Ajker Patrika

খুলনা পলিটেকনিকে অ্যাসেটের উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫: ৪৩
খুলনা পলিটেকনিকে অ্যাসেটের উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

খুলনায় অ্যাকসেলারেটিং অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকোনমিক ট্রান্সফরমেশন (অ্যাসেট) প্রকল্পের আওতায় দক্ষতা ও উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে এই প্রতিযোগিতা হয়। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন অ্যাসেট প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের লক্ষ্যে ১২০টি সরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘স্কিলস ও ইনোভেশন কমপিটিশন-২০২৩ ’-এর প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা একযোগে সারা দেশে গত ১৭ জুন অনুষ্ঠিত হয়। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে প্রায় ১ হাজার ৮৫০টি উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শিত হয় এবং ৩৬০টি প্রকল্প আঞ্চলিক পর্বে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়। স্কিলস ও ইনোভেশন কমপিটিশনের দ্বিতীয় পর্যায় গতকাল খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রতিযোগিতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি আয়োজিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করে খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৮০০ জন শিক্ষার্থী এবং খুলনা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ২০০ জন শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 

অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ ওয়াই এম জিয়াউদ্দীন আল-মামুন, মহাপরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর; মো. মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম, পুলিশ কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ, খুলনা এবং খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, জেলা প্রশাসক, খুলনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ, বিভাগীয় কমিশনার, (অতিরিক্ত সচিব), খুলনা। 

খুলনা অঞ্চলের ১৬টি কারিগরি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নির্বাচিত ৩টি করে সর্বমোট ৪৮টি প্রকল্প খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে অংশগ্রহণ করে। হোসেনাবাদ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের ‘মিনি ওয়াটার পাওয়ার স্টেশন’ প্রথম স্থান, কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ‘ইন্ডাস্ট্রি গার্ডিয়ান’ দ্বিতীয় স্থান এবং খুলনা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ‘অটোমেটিক কার অ্যাক্সিডেন্ট প্রোটেকশন’ তৃতীয় স্থান অর্জন করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর

প্রাথমিকে থাকছে না নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষা

  • ৭২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষা চলছে।
  • আগামী শিক্ষাবর্ষে এসব বিদ্যালয়ে এ তিন শ্রেণিতে ভর্তি বন্ধ।
  • ভর্তি থাকা শিক্ষার্থীরা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ পাবে।
রাহুল শর্মা, ঢাকা 
প্রাথমিকে থাকছে না নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষা

সারা দেশের ৭২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু থাকা নিম্নমাধ্যমিক (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব বিদ্যালয়ে নতুন করে এই তিন শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। তবে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি আছে, তারা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ পাবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সম্প্রতি জারি করা এক অফিস আদেশে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি এই সিদ্ধান্তে হাজারো শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তায় পড়বে। কারণ, এখন যারা এসব বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে, তাদের বেশির ভাগের অভিভাবক সন্তানকে এখানেই অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু এখন তাঁদের নতুন বিদ্যালয়ে যেতে হবে।

ওই অফিস আদেশে বলা হয়েছে, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু করা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত না রাখা এবং ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ছাত্রছাত্রী ভর্তি না করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার নীতিগত অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। তবে ২০১০ সালে করা সর্বশেষ জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণি ও মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত করার কথা বলা হয়। এর আলোকে ২০১৩ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সারা দেশের ৭২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমাধ্যমিক পর্যায় চালু করা হয়। ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়নি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ৭২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষামূলকভাবে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হলেও সে অনুযায়ী অবকাঠামো ও শিক্ষক বাড়ানো হয়নি। ফলে এই তিন শ্রেণি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে এই সিদ্ধান্তে হাজারো শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তায় পড়বে। কারণ, এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যারা এখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে তাদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। নিম্নমাধ্যমিক স্তর চালু থাকা বিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। এই সংখ্যা কয়েক হাজার হবে।

শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা পরিচালনা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ওপরের স্তরের দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। ফলে দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের অভাবেই এই উদ্যোগ ভেস্তে গেল। এতে শিক্ষার ক্ষেত্র সংকুচিত হবে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মাসুদ আকতার খান বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাই চালু থাকবে। যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি চালু ছিল, সেগুলোর ওই তিন শ্রেণির পাঠদান বন্ধ করা ও নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি না করার বিষয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে সিদ্ধান্তে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলছেন নিম্নমাধ্যমিক স্তর চালু হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকেরা। তবে ভিন্নমত রয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক রেহানা পারভীন বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি বাদ দিলে বাস্তবিক অর্থে স্বস্তি পাওয়া যাবে। আমাদের জনবল, কক্ষ ও প্রশিক্ষণ প্রাথমিক স্তরের জন্য যথেষ্ট। কিন্তু মাধ্যমিক স্তরের জন্য নয়।’ তিনি বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানের ধরন এক নয়। তাঁরা প্রাথমিক শিক্ষায় প্রশিক্ষিত, মাধ্যমিক পর্যায়ের জন্য কোনো প্রস্তুতি বা দিকনির্দেশনা ছিল না।

তবে একাধিক অভিভাবক জানান, এই সিদ্ধান্তে ভোগান্তি বাড়বে। কারণ, নতুন করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ খুঁজতে হবে। বিলকিস খাতুন নামের একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ে এখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। পরিকল্পনা ছিল, এই স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াব। এ নিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলাম। কিন্তু সরকারি এই সিদ্ধান্তে পরিকল্পনা ভেস্তে গেল। আগামী বছরই মেয়েকে নতুন স্কুলে ভর্তি করাতে হবে। ভর্তিযুদ্ধ কঠিন হওয়ায় মেয়েকে ভর্তি করানো নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ইতিহাস’ বাদ, পরিবর্তে নতুন কোর্স

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ইতিহাস’ বাদ, পরিবর্তে নতুন কোর্স

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেশনাল স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের সব বিষয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন একটি কোর্স অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কোর্সের নাম—বাংলাদেশের ইতিহাস: ভাষা, সংস্কৃতি ও পরিচয়। কোর্সটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ইতিহাস’ কোর্সের পরিবর্তে।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ডিন (কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্র) অধ্যাপক এ এইচ এম রুহুল কুদ্দুসের সই করা এক প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রফেশনাল স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের প্রথম বর্ষের বিএসসি (অনার্স) ইন এএমটি (এএমটি), বিএসসি (অনার্স) ইন এফডিটি (এফডিটি), বিএসসি (অনার্স) ইন কেএমটি (কেএমটি), বিএসসি (অনার্স) ইন টিএসটি (টিএসটি), বিবিএ (অনার্স) প্রফেশনাল, বিএসসি (অনার্স) ইন ইসিই (ইসিই), বিএসসি (অনার্স) ইন সিএসই (সিএসই), বিএসসি (অনার্স) ইন মেরিন ফিশারিজ, বিএসসি (অনার্স) ইন মেরিন নটিক্যাল, বিবিএ (অনার্স) ইন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, বিএ (অনার্স) ইন ড্রামা অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, বিএফএ (অনার্স), বি-মিউজিক (অনার্স) এবং বিএড (অনার্স) বিষয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস’ বিষয়ের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশের ইতিহাস: ভাষা, সংস্কৃতি ও পরিচয়’ (কোর্স কোড ২১৯৯০১) কোর্সটি আবশ্যিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে ৬ নভেম্বর জারি করা আরও এক প্রজ্ঞাপনে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক সম্মান প্রোগ্রামের সব বিষয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘বাংলাদেশের ইতিহাস: ভাষা, সংস্কৃতি ও পরিচয়’ বিষয়ের কোর্সটি আবশ্যিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, স্নাতক (সম্মান) ও প্রফেশনাল স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নতুন কোর্সটি পাঠদান করাবেন ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, নৃবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষকেরা।

নতুন এ কোর্সের বিষয়ে জানতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ এবং কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন অধ্যাপক এ এইচ এম রুহুল কুদ্দুসের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা সাড়া দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ড্যাফোডিলে পর্তুগিজ রাজবংশের আগমন ও লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ চুক্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ড্যাফোডিলে পর্তুগিজ রাজবংশের আগমন ও লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ড্যাফোডিলে পর্তুগিজ রাজবংশের আগমন ও লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এক অনন্য আন্তর্জাতিক গৌরবের মুহূর্তের সাক্ষী হলো। পর্তুগিজ রাজপরিবারের প্রধান মহামহিম HRH Dom Duarte, ব্রাগঁজা ডিউক তাঁর রাজকীয় সফরে বেলা ১১টা দিকে ডিআইইউ ক্যাম্পাস, ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটি, বিরুলিয়া, সাভারে আগমন করেন।

এই সফরের অন্যতম আকর্ষণ ছিল লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ-এর সঙ্গে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব স্বাক্ষর অনুষ্ঠান, যা ভবিষ্যতে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এছাড়াও এই সফরের মাধ্যমে ফেয়ার পে চার্টার এর বাংলাদেশ আম্বাসেডর হিসেবে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে।

এই উদ্যোগটি মূলত যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান London Tea Exchange (LTE)-এর নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে, যেটি বিশ্বজুড়ে বিলাসবহুল চা বিপণনের পাশাপাশি নৈতিক ব্যবসা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR)-এর ক্ষেত্রেও পরিচিত একটি নাম। Fair Pay Charter বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, করপোরেট হাউস ও উদ্যোক্তা সংগঠনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে—যাতে প্রতিটি দেশে ন্যায্য বেতন নীতি কার্যকর হয়।

ফেয়ার পে চার্টার এর মূল লক্ষ্য হলো কর্মক্ষেত্রে ন্যায্য ও স্বচ্ছ বেতন কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা, সমান কাজের জন্য সমান পারিশ্রমিক নিশ্চিত করা এবং বৈষম্যহীন একটি মানবিক কর্মসংস্কৃতি গড়ে তোলা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে কর্মীদের ন্যায্য প্রাপ্যতা, মর্যাদা ও আর্থিক স্বচ্ছতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।

এই রাজকীয় সফরের অংশ হিসেবে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) এবং লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ (London Tea Exchange) এক ঐতিহাসিক সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর করেছে, যার লক্ষ্য হলো চা সংস্কৃতি, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে একাডেমিক, সাংস্কৃতিক ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক সহযোগিতা জোরদার করা।

এই অংশীদারিত্বের আওতায় ডিআইইউ ‘Tea Mastering’ বিষয়ে একটি স্বল্পমেয়াদি কোর্স চালু করবে, পাশাপাশি গ্রীষ্মকালীন ও মাইক্রো-ক্রেডেনশিয়াল প্রোগ্রাম শুরু করবে, শিক্ষার্থীদের জন্য চা বাগান ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা পরিদর্শনের ব্যবস্থা করবে এবং ক্যাম্পাসে একটি ‘Tea Corner’ স্থাপন করবে, যেখানে বিশ্ব চা ঐতিহ্যকে উদ্‌যাপন করা হবে। এই সহযোগিতা শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা এবং আন্তর্জাতিক চা শিল্প সম্পর্কে ব্যবহারিক জ্ঞান বৃদ্ধিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।

আরেকটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং পর্তুগিজ রাজপরিবারের প্রধান মহামান্য Dom Duarte Pio, Duke of Braganza এর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে ‘Duke of Braganza Youth Leadership & Service Program–Bangladesh Chapter’ শীর্ষক একটি সমঝোতা স্মারক, যার মূল থিম হলো ‘Leadership Through Service’ বা ‘সেবার মাধ্যমে নেতৃত্ব’।

এই প্রোগ্রামের লক্ষ্য হলো তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশ, সামাজিক সেবা, টেকসই পর্যটন এবং বৈশ্বিক নাগরিকত্বের চেতনা জাগিয়ে তোলা, যা শিক্ষা, সংস্কৃতি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও পর্তুগালের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে। এই উদ্যোগে পর্তুগালের রাজপরিবার রয়েল প্যাট্রোনেজ ও সার্টিফিকেশন প্রদান করবে, আর ডিআইইউ বাংলাদেশের জাতীয় সচিবালয় (National Secretariat) হিসেবে কাজ করবে, যার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও দেশব্যাপী নেতৃত্ব উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে।

এছাড়াও, এই রাজকীয় সফরের অংশ হিসেবে ডিআইইউ ক্যাম্পাসে উদ্বোধন করা হয়েছে ‘Duke of Braganza Heritage Culinary Studio’—যা একটি অগ্রণী উদ্যোগ হিসেবে আন্তর্জাতিক রন্ধনশৈলী ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার সংস্কৃতির এক মনোমুগ্ধকর সংমিশ্রণ তৈরি করবে। এটি হবে সাংস্কৃতিক বিনিময়, খাদ্য ঐতিহ্য ও টেকসই গ্যাস্ট্রোনমির এক অনন্য কেন্দ্রবিন্দু।

রাজকীয় আগমনে পর্তুগিজ রাজপরিবারের প্রধান মহামহিম HRH Dom Duarte, ব্রাগঁজা ডিউক কে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার সম্মান। এরপর মহামান্য ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তাঁর সফরের মধ্য দিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও পর্তুগালের মধ্যে শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিনিময়ের নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।

রাজপরিবারের এই সফররত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ফ্যামিলি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। তিনি বলেন,‘ড্যাফোডিল সর্বদাই বৈশ্বিক শিক্ষার সংযোগ তৈরি করতে কাজ করছে। পর্তুগালের রাজপরিবারের এই সফর ও লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব ড্যাফোডিলের আন্তর্জাতিক উপস্থিতিকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহামান্যা ডাচেস ইসাবেল ইনেস দে হেরেদিয়া, মহামান্য প্রিন্স আফনসো দে সান্তা মারিয়া, স্যার শেখ আলিউর রহমান, K.G.O.R., K.C., O.B.E. গ্রুপ চেয়ারম্যান, লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. আর. কবির , প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মোহাম্মদ মাসুম ইকবাল, ট্রেজারার ড. হামিদুল হক খান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।

অধ্যাপক ড. এম. আর. কবির (উপাচার্য,ডিআইইউ) বলেন, ‘আমরা তাঁর রাজকীয় আগমনে গর্বিত এবং বাংলাদেশের সঙ্গে পর্তুগালের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতাকে নতুন দিগন্তে পৌঁছে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই অংশীদারিত্ব শিক্ষাবিদ ও গবেষণার বিনিময়, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম এবং যৌথ উদ্যোগের পথ প্রসারিত করবে, যা ডিআইইউর আন্তর্জাতিক মর্যাদা আরও দৃঢ় করবে।’

সফরের অংশ হিসেবে আয়োজিত হয় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যেখানে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সুন্দরভাবে তুলে ধরেন। দিনব্যাপী এই রাজকীয় সফরের সমাপ্তি ঘটে রাজপরিবারের সম্মানে আয়োজিত বিশেষ ন্যাশনাল লাঞ্চ-এর মধ্য দিয়ে, যেখানে পর্তুগিজ রাজপরিবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রশাসন, বিদেশি অতিথি, সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এই ঐতিহাসিক সফর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিকীকরণ যাত্রায় এক অনন্য অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা খাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সংস্কৃতি বিনিময়ের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) হলো বাংলাদেশের এক শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, যা শিক্ষা, গবেষণা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় নিবেদিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন লাগবে ৬০% উপস্থিতি

  • স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষার পদ্ধতি পরিবর্তন করে সংশোধিত রেগুলেশন জারি।
  • কোর্সের পূর্ণমানের ৮০% নম্বর ফাইনাল পরীক্ষায়, ২০% ধারাবাহিক মূল্যায়নে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন লাগবে ৬০% উপস্থিতি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি কোর্সের পূর্ণমানের ৮০ শতাংশ নম্বর ফাইনাল পরীক্ষায় এবং ২০ শতাংশ ধারাবাহিক মূল্যায়নে বরাদ্দ থাকবে।

পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে লেকচার ও ব্যবহারিক ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ৬০ শতাংশ উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরীক্ষার ফরম পূরণে কলেজ কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার উল্লেখ করতে হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের পরীক্ষার পদ্ধতি পরিবর্তন করে সংশোধিত রেগুলেশনে এসব তথ্য রয়েছে। সংশোধিত রেগুলেশনটি গত রোববার জারি করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এটি গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান সংশোধিত রেগুলেশন অনুমোদন দেওয়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক এ এইচ এম রুহুল কুদ্দুস।

স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের সংশোধিত রেগুলেশন অনুযায়ী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে তত্ত্বীয় কোর্সের প্রশ্নপত্রের ধরন ও মূল্যায়নের কাঠামোতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সংশোধিত রেগুলেশনে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ২০ নম্বরের মধ্যে ৪ ক্রেডিট কোর্সে অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন বা কুইজে ৫ নম্বর, ক্লাস উপস্থিতিতে ৫ ও ইন-কোর্স পরীক্ষায় ১০ নম্বর থাকবে। ৩ ক্রেডিট কোর্সে অ্যাসাইনমেন্ট ও কুইজে ৪ নম্বর, ক্লাস উপস্থিতিতে ৩ নম্বর, ইন-কোর্সে ৮ নম্বর মিলিয়ে মোট ১৫ নম্বর থাকবে। ২ ক্রেডিট কোর্সে অ্যাসাইনমেন্ট ও কুইজে ৩ নম্বর, ক্লাস উপস্থিতিতে ২ নম্বর, ইন-কোর্সে ৫ নম্বরসহ মোট ১০ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

রেগুলেশনে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যবহারিক কোর্সের মূল্যায়ন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সিলেবাস অনুযায়ী পরিচালিত হবে।

প্রশ্নকাঠামো নিয়ে সংশোধিত রেগুলেশনে বলা হয়েছে, ৪ ক্রেডিট কোর্সে ১২টি প্রশ্নের মধ্যে ৮টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। মোট নম্বর থাকবে ৮০, সময় ৪ ঘণ্টা। ৩ ক্রেডিট কোর্সে ৯টি প্রশ্নের মধ্যে ৬টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। মোট নম্বর ৬০, সময় ৩ ঘণ্টা। ২ ক্রেডিট কোর্সে ৬টি প্রশ্নের মধ্যে ৪টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। মোট নম্বর ৪০, সময় ২ ঘণ্টা।

প্রয়োজনে প্রতিটি প্রশ্নে সর্বোচ্চ তিনটি উপ-প্রশ্ন (ক, খ, গ বা a, b, c) রাখা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত