জাহীদ রেজা নূর

বইমেলা আসছে। করোনার প্রতাপে দুই বছর বইমেলা ছিল কিছুটা হতোদ্যম। এবার তোড়জোড় করেই শুরু হচ্ছে মেলা। আগামী
১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা চলবে।
মেলা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে জল্পনা-কল্পনা। কাগজসহ প্রকাশনাশিল্পের আনুষঙ্গিক অনেক কিছুর দাম বাড়ার কারণে প্রকাশকেরা মনে করছেন, এবার বইয়ের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। বাড়তি দামে পাঠকেরা বই কিনবেন কি না, তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি তরুণ প্রতিভাবান প্রকাশকেরাও এবার নতুন, ভালো বই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন।
প্রচারের একটা ধরন দেখতে পাচ্ছি, যা নতুন নয় যদিও, কিন্তু এবার হচ্ছে তার বহুল ব্যবহার। লেখকেরা ফেসবুকে নিজের বইয়ের প্রচ্ছদ প্রকাশ করে প্রি-অর্ডারের জন্য আহ্বান রাখছেন। এতে কতটা কাজ হচ্ছে জানি না, কিন্তু বই সম্পর্কে একটা ধারণা দিয়ে পাঠককে আকৃষ্ট করার জন্য এই পথ মন্দ নয়। ফেসবুক এখন অনেক বড় বড় সংবাদমাধ্যমের চেয়েও বেশি নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে কারও কারও কাছে।
বলতে হয়, গণমাধ্যম এখন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সাহসী নয়, বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারে অজস্র ভুল-মহাভুলের পরেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফেসবুকই মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে। এমনও দেখা গেছে, ফেসবুকে জনমতের প্রকাশ দেখে সরকারও কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বা পাল্টাতে বাধ্য হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বলা যায়, প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমগুলোর চেয়ে ফেসবুক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। সেই ফেসবুককে প্রচারের কাজে ঠিকভাবে লাগাতে পারলে বই বিক্রির ক্ষেত্রে তা ভূমিকা রাখতেই পারে।
একটি ব্যাপারে কথা না বললেই নয়। এবার মেলায় আদর্শ প্রকাশনী বলে একটি প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এই প্রকাশনীর তিনটি বইয়ে নাকি সরকারবিরোধী প্রচারণা আছে। কথা হলো, কেউ কি বইগুলো পড়ে দেখেছেন? যেকোনো বইয়ে যে কারও বিরুদ্ধে সমালোচনা থাকতেই পারে, তাতে সে বইটি নিষিদ্ধ করতে হবে কেন? এইটুকু সহিষ্ণুতা থাকা উচিত। সরকারবিরোধিতা থাকলে কি কোনো বই নিষিদ্ধ করা যায়? সমালোচনার উত্তর দেওয়ার মতো সাহস কি সরকারের নেই? এ বিষয় নিয়ে বড় করে আলোচনা হতে হবে।নইলে ভবিষ্যতে লেখালেখির ক্ষেত্রে সেন্সরের ভূত এসে গলা টিপে ধরতে পারে।
দুই. দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণে দেখেছি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রকাশকেরা ভালো বই লুফে নেন। তবে ভালো বই গ্রহণ করার আগে তাঁরা লেখকের ‘ধার’ ও ‘ভার’ পরীক্ষা করে নেন। একটি বই ভালো হলেই হয় না, সেই বই কে লিখেছেন, সেটাও বিবেচনার বিষয়। যদি লেখক তেমন পরিচিত না হন, তবে তিনি ভালো লিখলেও সেই বই পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চল আমাদের দেশে নেই বললেই চলে।বলতে চাইছি, বেশির ভাগ প্রকাশনালয়ে এমন কোনো সম্পাদকমণ্ডলী নেই, যাঁরা পাণ্ডুলিপি যাচাই-বাছাই করে তা ছাপার যোগ্য কি অযোগ্য সেই মত দিতে পারেন। এমন কোনো সম্পাদকমণ্ডলী নেই, যাঁরা একটি বইকে সুসম্পাদিত করে তারপর বাজারে আনার ব্যবস্থা করেন। এই ঘাটতিটা রয়েই গেছে। ভালো বই এবং নামী লেখক হলে তো সোনায় সোহাগা। কিন্তু ভালো বই ও অনামী লেখককে চিনে নেওয়ার প্রবণতা না থাকলে নতুন লেখক উঠে আসবে না।
লেখকের জনপ্রিয়তা প্রকাশকের মুখে হাসি ফোটায় বটে, বইয়ের কাটতি বাড়ায় বটে, কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। ফিকশন একসময় বই কেনাকাটায় সবচেয়ে বড় জায়গাটা নিয়ে নিয়েছিল। হুমায়ূন আহমেদের বই কেনার জন্য পাঠকের যে বিশাল সারি দেখা যেত, সে কথা নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যায়নি। তেমনি মারজুক রাসেল কিংবা সাদাত হোসাইনের বইয়ের জন্যও এখন পাঠকের বড় সারি দেখা গেছে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ইমদাদুল হক মিলন কিংবা আনিসুল হকও স্টলে গেলে তাঁদের দস্তখত নেওয়ার জন্য পাঠকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়। এ রকম লেখক নিশ্চয়ই আরও আছেন। কবিতাপ্রেমী বাঙালি এখন কবিতার বই কেন কম পড়ে, সেটাও ভাববার বিষয় বটে।আজকাল ইতিহাস, স্মৃতিকথা ধরনের বইয়ের পাঠকও বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের ইতিহাসের নানা জায়গায় যে শূন্যতাগুলো তৈরি হয়েছে, যে ব্যাখ্যাগুলো দাঁড় করানো হয়েছে, তার বাইরেও যে সত্য রয়েছে, সে কথা জানার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠছে মানুষ। বিশেষ করে বাঙালির ইতিহাস বা বাংলার ইতিহাসের নানা কিছু নিয়ে আগ্রহ জাগছে। এই ভূখণ্ডে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক, সাতচল্লিশে দেশভাগের সময়কার নেতাদের পুনর্মূল্যায়ন, ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণ, ভাষা আন্দোলনের অজানা অধ্যায়, আইয়ুব খানের সামরিক শাসন-পরবর্তী ঘটনাবলি, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন নিয়ে রচিত হচ্ছে নতুন নতুন বই। স্বাধীনতা-পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর শাসনামল, জিয়াউর রহমানের শাসনামল হয়ে এরশাদ, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়েও পাঠকের আগ্রহ আছে। সেই সব বইয়ের কাটতিও রয়েছে।
আমাদের এদিককার মানুষের মধ্যে স্মৃতিকথা লেখার চল নেই বললেই চলে। অথচ খ্যাতিমান মানুষেরা যদি স্মৃতিকথা লিখে যেতেন, তাহলে আমরা আমাদের প্রবহমান সময়কে ধারাবাহিকভাবে তুলে আনতে পারতাম। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতিক্ষেত্রের প্রথিতযশা মানুষদের আত্মজীবনী আমাদের ঋদ্ধ করতে পারত। খুঁজতে গিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল মনসুর আহমদ, শেখ মুজিবুর রহমান, অলি আহাদ, মোহাম্মদ তোয়াহার মতো মানুষের আত্মজীবনী (পূর্ণ অথবা খণ্ডিত) পাওয়া গেছে। কামরুদ্দীন আহমদের বিখ্যাত চারটি বই (‘বাঙালি মধ্যবিত্তের আত্মবিকাশ’, ‘বাংলার এক মধ্যবিত্তের আত্মকাহিনী’, ‘পূর্ব বাংলার সমাজ ও রাজনীতি’, ‘স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয় এবং অতঃপর’) আত্মজীবনী না হলেও তাতে আত্মজীবনীর রেশ পাওয়া যায় এবং তাতে সেই সময়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক আবহ ফুটে ওঠে।
আব্বাসউদ্দীন আহমদ, পঙ্কজ মল্লিক, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, বিনোদিনী দাসী, উত্তম কুমার, সলিল দত্ত, সুনির্মল বসুসহ সংস্কৃতিজগতের অনেকের নামই বলা যাবে, যাঁরা আত্মজীবনী লিখেছেন। চিত্রনায়িকা কবরীও তাঁর আত্মজীবনীর একটি অংশ লিখেছিলেন। আবদুল আহাদ, সন্জীদা খাতুন, ফেরদৌসী মজুমদারও লিখেছেন। আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথার রয়েছে অপরিসীম মূল্য। গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি এই বইগুলোর কদর বাড়লে ভালো।
তিন. ১৯৭১ সাল নিয়ে লেখালেখি আরও বেশি হওয়া দরকার। স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন, তাঁদের ব্যাপারে আরও ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করা দরকার। দুই সশস্ত্র সেনাদলের সম্মুখ লড়াই কিংবা গেরিলা লড়াই দিয়েই যদি এই মহান মুক্তিযুদ্ধকে মূল্যায়ন করা হয়, তাহলে ইতিহাসের একটি খণ্ডিত অংশের সঙ্গে পরিচিত হয় মানুষ।অবরুদ্ধ নগরীতে বসে যাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন, যাঁরা বিভিন্ন গ্রামে-নগরে-বন্দরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে কাজ করেছেন, অন্তত নিজের আদরের মোরগটি কেটে মুক্তিযোদ্ধাদের একবেলা খাইয়েছেন, যাঁরা খেলার মাঠে কিংবা সংস্কৃতির মাঠে অবদান রেখেছেন, তাঁদের কি আমরা মুক্তিযোদ্ধা বলব না? খেতাবগুলো কেন বহুলাংশে অস্ত্রধারী যোদ্ধারাই পেলেন, তা নিয়ে এখন ভেবে দেখারও অবকাশ আছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে বই হতেই পারে। সম্প্রতি একাত্তর সালে শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেনের সাংবাদিকতার বিষয়ে গবেষণালব্ধ একটি বই লেখা হয়েছে, সেই বইয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেকেই বলে থাকেন, ইত্তেফাক সে সময় সামরিক সরকারের দালালি করেছিল। এই বয়ান যাদের মুখে মুখে, তাদের মধ্যে রয়েছেন চীনপন্থী বাম, পাকিস্তানপন্থী ডানেরা। আর বিস্ময়ের ব্যাপার, জাতীয়তাবাদীরাও এ ব্যাপারে থাকেন মৌন। ‘জাহান্নামের আগুনে বসিয়া’ বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে একাত্তরে অবরুদ্ধ ঢাকায় বসে ঝুঁকির মুখে কোন ধরনের সাংবাদিকতা করা হয়েছিল। এ ধরনের আরও অনেক বই বাজারে আসা উচিত। মহিউদ্দীন আহমদ একাত্তর ও তার আশপাশের সময়টা নিয়ে নিজ মূল্যায়নে কিছু বই লিখছেন, সেগুলোও নজরে পড়েছে। ইতিহাসের এই সময়টি ধরে গবেষণালব্ধ বই যত বেশি আসবে, ততই ঋদ্ধ হবে আমাদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ভিত্তি। এবং সূক্ষ্মভাবে সেই বইগুলোয় কোনো মতবাদকে তুলে ধরা হচ্ছে কি না, অথবা অন্য কোনো মতবাদ অগ্রাহ্য করা হচ্ছে কি না, সেটাও আসবে পরবর্তী আলোচনায়।
চার. একটি ভালো বিফ অথবা চিকেন বার্গার খেতে ৪০০ টাকা খরচ হয়। ২০০ পৃষ্ঠার একটি ভালো বইয়ের দাম এই ৪০০ টাকার কাছাকাছি। তাই একটি বার্গার না খেয়ে একটি ভালো বই কিনবেন কি কিনবেন না, সেই ভাবনা পাঠকের। কেউ যদি বার্গার আর বইয়ের এই হিসাব না মেলাতে চান, তাহলে তাঁকে দোষ দেওয়া যাবে না। একটি দেশে কত দ্রুত একের পর এক খাবারের দোকান গড়ে ওঠে এবং তা ব্যবসা করে চলে এবং একই সঙ্গে সেই দেশেরই একটি পরিচিত বইয়ের মার্কেট কত দ্রুত কাপড়ের মার্কেটে পরিণত হয়, সেটা তো আমরা নিজের চোখেই দেখলাম।
শুধু এই পরিবর্তনকে গালাগাল করলেই তো হবে না, কেন কোন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতায় এই পরিবর্তনটা হয়ে গেল, তা নিয়েও তো হতে পারে মনকাড়া বই। সেখানেই হয়তো লুকিয়ে থাকবে জিয়নকাঠি-মরণকাঠি। সেই গবেষণায়ই হয়তো পাওয়া যাবে বেঁচে থাকার দিশা।
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

বইমেলা আসছে। করোনার প্রতাপে দুই বছর বইমেলা ছিল কিছুটা হতোদ্যম। এবার তোড়জোড় করেই শুরু হচ্ছে মেলা। আগামী
১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা চলবে।
মেলা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে জল্পনা-কল্পনা। কাগজসহ প্রকাশনাশিল্পের আনুষঙ্গিক অনেক কিছুর দাম বাড়ার কারণে প্রকাশকেরা মনে করছেন, এবার বইয়ের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। বাড়তি দামে পাঠকেরা বই কিনবেন কি না, তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি তরুণ প্রতিভাবান প্রকাশকেরাও এবার নতুন, ভালো বই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন।
প্রচারের একটা ধরন দেখতে পাচ্ছি, যা নতুন নয় যদিও, কিন্তু এবার হচ্ছে তার বহুল ব্যবহার। লেখকেরা ফেসবুকে নিজের বইয়ের প্রচ্ছদ প্রকাশ করে প্রি-অর্ডারের জন্য আহ্বান রাখছেন। এতে কতটা কাজ হচ্ছে জানি না, কিন্তু বই সম্পর্কে একটা ধারণা দিয়ে পাঠককে আকৃষ্ট করার জন্য এই পথ মন্দ নয়। ফেসবুক এখন অনেক বড় বড় সংবাদমাধ্যমের চেয়েও বেশি নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে কারও কারও কাছে।
বলতে হয়, গণমাধ্যম এখন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সাহসী নয়, বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারে অজস্র ভুল-মহাভুলের পরেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফেসবুকই মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে। এমনও দেখা গেছে, ফেসবুকে জনমতের প্রকাশ দেখে সরকারও কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বা পাল্টাতে বাধ্য হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বলা যায়, প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমগুলোর চেয়ে ফেসবুক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। সেই ফেসবুককে প্রচারের কাজে ঠিকভাবে লাগাতে পারলে বই বিক্রির ক্ষেত্রে তা ভূমিকা রাখতেই পারে।
একটি ব্যাপারে কথা না বললেই নয়। এবার মেলায় আদর্শ প্রকাশনী বলে একটি প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এই প্রকাশনীর তিনটি বইয়ে নাকি সরকারবিরোধী প্রচারণা আছে। কথা হলো, কেউ কি বইগুলো পড়ে দেখেছেন? যেকোনো বইয়ে যে কারও বিরুদ্ধে সমালোচনা থাকতেই পারে, তাতে সে বইটি নিষিদ্ধ করতে হবে কেন? এইটুকু সহিষ্ণুতা থাকা উচিত। সরকারবিরোধিতা থাকলে কি কোনো বই নিষিদ্ধ করা যায়? সমালোচনার উত্তর দেওয়ার মতো সাহস কি সরকারের নেই? এ বিষয় নিয়ে বড় করে আলোচনা হতে হবে।নইলে ভবিষ্যতে লেখালেখির ক্ষেত্রে সেন্সরের ভূত এসে গলা টিপে ধরতে পারে।
দুই. দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণে দেখেছি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রকাশকেরা ভালো বই লুফে নেন। তবে ভালো বই গ্রহণ করার আগে তাঁরা লেখকের ‘ধার’ ও ‘ভার’ পরীক্ষা করে নেন। একটি বই ভালো হলেই হয় না, সেই বই কে লিখেছেন, সেটাও বিবেচনার বিষয়। যদি লেখক তেমন পরিচিত না হন, তবে তিনি ভালো লিখলেও সেই বই পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চল আমাদের দেশে নেই বললেই চলে।বলতে চাইছি, বেশির ভাগ প্রকাশনালয়ে এমন কোনো সম্পাদকমণ্ডলী নেই, যাঁরা পাণ্ডুলিপি যাচাই-বাছাই করে তা ছাপার যোগ্য কি অযোগ্য সেই মত দিতে পারেন। এমন কোনো সম্পাদকমণ্ডলী নেই, যাঁরা একটি বইকে সুসম্পাদিত করে তারপর বাজারে আনার ব্যবস্থা করেন। এই ঘাটতিটা রয়েই গেছে। ভালো বই এবং নামী লেখক হলে তো সোনায় সোহাগা। কিন্তু ভালো বই ও অনামী লেখককে চিনে নেওয়ার প্রবণতা না থাকলে নতুন লেখক উঠে আসবে না।
লেখকের জনপ্রিয়তা প্রকাশকের মুখে হাসি ফোটায় বটে, বইয়ের কাটতি বাড়ায় বটে, কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। ফিকশন একসময় বই কেনাকাটায় সবচেয়ে বড় জায়গাটা নিয়ে নিয়েছিল। হুমায়ূন আহমেদের বই কেনার জন্য পাঠকের যে বিশাল সারি দেখা যেত, সে কথা নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যায়নি। তেমনি মারজুক রাসেল কিংবা সাদাত হোসাইনের বইয়ের জন্যও এখন পাঠকের বড় সারি দেখা গেছে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ইমদাদুল হক মিলন কিংবা আনিসুল হকও স্টলে গেলে তাঁদের দস্তখত নেওয়ার জন্য পাঠকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়। এ রকম লেখক নিশ্চয়ই আরও আছেন। কবিতাপ্রেমী বাঙালি এখন কবিতার বই কেন কম পড়ে, সেটাও ভাববার বিষয় বটে।আজকাল ইতিহাস, স্মৃতিকথা ধরনের বইয়ের পাঠকও বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের ইতিহাসের নানা জায়গায় যে শূন্যতাগুলো তৈরি হয়েছে, যে ব্যাখ্যাগুলো দাঁড় করানো হয়েছে, তার বাইরেও যে সত্য রয়েছে, সে কথা জানার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠছে মানুষ। বিশেষ করে বাঙালির ইতিহাস বা বাংলার ইতিহাসের নানা কিছু নিয়ে আগ্রহ জাগছে। এই ভূখণ্ডে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক, সাতচল্লিশে দেশভাগের সময়কার নেতাদের পুনর্মূল্যায়ন, ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণ, ভাষা আন্দোলনের অজানা অধ্যায়, আইয়ুব খানের সামরিক শাসন-পরবর্তী ঘটনাবলি, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন নিয়ে রচিত হচ্ছে নতুন নতুন বই। স্বাধীনতা-পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর শাসনামল, জিয়াউর রহমানের শাসনামল হয়ে এরশাদ, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়েও পাঠকের আগ্রহ আছে। সেই সব বইয়ের কাটতিও রয়েছে।
আমাদের এদিককার মানুষের মধ্যে স্মৃতিকথা লেখার চল নেই বললেই চলে। অথচ খ্যাতিমান মানুষেরা যদি স্মৃতিকথা লিখে যেতেন, তাহলে আমরা আমাদের প্রবহমান সময়কে ধারাবাহিকভাবে তুলে আনতে পারতাম। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতিক্ষেত্রের প্রথিতযশা মানুষদের আত্মজীবনী আমাদের ঋদ্ধ করতে পারত। খুঁজতে গিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল মনসুর আহমদ, শেখ মুজিবুর রহমান, অলি আহাদ, মোহাম্মদ তোয়াহার মতো মানুষের আত্মজীবনী (পূর্ণ অথবা খণ্ডিত) পাওয়া গেছে। কামরুদ্দীন আহমদের বিখ্যাত চারটি বই (‘বাঙালি মধ্যবিত্তের আত্মবিকাশ’, ‘বাংলার এক মধ্যবিত্তের আত্মকাহিনী’, ‘পূর্ব বাংলার সমাজ ও রাজনীতি’, ‘স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয় এবং অতঃপর’) আত্মজীবনী না হলেও তাতে আত্মজীবনীর রেশ পাওয়া যায় এবং তাতে সেই সময়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক আবহ ফুটে ওঠে।
আব্বাসউদ্দীন আহমদ, পঙ্কজ মল্লিক, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, বিনোদিনী দাসী, উত্তম কুমার, সলিল দত্ত, সুনির্মল বসুসহ সংস্কৃতিজগতের অনেকের নামই বলা যাবে, যাঁরা আত্মজীবনী লিখেছেন। চিত্রনায়িকা কবরীও তাঁর আত্মজীবনীর একটি অংশ লিখেছিলেন। আবদুল আহাদ, সন্জীদা খাতুন, ফেরদৌসী মজুমদারও লিখেছেন। আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথার রয়েছে অপরিসীম মূল্য। গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি এই বইগুলোর কদর বাড়লে ভালো।
তিন. ১৯৭১ সাল নিয়ে লেখালেখি আরও বেশি হওয়া দরকার। স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন, তাঁদের ব্যাপারে আরও ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করা দরকার। দুই সশস্ত্র সেনাদলের সম্মুখ লড়াই কিংবা গেরিলা লড়াই দিয়েই যদি এই মহান মুক্তিযুদ্ধকে মূল্যায়ন করা হয়, তাহলে ইতিহাসের একটি খণ্ডিত অংশের সঙ্গে পরিচিত হয় মানুষ।অবরুদ্ধ নগরীতে বসে যাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন, যাঁরা বিভিন্ন গ্রামে-নগরে-বন্দরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে কাজ করেছেন, অন্তত নিজের আদরের মোরগটি কেটে মুক্তিযোদ্ধাদের একবেলা খাইয়েছেন, যাঁরা খেলার মাঠে কিংবা সংস্কৃতির মাঠে অবদান রেখেছেন, তাঁদের কি আমরা মুক্তিযোদ্ধা বলব না? খেতাবগুলো কেন বহুলাংশে অস্ত্রধারী যোদ্ধারাই পেলেন, তা নিয়ে এখন ভেবে দেখারও অবকাশ আছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে বই হতেই পারে। সম্প্রতি একাত্তর সালে শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেনের সাংবাদিকতার বিষয়ে গবেষণালব্ধ একটি বই লেখা হয়েছে, সেই বইয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেকেই বলে থাকেন, ইত্তেফাক সে সময় সামরিক সরকারের দালালি করেছিল। এই বয়ান যাদের মুখে মুখে, তাদের মধ্যে রয়েছেন চীনপন্থী বাম, পাকিস্তানপন্থী ডানেরা। আর বিস্ময়ের ব্যাপার, জাতীয়তাবাদীরাও এ ব্যাপারে থাকেন মৌন। ‘জাহান্নামের আগুনে বসিয়া’ বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে একাত্তরে অবরুদ্ধ ঢাকায় বসে ঝুঁকির মুখে কোন ধরনের সাংবাদিকতা করা হয়েছিল। এ ধরনের আরও অনেক বই বাজারে আসা উচিত। মহিউদ্দীন আহমদ একাত্তর ও তার আশপাশের সময়টা নিয়ে নিজ মূল্যায়নে কিছু বই লিখছেন, সেগুলোও নজরে পড়েছে। ইতিহাসের এই সময়টি ধরে গবেষণালব্ধ বই যত বেশি আসবে, ততই ঋদ্ধ হবে আমাদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ভিত্তি। এবং সূক্ষ্মভাবে সেই বইগুলোয় কোনো মতবাদকে তুলে ধরা হচ্ছে কি না, অথবা অন্য কোনো মতবাদ অগ্রাহ্য করা হচ্ছে কি না, সেটাও আসবে পরবর্তী আলোচনায়।
চার. একটি ভালো বিফ অথবা চিকেন বার্গার খেতে ৪০০ টাকা খরচ হয়। ২০০ পৃষ্ঠার একটি ভালো বইয়ের দাম এই ৪০০ টাকার কাছাকাছি। তাই একটি বার্গার না খেয়ে একটি ভালো বই কিনবেন কি কিনবেন না, সেই ভাবনা পাঠকের। কেউ যদি বার্গার আর বইয়ের এই হিসাব না মেলাতে চান, তাহলে তাঁকে দোষ দেওয়া যাবে না। একটি দেশে কত দ্রুত একের পর এক খাবারের দোকান গড়ে ওঠে এবং তা ব্যবসা করে চলে এবং একই সঙ্গে সেই দেশেরই একটি পরিচিত বইয়ের মার্কেট কত দ্রুত কাপড়ের মার্কেটে পরিণত হয়, সেটা তো আমরা নিজের চোখেই দেখলাম।
শুধু এই পরিবর্তনকে গালাগাল করলেই তো হবে না, কেন কোন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতায় এই পরিবর্তনটা হয়ে গেল, তা নিয়েও তো হতে পারে মনকাড়া বই। সেখানেই হয়তো লুকিয়ে থাকবে জিয়নকাঠি-মরণকাঠি। সেই গবেষণায়ই হয়তো পাওয়া যাবে বেঁচে থাকার দিশা।
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
জাহীদ রেজা নূর

বইমেলা আসছে। করোনার প্রতাপে দুই বছর বইমেলা ছিল কিছুটা হতোদ্যম। এবার তোড়জোড় করেই শুরু হচ্ছে মেলা। আগামী
১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা চলবে।
মেলা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে জল্পনা-কল্পনা। কাগজসহ প্রকাশনাশিল্পের আনুষঙ্গিক অনেক কিছুর দাম বাড়ার কারণে প্রকাশকেরা মনে করছেন, এবার বইয়ের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। বাড়তি দামে পাঠকেরা বই কিনবেন কি না, তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি তরুণ প্রতিভাবান প্রকাশকেরাও এবার নতুন, ভালো বই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন।
প্রচারের একটা ধরন দেখতে পাচ্ছি, যা নতুন নয় যদিও, কিন্তু এবার হচ্ছে তার বহুল ব্যবহার। লেখকেরা ফেসবুকে নিজের বইয়ের প্রচ্ছদ প্রকাশ করে প্রি-অর্ডারের জন্য আহ্বান রাখছেন। এতে কতটা কাজ হচ্ছে জানি না, কিন্তু বই সম্পর্কে একটা ধারণা দিয়ে পাঠককে আকৃষ্ট করার জন্য এই পথ মন্দ নয়। ফেসবুক এখন অনেক বড় বড় সংবাদমাধ্যমের চেয়েও বেশি নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে কারও কারও কাছে।
বলতে হয়, গণমাধ্যম এখন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সাহসী নয়, বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারে অজস্র ভুল-মহাভুলের পরেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফেসবুকই মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে। এমনও দেখা গেছে, ফেসবুকে জনমতের প্রকাশ দেখে সরকারও কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বা পাল্টাতে বাধ্য হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বলা যায়, প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমগুলোর চেয়ে ফেসবুক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। সেই ফেসবুককে প্রচারের কাজে ঠিকভাবে লাগাতে পারলে বই বিক্রির ক্ষেত্রে তা ভূমিকা রাখতেই পারে।
একটি ব্যাপারে কথা না বললেই নয়। এবার মেলায় আদর্শ প্রকাশনী বলে একটি প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এই প্রকাশনীর তিনটি বইয়ে নাকি সরকারবিরোধী প্রচারণা আছে। কথা হলো, কেউ কি বইগুলো পড়ে দেখেছেন? যেকোনো বইয়ে যে কারও বিরুদ্ধে সমালোচনা থাকতেই পারে, তাতে সে বইটি নিষিদ্ধ করতে হবে কেন? এইটুকু সহিষ্ণুতা থাকা উচিত। সরকারবিরোধিতা থাকলে কি কোনো বই নিষিদ্ধ করা যায়? সমালোচনার উত্তর দেওয়ার মতো সাহস কি সরকারের নেই? এ বিষয় নিয়ে বড় করে আলোচনা হতে হবে।নইলে ভবিষ্যতে লেখালেখির ক্ষেত্রে সেন্সরের ভূত এসে গলা টিপে ধরতে পারে।
দুই. দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণে দেখেছি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রকাশকেরা ভালো বই লুফে নেন। তবে ভালো বই গ্রহণ করার আগে তাঁরা লেখকের ‘ধার’ ও ‘ভার’ পরীক্ষা করে নেন। একটি বই ভালো হলেই হয় না, সেই বই কে লিখেছেন, সেটাও বিবেচনার বিষয়। যদি লেখক তেমন পরিচিত না হন, তবে তিনি ভালো লিখলেও সেই বই পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চল আমাদের দেশে নেই বললেই চলে।বলতে চাইছি, বেশির ভাগ প্রকাশনালয়ে এমন কোনো সম্পাদকমণ্ডলী নেই, যাঁরা পাণ্ডুলিপি যাচাই-বাছাই করে তা ছাপার যোগ্য কি অযোগ্য সেই মত দিতে পারেন। এমন কোনো সম্পাদকমণ্ডলী নেই, যাঁরা একটি বইকে সুসম্পাদিত করে তারপর বাজারে আনার ব্যবস্থা করেন। এই ঘাটতিটা রয়েই গেছে। ভালো বই এবং নামী লেখক হলে তো সোনায় সোহাগা। কিন্তু ভালো বই ও অনামী লেখককে চিনে নেওয়ার প্রবণতা না থাকলে নতুন লেখক উঠে আসবে না।
লেখকের জনপ্রিয়তা প্রকাশকের মুখে হাসি ফোটায় বটে, বইয়ের কাটতি বাড়ায় বটে, কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। ফিকশন একসময় বই কেনাকাটায় সবচেয়ে বড় জায়গাটা নিয়ে নিয়েছিল। হুমায়ূন আহমেদের বই কেনার জন্য পাঠকের যে বিশাল সারি দেখা যেত, সে কথা নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যায়নি। তেমনি মারজুক রাসেল কিংবা সাদাত হোসাইনের বইয়ের জন্যও এখন পাঠকের বড় সারি দেখা গেছে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ইমদাদুল হক মিলন কিংবা আনিসুল হকও স্টলে গেলে তাঁদের দস্তখত নেওয়ার জন্য পাঠকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়। এ রকম লেখক নিশ্চয়ই আরও আছেন। কবিতাপ্রেমী বাঙালি এখন কবিতার বই কেন কম পড়ে, সেটাও ভাববার বিষয় বটে।আজকাল ইতিহাস, স্মৃতিকথা ধরনের বইয়ের পাঠকও বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের ইতিহাসের নানা জায়গায় যে শূন্যতাগুলো তৈরি হয়েছে, যে ব্যাখ্যাগুলো দাঁড় করানো হয়েছে, তার বাইরেও যে সত্য রয়েছে, সে কথা জানার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠছে মানুষ। বিশেষ করে বাঙালির ইতিহাস বা বাংলার ইতিহাসের নানা কিছু নিয়ে আগ্রহ জাগছে। এই ভূখণ্ডে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক, সাতচল্লিশে দেশভাগের সময়কার নেতাদের পুনর্মূল্যায়ন, ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণ, ভাষা আন্দোলনের অজানা অধ্যায়, আইয়ুব খানের সামরিক শাসন-পরবর্তী ঘটনাবলি, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন নিয়ে রচিত হচ্ছে নতুন নতুন বই। স্বাধীনতা-পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর শাসনামল, জিয়াউর রহমানের শাসনামল হয়ে এরশাদ, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়েও পাঠকের আগ্রহ আছে। সেই সব বইয়ের কাটতিও রয়েছে।
আমাদের এদিককার মানুষের মধ্যে স্মৃতিকথা লেখার চল নেই বললেই চলে। অথচ খ্যাতিমান মানুষেরা যদি স্মৃতিকথা লিখে যেতেন, তাহলে আমরা আমাদের প্রবহমান সময়কে ধারাবাহিকভাবে তুলে আনতে পারতাম। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতিক্ষেত্রের প্রথিতযশা মানুষদের আত্মজীবনী আমাদের ঋদ্ধ করতে পারত। খুঁজতে গিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল মনসুর আহমদ, শেখ মুজিবুর রহমান, অলি আহাদ, মোহাম্মদ তোয়াহার মতো মানুষের আত্মজীবনী (পূর্ণ অথবা খণ্ডিত) পাওয়া গেছে। কামরুদ্দীন আহমদের বিখ্যাত চারটি বই (‘বাঙালি মধ্যবিত্তের আত্মবিকাশ’, ‘বাংলার এক মধ্যবিত্তের আত্মকাহিনী’, ‘পূর্ব বাংলার সমাজ ও রাজনীতি’, ‘স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয় এবং অতঃপর’) আত্মজীবনী না হলেও তাতে আত্মজীবনীর রেশ পাওয়া যায় এবং তাতে সেই সময়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক আবহ ফুটে ওঠে।
আব্বাসউদ্দীন আহমদ, পঙ্কজ মল্লিক, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, বিনোদিনী দাসী, উত্তম কুমার, সলিল দত্ত, সুনির্মল বসুসহ সংস্কৃতিজগতের অনেকের নামই বলা যাবে, যাঁরা আত্মজীবনী লিখেছেন। চিত্রনায়িকা কবরীও তাঁর আত্মজীবনীর একটি অংশ লিখেছিলেন। আবদুল আহাদ, সন্জীদা খাতুন, ফেরদৌসী মজুমদারও লিখেছেন। আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথার রয়েছে অপরিসীম মূল্য। গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি এই বইগুলোর কদর বাড়লে ভালো।
তিন. ১৯৭১ সাল নিয়ে লেখালেখি আরও বেশি হওয়া দরকার। স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন, তাঁদের ব্যাপারে আরও ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করা দরকার। দুই সশস্ত্র সেনাদলের সম্মুখ লড়াই কিংবা গেরিলা লড়াই দিয়েই যদি এই মহান মুক্তিযুদ্ধকে মূল্যায়ন করা হয়, তাহলে ইতিহাসের একটি খণ্ডিত অংশের সঙ্গে পরিচিত হয় মানুষ।অবরুদ্ধ নগরীতে বসে যাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন, যাঁরা বিভিন্ন গ্রামে-নগরে-বন্দরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে কাজ করেছেন, অন্তত নিজের আদরের মোরগটি কেটে মুক্তিযোদ্ধাদের একবেলা খাইয়েছেন, যাঁরা খেলার মাঠে কিংবা সংস্কৃতির মাঠে অবদান রেখেছেন, তাঁদের কি আমরা মুক্তিযোদ্ধা বলব না? খেতাবগুলো কেন বহুলাংশে অস্ত্রধারী যোদ্ধারাই পেলেন, তা নিয়ে এখন ভেবে দেখারও অবকাশ আছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে বই হতেই পারে। সম্প্রতি একাত্তর সালে শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেনের সাংবাদিকতার বিষয়ে গবেষণালব্ধ একটি বই লেখা হয়েছে, সেই বইয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেকেই বলে থাকেন, ইত্তেফাক সে সময় সামরিক সরকারের দালালি করেছিল। এই বয়ান যাদের মুখে মুখে, তাদের মধ্যে রয়েছেন চীনপন্থী বাম, পাকিস্তানপন্থী ডানেরা। আর বিস্ময়ের ব্যাপার, জাতীয়তাবাদীরাও এ ব্যাপারে থাকেন মৌন। ‘জাহান্নামের আগুনে বসিয়া’ বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে একাত্তরে অবরুদ্ধ ঢাকায় বসে ঝুঁকির মুখে কোন ধরনের সাংবাদিকতা করা হয়েছিল। এ ধরনের আরও অনেক বই বাজারে আসা উচিত। মহিউদ্দীন আহমদ একাত্তর ও তার আশপাশের সময়টা নিয়ে নিজ মূল্যায়নে কিছু বই লিখছেন, সেগুলোও নজরে পড়েছে। ইতিহাসের এই সময়টি ধরে গবেষণালব্ধ বই যত বেশি আসবে, ততই ঋদ্ধ হবে আমাদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ভিত্তি। এবং সূক্ষ্মভাবে সেই বইগুলোয় কোনো মতবাদকে তুলে ধরা হচ্ছে কি না, অথবা অন্য কোনো মতবাদ অগ্রাহ্য করা হচ্ছে কি না, সেটাও আসবে পরবর্তী আলোচনায়।
চার. একটি ভালো বিফ অথবা চিকেন বার্গার খেতে ৪০০ টাকা খরচ হয়। ২০০ পৃষ্ঠার একটি ভালো বইয়ের দাম এই ৪০০ টাকার কাছাকাছি। তাই একটি বার্গার না খেয়ে একটি ভালো বই কিনবেন কি কিনবেন না, সেই ভাবনা পাঠকের। কেউ যদি বার্গার আর বইয়ের এই হিসাব না মেলাতে চান, তাহলে তাঁকে দোষ দেওয়া যাবে না। একটি দেশে কত দ্রুত একের পর এক খাবারের দোকান গড়ে ওঠে এবং তা ব্যবসা করে চলে এবং একই সঙ্গে সেই দেশেরই একটি পরিচিত বইয়ের মার্কেট কত দ্রুত কাপড়ের মার্কেটে পরিণত হয়, সেটা তো আমরা নিজের চোখেই দেখলাম।
শুধু এই পরিবর্তনকে গালাগাল করলেই তো হবে না, কেন কোন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতায় এই পরিবর্তনটা হয়ে গেল, তা নিয়েও তো হতে পারে মনকাড়া বই। সেখানেই হয়তো লুকিয়ে থাকবে জিয়নকাঠি-মরণকাঠি। সেই গবেষণায়ই হয়তো পাওয়া যাবে বেঁচে থাকার দিশা।
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

বইমেলা আসছে। করোনার প্রতাপে দুই বছর বইমেলা ছিল কিছুটা হতোদ্যম। এবার তোড়জোড় করেই শুরু হচ্ছে মেলা। আগামী
১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা চলবে।
মেলা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে জল্পনা-কল্পনা। কাগজসহ প্রকাশনাশিল্পের আনুষঙ্গিক অনেক কিছুর দাম বাড়ার কারণে প্রকাশকেরা মনে করছেন, এবার বইয়ের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। বাড়তি দামে পাঠকেরা বই কিনবেন কি না, তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি তরুণ প্রতিভাবান প্রকাশকেরাও এবার নতুন, ভালো বই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন।
প্রচারের একটা ধরন দেখতে পাচ্ছি, যা নতুন নয় যদিও, কিন্তু এবার হচ্ছে তার বহুল ব্যবহার। লেখকেরা ফেসবুকে নিজের বইয়ের প্রচ্ছদ প্রকাশ করে প্রি-অর্ডারের জন্য আহ্বান রাখছেন। এতে কতটা কাজ হচ্ছে জানি না, কিন্তু বই সম্পর্কে একটা ধারণা দিয়ে পাঠককে আকৃষ্ট করার জন্য এই পথ মন্দ নয়। ফেসবুক এখন অনেক বড় বড় সংবাদমাধ্যমের চেয়েও বেশি নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে কারও কারও কাছে।
বলতে হয়, গণমাধ্যম এখন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সাহসী নয়, বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারে অজস্র ভুল-মহাভুলের পরেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফেসবুকই মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে। এমনও দেখা গেছে, ফেসবুকে জনমতের প্রকাশ দেখে সরকারও কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বা পাল্টাতে বাধ্য হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বলা যায়, প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমগুলোর চেয়ে ফেসবুক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। সেই ফেসবুককে প্রচারের কাজে ঠিকভাবে লাগাতে পারলে বই বিক্রির ক্ষেত্রে তা ভূমিকা রাখতেই পারে।
একটি ব্যাপারে কথা না বললেই নয়। এবার মেলায় আদর্শ প্রকাশনী বলে একটি প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এই প্রকাশনীর তিনটি বইয়ে নাকি সরকারবিরোধী প্রচারণা আছে। কথা হলো, কেউ কি বইগুলো পড়ে দেখেছেন? যেকোনো বইয়ে যে কারও বিরুদ্ধে সমালোচনা থাকতেই পারে, তাতে সে বইটি নিষিদ্ধ করতে হবে কেন? এইটুকু সহিষ্ণুতা থাকা উচিত। সরকারবিরোধিতা থাকলে কি কোনো বই নিষিদ্ধ করা যায়? সমালোচনার উত্তর দেওয়ার মতো সাহস কি সরকারের নেই? এ বিষয় নিয়ে বড় করে আলোচনা হতে হবে।নইলে ভবিষ্যতে লেখালেখির ক্ষেত্রে সেন্সরের ভূত এসে গলা টিপে ধরতে পারে।
দুই. দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণে দেখেছি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রকাশকেরা ভালো বই লুফে নেন। তবে ভালো বই গ্রহণ করার আগে তাঁরা লেখকের ‘ধার’ ও ‘ভার’ পরীক্ষা করে নেন। একটি বই ভালো হলেই হয় না, সেই বই কে লিখেছেন, সেটাও বিবেচনার বিষয়। যদি লেখক তেমন পরিচিত না হন, তবে তিনি ভালো লিখলেও সেই বই পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চল আমাদের দেশে নেই বললেই চলে।বলতে চাইছি, বেশির ভাগ প্রকাশনালয়ে এমন কোনো সম্পাদকমণ্ডলী নেই, যাঁরা পাণ্ডুলিপি যাচাই-বাছাই করে তা ছাপার যোগ্য কি অযোগ্য সেই মত দিতে পারেন। এমন কোনো সম্পাদকমণ্ডলী নেই, যাঁরা একটি বইকে সুসম্পাদিত করে তারপর বাজারে আনার ব্যবস্থা করেন। এই ঘাটতিটা রয়েই গেছে। ভালো বই এবং নামী লেখক হলে তো সোনায় সোহাগা। কিন্তু ভালো বই ও অনামী লেখককে চিনে নেওয়ার প্রবণতা না থাকলে নতুন লেখক উঠে আসবে না।
লেখকের জনপ্রিয়তা প্রকাশকের মুখে হাসি ফোটায় বটে, বইয়ের কাটতি বাড়ায় বটে, কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। ফিকশন একসময় বই কেনাকাটায় সবচেয়ে বড় জায়গাটা নিয়ে নিয়েছিল। হুমায়ূন আহমেদের বই কেনার জন্য পাঠকের যে বিশাল সারি দেখা যেত, সে কথা নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যায়নি। তেমনি মারজুক রাসেল কিংবা সাদাত হোসাইনের বইয়ের জন্যও এখন পাঠকের বড় সারি দেখা গেছে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ইমদাদুল হক মিলন কিংবা আনিসুল হকও স্টলে গেলে তাঁদের দস্তখত নেওয়ার জন্য পাঠকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়। এ রকম লেখক নিশ্চয়ই আরও আছেন। কবিতাপ্রেমী বাঙালি এখন কবিতার বই কেন কম পড়ে, সেটাও ভাববার বিষয় বটে।আজকাল ইতিহাস, স্মৃতিকথা ধরনের বইয়ের পাঠকও বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের ইতিহাসের নানা জায়গায় যে শূন্যতাগুলো তৈরি হয়েছে, যে ব্যাখ্যাগুলো দাঁড় করানো হয়েছে, তার বাইরেও যে সত্য রয়েছে, সে কথা জানার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠছে মানুষ। বিশেষ করে বাঙালির ইতিহাস বা বাংলার ইতিহাসের নানা কিছু নিয়ে আগ্রহ জাগছে। এই ভূখণ্ডে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক, সাতচল্লিশে দেশভাগের সময়কার নেতাদের পুনর্মূল্যায়ন, ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণ, ভাষা আন্দোলনের অজানা অধ্যায়, আইয়ুব খানের সামরিক শাসন-পরবর্তী ঘটনাবলি, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন নিয়ে রচিত হচ্ছে নতুন নতুন বই। স্বাধীনতা-পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর শাসনামল, জিয়াউর রহমানের শাসনামল হয়ে এরশাদ, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়েও পাঠকের আগ্রহ আছে। সেই সব বইয়ের কাটতিও রয়েছে।
আমাদের এদিককার মানুষের মধ্যে স্মৃতিকথা লেখার চল নেই বললেই চলে। অথচ খ্যাতিমান মানুষেরা যদি স্মৃতিকথা লিখে যেতেন, তাহলে আমরা আমাদের প্রবহমান সময়কে ধারাবাহিকভাবে তুলে আনতে পারতাম। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতিক্ষেত্রের প্রথিতযশা মানুষদের আত্মজীবনী আমাদের ঋদ্ধ করতে পারত। খুঁজতে গিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল মনসুর আহমদ, শেখ মুজিবুর রহমান, অলি আহাদ, মোহাম্মদ তোয়াহার মতো মানুষের আত্মজীবনী (পূর্ণ অথবা খণ্ডিত) পাওয়া গেছে। কামরুদ্দীন আহমদের বিখ্যাত চারটি বই (‘বাঙালি মধ্যবিত্তের আত্মবিকাশ’, ‘বাংলার এক মধ্যবিত্তের আত্মকাহিনী’, ‘পূর্ব বাংলার সমাজ ও রাজনীতি’, ‘স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয় এবং অতঃপর’) আত্মজীবনী না হলেও তাতে আত্মজীবনীর রেশ পাওয়া যায় এবং তাতে সেই সময়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক আবহ ফুটে ওঠে।
আব্বাসউদ্দীন আহমদ, পঙ্কজ মল্লিক, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, বিনোদিনী দাসী, উত্তম কুমার, সলিল দত্ত, সুনির্মল বসুসহ সংস্কৃতিজগতের অনেকের নামই বলা যাবে, যাঁরা আত্মজীবনী লিখেছেন। চিত্রনায়িকা কবরীও তাঁর আত্মজীবনীর একটি অংশ লিখেছিলেন। আবদুল আহাদ, সন্জীদা খাতুন, ফেরদৌসী মজুমদারও লিখেছেন। আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথার রয়েছে অপরিসীম মূল্য। গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি এই বইগুলোর কদর বাড়লে ভালো।
তিন. ১৯৭১ সাল নিয়ে লেখালেখি আরও বেশি হওয়া দরকার। স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন, তাঁদের ব্যাপারে আরও ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করা দরকার। দুই সশস্ত্র সেনাদলের সম্মুখ লড়াই কিংবা গেরিলা লড়াই দিয়েই যদি এই মহান মুক্তিযুদ্ধকে মূল্যায়ন করা হয়, তাহলে ইতিহাসের একটি খণ্ডিত অংশের সঙ্গে পরিচিত হয় মানুষ।অবরুদ্ধ নগরীতে বসে যাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন, যাঁরা বিভিন্ন গ্রামে-নগরে-বন্দরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে কাজ করেছেন, অন্তত নিজের আদরের মোরগটি কেটে মুক্তিযোদ্ধাদের একবেলা খাইয়েছেন, যাঁরা খেলার মাঠে কিংবা সংস্কৃতির মাঠে অবদান রেখেছেন, তাঁদের কি আমরা মুক্তিযোদ্ধা বলব না? খেতাবগুলো কেন বহুলাংশে অস্ত্রধারী যোদ্ধারাই পেলেন, তা নিয়ে এখন ভেবে দেখারও অবকাশ আছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে বই হতেই পারে। সম্প্রতি একাত্তর সালে শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেনের সাংবাদিকতার বিষয়ে গবেষণালব্ধ একটি বই লেখা হয়েছে, সেই বইয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেকেই বলে থাকেন, ইত্তেফাক সে সময় সামরিক সরকারের দালালি করেছিল। এই বয়ান যাদের মুখে মুখে, তাদের মধ্যে রয়েছেন চীনপন্থী বাম, পাকিস্তানপন্থী ডানেরা। আর বিস্ময়ের ব্যাপার, জাতীয়তাবাদীরাও এ ব্যাপারে থাকেন মৌন। ‘জাহান্নামের আগুনে বসিয়া’ বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে একাত্তরে অবরুদ্ধ ঢাকায় বসে ঝুঁকির মুখে কোন ধরনের সাংবাদিকতা করা হয়েছিল। এ ধরনের আরও অনেক বই বাজারে আসা উচিত। মহিউদ্দীন আহমদ একাত্তর ও তার আশপাশের সময়টা নিয়ে নিজ মূল্যায়নে কিছু বই লিখছেন, সেগুলোও নজরে পড়েছে। ইতিহাসের এই সময়টি ধরে গবেষণালব্ধ বই যত বেশি আসবে, ততই ঋদ্ধ হবে আমাদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ভিত্তি। এবং সূক্ষ্মভাবে সেই বইগুলোয় কোনো মতবাদকে তুলে ধরা হচ্ছে কি না, অথবা অন্য কোনো মতবাদ অগ্রাহ্য করা হচ্ছে কি না, সেটাও আসবে পরবর্তী আলোচনায়।
চার. একটি ভালো বিফ অথবা চিকেন বার্গার খেতে ৪০০ টাকা খরচ হয়। ২০০ পৃষ্ঠার একটি ভালো বইয়ের দাম এই ৪০০ টাকার কাছাকাছি। তাই একটি বার্গার না খেয়ে একটি ভালো বই কিনবেন কি কিনবেন না, সেই ভাবনা পাঠকের। কেউ যদি বার্গার আর বইয়ের এই হিসাব না মেলাতে চান, তাহলে তাঁকে দোষ দেওয়া যাবে না। একটি দেশে কত দ্রুত একের পর এক খাবারের দোকান গড়ে ওঠে এবং তা ব্যবসা করে চলে এবং একই সঙ্গে সেই দেশেরই একটি পরিচিত বইয়ের মার্কেট কত দ্রুত কাপড়ের মার্কেটে পরিণত হয়, সেটা তো আমরা নিজের চোখেই দেখলাম।
শুধু এই পরিবর্তনকে গালাগাল করলেই তো হবে না, কেন কোন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতায় এই পরিবর্তনটা হয়ে গেল, তা নিয়েও তো হতে পারে মনকাড়া বই। সেখানেই হয়তো লুকিয়ে থাকবে জিয়নকাঠি-মরণকাঠি। সেই গবেষণায়ই হয়তো পাওয়া যাবে বেঁচে থাকার দিশা।
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বইমেলা আসছে। করোনার প্রতাপে দুই বছর বইমেলা ছিল কিছুটা হতোদ্যম। এবার তোড়জোড় করেই শুরু হচ্ছে মেলা। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা চলবে।
৩০ জানুয়ারি ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বইমেলা আসছে। করোনার প্রতাপে দুই বছর বইমেলা ছিল কিছুটা হতোদ্যম। এবার তোড়জোড় করেই শুরু হচ্ছে মেলা। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা চলবে।
৩০ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বইমেলা আসছে। করোনার প্রতাপে দুই বছর বইমেলা ছিল কিছুটা হতোদ্যম। এবার তোড়জোড় করেই শুরু হচ্ছে মেলা। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা চলবে।
৩০ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বইমেলা আসছে। করোনার প্রতাপে দুই বছর বইমেলা ছিল কিছুটা হতোদ্যম। এবার তোড়জোড় করেই শুরু হচ্ছে মেলা। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা চলবে।
৩০ জানুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫