Ajker Patrika

পানি বাড়ছে, নদীর পাড় ভাঙছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
Thumbnail image

ফারাক্কা থেকে নেমে আসা পানিতে ভেসে যাচ্ছে পদ্মা। ভারী বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে নেমে আসা পানিতে যমুনাও এখন উপচে পড়া। এই দুই নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে শাখা নদীগুলোর ওপরও। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি বইছে কোথাও কোথাও। প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম।

আজকের পত্রিকার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্ট এবং শিলাইদহ পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে। এ ছাড়া পদ্মার প্রধান শাখা গড়াই নদীর পানিও বিপৎসীমার কাছাকাছি। আগামী ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কুষ্টিয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এমন হলে দুই নদীর পানিই বিপৎসীমা অতিক্রম করে যেতে পারে।

এদিকে পদ্মা এবং গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে ইতিমধ্যে কুষ্টিয়া জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে আবাদি ফসল। পানি প্রবেশ করছে জনবসতিতে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে নদীর পাড় ভাঙনও। পদ্মার পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, ভেড়ামারা, মিরপুর, কুমারখালী এবং খোকসা উপজেলার কয়েকটি স্থানে নদীটির পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। পদ্মা আর গড়াইয়ের এমন রুদ্র রূপ এর আগে কখনো দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন নদী পাড়ের মানুষেরা। গড়াই নদীর পানি বাড়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে নৌকা পারাপারেও। প্লাবিত হয়েছে কুমারখালীর যদুবয়রা নৌকাঘাট। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লালন আবাসনের ৫১টি পরিবার।

কুষ্টিয়া জেলায় পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে নদীটির পানি। এতে ওই উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

কুষ্টিয়ায় ভাঙনপ্রবণ ২৫টি স্থান শনাক্ত করে সতর্ক দৃষ্টি ও আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আফছার উদ্দিন। তবে প্লাবন ও ভাঙন ঠেকাতে এই মুহূর্তে পানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের খুব বেশি সক্ষমতা নেই বলেও জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। আপাতত ভাঙনের শিকার ১৪টি স্থানে বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ জানিয়েছেন, পদ্মা ও গড়াইয়ের সব কয়টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বিশেষ নজর রেখে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যেখানেই সমস্যা সৃষ্টি হবে, গুরুত্ব বিবেচনায় সেখানেই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এদিকে সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, কিছুদিন ধরে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানিও দ্রুত বাড়ছে। নদীটির সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে পানি। যমুনার পানি বেড়ে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। শাহজাদপুর, উল্লাপাড়ার বিস্তীর্ণ গোচারণ ভূমি তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন গো-খামারিরা। দুই লাখের বেশি গবাদিপশু রয়েছে এই অঞ্চলে। তীব্র স্রোতের কারণে জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে যমুনার পানি ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ নিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময় কাজীপুর পয়েন্টে যমুনার পানি ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত