Ajker Patrika

সিনেমার আয়ের হরেক উপায়

বিনোদন প্রতিবেদক
Thumbnail image

ঢাকা: সিনেমা হলে মুক্তি, বাংলাদেশে সিনেমার ক্ষেত্রে এ উপায়টি সব প্রযোজকের মুখস্থ। হলে টিকিট বিক্রির একটি অংশ প্রযোজক পেয়ে থাকেন। যেটা এত নগণ্য যে, বাংলাদেশে গত ১০ বছরে শতকরা ৫ ভাগ ছবি লগ্নি ফিরে পেয়েছে।

একে তো দর্শক যাচ্ছে না হলে, অন্যদিকে সিনেমা হলে ছবি প্রদর্শনীর নানা মারপ্যাঁচে প্রযোজকদের আজ দৈন্যদশা। উপরন্তু একের পর এক সিনেমা হল বন্ধ হচ্ছে। তাই নির্মাতারা বিকল্প পথ খুঁজছেন। করোনা যেন সেই তাড়না আরও বাড়িয়েছে। আমাদের সামনে বিশ্বের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি উদাহরণ হয়ে উঠছে।

বিশ্ব চলচ্চিত্র বাজার তাদের নিজেদের অঙ্ক বদলে ফেলেছে এরই মধ্যে। বড় সিরিজ থেকে শুরু করে মিলিয়ন ডলারের একাধিক প্রজেক্ট নেটফ্লিক্স, আমাজন, এইচবিও কিনে নিচ্ছে। স্টিভেন স্পিলবার্গের মতো বিশ্বের সবচেয়ে নামী পরিচালকও সিনেমা নির্মাণ করছেন ওটিটির জন্য। তাই ওটিটি তো অবশ্যই একটি বড় মাধ্যম। কিন্তু আরো পথ আছে।

গানের স্বত্ব বিক্রি: একটা সময় বাংলাদেশের সিনেমার গানের আলাদা চাহিদা ছিল। সিনেমার গানগুলো এমনভাবে নির্মাণ করা যায় যেন মিউজিক ভিডিও আকারে প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রকাশ করা যায়। এছাড়া সিনেমার গানগুলো বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কলার টিউন বা ওয়েলকাম টিউন হিসেবে বিক্রি করা সম্ভব।

টিভি চ্যানেলে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার: এই ধারাটা চালু থাকলেও মিনিমাম কত টাকায় একটি সিনেমা ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হতে পারে, প্রযোজক সমিতির বসে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। ভারতীয় চ্যানেলগুলো ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারে যেভাবে প্রমোশন চালায় আমাদের দেশে তার ছিটেফোঁটাও নেই।

এয়ারলাইনসহ বিভিন্ন পরিবহনে প্রদর্শনের স্বত্ব বিক্রি করে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তিনি ভ্রমণের সময় বাংলা সিনেমা দেখেন। বহু মানুষ বিনোদনের জন্য ভ্রমণের সময় বাংলা সিনেমা দেখে থাকেন। সে ক্ষেত্রে এয়ারলাইনসগুলোতেও নতুন সিনেমা মুক্তি দেওয়া যায়।

স্পন্সরশিপ: বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে যা এখনো কার্যকরী হয়নি। বহিঃবিশ্বে প্রায় প্রত্যেকটি সিনেমার জন্য স্পন্সর থাকে। সাধারণত দুই ধরনের স্পন্সর থাকে চলচ্চিত্রে; একটি হলো টাইটেল স্পন্সর, অন্যটি অ্যাসোসিয়েট স্পন্সর। যদি চলচ্চিত্রটিতে প্রথম সারির নায়ক-নায়িকা এবং অভিনেতা থেকে থাকেন, তার থেকে বের করে আনা সম্ভব স্পন্সর। যার জন্য যোগাযোগ থাকতে হবে বিজ্ঞাপন সংস্থা এবং বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে।

টিভি রাইটস: সিডি-ডিভিডির দিন এখন নেই বললেই চলে। এ থেকেও একটা সময় আয় করা সম্ভব হতো। তবে সিনেমাটি মুক্তির পর বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেলে প্রচারের মাধ্যমে এই আয় আসা সম্ভব। সাধারণত ঈদ বা বিশেষ দিনে সব চ্যানেলই নতুন চলচ্চিত্র চালিয়ে থাকে। এর থেকে ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত আয়ের রেকর্ড রয়েছে বাংলা ছবির।

হল বুকিং বা টেবিল মানি: অনেক সিনেমা মুক্তির আগেই নায়ক-নায়িকার চাহিদার কারণে হল মালিকরা অগ্রিম বুকিং মানি দিয়ে থাকেন। আপনি ভালো সিনেমা বানাচ্ছেন, হল মালিকরা আগ্রহী হয়ে আপনাকে অগ্রিম টাকা দিতে পারে। এর জন্য দরকার সিনেমাহল মালিকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও ভালো কাস্টিং।

বিকল্প প্রদর্শন: দেশের এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে আপনার সিনেমাটি কোনো হলে চলবে বলে আশা রাখেন না। সেসব জায়গায়, যেমন জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন বা বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করে বেশ ভালো টাকা আয় করা সম্ভব।

বহিঃবিশ্বে প্রদর্শন: বহিঃবিশ্বে বাংলা ভাষাভাষী বহু মানুষ থাকে। তাঁদের জন্য যদি চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যায়, সেটা থেকে ভালো পরিমাণ অর্থ আয় করা সম্ভব। অনেক সময় অনেক ফ্লপ ছবি বিদেশে দর্শকপ্রিয়তা পেয়ে যায় শুধু দেশের সিনেমা হওয়ার কারণে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত