Ajker Patrika

স্বজনদের ভিড় ডিপোর সামনে

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড
আপডেট : ০৬ জুন ২০২২, ১১: ১০
স্বজনদের ভিড় ডিপোর সামনে

বাঁশখালীর পুঁইছড়ি এলাকার বয়োবৃদ্ধ জসিম উদ্দিনের ছেলে মো. রুবেল (৩০) কাজ করতেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কাশেম জুট মিল গেট এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে। তিনি ছয় বছরের বেশি সময় ধরে ডিপোর ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত। গত শনিবার রাত ৮টার দিকে কাজে আসেন রুবেল। রাত ১০টার দিকে পাশের কনটেইনারে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আগুন জ্বলতে থাকার পর হঠাৎ ডিপোর ভেতরে বিকট শব্দে কেমিক্যাল ভর্তি কনটেইনারের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পুরো বিএম ডিপোসহ আশপাশের ৫ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে।

বিএম ডিপোতেখবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছেলে রুবেলের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন বৃদ্ধ জসিম উদ্দীন। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টার পরও ব্যর্থ হলে অজানা আশঙ্কায় ডুকরে কেঁদে ওঠেন তিনি। ঘটনার রাতে মেয়ে জামাই জুলফিকার হোসেনকে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান তিনি। মেয়ে জামাইকে নিয়ে রাতভর চমেক হাসপাতালে একমাত্র সন্তানকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু তাতেও একমাত্র সন্তানের সন্ধান না পেয়ে ভোরে বিএম কন্টেইনার ডিপোর সামনে ছুটে যান। এরপর থেকে গতকাল রোববার বেলা ২টা পর্যন্ত ডিপো এলাকার সম্ভাব্য সব স্থানে ছেলেকে খুঁজে চলেন। পরিচিতজন, গণমাধ্যমকর্মী ও পুলিশসহ যাকে দেখছেন তাঁর কাছে ছুটে গিয়ে ছেলের কথা জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু কেউ সন্ধান দিতে পারেননি।

বিস্ফোরণে নিখোঁজ ডিপোর ইনচার্জ রুবেলের বোন জামাই জুলফিকার জানান, বিস্ফোরণে নিখোঁজ হওয়া সম্বন্ধীকে (বউয়ের বড় ভাই) খুঁজে পেতে শ্বশুরকে নিয়ে রাতভর চমেক হাসপাতালের বারান্দায় বারান্দায় ছুটে বেড়িয়েছেন তিনি। ভোর ৪টা পর্যন্ত খোঁজার পর হাসপাতালের সন্ধান না পেয়ে শ্বশুর সহ ছুটে আসেন ডিপোর সামনে। কিন্তু সেখানে রোববার বেলা ২টা পর্যন্ত অপেক্ষার পরও রুবেলকে খুঁজে পাননি তারা। অগত্যা তার সন্ধান পেতে আবারও হাসপাতালে ফিরে যান তাঁরা।

দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হন সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ফকিরহাট এলাকার বাসিন্দা বিএম কনটেইনার ডিপোর এলসিডি (ক্রেন) অপারেটর মনির হোসেন। তাঁর খোঁজ পেতে ডিপোর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁর বোন জামাই মোহাম্মদ আলী। তিনি জানান, গতকাল রাত আটটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে ডিপোতে আসেন মনির। কিন্তু বিস্ফোরণের পর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ রয়েছে। শনিবার রাত থেকে রোববার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত অপেক্ষার পরও তার সে শ্যালকের সন্ধান পাননি তারা।

স্বামীর খোঁজ পেতে ডিপোর সামনে শিশু সন্তান কোলে নিয়ে অপেক্ষমাণ রয়েছেন রেশমি আক্তার। তার সঙ্গে রয়েছেন শ্বশুর মো. কালু মিয়াও। রেশমি আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার স্বামী শাহজাহান দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বিএম ডিপোতে ট্রাক চালক হিসেবে কর্মরত রয়েছি। বিস্ফোরণের ঘটনার ঘন্টাদুয়েক আগে স্বামীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেছিলেন তিনি। কাজ শেষে বাসায় ফেরার সময় কোন বাজার করে আনতে হবে কিনা তাও জানতে চেয়েছিল সে। কিন্তু রাত ১১টায় বিস্ফোরণের পর থেকে তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত