Ajker Patrika

যেদিন মৃণাল সেন ফিরে এলেন জন্মস্থান ফরিদপুরে

খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ২০: ১২
যেদিন মৃণাল সেন ফিরে এলেন জন্মস্থান ফরিদপুরে

‘এই শহর কলকাতায় আসার পর আমার কেন যেন ভয় ভয় করতে লাগল। এক বিশাল জনসমুদ্র! আমার মনে হতে লাগল আমি এই জনসমুদ্রে হারিয়ে গিয়েছি। এ জনসমুদ্রে আমি একাকী নিঃসঙ্গ। এই জনসমুদ্রের সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। কেউ কারও সম্পর্কে কোনও খবরই রাখে না। উদাসীন নির্লিপ্ত জনজোয়ার…’
(তৃতীয় ভুবন, মৃণাল সেন)

কলকাতায় যাওয়ার আগে প্রায় সতেরো বছর ফরিদপুরে ছিলেন নির্মাতা মৃণাল সেন। মফসসলের গন্ধ মাখা ওই শহরে মৃণালের জন্ম। একটু একটু করে বড় হয়ে ওঠা। ফরিদপুর তখন ছিল জাতীয় কংগ্রেসের এক বিশেষ ঘাঁটি। মৃণাল সেনের বাবা দীনেশচন্দ্র ছিলেন পেশায় আইনজীবী। রাজনীতির সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে ছিলেন তিনি।

বাবাকে নিয়ে মৃণাল সেন লিখছেন, ‘সে সময়ের বিপ্লবীরা যাঁদের অনেকের ফাঁসি হয়েছে এবং যাঁরা তখনকার স্বাধীনতা সংগ্রামী—তাঁরা সব বাবার বন্ধু ছিলেন। একটা সময় বাবাকে শাস্তি পেতে হয়েছিল, কোর্টে গিয়ে সওয়াল না করতে বাধ্য করেছিলেন বাবাকে ইংরেজ সরকার।’

মা-বাবা, প্রতিবেশি, জন্মভূমি—সবকিছুর সঙ্গে যখন ধীরে ধীরে মৃণাল সেনের স্মৃতির পাল্লা ভারী হচ্ছে, তখনই তাঁকে জন্মস্থান ছেড়ে চলে যেতে হয় কলকাতায়। সাল ১৯৪০। বাবা-মা-ই পাঠান তাঁকে কলকাতা, স্কটিশ চার্চ কলেজে বিএসসি পড়ার জন্য।

নির্মাতা মৃণাল সেন (১৪ মে ১৯২৩—৩০ ডিসেম্বর ২০১৮)কলকাতায় যাওয়ার আগে বাবা-মাকে একদিন মজার ছলে প্রশ্ন করেছিলেন মৃণাল সেন, ‘আমার মধ্যে কি কোনো প্রতিভা আছে? আন্দাজ পেয়েছ কিছু?’ প্রশ্নটা শুনে তাঁর বাবা-মা অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিলেন। উত্তরটা মৃণাল নিজেই দিয়েছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেলকে কোট করে, ‘দশ বছর বয়স পর্যন্ত সবাই প্রতিভাবান।’

সতেরো বছর বয়সে মৃণাল সেন ফরিদপুর ছাড়লেন। সেই যে গেলেন কলকাতা, তার পর দেশ ভাগ হলো, বড়সড় রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখল ভারতবর্ষ। ইতিহাসের অনেক পাতাই ওল্টানো হলো। কিন্তু ফরিদপুরে আর ফিরলেন না মৃণাল।

দেশভাগের সময় তাঁর বাবা-মাও ফরিদপুর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। বাড়ি-জমি যা যা স্থাবর সম্পত্তি ছিল, জলের দরে বিক্রি করে একদিন তাঁরা মৃণালের মতোই হাজির হলেন অচেনা শহর কলকাতায়। একেবারে বাস্তুহারার মতো।

অনেক বছর পর, ১৯৯০ সালে ফরিদপুরের সেই বাড়ির সামনে আবার এসে দাঁড়ালেন মৃণাল। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী গীতা। এর আগে কয়েকবার চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে বাংলাদেশে এসেছেন মৃণাল। জন্মস্থান ফরিদপুরে যাওয়ার আমন্ত্রণও পেয়েছেন। কিন্তু যাননি। কেন? ‘সত্যি বলতে আমার কাছে এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই’—বলেন মৃণাল।

সেবার ঢাকা পৌঁছেই জন্মস্থানের জন্য মনটা কেমন করে উঠল তাঁর। ঠিক করলেন—চারদিনের জন্য ফরিদপুর যাবেন। মৃণাল সেনের বিভিন্ন সময়ের বয়ানে উঠে এসেছে স্মরণীয় সেই যাত্রার কথা। স্ত্রী গীতা, চিত্রগ্রাহক শশী আনন্দ, আর পথপ্রদর্শক খয়ের খাঁ—এ তিনজনকে নিয়ে মৃণাল সেন যখন ফরিদপুরের কাছাকাছি, তখন যেন উত্তেজনার আগুন পোহাচ্ছেন তিনি।

নির্মাতা মৃণাল সেন (১৪ মে ১৯২৩—৩০ ডিসেম্বর ২০১৮)বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে গাড়ি থামল। নামলেন। এবার কিছুটা পথ যেতে হবে হেঁটে। অনেকেই এগিয়ে এলেন উষ্ণ অভ্যর্থনা, প্রশংসা আর ভালোবাসা নিয়ে। একটু খাওয়া। বিশ্রাম। তারপর পায়ে হেঁটে এগোতে থাকলেন সেই অতীতের খোঁজে। সবাইকে বললেন, ‘আমি এখানে আমার নিজের মতো করে পথ চলব, তোমরা কেউ কোনও কথা বলবে না। যদি আমি কখনও ভুল করি পথ চলতে চলতে, তা হলেও নয়।’

অবশেষে, অনেকটা পথ পেরিয়ে, অনেক স্মৃতিতে দিয়ে ডুব, কান্নাভেজা চোখে বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়ালেন মৃণাল সেন। বাড়ির সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু মানুষ। কেউ কোনো কথা বলল না। ‘অখণ্ড অপূর্ব নীরবতা!’

বাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে এলেন এক মাঝবয়সি নারী। হাতে একগুচ্ছ ফুল। মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতার হাতে ফুলগুলো দিয়ে বললেন, ‘আপনি শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন। আসুন, সেই পুকুর পাড়ে যাবেন তো? আপনাদের বাবার কথা আমরা রেখেছি। ভাঙচুর একটু-আধটু যা হয়েছে, তাও সারিয়েছি।’

নির্মাতা মৃণাল সেন (১৪ মে ১৯২৩—৩০ ডিসেম্বর ২০১৮)সেই পুকুরপাড়! মৃণাল সেনের স্মৃতিতে জ্বলজ্বলে তখনও পুকুরপাড়টা। মাঝবয়সি সেই নারীর মুখে পুকুরপাড়ের কথা শুনে মৃণাল-গীতা পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন। গলাটা ধরে এল মৃণালের।

ওই পুকুরপাড়ে লেপ্টে আছে রেবার স্মৃতি। মৃণালের বোন রেবা। সাত ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে সবার ছোট রেবা। বড় আদরের। পাড়া-প্রতিবেশী সবাই খুব ভালোবাসত রেবাকে। একদিন ছুটির দিন। দুপুরবেলা। সবাই খাচ্ছিলেন। রেবা সবার আগে খাওয়া শেষ করে পুকুরঘাটের দিকে চলে যায়। ঘাটটি ছিল সব ভাইবোনের প্রিয় আড্ডার জায়গা। রেবারও। সিঁড়িতে বসে পা ঝুলিয়ে বসে থাকত সে।

সেদিন দুপুরের খাবার শেষ করে পুকুরঘাটের দিকে চলে যাওয়ার পর রেবাকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। কোত্থাও না। এ-পাড়া ও-পাড়া— খুঁজতে বাকি নেই কোথাও। অনেকক্ষণ পর মৃণালের মেজদা কী যেন ভেবে পুকুরে ঝাঁপ দিলেন। মুহূর্তের মধ্যে পানির নিচ থেকে টেনে নিয়ে এলেন রেবাকে। রেবার শরীরটা তখন ঠান্ডা।

নির্মাতা মৃণাল সেন (১৪ মে ১৯২৩—৩০ ডিসেম্বর ২০১৮)মেয়ের মৃত্যুর পর মৃণালের বাবা দীনেশচন্দ্র পুকুরঘাটে রেবার স্মৃতিসৌধ তৈরি করেছিলেন। দেশভাগের সময় বাড়ি বিক্রি করে, দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে বাড়ির নতুন মালিককে অনুরোধ করেছিলেন দীনেশচন্দ্র—যেন স্মৃতিসৌধটি না ভাঙা হয়।

অনেক বছর পর নিজের জন্মভিটেয় এসে রেবার স্মৃতিসৌধটি সেভাবেই পেয়েছিলেন মৃণাল। প্রিয় বোনের স্মৃতির দিকে তাকিয়ে চোখ ছলছল করে উঠল মৃণালের। ভীষণ কান্না পেল। কিন্তু কাঁদতে পারলেন না। মাঝবয়সী সেই নারীর কথা তখনও তাঁর কানে বাজছে—‘সেই পুকুর পাড়ে যাবেন তো? আপনাদের বাবার কথা আমরা রেখেছি। ভাঙচুর একটু-আধটু যা হয়েছে, তাও সারিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিচ্ছেদের গুঞ্জন উড়িয়ে পূর্ণিমা জানালেন, সুখে আছেন তাঁরা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আশফাকুর রহমান ও পূর্ণিমা
আশফাকুর রহমান ও পূর্ণিমা

হঠাৎ করেই আলোচনায় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। তবে অভিনয় নয়, ব্যক্তিজীবন নিয়ে। কয়েক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, আশফাকুর রহমানের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্যজীবনে চলছে ভাঙনের সুর। দুজনের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে—এমন খবরও শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জল আর বেশি দূর গড়াতে না দিয়ে গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় পূর্ণিমা জানালেন, তাঁর সংসার ভাঙার খবর সত্য নয়। স্বামীর সঙ্গে সুখে আছেন তিনি। বিচ্ছেদের খবর তাঁকে বিস্মিত করেছে।

পূর্ণিমার বিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠে তাঁর দেওয়া এক ফেসবুক পোস্ট থেকে। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘মিথ্যা সম্পর্কের ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলার চেয়ে নিঃসঙ্গতা অনেক বেশি শান্ত, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ।’ এরপরেই শুরু হয় গুঞ্জন।

বিষয়টি টের পেয়ে ২২ অক্টোবর স্বামীর সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করেন পূর্ণিমা। কিন্তু তাতেও থামছিল না গুঞ্জন। অবশেষে গতকাল বিষয়টি পরিষ্কার করেন অভিনেত্রী।

ফেসবুকে পূর্ণিমা লেখেন, ‘সুদিনে মানুষের বন্ধুর অভাব হয় না। এদের অধিকাংশই হচ্ছে সুযোগসন্ধানী কৃত্রিম বন্ধু। এরা সব সময়ই নিজের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যতিব্যস্ত থাকে। দুর্দিনে এদের খুঁজে পাওয়া ভার! কিছুদিন আগে আমার দেওয়া স্ট্যাটাসটি থেকে এমনটাই বোঝানো হয়েছিল। আসলে প্রতিটি মানুষের চারপাশে যা কিছু ঘটে, এসবকে কেন্দ্র করেই স্ট্যাটাসটা লেখা হয়েছিল। দিন শেষে আমিও একজন মানুষ। সবার মতো আমারও কমবেশি কাছের-দূরের মানুষ রয়েছে। এ কারণে আমাকেও সুসময়ের বন্ধু ও স্বার্থপরদের ফেস করতে হয়েছে। কিন্তু লেখাটির কিছু অংশ আগে-পিছে না বুঝে অনেকে আমার পারিবারিক জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেছে!’

তিনি আরও লেখেন, ‘কিছু সংবাদমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণে সত্যতা নিশ্চিত না করে অনেকটা চটকদার শিরোনাম দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে, যা আমাকে ও আমার পরিবারকে বিস্মিত ও মর্মাহত করেছে। আমার দেওয়া স্ট্যাটাসের সঙ্গে পারিবারিক জীবনের কোনো সম্পর্ক নেই। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমরা আমাদের পরিবার ও সংসারজীবন নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি।’

২০২২ সালের ২৭ মে আশফাকুর রহমান রবিনকে বিয়ে করেন পূর্ণিমা। রবিন একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এর আগে ২০০৭ সালে আহমেদ জামাল ফাহাদকে বিয়ে করেছিলেন পূর্ণিমা। তাঁদের এক কন্যাসন্তান আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুসান থেকে ফিরে শুটিংয়ে মনোজ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
মনোজ প্রামাণিক। ছবি: সংগৃহীত
মনোজ প্রামাণিক। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্র প্রযোজনাবিষয়ক কোর্স করতে গত মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিলেন মনোজ প্রামাণিক। বুসান এশিয়ান ফিল্ম স্কুলের ‘প্রডিউসিং ট্র্যাক’ প্রোগ্রাম শেষ করে সাত মাস পর ২২ অক্টোবর দেশে ফিরেছেন তিনি। গতকাল অংশ নিয়েছেন একটি বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে। এটা শেষ করেই শুটিং করবেন দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্যসহ কয়েকটি নাটকের। মনোজ বলেন, ‘বুসানে সাতটি মাস অভিনয়টা খুব মিস করেছি। ওখানে থাকতেই এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে কথা হয়েছে। সাত মাস পর আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম। খুব ভালো লাগছে।’

সাত মাসের এই কোর্স সম্পর্কে মনোজ বলেন, ‘এই কোর্সে মূলত প্রযোজনা বিষয়ে পড়াশোনা হয়েছে। এ ছাড়া প্র্যাকটিকালি শেখানো হয়েছে কীভাবে একটি সিনেমাকে মার্কেটে উপস্থাপন করতে হয়। বুসান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের যে মার্কেট আছে সেখানে আমাদের পিচিং করানো হয়। এটা খুব এক্সাইটিং ছিল। এ ছাড়া পড়াশোনার ধরন, শিক্ষক, বিষয়—সবই ভালো ছিল।’

মনোজ আরও বলেন, ‘এই কোর্সে এশিয়ার ১৫টি দেশ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। সবাই মিলে একসঙ্গে থাকা, রান্না করা, খাওয়া, ক্লাস অ্যাটেন্ড করা—মনে হচ্ছিল আবার ছাত্রজীবনে ফিরে গিয়েছি। আমাদের মধ্যে সংস্কৃতির দারুণ একটা আদান-প্রদান হয়েছে। ১৫টি দেশের নতুন বন্ধু পেয়েছি। এ এক বিশাল পাওয়া।’

অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনার সঙ্গে আগে থেকেই যুক্ত মনোজ। মনপাচিত্র নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে তাঁর। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ‘সেয়ানা’ নামের সিনেমা নির্মাণের জন্য প্রযোজক হিসেবে অনুদান পেয়েছেন তিনি। এই কোর্সের অভিজ্ঞতা প্রযোজক হিসেবে অনেক কাজে দেবে বলে মনে করেন মনোজ। তিনি বলেন, ‘প্রযোজক হিসেবে কোর্সটি আমার অনেক উপকারে আসবে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। কীভাবে সারা বিশ্বের নির্মাতাদের সঙ্গে কমিউনিকেশন বিল্ডআপ করতে হয়, কীভাবে একটি প্রজেক্ট উপস্থাপন করতে হয়, ফান্ড কালেক্ট করতে হয়—এসব বিষয়ে এই কোর্সে জোর দেওয়া হয়েছে।’

মনোজ জানিয়েছেন, তাঁর সেয়ানা সিনেমার প্রি-প্রোডাকশনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। শিগগিরই অভিনয়শিল্পী চূড়ান্ত করে আগামী বছরের প্রথম ভাগে শুরু করতে চান শুটিং। সিনেমাটি পরিচালনা করবেন ইকবাল হাসান খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরশাদ ওয়ারসির পছন্দের ৩ সিরিজ

বিনোদন ডেস্ক
আরশাদ ওয়ারসির পছন্দের ৩ সিরিজ

বলিউড অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসি নিজে কমেডি চরিত্র বেশি করেন। তবে দর্শক হিসেবে তাঁর পছন্দের শীর্ষে থাকে ক্রাইম ও থ্রিলার গল্প। সম্প্রতি দেখা তিনটি সিরিজের নাম জানালেন আরশাদ ওয়ারসি, ভক্তদের দেখার জন্যও সাজেস্ট করলেন।

‘মবল্যান্ড’ সিরিজের দৃশ্য
‘মবল্যান্ড’ সিরিজের দৃশ্য

মবল্যান্ড

রোনান বেনেট পরিচালিত ব্রিটিশ ক্রাইম ড্রামা সিরিজ ‘মবল্যান্ড’-এর কেন্দ্রে আছে দুটি পরিবার—দ্য হারিগানস ও দ্য স্টিভেনসন। সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তারা। নিজেদের সাম্রাজ্য বাঁচাতে, ক্রমবর্ধমান সংঘাত মোকাবিলা করতে হ্যারি দা সুজা নামের একজনকে নিয়োগ দেয় হারিগানস পরিবার। স্টিভেনসন পরিবারের সব রকমের হামলা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মাঠে নামে সে। মবল্যান্ড সিরিজের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম হার্ডি, পিয়ার্স ব্রসনান, হেলেন মিরেন প্রমুখ। গত ৩০ মার্চ সিরিজটি মুক্তি পেয়েছে প্যারামাউন্ট প্লাসে। মবল্যান্ড নিয়ে আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘দারুণ চিত্রনাট্য, অনবদ্য নির্মাণ। এই সিরিজে সবচেয়ে যেটা ভালো লেগেছে তা হলো, অভিনয়শিল্পীদের পারফরম্যান্স আর টানটান গল্প।’

‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজের দৃশ্য
‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজের দৃশ্য

ব্ল্যাক র‍্যাবিট

জ্যাক ও ভিন্স—দুই ভাইয়ের গল্প। এক ভাই নিউইয়র্ক শহরে রেস্টুরেন্ট চালায়। ব্ল্যাক র‍্যাবিট নামের রেস্টুরেন্টটি যখন জমজমাট, তখন একদিন হঠাৎ ফিরে আসে ভিন্সের ভাই জ্যাক। সে ঋণে জর্জরিত। জ্যাক আসার সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরনের বিপদও আসে। মিথ্যা, সহিংসতা, বিশ্বাসঘাতকতায় তাদের জীবন ধ্বংসের মুখোমুখি হয়। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে দুই ভাই। এ দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন জুড ল এবং জেসন বেটম্যান। নেটফ্লিক্সে ‘ব্ল্যাক র‍্যাবিট’ সিরিজটি প্রচার শুরু হয় ১৮ সেপ্টেম্বর। আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘দারুণভাবে তৈরি করা হয়েছে সিরিজটি। গল্প কোথাও গতি হারায়নি, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা ছিল।’

‘ওজার্ক’ সিরিজের দৃশ্য
‘ওজার্ক’ সিরিজের দৃশ্য

ওজার্ক

আমেরিকান ক্রাইম ড্রামা সিরিজ ‘ওজার্ক’। নেটফ্লিক্সে এই পর্যন্ত প্রচারিত হয়েছে চারটি সিজন। প্রতি সিজনে ১০টি করে পর্ব। তবে সবশেষ ২০২২ সালে প্রচারিত চতুর্থ সিজনে ১৪টি পর্ব ছিল। বড় অঙ্কের একটি অর্থ পাচারের পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে যাওয়ার পর অর্থ উপদেষ্টা মার্টি বার্ড ভিন্ন পথ অবলম্বন করে। স্ত্রীকে নিয়ে মিসৌরির ওকার্ড হ্রদ অঞ্চলে পাড়ি জমায়। সেখানে গিয়ে স্থানীয় মাফিয়া ও অপরাধীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে মার্টি বার্ড। আরশাদ ওয়ারসি বলেন, ‘নির্মাতারা খুবই কৌশলী। প্রথম পর্ব এমন নাটকীয়ভাবে তৈরি করেছে যে বাকি পর্বগুলো দেখার আগ্রহ তৈরি হয়। প্রথম পর্ব যেভাবে মনোযোগ কেড়ে নেয়, তাতে পুরোটা না দেখে ওঠা কঠিন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সিনেমায় একসঙ্গে চঞ্চল-ফারিণ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
কলকাতায় একসঙ্গে ফারিণ ও চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
কলকাতায় একসঙ্গে ফারিণ ও চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ১০ বছরের বিরতি কাটিয়ে এ বছর বাংলা সিনেমা নির্মাণে ফিরেছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। গত জুলাইয়ে মুক্তি পেয়েছে ‘ডিয়ার মা’। এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের জয়া আহসান। এবার এই নির্মাতার সিনেমায় দেখা যাবে বাংলাদেশের দুই অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী ও তাসনিয়া ফারিণকে। এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন চঞ্চল ও ফারিণ।

ব্রাত্য বসুর ‘শেকড়’ সিনেমার শুটিং করতে গত মাসে পশ্চিমবঙ্গে গেছেন চঞ্চল চৌধুরী। গত শুক্রবার কোয়েল মল্লিকের ডাকে গিয়েছিলেন ‘স্বার্থপর’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে। সেখানে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ফারিণ। সেখানেই চঞ্চল জানান, তাঁরা দুজনেই সেদিন সিনেমা নিয়ে আলাপ করেছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সঙ্গে। তবে আগে থেকে তাঁরা জানতেন না অনিরুদ্ধ তাঁদের একসঙ্গে ডেকেছেন। তাই একে অপরকে দেখে দুজনেই চমকে গিয়েছিলেন।

চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কেউ জানতাম না দুজনেই কলকাতায় আছি, পুরোটাই কাকতালীয়। সিনেমার শুটিং আর টোনিদা অর্থাৎ অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সঙ্গে একটি মিটিং করার জন্য আমি কলকাতায় আসি। আর ও (ফারিণ) এখানে টোনিদার সঙ্গে মিটিং করতে আসে। দুজনেই যাওয়ার পর দেখা হয় এবং তখন জানতে পারি দুজনেই এখানে আছি।’

অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর পরিচালনায় দুজনকে একই সিনেমায় দেখা যাবে কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে চঞ্চল বলেন, ‘সেটা এখনো নিশ্চিত না। তবে কথাবার্তা চলছে। সম্ভাবনা আছে। আশা করি আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’

চঞ্চলের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ফারিণকেও বলতে শোনা যায়, ‘কথা হচ্ছে। দেখা যাক। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’

এই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় তাসনিয়া ফারিণের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে খুদে বার্তায় ফারিণ জানান, এ বিষয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে চান না তিনি।

টালিউড সিনেমা ‘আরও এক পৃথিবী’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় ফারিণের। প্রথম সিনেমাতেই প্রশংসিত হয় তাঁর অভিনয়। পেয়েছিলেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা পুরস্কার। এরপর বিপ্লব গোস্বামীর ‘পাত্রী চাই’ এবং অভিজিৎ সেনের ‘প্রজাপ্রতি ২’ সিনেমায় অভিনয়ের কথা ছিল ফারিণের। ভিসা জটিলতার কারণে দুটি সিনেমা থেকেই সরে আসেন তিনি।

গত বছর সৃজিত মুখার্জির ‘পদাতিক’ সিনেমা দিয়ে টালিউডে যাত্রা শুরু চঞ্চল চৌধুরীর। এতে তিনি অভিনয় করেন কিংবদন্তি নির্মাতা মৃণাল সেনের চরিত্রে। সম্প্রতি চঞ্চল শেষ করেছেন শেকড় সিনেমার শুটিং। তাঁর হাতে রয়েছে অমিতাভ ভট্টাচার্যের ‘ত্রিধারা’। এতে প্রথমবার চঞ্চলের সঙ্গে দেখা যাবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত