ইশতিয়াক হাসান
এখন সময়টা কুয়াশার। বেশির ভাগ জায়গাই রাত ও ভোরে কুয়াশায় রীতিমতো ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কুয়াশা কীভাবে তৈরি হয় তা কি আমরা জানি? কিংবা নানা ধরনের কুয়াশা কিংবা কুয়াশার কারণে জন্ম হওয়া অদ্ভুত সব ঘটনার কথা! তাই আজকের গল্পটা কুয়াশার।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে কুয়াশা আসলে কী? একে একধরনের মেঘ বলতে পারেন। আরও পরিষ্কারভাবে বললে মাটির কাছাকাছি থাকা ঘন জলীয় বাষ্পই হলো কুয়াশা।
এখনো বোধ হয় পুরোপুরি খোলাসা হলো না। আমাদের চারপাশে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ জলীয় বাষ্প বা গ্যাসীয় অবস্থায় পানি থাকে। এই জলীয় বাষ্প যখন পুরোপুরি বাতাসের দখল নিয়ে নেয়, তখন পানির খুদে কণাগুলো ঘন হতে শুরু করে। অর্থাৎ তখন ওই গ্যাস রূপ নেয় তরলে। ছোট ছোট এই কণাগুলো বাতাসে ভেসে ঘন একটা আবরণের মতো তৈরি করে, আর এটিই আমাদের অতি পরিচিত কুয়াশা।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, ওগুলো তাহলে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ছে না কেন। আগেই বলেছি এই কণাগুলো আকারে একেবারেই ছোট। তাই এটি মাটিতে না পড়ে ভেসে থাকে। তবে এই খুদে জলাকণাগুলোর কারণেই কিন্তু কুয়াশা দেখতে পারি আমরা। যদিও আমরা এদের জলকণা হিসেবে বুঝতে পারি না। খুব শক্তিশালী ক্যামেরা ব্যবহার করলে বুঝবেন ঘন কুয়াশার সময় ছোট ছোট অসংখ্য জলকণা চারদিকে নড়াচড়া করে বেড়াচ্ছে।
আপনার পরের প্রশ্ন সম্ভবত, শীতকালে কেন এত বেশি দেখা যায় কুয়াশা? কুয়াশা তৈরির জন্য মাটির কাছাকাছি পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্প থাকার পাশাপাশি জলকণাকে ঘন করার জন্য কম তাপমাত্রা থাকাটাও জরুরি। এ কারণেই শীতকালে কুয়াশা বেশি দেখা যায়। ভোরের দিকে ও রাতে কুয়াশা বেশি দেখা যায়। কারণ, ওই সময় তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে।
কুয়াশা নানা ধরনের হয়। ঘন হয়, হালকা হয়। কুয়াশা তৈরির জন্য ধুলা বা বাতাসে অন্য কোনো ধরনের দূষণ প্রয়োজন। ওই ছোট্ট কঠিন বস্তুটার চারপাশে জড়ো হয়েই ঘন হয় জলকণা।
মজার বিষয় হলো বাতাস কুয়াশাকে ধ্বংস করে দিতে পারে, তেমনি কুয়াশা সৃষ্টিতেও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
অবশ্য আরও নানা ধরনের কুয়াশার দেখা মেলে। শীতল কোনো জায়গায় উষ্ণ বাতাস বয়ে গেলেও একধরনের কুয়াশা সৃষ্টি হয়। সাধারণত সাগরের আশপাশে এমন কুয়াশা দেখা যায়। অ্যান্টার্কটিকার মতো শীতল জায়গাতে জলকণা জমে একধরনের কুয়াশার জন্ম হয়। দুই পাহাড়ের মাঝখানের উপত্যকাগুলোয়ও জন্ম হয় কুয়াশার।
‘পি সুপার’ নামে আরেক ধরনের কুয়াশার দেখা মেলে যেটি কয়লার খুদে কণার চারপাশে জমা হয়ে তৈরি হয়। এ ধরনের কুয়াশা অনেক সময়ই দেখতে বাদামি-হলুদ রঙের। যেসব এলাকায় শক্তির জন্য কয়লা পোড়ানো হয় সেসব জায়গায় প্রায়ই এমন কুয়াশার দেখা মেলে। ১৯৫২ সালের সেই কুখ্যাত দ্য লন্ডন ফগ, যার প্রভাবে লন্ডনে ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, একধরনের পি সুপার। এই গ্রেট ফগই যুক্তরাজ্যে কয়লাশিল্প এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণকারী আইন তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
কুয়াশা কিন্তু ধরেও রাখা যায়। কেমন বেখাপ্পা শোনালেও কথাটি সত্যি। বহু প্রাচীনকাল থেকেই কুয়াশা আটকে রাখার ব্যাপারটা ছিল। গাছ এবং ঝোপঝাড়ের নিচে বড় বড় পানির পাত্র রেখে দেওয়া হতো। ওই সব গাছ কুয়াশার পানিটুকু ধরে রাখত। ওই পানি ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে পড়ত পাত্রে। তবে এভাবে পানি সংগ্রহ করাটা বেশ ধীরগতির প্রক্রিয়া বুঝতেই পারছেন।
মজার ঘটনা বিজ্ঞানীরাও এখন কুয়াশা থেকে পানি সংগ্রহের দারুণ সব পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। এ ক্ষেত্রে সবার আগে বলতে হয় ‘ফগ ক্যাচারে’র নাম। বৃষ্টিপাত কম হয় এমন শুকনো জায়গাগুলোতে এ পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয়। এসব এলাকায় খুব বড় বড় পর্দা বা স্ক্রিন বসানো হয়। কুয়াশা ভেসে ভেসে যাওয়ার সময় ওই পাতলা পর্দায় বাধা পায়। এতে এদের গায়ে জলকণা জমে। ওগুলো নিচের বড় পাত্র বা আঁধারে ঝরে পড়ে। আশ্চর্যজনক ব্যাপার, এমন বড় একটি আবরণ এক দিনে ৩৭৫ লিটারের বেশি পানি সংগ্রহ করতে পারে।
পেরুর বেলাভিস্তা এলাকায় এমন ফগ ক্যাচারের দেখা মেলে বেশি। পানির জন্য অনেকটাই ফগ ক্যাচারের দিকে চেয়ে থাকতে হয় গ্রামটিকে। কিন্তু কেন? বেলাভিস্তা এমন এক জায়গা, যেখানে পানির উৎস আছে কমই। নদী নেই। নেই কোনো হ্রদ বা হিমবাহ। কৃষিকাজ তো বটেই মানুষের খাওয়ার পানির পর্যন্ত সংকট তৈরি হয়। তবে এখানে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে প্রচুর কুয়াশা ভেসে আসে। ২০০৬ সালে প্রথম শহরের আশপাশে ফগ ক্যাচার হিসেবে বেশ কিছু বড় পর্দা টানিয়ে দিল। ব্যস হয়ে গেল কাজ, পানি নিয়ে দুশ্চিন্তা অনেকটাই কেটে গেছে এখন শহরবাসীর। এভাবে পেরুর আরও বিভিন্ন এলাকা, চিলির আতাকামা মরুভূমিসহ আরও অনেক জায়গাতেই কুয়াশা থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়।
কুয়াশা নিয়ে আছে নানা ধরনের আশ্চর্য ঘটনা। কুয়াশার উপস্থিতি প্রায়ই কৌশলগত যুদ্ধের মতো ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর একটি বড় উদাহরণ ১৭৭৬ সালের লং আইল্যান্ডের যুদ্ধ। এ সময় আমেরিকান জেনারেল জর্জ ওয়াশিংটন এবং তাঁর দল কুয়াশা ব্যবহার করে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর নজর এড়িয়ে লং আইল্যান্ড থেকে নৌকায় ম্যানহাটনে চলে যান।
আরেকটি ঘটনা বলছি। ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৩৭। ইংল্যান্ডের একটা ফুটবল ম্যাচ ভারী কুয়াশার কারণে শুরুর একটু পরই পরিত্যক্ত হয়। স্বাভাবিকভাবেই খেলোয়াড়, রেফারি-লাইন্সম্যান সবাই মাঠ থেকে চলে গেলেন, তবে একজন রয়ে গেলেন। তিনি এক দলের গোলরক্ষক স্যাম বাট্রাম। যাবেন কেন? রেফারির ঘোষণা শোনেননি তিনি। আর কুয়াশা এত ঘন যে অন্যরা যে চলে গেছে এটা টেরও পাননি। মোটামুটি মিনিট ১৫ এই কুয়াশায় গোলবার পাহারা দিলেন। তারপরই এক পুলিশ সদস্য এগিয়ে এসে জানালেন ম্যাচ বাতিলের কথা।
কুয়াশার কারণে ঘটা অদ্ভুত এক বিষয় ব্রোকেন স্পেকট্রা। এ সময় সূর্যের আলো কুয়াশা বা মেঘের মধ্যে মানুষের ছায়া ফেলে, তখন ওটা বিশাল দেখা যায়। কাজেই এভাবে কখনো নিজের ছায়া দেখে ভয় পাবেন না যেন।
আবার কুয়াশার মধ্যে সূর্যের আলো পড়ে অনেকটা রংধনুর মতো একটি বিষয় ঘটনায়। এটি পরিচিত ফগবো নামে।
চিলি ও পেরুর উপকূলবর্তী এলাকায় আছে অদ্ভুত এক কুয়াশা। এটা এত পরিষ্কার যে দৃষ্টিসীমায় তেমন কোনো বাধাই তৈরি করে না। তবে সমস্যা হলো এই কুয়াশা এতটাই আর্দ্র যে, গাড়িচালকদের উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার ব্যবহার করতে হয়।
পৃথিবীর সবচেয়ে কুয়াশাচ্ছন্ন জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হয় গ্র্যান্ড ব্যাংকস। কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের পাশের আটলান্টিক মহাসাগরে এই জায়গাটি। উত্তর থেকে আসা শীতল ল্যাব্রাডার স্রোত এবং পূর্ব দিক থেকে আসা উষ্ণ গালফ স্রোত বছরের প্রায় প্রতিটি দিনই ঘন কুয়াশার পরিবেশ তৈরি করে।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, উইকিপিডিয়া, ওয়েদার অ্যান্ড রাডার, জাস্ট ফান ফ্যাক্টস ডট কম
এখন সময়টা কুয়াশার। বেশির ভাগ জায়গাই রাত ও ভোরে কুয়াশায় রীতিমতো ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কুয়াশা কীভাবে তৈরি হয় তা কি আমরা জানি? কিংবা নানা ধরনের কুয়াশা কিংবা কুয়াশার কারণে জন্ম হওয়া অদ্ভুত সব ঘটনার কথা! তাই আজকের গল্পটা কুয়াশার।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে কুয়াশা আসলে কী? একে একধরনের মেঘ বলতে পারেন। আরও পরিষ্কারভাবে বললে মাটির কাছাকাছি থাকা ঘন জলীয় বাষ্পই হলো কুয়াশা।
এখনো বোধ হয় পুরোপুরি খোলাসা হলো না। আমাদের চারপাশে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ জলীয় বাষ্প বা গ্যাসীয় অবস্থায় পানি থাকে। এই জলীয় বাষ্প যখন পুরোপুরি বাতাসের দখল নিয়ে নেয়, তখন পানির খুদে কণাগুলো ঘন হতে শুরু করে। অর্থাৎ তখন ওই গ্যাস রূপ নেয় তরলে। ছোট ছোট এই কণাগুলো বাতাসে ভেসে ঘন একটা আবরণের মতো তৈরি করে, আর এটিই আমাদের অতি পরিচিত কুয়াশা।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, ওগুলো তাহলে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ছে না কেন। আগেই বলেছি এই কণাগুলো আকারে একেবারেই ছোট। তাই এটি মাটিতে না পড়ে ভেসে থাকে। তবে এই খুদে জলাকণাগুলোর কারণেই কিন্তু কুয়াশা দেখতে পারি আমরা। যদিও আমরা এদের জলকণা হিসেবে বুঝতে পারি না। খুব শক্তিশালী ক্যামেরা ব্যবহার করলে বুঝবেন ঘন কুয়াশার সময় ছোট ছোট অসংখ্য জলকণা চারদিকে নড়াচড়া করে বেড়াচ্ছে।
আপনার পরের প্রশ্ন সম্ভবত, শীতকালে কেন এত বেশি দেখা যায় কুয়াশা? কুয়াশা তৈরির জন্য মাটির কাছাকাছি পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্প থাকার পাশাপাশি জলকণাকে ঘন করার জন্য কম তাপমাত্রা থাকাটাও জরুরি। এ কারণেই শীতকালে কুয়াশা বেশি দেখা যায়। ভোরের দিকে ও রাতে কুয়াশা বেশি দেখা যায়। কারণ, ওই সময় তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে।
কুয়াশা নানা ধরনের হয়। ঘন হয়, হালকা হয়। কুয়াশা তৈরির জন্য ধুলা বা বাতাসে অন্য কোনো ধরনের দূষণ প্রয়োজন। ওই ছোট্ট কঠিন বস্তুটার চারপাশে জড়ো হয়েই ঘন হয় জলকণা।
মজার বিষয় হলো বাতাস কুয়াশাকে ধ্বংস করে দিতে পারে, তেমনি কুয়াশা সৃষ্টিতেও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
অবশ্য আরও নানা ধরনের কুয়াশার দেখা মেলে। শীতল কোনো জায়গায় উষ্ণ বাতাস বয়ে গেলেও একধরনের কুয়াশা সৃষ্টি হয়। সাধারণত সাগরের আশপাশে এমন কুয়াশা দেখা যায়। অ্যান্টার্কটিকার মতো শীতল জায়গাতে জলকণা জমে একধরনের কুয়াশার জন্ম হয়। দুই পাহাড়ের মাঝখানের উপত্যকাগুলোয়ও জন্ম হয় কুয়াশার।
‘পি সুপার’ নামে আরেক ধরনের কুয়াশার দেখা মেলে যেটি কয়লার খুদে কণার চারপাশে জমা হয়ে তৈরি হয়। এ ধরনের কুয়াশা অনেক সময়ই দেখতে বাদামি-হলুদ রঙের। যেসব এলাকায় শক্তির জন্য কয়লা পোড়ানো হয় সেসব জায়গায় প্রায়ই এমন কুয়াশার দেখা মেলে। ১৯৫২ সালের সেই কুখ্যাত দ্য লন্ডন ফগ, যার প্রভাবে লন্ডনে ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, একধরনের পি সুপার। এই গ্রেট ফগই যুক্তরাজ্যে কয়লাশিল্প এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণকারী আইন তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
কুয়াশা কিন্তু ধরেও রাখা যায়। কেমন বেখাপ্পা শোনালেও কথাটি সত্যি। বহু প্রাচীনকাল থেকেই কুয়াশা আটকে রাখার ব্যাপারটা ছিল। গাছ এবং ঝোপঝাড়ের নিচে বড় বড় পানির পাত্র রেখে দেওয়া হতো। ওই সব গাছ কুয়াশার পানিটুকু ধরে রাখত। ওই পানি ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে পড়ত পাত্রে। তবে এভাবে পানি সংগ্রহ করাটা বেশ ধীরগতির প্রক্রিয়া বুঝতেই পারছেন।
মজার ঘটনা বিজ্ঞানীরাও এখন কুয়াশা থেকে পানি সংগ্রহের দারুণ সব পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। এ ক্ষেত্রে সবার আগে বলতে হয় ‘ফগ ক্যাচারে’র নাম। বৃষ্টিপাত কম হয় এমন শুকনো জায়গাগুলোতে এ পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয়। এসব এলাকায় খুব বড় বড় পর্দা বা স্ক্রিন বসানো হয়। কুয়াশা ভেসে ভেসে যাওয়ার সময় ওই পাতলা পর্দায় বাধা পায়। এতে এদের গায়ে জলকণা জমে। ওগুলো নিচের বড় পাত্র বা আঁধারে ঝরে পড়ে। আশ্চর্যজনক ব্যাপার, এমন বড় একটি আবরণ এক দিনে ৩৭৫ লিটারের বেশি পানি সংগ্রহ করতে পারে।
পেরুর বেলাভিস্তা এলাকায় এমন ফগ ক্যাচারের দেখা মেলে বেশি। পানির জন্য অনেকটাই ফগ ক্যাচারের দিকে চেয়ে থাকতে হয় গ্রামটিকে। কিন্তু কেন? বেলাভিস্তা এমন এক জায়গা, যেখানে পানির উৎস আছে কমই। নদী নেই। নেই কোনো হ্রদ বা হিমবাহ। কৃষিকাজ তো বটেই মানুষের খাওয়ার পানির পর্যন্ত সংকট তৈরি হয়। তবে এখানে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে প্রচুর কুয়াশা ভেসে আসে। ২০০৬ সালে প্রথম শহরের আশপাশে ফগ ক্যাচার হিসেবে বেশ কিছু বড় পর্দা টানিয়ে দিল। ব্যস হয়ে গেল কাজ, পানি নিয়ে দুশ্চিন্তা অনেকটাই কেটে গেছে এখন শহরবাসীর। এভাবে পেরুর আরও বিভিন্ন এলাকা, চিলির আতাকামা মরুভূমিসহ আরও অনেক জায়গাতেই কুয়াশা থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়।
কুয়াশা নিয়ে আছে নানা ধরনের আশ্চর্য ঘটনা। কুয়াশার উপস্থিতি প্রায়ই কৌশলগত যুদ্ধের মতো ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর একটি বড় উদাহরণ ১৭৭৬ সালের লং আইল্যান্ডের যুদ্ধ। এ সময় আমেরিকান জেনারেল জর্জ ওয়াশিংটন এবং তাঁর দল কুয়াশা ব্যবহার করে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর নজর এড়িয়ে লং আইল্যান্ড থেকে নৌকায় ম্যানহাটনে চলে যান।
আরেকটি ঘটনা বলছি। ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৩৭। ইংল্যান্ডের একটা ফুটবল ম্যাচ ভারী কুয়াশার কারণে শুরুর একটু পরই পরিত্যক্ত হয়। স্বাভাবিকভাবেই খেলোয়াড়, রেফারি-লাইন্সম্যান সবাই মাঠ থেকে চলে গেলেন, তবে একজন রয়ে গেলেন। তিনি এক দলের গোলরক্ষক স্যাম বাট্রাম। যাবেন কেন? রেফারির ঘোষণা শোনেননি তিনি। আর কুয়াশা এত ঘন যে অন্যরা যে চলে গেছে এটা টেরও পাননি। মোটামুটি মিনিট ১৫ এই কুয়াশায় গোলবার পাহারা দিলেন। তারপরই এক পুলিশ সদস্য এগিয়ে এসে জানালেন ম্যাচ বাতিলের কথা।
কুয়াশার কারণে ঘটা অদ্ভুত এক বিষয় ব্রোকেন স্পেকট্রা। এ সময় সূর্যের আলো কুয়াশা বা মেঘের মধ্যে মানুষের ছায়া ফেলে, তখন ওটা বিশাল দেখা যায়। কাজেই এভাবে কখনো নিজের ছায়া দেখে ভয় পাবেন না যেন।
আবার কুয়াশার মধ্যে সূর্যের আলো পড়ে অনেকটা রংধনুর মতো একটি বিষয় ঘটনায়। এটি পরিচিত ফগবো নামে।
চিলি ও পেরুর উপকূলবর্তী এলাকায় আছে অদ্ভুত এক কুয়াশা। এটা এত পরিষ্কার যে দৃষ্টিসীমায় তেমন কোনো বাধাই তৈরি করে না। তবে সমস্যা হলো এই কুয়াশা এতটাই আর্দ্র যে, গাড়িচালকদের উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার ব্যবহার করতে হয়।
পৃথিবীর সবচেয়ে কুয়াশাচ্ছন্ন জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হয় গ্র্যান্ড ব্যাংকস। কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের পাশের আটলান্টিক মহাসাগরে এই জায়গাটি। উত্তর থেকে আসা শীতল ল্যাব্রাডার স্রোত এবং পূর্ব দিক থেকে আসা উষ্ণ গালফ স্রোত বছরের প্রায় প্রতিটি দিনই ঘন কুয়াশার পরিবেশ তৈরি করে।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, উইকিপিডিয়া, ওয়েদার অ্যান্ড রাডার, জাস্ট ফান ফ্যাক্টস ডট কম
ঢাকার বাতাসে আজও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষ ১০–এ নেই রাজধানী ঢাকা। গতকালের তুলনায় রাজধানী শহরের বাতাসে ক্ষতিকর ক্ষুদ্রকণার পরিমাণ সামান্য কম রেকর্ড করা হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেপ্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার (ইসিএ) হিসেবে সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে নতুন কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা প্রকল্প স্থাপন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করবে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
১৬ ঘণ্টা আগেসুইজারল্যান্ডের সংস্থা আইকিউএয়ারের তালিকা অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ভারতের বার্নিহাট। এই শহরের বাসিন্দা দুই বছর বয়সী সুমাইয়া আনসারি বেশ কয়েক দিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগেছিল। গত মার্চে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং অক্সিজেন দিতে হয়। দুই দিন তাকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকতে হয়।
১ দিন আগেআজ ঢাকার বাতাসে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গতকালের তুলনায় রাজধানী শহরের বাতাসে ক্ষতিকর ক্ষুদ্রকণার পরিমাণ সামান্য কম রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সোমবার, বাতাসের গুণমান সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআইয়ের সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার বায়ুমান ১২৯, যা সংবেদনশীল স্বাস্থ্যের মানুষের জন্য...
১ দিন আগে