Ajker Patrika

দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রিতেও ব্যর্থতার ছায়া

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮: ৪৬
‘গেম চেঞ্জার’ সিনেমায় রামচরণ। ছবি: সংগৃহীত
‘গেম চেঞ্জার’ সিনেমায় রামচরণ। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ ভারতীয় ইন্ডাস্ট্রির চাপে কোণঠাসা বলিউড। হিন্দি ইন্ডাস্ট্রির নামীদামি অভিনেতারাও ক্যারিয়ার ফেরাতে দক্ষিণের পরিচালকদের ওপর ভরসা করেন। কথাগুলো সত্যি সন্দেহ নেই। কিন্তু এটাই একমাত্র সত্যি, এমনটাও নয়। দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রিতেও ব্যর্থতার ছায়া আছে। গত বছরটা তামিল, তেলুগু, মালয়ালম, কন্নড় ইন্ডাস্ট্রির জন্য একেবারেই ভাল ছিল না। অনেক নামী তারকার সিনেমা ব্যর্থ হয়েছে সেখানেও।

‘বাহুবলী’, ‘আরআরআর’, ‘কেজিএফ’, ‘কান্তারা’ কিংবা ‘পুষ্পা’র মতো সিনেমার ব্যাপক সাফল্যের কারণে চাপে পড়ে গেছে হিন্দি ইন্ডাস্ট্রি। কারণ, অনেক বছর ধরে দক্ষিণের মতো সাফল্য দিতে পারছিল না বলিউড। শাহরুখ খানের ‘জওয়ান’ কিছুটা আশা জাগালেও সেখানে সেই দক্ষিণি পরিচালক অ্যাটলির দক্ষতার কথাই উঠে আসে বেশি। তবে ২০২৪ সালে একের পর এক দক্ষিণি সিনেমা ব্যর্থ হয়েছে। এস শঙ্কর পরিচালিত কমল হাসানের বহুল প্রতীক্ষিত ‘ইন্ডিয়ান টু’ একেবারেই চলেনি। ব্যর্থ হয়েছে রজনীকান্তের ‘ভেট্টাইয়ান’।

পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে তিন হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগ করা হয়েছিল। যার মধ্যে হাজার কোটি রুপি একেবারেই লস। ২০২৪ সালে মুক্তি পেয়েছে ২৪১টি সিনেমা, এরমধ্যে মাত্র ১৮টি বলার মতো ব্যবসা করেছে। এর মধ্যে ‘মহারাজা’, ‘আমরণ’-এর মতো কিছু সিনেমা সফল হয়েছে। বড় বাজেটের সিনেমা পরপর ব্যর্থ হওয়াতেই সমস্যা বেড়েছে ইন্ডাস্ট্রির। সুরিয়া অভিনীত ‘কানগুভা’ নিয়ে আশা ছিল পরিবেশক ও হল মালিকদের। ৩৫০ কোটি রুপি ব্যয়ে তৈরি সেই সিনেমা মাত্র ১০৬ কোটির ব্যবসা করতে পেরেছে। তবে বড় সাফল্য না পেলেও বাজেটের টাকা তুলে নিতে পেরেছিল থালাপতি বিজয়ের ‘দ্য গ্রেটেস্ট অব অল টাইম’।

‘আরআরআর’-এর পর রামচরণ এবং জুনিয়র এনটিআরের জনপ্রিয়তা বহুগুণ বেড়েছে। কিন্তু গত বছর জুনিয়র এনটিআরের ‘দেভারা: পার্ট ওয়ান’ মুক্তি পায়। সেখানে জাহ্নবী কাপুরের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন অভিনেতা। সে সিনেমা একেবারেই ব্যবসা করতে পারেনি। এ বছরের গোড়ার দিকে মুক্তি পেয়েছিল রামচরণের ‘গেম চেঞ্জার’, নায়িকা ছিলেন কিয়ারা আদভানি। চারশ কোটি রুপিরও বেশি বাজেটের এ সিনেমা অর্ধেক লগ্নি তুলতে পারেনি। মুক্তির একমাসের মধ্যেই ওটিটিতে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। গেম চেঞ্জার ব্যর্থ হওয়ার পর পাইরেসি নিয়ে সরব হয়েছিলেন নির্মাতারা। কিন্তু সিনেমা না চললে পাইরেসির অভিযোগ তোলা চেনা অজুহাত।

‘ইন্ডিয়ান টু’ সিনেমায় কমল হাসান। ছবি: সংগৃহীত
‘ইন্ডিয়ান টু’ সিনেমায় কমল হাসান। ছবি: সংগৃহীত

বিষয়ভাবনায় বরাবর চমক দেয় মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু গত বছর প্রায় ৭০০ কোটি রুপির ক্ষতি হয়েছে এই ইন্ডাস্ট্রিরও। মোহনলালের মতো তারকার সিনেমা ব্যর্থ হয়েছে। গত বছর মোহনলাল অভিনীত এবং পরিচালিত বড় বাজেটের সিনেমা ‘বারুজ’ একেবারেই ব্যবসা করতে পারেনি। মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রি পরিচিত কম বাজেটে ভাল গল্পের সিনেমার জন্য। ‘সাইরাত’ থেকে ‘দৃশ্যম’ সেই ফর্মুলাতেই সফল। সিনে বিশেষজ্ঞদের মতে, তারকারা পারিশ্রমিক অনেকটাই বাড়িয়েছেন। শুটিংয়ের সময়ে তারকাদের ভ্যানিটি বাবদ খরচের অঙ্কও বেড়ে গেছে। ফলে সামগ্রিকভাবে সিনেমার বাজেট বেড়ে যাচ্ছে।

‘ভেট্টাইয়ান’ সিনেমার দৃশ্যে রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন ও মঞ্জু ওয়ারিয়র। ছবি: সংগৃহীত
‘ভেট্টাইয়ান’ সিনেমার দৃশ্যে রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন ও মঞ্জু ওয়ারিয়র। ছবি: সংগৃহীত

যেকোনো ইন্ডাস্ট্রিতে হিট-ফ্লপ—দুটোই থাকে। সেরা সিনেমা নিয়েই শোরগোল হয় বেশি, চাপা পড়ে যায় ব্যর্থতা। বিষয়ভাবনায় বাকি ইন্ডাস্ট্রির চেয়ে দক্ষিণি এখনও অনেক এগিয়ে। তবে সেখানে শুধুই সাফল্য, এমন ধারণাও ভুল। হয়তো সে কারণেই প্যান-ইন্ডিয়ান সিনেমার প্রতি ঝোঁক বাড়ছে, যেখানে হিন্দি ও দক্ষিণি দুই ইন্ডাস্ট্রির সেরারা জোট বাঁধছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত