Ajker Patrika

মেয়াদ বেড়েছে ৫ দফা কাজ হয়েছে ৭৫%

মিনহাজ তুহিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ০২
মেয়াদ বেড়েছে ৫ দফা  কাজ হয়েছে ৭৫%

পাঁচ দফায় ৬ মাস করে মেয়াদ বাড়ানোর পরও শেষ হয়নি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবনের নির্মাণকাজ। ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২২ মাসের মধ্যে ভবনটির কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে ৬২ মাস পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৭৫ শতাংশ। পঞ্চম দফায় মেয়াদ বাড়ানোর পর গত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) ছৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঠিকাদার ভবন বুঝিয়ে দিতে পারেননি। এখন পর্যন্ত ৭৫ থেকে ৭৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কাজ পরিদর্শন করেছি। তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের দ্বিতীয় ভবন (ষষ্ঠ একাডেমিক ভবন) নির্মাণে ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট দরপত্র আহ্বান করা হয়। জি কে বি এল লিড ফার্ম হিসেবে ও দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড পার্টনার ইনচার্জ হিসেবে দরপত্রে অংশ নেয়। ওই কাজের জন্য যৌথভাবে তারা প্রথম নিম্ন দরদাতা হয়। তাদের ৭৫ কোটি টাকার এই কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর। ২০১৮ সালের নভেম্বরে নির্মাণকাজ শেষের সময় নির্ধারিত ছিল।

দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স-জিকেবিএল (জয়েন্ট ভেনচার) নামে কাজ শুরু হলেও দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্সই শুরু থেকে কাজটি করছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল, একই বছরের ৩০ জানুয়ারি এবং ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল ও একই বছর ৩১ ডিসেম্বর চার দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৪ জুলাই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। গত বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়। কিন্তু সর্বশেষ বর্ধিত সময়ে কাজ হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। অথচ প্রতিবারই পরবর্তী মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ করার লিখিত অঙ্গীকারনামা দেয় দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স।

নির্মাণকাজটি বর্তমানে তদারক করছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল মনসুর ওরফে জামশেদ। তিনি বলেন, ‘কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। কিছু ফিনিশিং বাকি আছে। সেগুলো শেষ হলে ভবন বুঝিয়ে দেব।’ তবে কত শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি তা বলতে পারেননি।

তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন ভবের বিভিন্ন কক্ষে এখনো থাই গ্লাস, দরজা, টয়লেটের সরঞ্জাম লাগানো হয়নি। জানালার গ্রিল লাগানো, ইলেকট্রিক ও টাইলসের কাজ চলছে। চারদিকে ময়লা ও পরিত্যক্ত নির্মাণ সামগ্রীর স্তূপ দেখা যায়। নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন শ্রমিকেরা বলছেন, অবশিষ্ট কাজ শেষ হতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে।

শ্রেণিকক্ষ সংকট: এ দিকে ভবনটির নির্মাণকাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়ায় শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে নানা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন অনুষদের ৬ বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিভাগগুলো হচ্ছে পালি, সংস্কৃত, ফারসি, বাংলাদেশ স্টাডিজ, সংগীত এবং আধুনিক ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউট। এর মধ্যে বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের কোনো শ্রেণিকক্ষই নেই। সংগীত ও আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের জন্য রয়েছে একটি করে, পালি ও সংস্কৃত বিভাগের জন্য রয়েছে মাত্র ৩টি করে কক্ষ। কিছুদিনের মধ্যে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠদান শুরু হলে ভোগান্তি মাত্রা বেড়ে যাবে—এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘কয়েক দিনের মধ্যে যদি তারা (ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান) ভবন বুঝিয়ে দিতে না পারে তাহলে আমরা তাদের ঠিকাদারি বাতিল করব। জামানতও জব্দ করা হবে। এ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে এনসিপির শীর্ষ ৫ নেতা হঠাৎ কক্সবাজারে কেন

কক্সবাজারে পিটার হাসের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের বৈঠকের খবর, ‘গুজব’ বললেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

জুলাই ঘোষণাপত্র: গণ-অভ্যুত্থানের দলিলে যা যা রয়েছে

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের শুল্ক অনেক বাড়িয়ে দেব: ট্রাম্পের হুমকি

যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটন ভিসা পেতে লাগতে পারে ১১ লাখ টাকার জামানত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত