আজাদুল আদনান, ঢাকা
দেশে বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। এর মধ্যে মাত্র ৬ শতাংশ, অর্থাৎ ৩৬০টি হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ নিবন্ধন আছে। বাকিগুলোর বড় অংশের নিবন্ধন মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। আর কোনো ধরনের নিবন্ধনই নেই ১৪ শতাংশ হাসপাতালের। নিয়ন্ত্রণহীনভাবেই চলছে এসব হাসপাতাল।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) ও ডেটা ফর ইম্প্যাক্টের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
১৯৮২ সালের দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ (রেগুলেশন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী একটি হাসপাতাল নিবন্ধন পেতে অন্তত সাতটি শর্ত পূরণ করতে হয়। শর্তগুলো হলো হাসপাতালে প্রতি শয্যার বিপরীতে ৮০ বর্গফুট জায়গা, ৩৬ ধরনের অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি, ১৪ ধরনের অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ, অন্তত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, আনুপাতিক হারে দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অস্ত্রোপচার কক্ষ এবং অস্ত্রোপচার-পরবর্তী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা থাকতে হবে।
কিন্তু আইসিডিডিআরবি ও ডেটা ফর ইম্প্যাক্টের গবেষণা বলেছে, বেসরকারি হাসপাতালগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশই মাত্র তিনটি শর্ত পূরণ করতে পেরেছে। এসব হাসপাতালে প্রতি শয্যার বিপরীতে ৮০ বর্গফুট জায়গা, অন্তত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অস্ত্রোপচার কক্ষ থাকলেও অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি, ওষুধ, অপারেশনের পর জীবাণু নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা এবং আনুপাতিক হারে দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই।
গতকাল প্রতিবেদনটি প্রকাশকালে আইসিডিডিআরবির ম্যাটার্নাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ ডিভিশনের (এমসিএইচডি) ঊর্ধ্বতন পরিচালক ডা. শামসুল আরেফিন বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিযান পরিচালনা করেছে। কিন্তু গবেষণাকালে যেসব সংকট পেয়েছি,
করোনার ফলে গত দুই বছরে তার সামান্য উন্নতি হলেও বড় অংশ আগের মতোই আছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২০ সালে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ১২টি সিটি করপোরেশন এবং ১০টি জেলার ২৯ উপজেলায় মোট ১ হাজার ১১৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই গবেষণা চালানো হয়। ২০২০ সালে গবেষণা প্রতিবেদন সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৮৬ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতালের মালিকেরা অন্তত একবার হলেও নিবন্ধন করেছিলেন। তবে বর্তমানে ৭৯ শতাংশ হাসপাতালেরই নিবন্ধনের মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। মাত্র ৬ শতাংশ হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ নিবন্ধন আছে। ১৪ শতাংশের কোনো ধরনের নিবন্ধন নেই। যেসব হাসপাতালের নিবন্ধনের মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে, তাদের মধ্যে মাত্র ৪৮ শতাংশ নবায়নের জন্য আবেদন করেছে। আর ৩১ শতাংশ আবেদনই করেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালের নিবন্ধনের মেয়াদ থাকে এক বছর। ফলে প্রতি বছর হাসপাতালের নিবন্ধন নবায়ন করতে হয়। কিন্তু সরকারি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে নিবন্ধন করা ও নবায়ন নিয়ে বেশ জটিলতার মুখে পড়তে হয়। গবেষণায় প্রতিবেদনে এই বিষয়টিও উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, অনেক হাসপাতালের মালিক নিবন্ধনের আবেদন না করেই ব্যবসা চালাচ্ছেন। বারবার তাগাদা দিয়েও তাঁদের নিবন্ধন করানো যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার সহকারী পরিচালক ডা. শেখ দাউদ আদনান বলেন, পুরোনো আইনে সহজে নিবন্ধন পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। ফলে যাঁরাই আবেদন করেছেন, তাঁরা নিবন্ধন পেয়েছেন। কিন্তু সেবার মান কেমন হবে তা নিয়ে সেই আইনে কিছু বলা নেই। যার ফলে প্রয়োজনের তুলনায় বহু প্রতিষ্ঠান হয়েছে, কিন্তু সেবার মান তেমন উন্নত হয়নি।
বিদ্যমান আইনে সংশোধনী আনার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেখানে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও সর্বোচ্চ ছয় মাস জেলের শাস্তির কথা বলা হয়েছে, যা বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আইসিডিডিআরবি ও ডেটা ফর ইম্প্যাক্টের গবেষণার ফলকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সম্প্রতি দুই দফায় নিবন্ধনহীন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধে সম্প্রতি অভিযানে নেমেছে সরকার। অভিযানে অনেক হাসপাতালকে জরিমানা করা হয়েছে। কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কিছু হাসপাতালের।
প্রাথমিক নিবন্ধন পেলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ নিবন্ধনের আওতায় আসেনি রাজধানীর চানখাঁরপুলের ঢাকা জেনারেল হাসপাতাল। গত ৪ জুন অভিযান চালিয়ে এর কার্যক্রম স্থগিত করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারপরও নির্দেশনা না মেনে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। গত সোমবার (২৯ আগস্ট) দ্বিতীয় দফায় হাসপাতালটি বন্ধ করে দিয়েছে অধিদপ্তর।
হাসপাতালের মালিক মো. মহিউদ্দিন বলেছেন, নিবন্ধন পেতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পেতে পেতে নতুন করে নবায়নের সময় চলে আসে।
রাজশাহী মহানগরীতে ১২০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ নিবন্ধনের আওতায় আছে মাত্র ২০টি। বাকি ১০০টির কেউ কেউ বছরের পর বছর নিবন্ধনের জন্য ঘুরছেন। কেউ কেউ নবায়নের জন্য আবেদন করেও সফল হননি। তারপরও চলছে এসব প্রতিষ্ঠান।
রাজশাহী বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সমিতির সহসভাপতি ড. ফয়সাল কবীর চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিবন্ধন পেতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমতি নিতে। এ ছাড়া নিতে হয় ট্রেড লাইসেন্স। এসব অনুমোদন নিতেই খরচ হয় অন্তত লাখ টাকা। সময় লাগে ছয় মাস থেকে ন্যূনতম এক বছর। অথচ সব কর্তৃপক্ষ যদি সমন্বয় করে এক জায়গায় হতো তাহলে এত ভোগান্তি হতো না।
গবেষক দলের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে এটা সত্য, কিন্তু তাদের নিয়মের মধ্যে আনতে প্রক্রিয়া আরও সহজ হওয়া দরকার।
প্রতিবেদনে ১৯৮২ সালের আইনের ওপর ভিত্তি করে ২০১৬ সালে জারি করা সংশোধিত নীতিমালার বাস্তবায়নে জোর তাগিদ দেওয়া হয়। নিবন্ধন নবায়ন না করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই বিষয়েও স্পষ্ট করার কথা বলা হয়।
বেসরকারি হাসপাতালের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান বেআইনিভাবে চলছে, তাদের কার্যক্রম বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে সরকার। একই সঙ্গে নিবন্ধন পেতে যে জটিলতা আছে, তা দূর করার চেষ্টা চলছে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, নতুন একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ আছে। এতে বেআইনিভাবে পরিচালিত কোনো হাসপাতালে নিবন্ধনধারী চিকিৎসক সেবা দিলে তাঁকেও শাস্তির আওতায় আনার বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে এসব আশ্বাসে ভরসা পাচ্ছেন না বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মের মধ্যে আনতে সরকারের সদিচ্ছার যথেষ্ট ঘাটতি আছে। সরকার যদি চাইত, তাহলে নিবন্ধনের ব্যবস্থা যত সহজ করা যায় করত।
দেশে বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। এর মধ্যে মাত্র ৬ শতাংশ, অর্থাৎ ৩৬০টি হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ নিবন্ধন আছে। বাকিগুলোর বড় অংশের নিবন্ধন মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। আর কোনো ধরনের নিবন্ধনই নেই ১৪ শতাংশ হাসপাতালের। নিয়ন্ত্রণহীনভাবেই চলছে এসব হাসপাতাল।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) ও ডেটা ফর ইম্প্যাক্টের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
১৯৮২ সালের দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ (রেগুলেশন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী একটি হাসপাতাল নিবন্ধন পেতে অন্তত সাতটি শর্ত পূরণ করতে হয়। শর্তগুলো হলো হাসপাতালে প্রতি শয্যার বিপরীতে ৮০ বর্গফুট জায়গা, ৩৬ ধরনের অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি, ১৪ ধরনের অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ, অন্তত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, আনুপাতিক হারে দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অস্ত্রোপচার কক্ষ এবং অস্ত্রোপচার-পরবর্তী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা থাকতে হবে।
কিন্তু আইসিডিডিআরবি ও ডেটা ফর ইম্প্যাক্টের গবেষণা বলেছে, বেসরকারি হাসপাতালগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশই মাত্র তিনটি শর্ত পূরণ করতে পেরেছে। এসব হাসপাতালে প্রতি শয্যার বিপরীতে ৮০ বর্গফুট জায়গা, অন্তত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অস্ত্রোপচার কক্ষ থাকলেও অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি, ওষুধ, অপারেশনের পর জীবাণু নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা এবং আনুপাতিক হারে দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই।
গতকাল প্রতিবেদনটি প্রকাশকালে আইসিডিডিআরবির ম্যাটার্নাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ ডিভিশনের (এমসিএইচডি) ঊর্ধ্বতন পরিচালক ডা. শামসুল আরেফিন বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিযান পরিচালনা করেছে। কিন্তু গবেষণাকালে যেসব সংকট পেয়েছি,
করোনার ফলে গত দুই বছরে তার সামান্য উন্নতি হলেও বড় অংশ আগের মতোই আছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২০ সালে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ১২টি সিটি করপোরেশন এবং ১০টি জেলার ২৯ উপজেলায় মোট ১ হাজার ১১৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই গবেষণা চালানো হয়। ২০২০ সালে গবেষণা প্রতিবেদন সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৮৬ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতালের মালিকেরা অন্তত একবার হলেও নিবন্ধন করেছিলেন। তবে বর্তমানে ৭৯ শতাংশ হাসপাতালেরই নিবন্ধনের মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। মাত্র ৬ শতাংশ হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ নিবন্ধন আছে। ১৪ শতাংশের কোনো ধরনের নিবন্ধন নেই। যেসব হাসপাতালের নিবন্ধনের মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে, তাদের মধ্যে মাত্র ৪৮ শতাংশ নবায়নের জন্য আবেদন করেছে। আর ৩১ শতাংশ আবেদনই করেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালের নিবন্ধনের মেয়াদ থাকে এক বছর। ফলে প্রতি বছর হাসপাতালের নিবন্ধন নবায়ন করতে হয়। কিন্তু সরকারি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে নিবন্ধন করা ও নবায়ন নিয়ে বেশ জটিলতার মুখে পড়তে হয়। গবেষণায় প্রতিবেদনে এই বিষয়টিও উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, অনেক হাসপাতালের মালিক নিবন্ধনের আবেদন না করেই ব্যবসা চালাচ্ছেন। বারবার তাগাদা দিয়েও তাঁদের নিবন্ধন করানো যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার সহকারী পরিচালক ডা. শেখ দাউদ আদনান বলেন, পুরোনো আইনে সহজে নিবন্ধন পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। ফলে যাঁরাই আবেদন করেছেন, তাঁরা নিবন্ধন পেয়েছেন। কিন্তু সেবার মান কেমন হবে তা নিয়ে সেই আইনে কিছু বলা নেই। যার ফলে প্রয়োজনের তুলনায় বহু প্রতিষ্ঠান হয়েছে, কিন্তু সেবার মান তেমন উন্নত হয়নি।
বিদ্যমান আইনে সংশোধনী আনার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেখানে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও সর্বোচ্চ ছয় মাস জেলের শাস্তির কথা বলা হয়েছে, যা বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আইসিডিডিআরবি ও ডেটা ফর ইম্প্যাক্টের গবেষণার ফলকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সম্প্রতি দুই দফায় নিবন্ধনহীন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধে সম্প্রতি অভিযানে নেমেছে সরকার। অভিযানে অনেক হাসপাতালকে জরিমানা করা হয়েছে। কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কিছু হাসপাতালের।
প্রাথমিক নিবন্ধন পেলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ নিবন্ধনের আওতায় আসেনি রাজধানীর চানখাঁরপুলের ঢাকা জেনারেল হাসপাতাল। গত ৪ জুন অভিযান চালিয়ে এর কার্যক্রম স্থগিত করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারপরও নির্দেশনা না মেনে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। গত সোমবার (২৯ আগস্ট) দ্বিতীয় দফায় হাসপাতালটি বন্ধ করে দিয়েছে অধিদপ্তর।
হাসপাতালের মালিক মো. মহিউদ্দিন বলেছেন, নিবন্ধন পেতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পেতে পেতে নতুন করে নবায়নের সময় চলে আসে।
রাজশাহী মহানগরীতে ১২০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ নিবন্ধনের আওতায় আছে মাত্র ২০টি। বাকি ১০০টির কেউ কেউ বছরের পর বছর নিবন্ধনের জন্য ঘুরছেন। কেউ কেউ নবায়নের জন্য আবেদন করেও সফল হননি। তারপরও চলছে এসব প্রতিষ্ঠান।
রাজশাহী বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সমিতির সহসভাপতি ড. ফয়সাল কবীর চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিবন্ধন পেতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমতি নিতে। এ ছাড়া নিতে হয় ট্রেড লাইসেন্স। এসব অনুমোদন নিতেই খরচ হয় অন্তত লাখ টাকা। সময় লাগে ছয় মাস থেকে ন্যূনতম এক বছর। অথচ সব কর্তৃপক্ষ যদি সমন্বয় করে এক জায়গায় হতো তাহলে এত ভোগান্তি হতো না।
গবেষক দলের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে এটা সত্য, কিন্তু তাদের নিয়মের মধ্যে আনতে প্রক্রিয়া আরও সহজ হওয়া দরকার।
প্রতিবেদনে ১৯৮২ সালের আইনের ওপর ভিত্তি করে ২০১৬ সালে জারি করা সংশোধিত নীতিমালার বাস্তবায়নে জোর তাগিদ দেওয়া হয়। নিবন্ধন নবায়ন না করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই বিষয়েও স্পষ্ট করার কথা বলা হয়।
বেসরকারি হাসপাতালের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান বেআইনিভাবে চলছে, তাদের কার্যক্রম বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে সরকার। একই সঙ্গে নিবন্ধন পেতে যে জটিলতা আছে, তা দূর করার চেষ্টা চলছে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, নতুন একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ আছে। এতে বেআইনিভাবে পরিচালিত কোনো হাসপাতালে নিবন্ধনধারী চিকিৎসক সেবা দিলে তাঁকেও শাস্তির আওতায় আনার বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে এসব আশ্বাসে ভরসা পাচ্ছেন না বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মের মধ্যে আনতে সরকারের সদিচ্ছার যথেষ্ট ঘাটতি আছে। সরকার যদি চাইত, তাহলে নিবন্ধনের ব্যবস্থা যত সহজ করা যায় করত।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
৩ দিন আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪