Ajker Patrika

কুসিক নির্বাচন

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৫ জুন ২০২২, ১৩: ০৬
কুসিক নির্বাচন

রাত পোহালেই কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) নির্বাচন। যদিও রাজধানীর বাইরে একটি ছোট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন, তবু এই নির্বাচন ঘিরে কৌতূহল রয়েছে সারা দেশের

রাজনীতিসচেতন মহলের। কেন এই কৌতূহল? একাধিক কারণ আছে:

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীন এটাই প্রথম কিছুটা বড় নির্বাচন। কুমিল্লার নির্বাচন তাই নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি পরীক্ষা। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যাপারে দেশে যে হতাশা তৈরি হয়েছে, তা দূর করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক কিছু এই সিটি নির্বাচনে কমিশন তার থলিতে পুরতে পারে কি না, তা পরখ করা হবে কুমিল্লায়।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠনের পর ২০১২ ও ২০১৭ সালে কুসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করতে পারেননি। অথচ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতেও পরাজয় হয়েছে দলীয় প্রার্থীর। এবার কি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আগের গ্লানি মোচনে সক্ষম হবেন?

প্রথমবার বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে এবং দ্বিতীয়বার বিএনপির মনোনয়ন না নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দুইবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন মনিরুল হক সাক্কু। তবে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি দলীয় রাজনীতিতে একেবারেই সক্রিয় ছিলেন না। আওয়ামী লীগের এমপি ‘বাহাউদ্দিনের লোক’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। এবার তাঁর সামনে চ্যালেঞ্জ শুধু নৌকা নয়, ঘোড়াও। ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন স্থানীয় বিএনপির আরেক নেতা নিজামউদ্দিন। নিজামউদ্দিনকে মোকাবিলা করে মনিরুল হক জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে হ্যাটট্রিক করেন কি না, সেটা জানা যাবে এক দিন পরই।

আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন ১৪ জন। মনোনয়নপ্রাপ্তিতে এবার তরুণ নেতৃত্ব অগ্রাধিকার পাবেন বলে শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত দলের হাইকমান্ড স্থানীয় সংসদ সদস্যের পছন্দের প্রার্থী আরফানুল হককে মনোনয়ন দেওয়ায় তাঁর বিজয়ের মূল ভূমিকা পালন করতে হবে সংসদ সদস্য এ কে এম বাহাউদ্দিনকেই। বাহাউদ্দিনের আশীর্বাদ ছাড়া কুমিল্লায় ভোটে জেতা সম্ভব নয় বলে একটি কথা চালু আছে। সেটার সত্যতাও যাচাই হবে বুধবার।

কুসিক নির্বাচন সম্পর্কিত খবর জানতে - এখানে ক্লিক করুন

বিএনপি ধারার দুজন প্রার্থী থাকার সুবিধা যেমন আরফানুল হক পাবেন, তেমনি তাঁর কিছু সমস্যাও আছে। অ্যান্টি-এস্টাবলিশমেন্ট সেন্টিমেন্ট, মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অসহযোগিতা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ইত্যাদি বিষয় নৌকা মার্কার প্রার্থীর জন্য প্রতিকূলতা তৈরি করতে পারে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় ইস্যুর চেয়ে স্থানীয় ইস্যু কতটা প্রাধান্য পায়, দেখার বিষয় সেটাও। গত দুই মেয়াদের মেয়রের কর্মকাণ্ড এবং আগামী নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি ভোটারদের কতটুকু প্রভাবিত করে, তা-ও একটি বিষয় হবে।

সব থেকে বড় কথা, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে কি না। ‘ডাকাত সরাতে পারলে দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব’ বলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ এক দিন আগে যে মন্তব্য করেছেন, সেটা ধরেই বলতে হয়, ‘ডাকাত’ সরানোর হিম্মত নির্বাচন কমিশনের আছে কি না, তার পরীক্ষাও হবে কুমিল্লায়।

কুসিক নির্বাচন ২০২২ সম্পর্কিত পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত