Ajker Patrika

পাখিরা নিরাপদ থাকতে বাসায় গেঁথে রাখছে পাখি-তাড়ানোর কাঁটা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৩, ১৭: ০৯
পাখিরা নিরাপদ থাকতে বাসায় গেঁথে রাখছে পাখি-তাড়ানোর কাঁটা

পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে বাসার বারান্দা, তাক, স্ট্যাচু, ল্যাম্পপোস্ট কিংবা ছাদ পাখিমুক্ত রাখতে একধরনের সুচালো দণ্ডের মতো জিনিস ব্যবহার করা হয়। তবে এখন দেখা যাচ্ছে এগুলো নিজেদের কাজে ব্যবহার করা শুরু করেছে পাখিরা। 

ডাচ গবেষকেরা আবিষ্কার করেছেন, কিছু পাখি নিজেদের বাসার চারপাশে এই কাঁটা বা সুচালো দণ্ডগুলো অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। কেন? মানুষ যেমন তাদের তাড়াতে এগুলো ব্যবহার করে, তারা করে নিজেদের বাসাকে পোকামাকড় মুক্ত রাখতে। এসব তথ্য জানা গেছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে। 

এটি এদের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর বা আশ্চর্যজনক অভিযোজন ক্ষমতার পরিচায়ক, জানান জীববিজ্ঞানী আউকে-ফ্লোরিয়ান হাইয়েমস্ট্রা। 

মানুষের তৈরি বিভিন্ন জিনিসের ব্যবহার পাখিদের বাসায় নতুন কিছু নয়। পৃথিবীর নানা প্রান্তে বাস করা পাখিদের কাঁটাতার থেকে শুরু করে সুচ পর্যন্ত সবকিছুই ব্যবহারের নজির আছে। 

তবে ন্যাচারালিস বায়োডাইভারসিটি সেন্টার এবং ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম রটারডামের এই গবেষণাটি প্রথম এ ধরনের কোনো বিস্তৃত গবেষণা, যেখানে কাঁটা বা সুচালো দণ্ড পাখিরা ব্যবহার করে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। ঘরের বাইরের দিকে মুখ করে থাকে এসব সুচালো দণ্ড। 

হাইয়েমস্ট্রার গবেষণা বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্পের একটি হাসপাতালের আঙিনায় শুরু হয়েছিল। যেখানে দোয়েল পাখির বিশাল একটি বাসায় প্রায় দেড় হাজার সুচালো দণ্ড খুঁজে পান। 

‘প্রথম কয়েক মিনিট আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। অদ্ভুত, সুন্দর একটি বাসা।’ বলেন হাইয়েমস্ট্রা।

এই জীববিজ্ঞানী জানান, এই সুচালো বস্তুগুলো বাইরের দিকে মুখ করে ছিল। এটা বাসার জন্য দারুণ একটি বর্মের কাজ করে বলে মনে করেন তিনি। 

হাসপাতালটির ছাদে যেতেই আরও পরিষ্কার হয়ে গেল বিষয়টি। ছাদের ৫০ মিটার বা ১৬৪ ফুট জায়গা থেকে পাখি তাড়ানোর কাঁটা তুলে ফেলা হয়েছে। এগুলো যে এক সময় সেখানে ছিল তার স্মৃতি হিসেবে আছে কেবল কিছু আঠা। 

এ ধরনের একটি অসম্পূর্ণ বাসা রাখা হয়েছে রটারডেম জাদুঘরে। আর বড় একটি পূর্ণাঙ্গ বাসা রাখা হয়েছে ন্যাচারালিস বায়োডাইভারসিটি সেন্টারে। 

হাইয়েমস্ট্রা বলেছেন তার তত্ত্বকে আরও নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করার জন্য এখনো অনেক তথ্য দরকার। তবে বাসাটা যেভাবে তৈরি হয়েছে তা বলছে, বাসাকে নিরাপদ করতেই এগুলো ব্যবহার করছে। একটি বিষয় হলো, এগুলোর অবস্থান। কাঁটা বা সুচালো জিনিসগুলো ছিল পাখির বাসার ছাদের ওপরে। মোটের ওপর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাঁটাময় উপাদানসহ একটি ছাদ বলা যায় একে। 

এই জীববিজ্ঞানী জানান, নিজেদের বাসা রক্ষা করতে পাখিরা প্রায়ই গাছের কাঁটাময় ডাল ব্যবহার করে। তবে মানুষ এ ধরনের কাঁটাঝোপ কিংবা গাছের ভক্ত নয়। অর্থাৎ মানুষের বাসায় এগুলোর খোঁজ পাওয়া যাবে না। কাজেই বিকল্পের খোঁজ করে পাখিরা। 

এটা পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ারে একটি বড় উদাহরণ বলে মনে করেন আকে-ফ্লোরিয়ান হাইয়েমস্ট্রা। একই সঙ্গে নিজেদের বাসা রক্ষা করায় পাখিদের দৃঢ়সংকল্পের প্রমাণও এটি। কারণ কাঁটাগুলোকে দালানের সঙ্গে আটকে রাখতে যে আঠা ব্যবহার করা হয় তা খুব শক্তিশালী। ফলে সুচালো দণ্ডগুলোকে তুলে আনা মোটেই সহজ কাজ ছিল না। 

পাখিদের নিজেদের নখে করে নানা ধরনের জিনিস বয়ে নেওয়ার বহু নজির আছে। এদিকে মানুষের কাছে পাখি তাড়াতে বসানো জিনিসের এমন ব্যবহার বিরক্তিকর মনে হতে পারে, তবে হাইয়েমস্ট্রার কাছে এটি, ‘সুন্দর প্রতিশোধ’। 

 ‘তাদের দূরে রাখতে আমরা যেসব জিনিস ব্যবহার করছি সেগুলো তারা ব্যবহার করছে। আর এটা করছে এমন একটি বাসা তৈরিতে যেটা পাখির সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত