ণ বিমান দেখাটা কখনো সম্ভব হতো না। গাছপালায় এতটাই ঘন ছিল প্রকৃতি। মনে পড়ে, রাস্তাঘাটে হাঁটার সময় খুব সাবধানে থাকতাম, এই বুঝি কোনো গাছের ডাল থেকে মৌমাছি তেড়ে আসে। প্রাকৃতিকভাবেই নানা ফুলের গাছে ভরা ছিল খিলগাঁও। ফলে মৌমাছি বাসা বাঁধত গাছে গাছে।
আমাদের খিলগাঁও উন্নয়নের ধারায় আসে কমলাপুর রেলস্টেশন নির্মাণের সময়। তখন শুনেছি এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রেলস্টেশন হবে কমলাপুর রেলস্টেশন। রেললাইনের পাশাপাশি হবে ১০০ ফুটের বড় রাস্তা। শহর উন্নয়নে সারি সারি গাছ কেটে ফেলা হলো। এভাবেই প্রয়োজনের তাগিদে শহর বড় হতে থাকল। বাড়তে থাকল মানুষ। বাড়তে থাকল স্থাপনা। বুড়িগঙ্গার টলটলে পানি আমরাও দেখেছি।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দূষিত হলো বুড়িগঙ্গা। ধূসর হলো ঢাকা শহর। আমরাই ঢাকাকে নষ্ট করে ফেলেছি। ঢাকাকে ফের বাসযোগ্য করে তুলতে হলে অবশ্যই সবুজ করতে হবে। এখানে যেভাবে বেড়ে উঠছে ইট-কাঠ-পাথরের জঞ্জাল, সেভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে না সবুজ।
পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো অনেক আগে থেকেই সবুজায়নের তাগিদ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যেমন জাপান ১৯৯৭ সালে কিয়োটো প্রটোকলের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব মোকাবিলার জন্য ভবন নির্মাণের সময় ছাদে ও কার্নিশে বাধ্যতামূলক প্রশস্ত বাগান গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়। তারা ছাদে সবুজের চাষ করাটাকে আইন পাস করে বাধ্যতামূলক করেছে। প্রতিটি বাড়ির ছাদে গাছ লাগানোকে করা হয়েছে অপরিহার্য। কারণ বসবাসের শহরটিকে সুরক্ষিত করতে হবে। গড়তে হবে অক্সিজেনের খামার।
মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তুলতে হবে। কিন্তু আমাদের এখানে সেই পরিবেশটা নেই। আমরা যখন বাড়ি বা অট্টালিকা তৈরি করি, তখন বাড়ির ছাদটা যে সবুজ হওয়া দরকার, এই চিন্তাটা আমাদের থাকে না। দুয়েকজন বাড়ি নির্মাণের সময় ছাদকৃষির বিষয়টি মাথায় রাখেন। বহুমুখী চিন্তা থেকেই তিনি বাড়ি নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে ছাদকৃষিতে সাজিয়ে তোলেন। গত কয়েক বছরে ঢাকাকে সবুজ নগরে পরিণত করতে একটা উদ্যোগ নিয়েছি। চ্যানেল আইয়ে ছাদকৃষি বিষয়ে অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে নগরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নিরন্তর।
শুধু যে শহর সবুজ হচ্ছে, তা নয়, নিরাপদ খাদ্যের প্রশ্নে অনেকেই ছাদকৃষিতে ভরসা করছেন। ইতিমধ্যে অনেকে ছাদকৃষির মাধ্যমে সফল হয়েছেন। আমি দেখেছি ছাদে লাউ, ঝিঙে, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজরসহ বিভিন্ন সবজিসহ আম, পেয়ারা, মাল্টা, আখ, ডালিম, জাম্বুরা, কামরাঙা, জামরুলসহ নানান ফলের চাষ করে পারিবারিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
চ্যানেল আইয়ে আমি প্রায় তিন শতাধিক ছাদকৃষি পর্ব প্রচার করেছি। দেখেছি অবসরে চলে যাওয়া সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, কিংবা ব্যবসায়ী-শিল্পপতি নিজেদের অবসর সময়টাকে ফলপ্রসূ করে তুলছেন ছাদে এক টুকরো ছাদকৃষির সঙ্গে যুক্ত হয়ে। তাঁরা বলেছেন, ছাদকৃষি দিয়েছে আত্মিক প্রশান্তি। যাঁর নিজস্ব ভবন ও ছাদ রয়েছে, তাঁরা নিজেদের ছাদে একস্তর বা দ্বিস্তরবিশিষ্ট ছাদকৃষি গড়ে তুলছেন।
আবার যাঁদের নিজস্ব বাড়ির ছাদ নেই, তাঁরা বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলে ছাদের একপাশে বা বারান্দায় গড়ে তুলেছেন নিজস্ব ছাদকৃষি। এই ছাদকৃষি দিয়ে তিনি খাদ্যের চাহিদা পূরণ করছেন, মিটছে পারিবারিক পুষ্টি, পাচ্ছেন মানসিক প্রশান্তি। পাশাপাশি পালন করছেন একটা জাতীয় দায়িত্ব। শহরকে সবুজায়নে সহায়তা করছেন। নগরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করছেন।
সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত বাড়ির মালিকেরা ছাদকৃষি করলে হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন। গত ১৪ জুন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানিয়েছেন। এটিকে আমি দেখছি আমাদের ছাদকৃষি আন্দোলনের প্রাথমিক অর্জন হিসেবে। এই ছাদকৃষি ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা রকম সংগঠন। ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের পারস্পরিক যোগাযোগের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। সবার চাওয়া ইট-কাঠ-পাথরের শহরটিকে বাসযোগ্য ও সবুজ শহরে পরিণত করা।
‘ছাদকৃষি’ প্রসঙ্গে সে সময়টাতে অনেকেই আমার বিরোধিতা করেছিলেন। বলছিলেন, ছাদকৃষিতে ছাদের ক্ষতি হবে এবং এটি একটি অসম্ভব বিষয়। ছাদকৃষির জন্য ছাদ ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, টব বা ড্রামে মাটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে—এ বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত আমি তুলে ধরি। পাশাপাশি তুলে ধরি, ছাদকৃষির বিভিন্ন কৌশল ও প্রযুক্তি।
এক দশকে দেশ-বিদেশের বহু ছাদকৃষি ও নগরকৃষির উদাহরণ আমি তুলে ধরেছি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ছাদকৃষি ছড়িয়েছে শহর থেকে শহরে। সাত-আট বছর আগেও ওপর থেকে ঢাকা শহরকে দেখলে ধূসর এক শহর মনে হতো। এখন সবুজের পরিমাণ বেড়েছে। পাশাপাশি ছাদকৃষি ঘিরে নানা রকম কার্যক্রমের সূচনা হয়েছে। সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে ‘ছাদকৃষি’ কার্যক্রম।
‘ছাদকৃষি’ নিয়ে গবেষণার সূচনা করেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. শেখ আল আহসান নাহিদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মাহবুব ইসলাম। ধীরে ধীরে ছাদকৃষি হয়ে ওঠে একটা আন্দোলনের নাম।
এটিকে মানুষের মাঝে আরও বেশি পরিসরে ছড়িয়ে দিতে দাবি ওঠে, যাঁরা ছাদকৃষি করবেন সিটি করপোরেশন যেন তাঁদের হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ছাড় দেয়। মনে আছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের ১০ শতাংশ হোল্ডিং কর মওকুফের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশনের ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের এমন দাবি ছিল, যা ‘ছাদকৃষি’ অনুষ্ঠানে বহুবার তুলে ধরেছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামকেও আমি জানিয়েছি ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের দাবির প্রসঙ্গটি।
সারা পৃথিবী এখন সোচ্চার ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচারের বিষয়ে। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর জীব ও প্রাণের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এ কারণে কৃষিকেই সবচেয়ে বেশি মুখোমুখি হতে হচ্ছে পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে। এই বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে কৃষির সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। মাটি ও পানির সংকটের মধ্য থেকেই ফলিয়ে নিতে হবে কাঙ্ক্ষিত ফসল।
বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা পরিবর্তিত জলবায়ু মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়নে কৃষিকে যুক্ত করার এই অ্যাপ্রোচটিকে বলছে, ‘ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার’। এটি কোনো কৌশল নয়। বলা যায়, কৃষিকে টিকিয়ে রাখার সম্মিলিত প্রয়াস। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশ জোরেশোরে ছাদকৃষি ও নগরকৃষি নিয়ে তাদের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত।
তরুণদের জন্য ছাদকৃষি হতে পারে নতুন উদ্যোগের ক্ষেত্র। ছাদকৃষির এই প্রসারকে বাণিজ্যিক রূপ দিতে নেওয়া যায় নতুন নতুন উদ্যোগ। মহল্লার কিছু ছাদ বেছে নিয়ে তাতে অরগানিক ছাদকৃষি করে উৎপাদিত ফল-ফসল বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ফ্রান্সে দেখেছি রেস্তোরাঁর ছাদে উৎপাদিত তরতাজা শাক-সবজি দিয়ে খাবার তৈরি করে বিক্রি করতে। এতে গ্রাহক যেমন গাছ থেকে সবজি তোলার স্বাদ পাচ্ছেন, তেমনি পাচ্ছেন সতেজ সবজির স্বাদ।
এই প্রজন্মের প্রকৌশলবিদ্যার শিক্ষার্থীরাও নগরকৃষির বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তমাল অ্যাগ্রোপলিস নামে একটা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেছিলেন। বুয়েটের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশনে উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছিল। দেখলাম তাঁরাও স্থাপত্য কলাকৌশলে কৃষিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তবে নগর সবুজায়নে ছাদকৃষি বা নগরকৃষির বিকল্প নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহর বড় হতে থাকবে। শহরের আশপাশের কৃষিজমিতে গড়ে উঠবে শহরের স্থাপনা। তাই পৃথিবীর সবুজ বজায় রাখতে হলে শহরের স্থাপনার ছাদগুলোকে সবুজ করতে হবে। নিরাপদ খাদ্যের তাগিদেই শুধু নয়, পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ছাদকৃষি তথা নগরকৃষিকেও সমান গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই
শাইখ সিরাজ

আমি ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেছি এবং বড় হয়েছি। শৈশবের দেখা ঢাকা শহরের সঙ্গে বর্তমানের এই শহরকে মেলানো যায় না। কী অদ্ভুত সুন্দর ছিল এই শহর! আমার শৈশবে ঢাকা ছিল সবুজ এক শহর। সে সময় আমার বসবাসের এলাকা খিলগাঁও ছিল মূলত একটা গ্রাম। বিশ্ব রোডের ধারে বিশাল অরণ্যশোভিত নানা ধরনের বনজ ও ফলদ গাছগাছালির সমারোহে সবুজ এক বসতি ছিল। গাছপালায় এত ঘন ছিল যে সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়তেই অন্ধকার নেমে আসত।
বিকেলবেলায় শিয়ালের ডাক শোনা যেত। কাছেই ছিল তেজগাঁও বিমানবন্দর। বিমান ল্যান্ডিং বা উড়ে যাওয়ার সময় শব্দ শুনে আকাশের দিকে তাকালে গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে কখনো কখনো ঢাউস আকারের বিমান চোখে পড়ত ঠিকই, কিন্তু গাছের ডালপালা, পাতার কারণে পূর্ণ বিমান দেখাটা কখনো সম্ভব হতো না। গাছপালায় এতটাই ঘন ছিল প্রকৃতি। মনে পড়ে, রাস্তাঘাটে হাঁটার সময় খুব সাবধানে থাকতাম, এই বুঝি কোনো গাছের ডাল থেকে মৌমাছি তেড়ে আসে। প্রাকৃতিকভাবেই নানা ফুলের গাছে ভরা ছিল খিলগাঁও। ফলে মৌমাছি বাসা বাঁধত গাছে গাছে।
আমাদের খিলগাঁও উন্নয়নের ধারায় আসে কমলাপুর রেলস্টেশন নির্মাণের সময়। তখন শুনেছি এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রেলস্টেশন হবে কমলাপুর রেলস্টেশন। রেললাইনের পাশাপাশি হবে ১০০ ফুটের বড় রাস্তা। শহর উন্নয়নে সারি সারি গাছ কেটে ফেলা হলো। এভাবেই প্রয়োজনের তাগিদে শহর বড় হতে থাকল। বাড়তে থাকল মানুষ। বাড়তে থাকল স্থাপনা। বুড়িগঙ্গার টলটলে পানি আমরাও দেখেছি।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দূষিত হলো বুড়িগঙ্গা। ধূসর হলো ঢাকা শহর। আমরাই ঢাকাকে নষ্ট করে ফেলেছি। ঢাকাকে ফের বাসযোগ্য করে তুলতে হলে অবশ্যই সবুজ করতে হবে। এখানে যেভাবে বেড়ে উঠছে ইট-কাঠ-পাথরের জঞ্জাল, সেভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে না সবুজ।
পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো অনেক আগে থেকেই সবুজায়নের তাগিদ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যেমন জাপান ১৯৯৭ সালে কিয়োটো প্রটোকলের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব মোকাবিলার জন্য ভবন নির্মাণের সময় ছাদে ও কার্নিশে বাধ্যতামূলক প্রশস্ত বাগান গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়। তারা ছাদে সবুজের চাষ করাটাকে আইন পাস করে বাধ্যতামূলক করেছে। প্রতিটি বাড়ির ছাদে গাছ লাগানোকে করা হয়েছে অপরিহার্য। কারণ বসবাসের শহরটিকে সুরক্ষিত করতে হবে। গড়তে হবে অক্সিজেনের খামার।
মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তুলতে হবে। কিন্তু আমাদের এখানে সেই পরিবেশটা নেই। আমরা যখন বাড়ি বা অট্টালিকা তৈরি করি, তখন বাড়ির ছাদটা যে সবুজ হওয়া দরকার, এই চিন্তাটা আমাদের থাকে না। দুয়েকজন বাড়ি নির্মাণের সময় ছাদকৃষির বিষয়টি মাথায় রাখেন। বহুমুখী চিন্তা থেকেই তিনি বাড়ি নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে ছাদকৃষিতে সাজিয়ে তোলেন। গত কয়েক বছরে ঢাকাকে সবুজ নগরে পরিণত করতে একটা উদ্যোগ নিয়েছি। চ্যানেল আইয়ে ছাদকৃষি বিষয়ে অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে নগরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নিরন্তর।
শুধু যে শহর সবুজ হচ্ছে, তা নয়, নিরাপদ খাদ্যের প্রশ্নে অনেকেই ছাদকৃষিতে ভরসা করছেন। ইতিমধ্যে অনেকে ছাদকৃষির মাধ্যমে সফল হয়েছেন। আমি দেখেছি ছাদে লাউ, ঝিঙে, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজরসহ বিভিন্ন সবজিসহ আম, পেয়ারা, মাল্টা, আখ, ডালিম, জাম্বুরা, কামরাঙা, জামরুলসহ নানান ফলের চাষ করে পারিবারিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
চ্যানেল আইয়ে আমি প্রায় তিন শতাধিক ছাদকৃষি পর্ব প্রচার করেছি। দেখেছি অবসরে চলে যাওয়া সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, কিংবা ব্যবসায়ী-শিল্পপতি নিজেদের অবসর সময়টাকে ফলপ্রসূ করে তুলছেন ছাদে এক টুকরো ছাদকৃষির সঙ্গে যুক্ত হয়ে। তাঁরা বলেছেন, ছাদকৃষি দিয়েছে আত্মিক প্রশান্তি। যাঁর নিজস্ব ভবন ও ছাদ রয়েছে, তাঁরা নিজেদের ছাদে একস্তর বা দ্বিস্তরবিশিষ্ট ছাদকৃষি গড়ে তুলছেন।
আবার যাঁদের নিজস্ব বাড়ির ছাদ নেই, তাঁরা বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলে ছাদের একপাশে বা বারান্দায় গড়ে তুলেছেন নিজস্ব ছাদকৃষি। এই ছাদকৃষি দিয়ে তিনি খাদ্যের চাহিদা পূরণ করছেন, মিটছে পারিবারিক পুষ্টি, পাচ্ছেন মানসিক প্রশান্তি। পাশাপাশি পালন করছেন একটা জাতীয় দায়িত্ব। শহরকে সবুজায়নে সহায়তা করছেন। নগরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করছেন।
সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত বাড়ির মালিকেরা ছাদকৃষি করলে হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন। গত ১৪ জুন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানিয়েছেন। এটিকে আমি দেখছি আমাদের ছাদকৃষি আন্দোলনের প্রাথমিক অর্জন হিসেবে। এই ছাদকৃষি ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা রকম সংগঠন। ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের পারস্পরিক যোগাযোগের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। সবার চাওয়া ইট-কাঠ-পাথরের শহরটিকে বাসযোগ্য ও সবুজ শহরে পরিণত করা।
‘ছাদকৃষি’ প্রসঙ্গে সে সময়টাতে অনেকেই আমার বিরোধিতা করেছিলেন। বলছিলেন, ছাদকৃষিতে ছাদের ক্ষতি হবে এবং এটি একটি অসম্ভব বিষয়। ছাদকৃষির জন্য ছাদ ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, টব বা ড্রামে মাটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে—এ বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত আমি তুলে ধরি। পাশাপাশি তুলে ধরি, ছাদকৃষির বিভিন্ন কৌশল ও প্রযুক্তি।
এক দশকে দেশ-বিদেশের বহু ছাদকৃষি ও নগরকৃষির উদাহরণ আমি তুলে ধরেছি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ছাদকৃষি ছড়িয়েছে শহর থেকে শহরে। সাত-আট বছর আগেও ওপর থেকে ঢাকা শহরকে দেখলে ধূসর এক শহর মনে হতো। এখন সবুজের পরিমাণ বেড়েছে। পাশাপাশি ছাদকৃষি ঘিরে নানা রকম কার্যক্রমের সূচনা হয়েছে। সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে ‘ছাদকৃষি’ কার্যক্রম।
‘ছাদকৃষি’ নিয়ে গবেষণার সূচনা করেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. শেখ আল আহসান নাহিদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মাহবুব ইসলাম। ধীরে ধীরে ছাদকৃষি হয়ে ওঠে একটা আন্দোলনের নাম।
এটিকে মানুষের মাঝে আরও বেশি পরিসরে ছড়িয়ে দিতে দাবি ওঠে, যাঁরা ছাদকৃষি করবেন সিটি করপোরেশন যেন তাঁদের হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ছাড় দেয়। মনে আছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের ১০ শতাংশ হোল্ডিং কর মওকুফের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশনের ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের এমন দাবি ছিল, যা ‘ছাদকৃষি’ অনুষ্ঠানে বহুবার তুলে ধরেছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামকেও আমি জানিয়েছি ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের দাবির প্রসঙ্গটি।
সারা পৃথিবী এখন সোচ্চার ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচারের বিষয়ে। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর জীব ও প্রাণের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এ কারণে কৃষিকেই সবচেয়ে বেশি মুখোমুখি হতে হচ্ছে পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে। এই বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে কৃষির সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। মাটি ও পানির সংকটের মধ্য থেকেই ফলিয়ে নিতে হবে কাঙ্ক্ষিত ফসল।
বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা পরিবর্তিত জলবায়ু মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়নে কৃষিকে যুক্ত করার এই অ্যাপ্রোচটিকে বলছে, ‘ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার’। এটি কোনো কৌশল নয়। বলা যায়, কৃষিকে টিকিয়ে রাখার সম্মিলিত প্রয়াস। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশ জোরেশোরে ছাদকৃষি ও নগরকৃষি নিয়ে তাদের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত।
তরুণদের জন্য ছাদকৃষি হতে পারে নতুন উদ্যোগের ক্ষেত্র। ছাদকৃষির এই প্রসারকে বাণিজ্যিক রূপ দিতে নেওয়া যায় নতুন নতুন উদ্যোগ। মহল্লার কিছু ছাদ বেছে নিয়ে তাতে অরগানিক ছাদকৃষি করে উৎপাদিত ফল-ফসল বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ফ্রান্সে দেখেছি রেস্তোরাঁর ছাদে উৎপাদিত তরতাজা শাক-সবজি দিয়ে খাবার তৈরি করে বিক্রি করতে। এতে গ্রাহক যেমন গাছ থেকে সবজি তোলার স্বাদ পাচ্ছেন, তেমনি পাচ্ছেন সতেজ সবজির স্বাদ।
এই প্রজন্মের প্রকৌশলবিদ্যার শিক্ষার্থীরাও নগরকৃষির বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তমাল অ্যাগ্রোপলিস নামে একটা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেছিলেন। বুয়েটের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশনে উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছিল। দেখলাম তাঁরাও স্থাপত্য কলাকৌশলে কৃষিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তবে নগর সবুজায়নে ছাদকৃষি বা নগরকৃষির বিকল্প নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহর বড় হতে থাকবে। শহরের আশপাশের কৃষিজমিতে গড়ে উঠবে শহরের স্থাপনা। তাই পৃথিবীর সবুজ বজায় রাখতে হলে শহরের স্থাপনার ছাদগুলোকে সবুজ করতে হবে। নিরাপদ খাদ্যের তাগিদেই শুধু নয়, পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ছাদকৃষি তথা নগরকৃষিকেও সমান গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই

আমি ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেছি এবং বড় হয়েছি। শৈশবের দেখা ঢাকা শহরের সঙ্গে বর্তমানের এই শহরকে মেলানো যায় না। কী অদ্ভুত সুন্দর ছিল এই শহর! আমার শৈশবে ঢাকা ছিল সবুজ এক শহর। সে সময় আমার বসবাসের এলাকা খিলগাঁও ছিল মূলত একটা গ্রাম। বিশ্ব রোডের ধারে বিশাল অরণ্যশোভিত নানা ধরনের বনজ ও ফলদ গাছগাছালির সমারোহে সবুজ এক বসতি ছিল। গাছপালায় এত ঘন ছিল যে সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়তেই অন্ধকার নেমে আসত।
বিকেলবেলায় শিয়ালের ডাক শোনা যেত। কাছেই ছিল তেজগাঁও বিমানবন্দর। বিমান ল্যান্ডিং বা উড়ে যাওয়ার সময় শব্দ শুনে আকাশের দিকে তাকালে গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে কখনো কখনো ঢাউস আকারের বিমান চোখে পড়ত ঠিকই, কিন্তু গাছের ডালপালা, পাতার কারণে পূর্ণ বিমান দেখাটা কখনো সম্ভব হতো না। গাছপালায় এতটাই ঘন ছিল প্রকৃতি। মনে পড়ে, রাস্তাঘাটে হাঁটার সময় খুব সাবধানে থাকতাম, এই বুঝি কোনো গাছের ডাল থেকে মৌমাছি তেড়ে আসে। প্রাকৃতিকভাবেই নানা ফুলের গাছে ভরা ছিল খিলগাঁও। ফলে মৌমাছি বাসা বাঁধত গাছে গাছে।
আমাদের খিলগাঁও উন্নয়নের ধারায় আসে কমলাপুর রেলস্টেশন নির্মাণের সময়। তখন শুনেছি এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রেলস্টেশন হবে কমলাপুর রেলস্টেশন। রেললাইনের পাশাপাশি হবে ১০০ ফুটের বড় রাস্তা। শহর উন্নয়নে সারি সারি গাছ কেটে ফেলা হলো। এভাবেই প্রয়োজনের তাগিদে শহর বড় হতে থাকল। বাড়তে থাকল মানুষ। বাড়তে থাকল স্থাপনা। বুড়িগঙ্গার টলটলে পানি আমরাও দেখেছি।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দূষিত হলো বুড়িগঙ্গা। ধূসর হলো ঢাকা শহর। আমরাই ঢাকাকে নষ্ট করে ফেলেছি। ঢাকাকে ফের বাসযোগ্য করে তুলতে হলে অবশ্যই সবুজ করতে হবে। এখানে যেভাবে বেড়ে উঠছে ইট-কাঠ-পাথরের জঞ্জাল, সেভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে না সবুজ।
পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো অনেক আগে থেকেই সবুজায়নের তাগিদ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যেমন জাপান ১৯৯৭ সালে কিয়োটো প্রটোকলের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব মোকাবিলার জন্য ভবন নির্মাণের সময় ছাদে ও কার্নিশে বাধ্যতামূলক প্রশস্ত বাগান গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়। তারা ছাদে সবুজের চাষ করাটাকে আইন পাস করে বাধ্যতামূলক করেছে। প্রতিটি বাড়ির ছাদে গাছ লাগানোকে করা হয়েছে অপরিহার্য। কারণ বসবাসের শহরটিকে সুরক্ষিত করতে হবে। গড়তে হবে অক্সিজেনের খামার।
মানুষের বসবাসের উপযোগী করে তুলতে হবে। কিন্তু আমাদের এখানে সেই পরিবেশটা নেই। আমরা যখন বাড়ি বা অট্টালিকা তৈরি করি, তখন বাড়ির ছাদটা যে সবুজ হওয়া দরকার, এই চিন্তাটা আমাদের থাকে না। দুয়েকজন বাড়ি নির্মাণের সময় ছাদকৃষির বিষয়টি মাথায় রাখেন। বহুমুখী চিন্তা থেকেই তিনি বাড়ি নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে ছাদকৃষিতে সাজিয়ে তোলেন। গত কয়েক বছরে ঢাকাকে সবুজ নগরে পরিণত করতে একটা উদ্যোগ নিয়েছি। চ্যানেল আইয়ে ছাদকৃষি বিষয়ে অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে নগরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নিরন্তর।
শুধু যে শহর সবুজ হচ্ছে, তা নয়, নিরাপদ খাদ্যের প্রশ্নে অনেকেই ছাদকৃষিতে ভরসা করছেন। ইতিমধ্যে অনেকে ছাদকৃষির মাধ্যমে সফল হয়েছেন। আমি দেখেছি ছাদে লাউ, ঝিঙে, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজরসহ বিভিন্ন সবজিসহ আম, পেয়ারা, মাল্টা, আখ, ডালিম, জাম্বুরা, কামরাঙা, জামরুলসহ নানান ফলের চাষ করে পারিবারিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
চ্যানেল আইয়ে আমি প্রায় তিন শতাধিক ছাদকৃষি পর্ব প্রচার করেছি। দেখেছি অবসরে চলে যাওয়া সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, কিংবা ব্যবসায়ী-শিল্পপতি নিজেদের অবসর সময়টাকে ফলপ্রসূ করে তুলছেন ছাদে এক টুকরো ছাদকৃষির সঙ্গে যুক্ত হয়ে। তাঁরা বলেছেন, ছাদকৃষি দিয়েছে আত্মিক প্রশান্তি। যাঁর নিজস্ব ভবন ও ছাদ রয়েছে, তাঁরা নিজেদের ছাদে একস্তর বা দ্বিস্তরবিশিষ্ট ছাদকৃষি গড়ে তুলছেন।
আবার যাঁদের নিজস্ব বাড়ির ছাদ নেই, তাঁরা বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলে ছাদের একপাশে বা বারান্দায় গড়ে তুলেছেন নিজস্ব ছাদকৃষি। এই ছাদকৃষি দিয়ে তিনি খাদ্যের চাহিদা পূরণ করছেন, মিটছে পারিবারিক পুষ্টি, পাচ্ছেন মানসিক প্রশান্তি। পাশাপাশি পালন করছেন একটা জাতীয় দায়িত্ব। শহরকে সবুজায়নে সহায়তা করছেন। নগরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করছেন।
সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত বাড়ির মালিকেরা ছাদকৃষি করলে হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন। গত ১৪ জুন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানিয়েছেন। এটিকে আমি দেখছি আমাদের ছাদকৃষি আন্দোলনের প্রাথমিক অর্জন হিসেবে। এই ছাদকৃষি ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা রকম সংগঠন। ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের পারস্পরিক যোগাযোগের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। সবার চাওয়া ইট-কাঠ-পাথরের শহরটিকে বাসযোগ্য ও সবুজ শহরে পরিণত করা।
‘ছাদকৃষি’ প্রসঙ্গে সে সময়টাতে অনেকেই আমার বিরোধিতা করেছিলেন। বলছিলেন, ছাদকৃষিতে ছাদের ক্ষতি হবে এবং এটি একটি অসম্ভব বিষয়। ছাদকৃষির জন্য ছাদ ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, টব বা ড্রামে মাটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে—এ বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত আমি তুলে ধরি। পাশাপাশি তুলে ধরি, ছাদকৃষির বিভিন্ন কৌশল ও প্রযুক্তি।
এক দশকে দেশ-বিদেশের বহু ছাদকৃষি ও নগরকৃষির উদাহরণ আমি তুলে ধরেছি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ছাদকৃষি ছড়িয়েছে শহর থেকে শহরে। সাত-আট বছর আগেও ওপর থেকে ঢাকা শহরকে দেখলে ধূসর এক শহর মনে হতো। এখন সবুজের পরিমাণ বেড়েছে। পাশাপাশি ছাদকৃষি ঘিরে নানা রকম কার্যক্রমের সূচনা হয়েছে। সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে ‘ছাদকৃষি’ কার্যক্রম।
‘ছাদকৃষি’ নিয়ে গবেষণার সূচনা করেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. শেখ আল আহসান নাহিদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মাহবুব ইসলাম। ধীরে ধীরে ছাদকৃষি হয়ে ওঠে একটা আন্দোলনের নাম।
এটিকে মানুষের মাঝে আরও বেশি পরিসরে ছড়িয়ে দিতে দাবি ওঠে, যাঁরা ছাদকৃষি করবেন সিটি করপোরেশন যেন তাঁদের হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ছাড় দেয়। মনে আছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের ১০ শতাংশ হোল্ডিং কর মওকুফের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশনের ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের এমন দাবি ছিল, যা ‘ছাদকৃষি’ অনুষ্ঠানে বহুবার তুলে ধরেছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামকেও আমি জানিয়েছি ছাদকৃষি উদ্যোক্তাদের দাবির প্রসঙ্গটি।
সারা পৃথিবী এখন সোচ্চার ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচারের বিষয়ে। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর জীব ও প্রাণের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এ কারণে কৃষিকেই সবচেয়ে বেশি মুখোমুখি হতে হচ্ছে পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে। এই বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে কৃষির সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। মাটি ও পানির সংকটের মধ্য থেকেই ফলিয়ে নিতে হবে কাঙ্ক্ষিত ফসল।
বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা পরিবর্তিত জলবায়ু মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়নে কৃষিকে যুক্ত করার এই অ্যাপ্রোচটিকে বলছে, ‘ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার’। এটি কোনো কৌশল নয়। বলা যায়, কৃষিকে টিকিয়ে রাখার সম্মিলিত প্রয়াস। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশ জোরেশোরে ছাদকৃষি ও নগরকৃষি নিয়ে তাদের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত।
তরুণদের জন্য ছাদকৃষি হতে পারে নতুন উদ্যোগের ক্ষেত্র। ছাদকৃষির এই প্রসারকে বাণিজ্যিক রূপ দিতে নেওয়া যায় নতুন নতুন উদ্যোগ। মহল্লার কিছু ছাদ বেছে নিয়ে তাতে অরগানিক ছাদকৃষি করে উৎপাদিত ফল-ফসল বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ফ্রান্সে দেখেছি রেস্তোরাঁর ছাদে উৎপাদিত তরতাজা শাক-সবজি দিয়ে খাবার তৈরি করে বিক্রি করতে। এতে গ্রাহক যেমন গাছ থেকে সবজি তোলার স্বাদ পাচ্ছেন, তেমনি পাচ্ছেন সতেজ সবজির স্বাদ।
এই প্রজন্মের প্রকৌশলবিদ্যার শিক্ষার্থীরাও নগরকৃষির বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তমাল অ্যাগ্রোপলিস নামে একটা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেছিলেন। বুয়েটের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশনে উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছিল। দেখলাম তাঁরাও স্থাপত্য কলাকৌশলে কৃষিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তবে নগর সবুজায়নে ছাদকৃষি বা নগরকৃষির বিকল্প নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহর বড় হতে থাকবে। শহরের আশপাশের কৃষিজমিতে গড়ে উঠবে শহরের স্থাপনা। তাই পৃথিবীর সবুজ বজায় রাখতে হলে শহরের স্থাপনার ছাদগুলোকে সবুজ করতে হবে। নিরাপদ খাদ্যের তাগিদেই শুধু নয়, পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ছাদকৃষি তথা নগরকৃষিকেও সমান গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আমি ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেছি এবং বড় হয়েছি। শৈশবের দেখা ঢাকা শহরের সঙ্গে বর্তমানের এই শহরকে মেলানো যায় না। কী অদ্ভুত সুন্দর ছিল এই শহর! আমার শৈশবে ঢাকা ছিল সবুজ এক শহর।
১৭ অক্টোবর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আমি ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেছি এবং বড় হয়েছি। শৈশবের দেখা ঢাকা শহরের সঙ্গে বর্তমানের এই শহরকে মেলানো যায় না। কী অদ্ভুত সুন্দর ছিল এই শহর! আমার শৈশবে ঢাকা ছিল সবুজ এক শহর।
১৭ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আমি ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেছি এবং বড় হয়েছি। শৈশবের দেখা ঢাকা শহরের সঙ্গে বর্তমানের এই শহরকে মেলানো যায় না। কী অদ্ভুত সুন্দর ছিল এই শহর! আমার শৈশবে ঢাকা ছিল সবুজ এক শহর।
১৭ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আমি ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেছি এবং বড় হয়েছি। শৈশবের দেখা ঢাকা শহরের সঙ্গে বর্তমানের এই শহরকে মেলানো যায় না। কী অদ্ভুত সুন্দর ছিল এই শহর! আমার শৈশবে ঢাকা ছিল সবুজ এক শহর।
১৭ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫