Ajker Patrika

মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে খুশি জুবেদা-মরিয়মেরা

গৌরীপুর ও মুক্তাগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ৪৬
Thumbnail image

মাথায় ওপর একটু ছাউনির স্বপ্ন দেখতে দেখতে জীবন সায়াহ্নে এসে পৌঁছেছেন। কিন্তু স্বামী মনহর আলীর মৃত্যুর পর সে স্বপ্ন দেখাও ছেড়ে দিয়েছিলেন। স্বামী-সন্তান-সংসার নেই, অন্যের ভাঙা ঘর কিংবা বারান্দায় রাত কাটাতেন। ঝড়-বৃষ্টি আর শীতে অমানবিক কষ্ট করেছেন। যখন জুটেছে খেয়েছেন, নয়তো না খেয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন।

গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর (বড়ইতলা) গ্রামের জুবেদা খাতুনের (৬২) দিন কেটেছে এভাবে। তবে তাঁর স্বপ্ন ভেঙে যায়নি। অবশেষে গৌরীপুর থানা-পুলিশের সহযোগিতায় পেয়েছেন একটি আধুনিক ঘর। জুবেদা খাতুন এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না, তাঁর নিজের একটি ঠিকানা হয়েছে। ঘর পেয়ে খুশিতে কেঁদে ফেলেন তিনি। থানার ওসি নিজে এসে তাঁকে ঘর বুঝিয়ে দিয়েছেন, খোঁজ-খবর নিয়েছেন। সবকিছু স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে, এভাবেই নিজের অনুভূতির কথা বলছিলেন জুবেদা খাতুন।

এদিকে মুক্তাগাছায় বৃদ্ধা মরিয়ম বেগমের স্বামী নইমদ্দিন শেখ মারা গেছেন অনেক আগে। ছিল না কোনো জমি কিংবা থাকার জন্য ঘর। অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনো মতে পেটের ভাত জুটলেও রাপদে ঘুমানোর জায়গা নেই। পরের জমিতে ভাঙা ঘরে দুঃখ-দুর্দশায় দিন কাটত সত্তরোর্ধ বৃদ্ধার। এমন সময়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জমিসহ একটি আধা-পাকা বাড়ি পেয়েছেন। জীবন সায়াহ্নে এসে একটি মাথা গুজার ঠাঁই পেয়ে বেজায় খুশি বৃদ্ধা মরিয়ম।

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ কর্মসূচির আওতায় জুবেদাকে ঘর করে দিয়েছে গৌরীপুর থানা-পুলিশ। গত শনিবার বিকেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাঁকে ঘরের চাবি বুঝিয়ে দিয়েছেন। একইভাবে মুক্তাগাছায় মরিয়ম বেগমকে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ওসি খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, ‘মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ কর্মসূচির আওতায় জুবেদা খাতুনকে একটি আধুনিক ও টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক চালু করা হয়েছে।’ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে এর ভার্চ্যুয়ালি উদ্বোধন করেন বলে জানান ওসি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ৫১৯টি থানায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫২০টি আধুনিক ও টেকসই ঘর দরিদ্র ও গৃহহীনদের জন্য নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গৌরীপুর সার্কেলে তিনটি রয়েছে।

এদিকে মরিয়ম বেগমের বাড়ি মুক্তাগাছার বাদে মাঝিরা গ্রামে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর পুলিশের পক্ষ থেকে গৃহহীন মরিয়ম বেগমের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন থানার ওসি মাহমুদুল হাসান।

ঘর পেয়ে মরিয়ম বেগম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে ঘর ছাড়া বহু কষ্টে দিন কাটাই। পুলিশ ঘর বানাইয়া দিছে, এতে আমি বেজায় খুশি। জীবনের শেষ বেলায় এসে শান্তি পেয়েছি।’

এছাড়া গতকাল ময়মনসিংহ, গফরগাঁও, হালুয়াঘাট, ভালুকা, মুক্তাগাছা, ফুলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন থানায় ঘর হস্তান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত