২৭ বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন বৃন্দাবন দাস ও শাহনাজ খুশি। কোনো আয়োজন ছিল না। কোনো উৎসবও না। এমনকি প্রিয়জনদের উপস্থিতি তো দূরে থাক, সঙ্গে ছিল না তাঁদের শুভকামনাও।
শুধু দুটো মানুষ, নিজেদের ভালোবাসাকে জয়ী করতে এক অনিশ্চিত জীবনের পথে পা বাড়িয়েছিলেন সেদিন। জার্মান কালচারাল সেন্টারে সেদিন একটি নাটকের শো ছিল। ওই দিনকেই তাঁরা বিয়ের জন্য বেছে নেন। এরপর কেবলই সংগ্রামের গল্প। তখন তো কেউ চিনতো না বৃন্দাবন কিংবা খুশিকে। নাটক, অভিনয়—এসব নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন উভয়েই।
অনিশ্চয়তার, সংগ্রামের সেই দিনগুলোর দিকে ফিরে তাকালে কেবলই কষ্ট হয় শাহনাজ খুশির। ভালোও লাগে। একটা সংগ্রামের পথ তো পাড়ি দিয়ে আসতে পেরেছেন সফলভাবে।
এখন ভরা সংসার তাঁদের। দুই ছেলে বড় হয়েছে। নিজেরাও সারাদেশের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত। নাট্যকার, অভিনেতা বৃন্দাবন দাসের সঙ্গে সফল সংসারের ২৭ বছর পূর্ণ করলেন শাহনাজ খুশি। এ দিনে ফেসবুকে দীর্ঘ এক লেখায় তিনি শোনালেন তাঁদের দাম্পত্যের গল্প।
পাঠকদের জন্য পুরো লেখাটি থাকছে এখানে।
না হলুদ, না মেহেদি, না কোনো বিয়ের গহনা শাড়ি, না কোনো মেহমান, গানবাদ্য। এমনকি নিজেরাও সেদিন নানান উৎকন্ঠায় সারাদিন কিছু খাইনি। বোকা বয়সের, বোকা সিদ্ধান্তে, আকাশ সমান বোকা করে দিয়েছিল দুজনকেই।
চারপাশের স্বজনদের তিরস্কারে, অভিযোগে, আক্রোশে থেমে গেলাম আমরা। হিসাব করে কিছু করার বুদ্ধি বা বয়স ছিল না। সেই হিসাব করলে কি সারা পৃথিবীর সব মানুষ একদিকে রেখে কেউ অনিশ্চিত একটা পথ বেছে নেয়?
সেই দুর্বার কাছে আসার দিন থেকে ভালোবাসতে ভুলে গেলাম। মুখরা, আড্ডাপ্রিয় আমরা নিশ্চুপ হয়ে গেলাম। আমাদের অনেক কথা হয়েছে। নাটক-থিয়েটার, দেশ-রাজনীতি, চাল-ডাল, বাসা ভাড়া, ভবিষ্যৎ নিয়ে। কিন্তু ভালবাসা নিয়ে একটি কথাও নয়। অপরাধী সে ভালোবাসাকে বাক্সবন্দি করে, বাঁচতেই হবে—এমন পণ করে কেবলই ছুটেছি দুজন।
আমাদের মতের অমিল অনেক হয়েছে। কিন্তু মত বিরোধ হয়নি। সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সংশয় হয়েছে অনেক। কিন্তু কখনো সংঘাত হয়নি। প্রিয় সম্পর্কগুলোর এত বেশি অবিশ্বাস্য নিষ্ঠুরতা আমাদের জন্য বরাদ্দ ছিল যে, আজ আর কোনো অচেনা কিছুতেই চমকে উঠি না।
অবস্থাদৃষ্টে আমাদের স্বপ্নগুলো সব বদলে গেল। অনেক সময় পারও হয়ে গেছে। কিন্তু প্র্যাকটিক্যাল খাতা আঁকতে দিলে, তার মধ্যে চিঠিসহ ফেরত দেওয়া। গল্প বা কবিতার বই উপহার দিলে, তার মধ্যে চ্যাপটা করা শুকনো গোলাপ ফুল দেওয়া। চৈত্রসংক্রান্তির মেলায় এক টাকার শঙ্খের আংটি ভরা প্রেম দেওয়া—এসবের কোনোটাই আর কাছে আসার পর কোনোদিন হয়নি।
বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় ফর্দে ফর্দে ভাগ করে দিতে হয়েছে ধের্য, শক্তি, সুন্দর যৌবনের উচ্ছ্বল সব আয়ু। আর অপেক্ষা করেছি, শক্তি নিয়ে নতুন করে বেঁচে উঠবার।
এখন আমাদের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার কুৎসিত ব্যস্ততা কমেছে। এখন অনেক ভালবাসার সময় হয় আমাদের। আমরা রোজ একই ঔষধের পাতা থেকে এসিডের ট্যাবলেট খাই। সুস্থ থাকার চিন্তায় খুব ভোরে হাঁটতে যাই। বাচ্চাদের স্কুল ব্যাগ কাঁধে আর দৌড়াতে হয় না বলে চা খাওয়ার পরে অনেকক্ষণ কথা হয়। একই ব্যান্ডের কালার দিয়ে উঁকি দেওয়া সফেদ চুল ঢাকি। একই ডাক্তার দেখিয়ে চশমার পাওয়ার বদলাই।
তোমার আমার পথচলা এত ভয়ংকর না হলে, কুসুমে আঁকা স্বপ্নগুলো কেমন হতো সেটা বলি। মাঝে মাঝে দুজন কিছু না বলে খুব কাঁদি। এবং কিছু না বলার পরও আমরা দুজন জানি আমরা কেন কাঁদছি। আমাদের এখন ভালবাসার অনেক সময়। শুধু বেঁচে থাকার সময় বেশি রকম কমে গেছে।
২৭ বছর তবুও কেটে গেল এ কংকর বিছানো পথে—দ্রোহ, যুদ্ধে, প্রতিজ্ঞায়, মমতায়। কোনো গিফট, কোনো আনুষ্ঠানিকতা দরকার হয়নি। শুধু আমরা জানি, আপনজনহীন হয়ে পড়ার এই দিন।
নিসঙ্গতা অবধারিত হলে সেটাকে উৎসব মনে করাই ভালো। তুমি এবং আমি ২৭টা বছর এ নিসঙ্গতার উৎসব করি শক্তি ভরে।
সময় আমাদের দু-জনের জীবনের কাংখিত গল্পটা নিষ্ঠুরভাবে বদলে দিয়েছে। কিন্তু ভালবাসাটা বদলাতে পারেনি। যে ফুলের মালাটা গলায় পরা, এটাও ২৩ বছর পর সন্তানদের উৎসাহে, উপহারে পরা। তাতে কিছু ফারাক পড়েনি।
২৬ বছর আগে রোজ মনে হতো, মরে যাই! এখন রোজ মনে হয়, অনেকদিন বেঁচে থাকি। কষ্টকর সেই পথটা রোজ দুজনে রোজই দেখে আসি। হোক আর্শীবাদহীন, তবুও এ পথচলা যেন থেমে না যায়। ভালোবাসাটুকু যেন গতি না হারায় আমাদের, জীবনের শেষদিনেও।
বিনোদন সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
২৭ বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন বৃন্দাবন দাস ও শাহনাজ খুশি। কোনো আয়োজন ছিল না। কোনো উৎসবও না। এমনকি প্রিয়জনদের উপস্থিতি তো দূরে থাক, সঙ্গে ছিল না তাঁদের শুভকামনাও।
শুধু দুটো মানুষ, নিজেদের ভালোবাসাকে জয়ী করতে এক অনিশ্চিত জীবনের পথে পা বাড়িয়েছিলেন সেদিন। জার্মান কালচারাল সেন্টারে সেদিন একটি নাটকের শো ছিল। ওই দিনকেই তাঁরা বিয়ের জন্য বেছে নেন। এরপর কেবলই সংগ্রামের গল্প। তখন তো কেউ চিনতো না বৃন্দাবন কিংবা খুশিকে। নাটক, অভিনয়—এসব নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন উভয়েই।
অনিশ্চয়তার, সংগ্রামের সেই দিনগুলোর দিকে ফিরে তাকালে কেবলই কষ্ট হয় শাহনাজ খুশির। ভালোও লাগে। একটা সংগ্রামের পথ তো পাড়ি দিয়ে আসতে পেরেছেন সফলভাবে।
এখন ভরা সংসার তাঁদের। দুই ছেলে বড় হয়েছে। নিজেরাও সারাদেশের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত। নাট্যকার, অভিনেতা বৃন্দাবন দাসের সঙ্গে সফল সংসারের ২৭ বছর পূর্ণ করলেন শাহনাজ খুশি। এ দিনে ফেসবুকে দীর্ঘ এক লেখায় তিনি শোনালেন তাঁদের দাম্পত্যের গল্প।
পাঠকদের জন্য পুরো লেখাটি থাকছে এখানে।
না হলুদ, না মেহেদি, না কোনো বিয়ের গহনা শাড়ি, না কোনো মেহমান, গানবাদ্য। এমনকি নিজেরাও সেদিন নানান উৎকন্ঠায় সারাদিন কিছু খাইনি। বোকা বয়সের, বোকা সিদ্ধান্তে, আকাশ সমান বোকা করে দিয়েছিল দুজনকেই।
চারপাশের স্বজনদের তিরস্কারে, অভিযোগে, আক্রোশে থেমে গেলাম আমরা। হিসাব করে কিছু করার বুদ্ধি বা বয়স ছিল না। সেই হিসাব করলে কি সারা পৃথিবীর সব মানুষ একদিকে রেখে কেউ অনিশ্চিত একটা পথ বেছে নেয়?
সেই দুর্বার কাছে আসার দিন থেকে ভালোবাসতে ভুলে গেলাম। মুখরা, আড্ডাপ্রিয় আমরা নিশ্চুপ হয়ে গেলাম। আমাদের অনেক কথা হয়েছে। নাটক-থিয়েটার, দেশ-রাজনীতি, চাল-ডাল, বাসা ভাড়া, ভবিষ্যৎ নিয়ে। কিন্তু ভালবাসা নিয়ে একটি কথাও নয়। অপরাধী সে ভালোবাসাকে বাক্সবন্দি করে, বাঁচতেই হবে—এমন পণ করে কেবলই ছুটেছি দুজন।
আমাদের মতের অমিল অনেক হয়েছে। কিন্তু মত বিরোধ হয়নি। সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সংশয় হয়েছে অনেক। কিন্তু কখনো সংঘাত হয়নি। প্রিয় সম্পর্কগুলোর এত বেশি অবিশ্বাস্য নিষ্ঠুরতা আমাদের জন্য বরাদ্দ ছিল যে, আজ আর কোনো অচেনা কিছুতেই চমকে উঠি না।
অবস্থাদৃষ্টে আমাদের স্বপ্নগুলো সব বদলে গেল। অনেক সময় পারও হয়ে গেছে। কিন্তু প্র্যাকটিক্যাল খাতা আঁকতে দিলে, তার মধ্যে চিঠিসহ ফেরত দেওয়া। গল্প বা কবিতার বই উপহার দিলে, তার মধ্যে চ্যাপটা করা শুকনো গোলাপ ফুল দেওয়া। চৈত্রসংক্রান্তির মেলায় এক টাকার শঙ্খের আংটি ভরা প্রেম দেওয়া—এসবের কোনোটাই আর কাছে আসার পর কোনোদিন হয়নি।
বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় ফর্দে ফর্দে ভাগ করে দিতে হয়েছে ধের্য, শক্তি, সুন্দর যৌবনের উচ্ছ্বল সব আয়ু। আর অপেক্ষা করেছি, শক্তি নিয়ে নতুন করে বেঁচে উঠবার।
এখন আমাদের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার কুৎসিত ব্যস্ততা কমেছে। এখন অনেক ভালবাসার সময় হয় আমাদের। আমরা রোজ একই ঔষধের পাতা থেকে এসিডের ট্যাবলেট খাই। সুস্থ থাকার চিন্তায় খুব ভোরে হাঁটতে যাই। বাচ্চাদের স্কুল ব্যাগ কাঁধে আর দৌড়াতে হয় না বলে চা খাওয়ার পরে অনেকক্ষণ কথা হয়। একই ব্যান্ডের কালার দিয়ে উঁকি দেওয়া সফেদ চুল ঢাকি। একই ডাক্তার দেখিয়ে চশমার পাওয়ার বদলাই।
তোমার আমার পথচলা এত ভয়ংকর না হলে, কুসুমে আঁকা স্বপ্নগুলো কেমন হতো সেটা বলি। মাঝে মাঝে দুজন কিছু না বলে খুব কাঁদি। এবং কিছু না বলার পরও আমরা দুজন জানি আমরা কেন কাঁদছি। আমাদের এখন ভালবাসার অনেক সময়। শুধু বেঁচে থাকার সময় বেশি রকম কমে গেছে।
২৭ বছর তবুও কেটে গেল এ কংকর বিছানো পথে—দ্রোহ, যুদ্ধে, প্রতিজ্ঞায়, মমতায়। কোনো গিফট, কোনো আনুষ্ঠানিকতা দরকার হয়নি। শুধু আমরা জানি, আপনজনহীন হয়ে পড়ার এই দিন।
নিসঙ্গতা অবধারিত হলে সেটাকে উৎসব মনে করাই ভালো। তুমি এবং আমি ২৭টা বছর এ নিসঙ্গতার উৎসব করি শক্তি ভরে।
সময় আমাদের দু-জনের জীবনের কাংখিত গল্পটা নিষ্ঠুরভাবে বদলে দিয়েছে। কিন্তু ভালবাসাটা বদলাতে পারেনি। যে ফুলের মালাটা গলায় পরা, এটাও ২৩ বছর পর সন্তানদের উৎসাহে, উপহারে পরা। তাতে কিছু ফারাক পড়েনি।
২৬ বছর আগে রোজ মনে হতো, মরে যাই! এখন রোজ মনে হয়, অনেকদিন বেঁচে থাকি। কষ্টকর সেই পথটা রোজ দুজনে রোজই দেখে আসি। হোক আর্শীবাদহীন, তবুও এ পথচলা যেন থেমে না যায়। ভালোবাসাটুকু যেন গতি না হারায় আমাদের, জীবনের শেষদিনেও।
বিনোদন সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
গত বছর টরন্টো উৎসবে প্রিমিয়ার হয় মেহজাবীন চৌধুরী অভিনীত ‘সাবা’ সিনেমার। এর পর থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে ঘুরছে সিনেমাটি। ১০টির বেশি উৎসবে প্রদর্শিত হওয়া সাবা এবার জায়গা করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ইন্ডিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব মেলবোর্ন চলচ্চিত্র উৎসবে। একই উৎসবে প্রদর্শিত হবে নুহাশ হুমায়ূনের...
৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারের লক্ষ্যে জুলাই গণ-আন্দোলনের এক বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ নিয়ে নতুন গান বাঁধলেন সংগীত পরিচালক ও সুরকার ফোয়াদ নাসের বাবু। ‘জাগো বাংলাদেশ নতুন সূর্য হাসে’ শিরোনামের গানটি লিখেছেন মুশফিক ফজল আনসারী। গানটি গেয়েছেন একঝাঁক নবীন শিল্পী।
৫ ঘণ্টা আগেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ ২ আগস্ট বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করেছে দৃশ্যমাধ্যম সমাজ। ‘দৃশ্যমাধ্যম সমাজ সম্মিলন ২০২৫: কইলজ্যা কাঁপানো ৩৬ দিন’ শিরোনামের এই আয়োজনে থাকছে আলোচনা সভা, গান, কবিতা, চলচ্চিত্র, নাটক, আলোকচিত্র ও পোস্টার প্রদর্শনী।
৫ ঘণ্টা আগেদীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে ৩৩ বছরের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো শাহরুখ খানের ঘরে আসছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘জওয়ান’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, শাহরুখের মতো এ বছর প্রথমবার সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার ঘরে তুলছেন রানী মুখার্জি।
১৬ ঘণ্টা আগে