Ajker Patrika

জমেনি বিসিক শিল্পপণ্য মেলা , দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতা

ভোলা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১১: ১০
জমেনি বিসিক শিল্পপণ্য মেলা , দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতা

ভোলায় ১৫ দিনেও জমে ওঠেনি বিসিক শিল্প পণ্যমেলা। প্রবেশমূল্য না থাকলেও মেলায় উপচে পড়া ভিড় নেই। বিকিকিনিও কম। মেলায় আসা অধিকাংশ দর্শনার্থী শুধু পণ্য যাচাই-বাছাই করে চলে যাচ্ছেন। অনেকে আবার শিশুদের বিভিন্ন রাইডারে চড়িয়ে বাড়ি ফিরছেন। মেলায় পণ্যের দামে অসন্তুষ্ট ক্রেতারা।

রমজান মাসের কারণে শুরু থেকে দর্শনার্থী কিছু কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে সেভাবে শুরু হয়নি বিক্রি। তবে, ধীরে ধীরে মেলায় ক্রেতাসমাগম ও বিক্রি বাড়বে বলেও আশা করছেন তাঁরা।

রমজান মাস, পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও করোনায় মানুষের আর্থিক সংকটের কারণে মেলা জমে ওঠেনি বলে মনে করছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।

জানা গেছে, মেলায় বিভিন্ন দেশীয় পণ্য, হস্ত শিল্প, পাটের ব্যাগ, গার্মেন্টস, খেলনার দোকান রয়েছে। রয়েছে খাবারের স্টলও। প্রতিদিন মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে শুরুর ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও মেলার স্টল ও প্যাভিলিয়ন পুরোপুরি সাজানো হয়নি। এখনো চলছে গোছানোর কাজ।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, দুজন শ্রমিক রশি দিয়ে তেরপল টাঙাচ্ছেন।

আবদুল কালাম নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘মেলায় তেরপল টাঙানোর কাম করতাছি। এখনো টুকটাক অনেক কাম বাকি আছে। কিছু স্টল তৈরির কামও বাকি রয়েছে।’

মেলায় দর্শনার্থীদের সংখ্যাও কম। কিছু কিছু দর্শনার্থী এলেও তাঁদের অধিকাংশ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী।

মেলায় ঘুরতে আসা স্কুলছাত্রী ইশরাত জাহান ইভা জানায়, ‘আমিমেলায় ঘুরতে এসেছি, কোনো কিছু কিনতে নয়। মেলায় এসে নৌকায় চড়েছি। এ ছাড়া মেলায় সব পণ্যের দাম বেশি। মেলায় একটি ব্লাশের দাম চেয়েছে ৩৫০ টাকা। অথচ সেই ব্লাশ আমি ভোলা শহরের জিয়া সুপার মার্কেটের কোরিয়া এন্টারপ্রাইজ থেকে ক্রয় করেছি ২৮০ টাকায়।’

মেলায় পণ্যের অতিরিক্ত দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আসাদ বলেন, ‘মেয়ের জন্য একটি পণ্য কিনেছি ৩০ টাকায়। অথচ সেই পণ্যের দাম ভোলা শহরের দোকানে ২০ টাকা। মেলায় বিভিন্ন পণ্যের দাম শুনে আমি থমকে যাচ্ছি।’

বিভিন্ন পণ্যের দামের বিষয়ে ভোলা শহরের যুগিরঘোল এলাকার গৃহিণী মুজিযা রহমান পূণ্য বলেন, ‘মেলা থেকে ছেলের জন্য একটি গাড়ি কিনেছি ২০০ টাকায়। এই গাড়ি ভোলা শহরের যে কোনো দোকানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়।’

পণ্যের দাম বেশি নেওয়ার কথা স্বীকার করে স্টল মালিক ফজলে রাব্বি বলেন, ‘মেলায় স্টল বরাদ্দ নেওয়াসহ বিভিন্ন খরচ রয়েছে। তাই আমাদের একটু বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে।’

মেলায় স্টল বরাদ্দ নেওয়া বরিশালের গৌরনদী এলাকার ব্যবসায়ী শাকিল আচারের স্বত্বাধিকারী মো. শাকিল বলেন, ‘মেলায় ক্রেতা কম। বেচাকেনাও কম। রমজান মাসের কারণে বিক্রি কম হচ্ছে। গত ১৫ দিনে মাত্র ৪-৫ হাজার টাকার আচার বিক্রি হয়েছে। অথচ মেলায় সাধারণত ১৫ দিনে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকার আচার বিক্রি হওয়ার কথা।’

আল্লাহর দান ক্রোকারির স্বত্বাধিকারী আরমান বলেন, ‘মেলায় বেচাকেনা ভালো না। একদিকে রোজা অন্যদিকে পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় বেচাকেনা কম। প্রতিদিন মাত্র ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। কিন্তু মেলায় প্রতিদিন ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হওয়ার কথা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গত ২৮ মার্চ থেকে ভোলা সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জেলা বিসিকের আয়োজনে শুরু হয় মাসব্যাপী বিসিক শিল্প পণ্য মেলা। এ মেলায় স্টল রয়েছে প্রায় ৭৫ টি।

এ বিষয়ে ভোলা বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক এস এম সোহাগ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, ‘রমজান মাস, পণ্যের দাম বেশি ও করোনার কারণে ১৫ দিনেও মেলায় বিক্রি জমেনি এটা সত্য। তবে, আশা করা হচ্ছে ঈদের আগেই বেচাকেনা বাড়বে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত