Ajker Patrika

যে পাহাড় কাছে ডাকে

মো. জাকিরুল ইসলাম, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) 
যে পাহাড় কাছে ডাকে

‘ডাকছে পাহাড় ওই চলো যায়/পাহাড় শুধুই ডাকে/রৌদ্র ছায়ার লুকোচুরি দেখি/পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে’। পাহাড়ে গেলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। কবিতা খেলে কবির মনে। পাহাড়ের সৌন্দর্য কাছে টানে না এমন মানুষ কমই পাওয়া যাবে। যদি পাহাড়ের চূড়ায় মেঘের খেলা দেখা যায় তাহলে তো কথাই নেই।

বলছি, ভারতের মেঘালয়ের কূলঘেঁষা গারো পাহাড়ের কথা। মনোমুগ্ধকর এই পাহাড়টির দেখা মিলবে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট উপজেলায়। উপজেলা সদরের জিরো পয়েন্ট থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ি গ্রাম গাবরাখালী। এটি এখন গারো পাহাড় পর্যটনকেন্দ্র নামেও পরিচিত। ২০১৯ সালে এখানে পর্যটনকেন্দ্র করার উদ্যোগ নেয় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন।

প্রধান ফটক পেরিয়ে হাতের বাম পাশে দেখা মিলবে মিতালি টিলার। এই টিলায় আগত অতিথিদের বিশ্রামের জন্য ‘বরাং’ নামক একটি ভবন রয়েছে। এর উত্তর-পশ্চিমে পাহাড়ের ওপর তৈরি করা হয়েছে ‘জারামবং’ ও ‘ফ্রিংতাল’ নামক দুটি বিশ্রামাগার। পাহাড়ের চূড়ায় ষড়্‌ভূজাকৃতির ‘জারামবং’-এ বসে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের অপরূপ নৈসর্গিক দৃশ্য অবলোকন করা যায়।

এ ছাড়া দেখা মিলবে সমতলে ৪ দশমিক ১০ একর জায়গাজুড়ে থাকা দৃষ্টিনন্দন ‘চিবল’ নামক কৃত্রিম হ্রদ। এই হ্রদকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে সৌন্দর্যময় কাঠের সেতু। এখানে দাঁড়িয়ে পূর্ব-পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে তাকালে দেখা যাবে ছোট-বড় পাহাড়ি টিলা আর উত্তর দিকে ভারতের মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য। সেতুর নিচে স্বচ্ছ পানিতে নৌবিহারের জন্য আনা হয়েছে প্যাডেল বোট। রয়েছে দেশি হাঁসের কোলাহল। তীরে রয়েছে শিশুদের জন্য অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিক ট্রেন, নাগরদোলা ও বিভিন্ন রাইট। রয়েছে বাঁশের চাটাই ও গাছের তৈরি শিল্পকর্ম। একটু সামনেই রয়েছে ছোট-বড় পাহাড়ি টিলা। এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাওয়ার জন্য রয়েছে স্টিলের সিঁড়ি। এর দক্ষিণে মাহবুব শাহের মাজার।

এই পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমণপিপাসুদের ভিড় থাকে প্রায় প্রতিদিনই। বিশেষ করে ছুটির দিনে পর্যটকদের আগমন একটু বেশিই হয়। কেনাকাটার জন্য রয়েছে হরেক রকমের দোকান। কাপড়চোপড়, বাঁশের বাঁশিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী থেকে শুরু করে পাহাড়ি কাঠের আসবাব বিক্রি হয় সুলভ মূল্যে।

পর্যটনকেন্দ্রটির উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রবেশ করার সময় রাখা হয় প্রবেশমূল্য। বাস-ট্রাক ২০০ টাকা, মাইক্রোবাস-পিকআপ ভ্যানের জন্য ১০০ টাকা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ৫০ টাকা, ব্যাটারিচালিত রিকশা ২০ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা এবং জনপ্রতি প্রবেশমূল্য ১০ টাকা দিতে হয়।

এখানে ঘুরতে আসা পার্শ্ববর্তী ফুলপুর উপজেলার হান্নান বলেন, ‘এখানকার প্রকৃতির সৌন্দর্য এককথায় দারুণ। খুবই ভালো লাগল ঘুরতে এসে। পরিবার-পরিজন নিয়ে পাহাড়ে সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো একটি জায়গা এটি। সংস্কার করা হলে সুন্দর একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠবে।’

দায়িত্বে থাকা নিজাম উদ্দিন জানান, এই পর্যটনকেন্দ্রটির কাজ চলমান রয়েছে। পুরো কাজ সম্পন্ন হলে পর্যটকদের আরও আগ্রহ বাড়বে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, পর্যটনকেন্দ্রটির কাজ শেষ হলে লাখ লাখ মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অনন্য ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত