মো. গোলাম রব্বানী
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশ নারীর মধ্যে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীর সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রায় ৯৪ শতাংশ নারী তাঁদের ঋতুচক্র ব্যবস্থাপনার বাইরে। তাঁরা এখনো পুরোনো কাপড় ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাবের পাশাপাশি বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত প্যাডের দাম। বর্তমান বাজারে বিক্রীত স্যানিটারি প্যাডগুলোর বেশির ভাগে একটি ভয়ংকর রাসায়নিক উপাদান ডাই-অক্সিন ব্যবহার করা হয়। এটি মানবদেহে ক্যানসারের মতো গুরুতর রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
স্যানিটারি প্যাডকে সহজলভ্য ও ক্ষতিকর রাসায়নিক থেকে মুক্ত করতে কাজ করছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ আলম ও তাঁর দল। তাঁরা কলাগাছের তন্তু দিয়ে তৈরি করছেন বিশেষ ধরনের স্যানিটারি প্যাড। এর নাম রেখেছেন ‘ব্যানানা প্যাড’। এটি সাধারণ কাপড়ের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ বেশি পানি শোষণে সক্ষম। আসিফ আলম একা শুরু করলেও এখন এই প্রজেক্টে কাজ করছেন আরও দুজন। তাঁরা হলেন পুরকৌশল বিভাগের আতিফ আলম ও তড়িৎকৌশল বিভাগের ইশরাত জাহান। তিনজনের মিলিত প্রচেষ্টায় প্রজেক্টটি এখন আশার আলো দেখছে। চুয়েটে তাঁরা এখন প্যাডম্যান হিসেবে পরিচিত।
আসিফ আলম প্রথমে প্যাডটিকে বারবার ব্যবহার উপযোগী করতে অধিক শোষণক্ষম একধরনের চিপ ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে দাম বেড়ে যাওয়াসহ স্বাস্থ্যঝুঁকিও থেকে যাচ্ছিল। ফলে ব্যর্থতার অন্ধকারে চাপা পড়ে যায় প্রকল্পটির অগ্রগতি। এরপর তৈরি প্যাডে দ্রুত তরল শুষে নেওয়ার উপযোগী একটি চিপ লাগিয়ে বারবার ব্যবহার উপযোগী করা যায় কি না, সেই চেষ্টা করে তিনি সফল হন। কিন্তু তাতেও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি ও দামের সমস্যা থেকেই যাচ্ছিল। পরে বান্দরবান ঘুরতে গিয়ে আসিফ লক্ষ করলেন, সেখানে কলাগাছের প্রাচুর্য আছে। কলাগাছ একবার কেটে ফেললে সেটা দিয়ে আর তেমন কিছু করা যায় না। কলাগাছের তন্তু দিয়ে স্যানিটারি প্যাড তৈরির কথা ভাবতে শুরু করেন আসিফ।
তবে কলাগাছের আঁশ দিয়ে কাপড় তৈরি করতে বেশ কয়েকটি ধাপ পার হতে হয়। এর প্রথম ধাপ কলাগাছের পানি নিষ্কাশন। বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে এ কাজ করতে গেলেও বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হবে। অনেক ভেবে আসিফ হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্টের টারবাইনকে কাজে লাগিয়ে রিসাইক্লারের মাধ্যমে কাজটি করতে সক্ষম হন। এতে বিদ্যুতের জন্য অর্থ ব্যয় বন্ধ করা যায়। এর মাধ্যমে তৈরি করা আঁশের পানি শোষণক্ষমতা প্রাকৃতিকভাবেই ভালো। সেই আঁশকে আরও তিনটি ট্রিটমেন্টের মধ্য দিয়ে নিয়ে গেলে সেগুলো সাধারণ কাপড়ের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ বেশি শোষণক্ষম হয়ে উঠতে পারে। সেই প্রক্রিয়াগুলো ব্যয়বহুল নয় বলে প্যাডের দামও থাকবে সীমিত। এই চিন্তা আসিফ ও তাঁর দলকে আশার আলো দেখাতে শুরু করে।
রাসায়নিক উপাদান বাদ দিয়ে এখন ব্যানানা প্যাড তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যানানা প্যাডে সংক্রমণরোধী যে চেম্বার স্থাপন করা হবে এর জন্য বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসের (বিআরআইসিএম) সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দলটি। প্রজেক্ট ডেভেলপমেন্ট, টেস্টিং, ট্রান্সপোর্টেশনে সার্বিকভাবে দলটিকে সহযোগিতা করছে ইডুকেশন এটি চট্টগ্রাম এবং ব্রাইট উইনস।
প্রজেক্ট ব্যানানা প্যাড বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অর্জন করেছে অনেক পুরস্কার। বছর গড়াতেই পাঁচটির বেশি জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে প্রকল্পটি। গত ডিসেম্বর মাসে ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইইই) বাংলাদেশ সেকশনের আয়োজনে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাকটিভিটিস শাখায় উদ্যোক্তাদের আইডিয়া প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়বারের মতো প্রথম স্থান অর্জন করে ব্যানানা প্যাড। এর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটি কর্তৃক আয়োজিত পরিবেশবিষয়ক উদ্ভাবন প্রতিযোগিতা-২০২৩-এর জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন, চট্টগ্রামের ইস্ট ডেলটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে প্রজেক্ট শোকেসে প্রথম হয় প্রকল্পটি। এ বছরের শুরুতে হাল্ট প্রাইজ চুয়েট ২০২৩-২৪ সেশনে এই প্রকল্প অর্জন করেছে ধারাবাহিক সাফল্য।
আসিফ আলম জানান, ব্যানানা প্যাডটি একজন নারীর ষষ্ঠ মৌলিক অধিকার হিসেবে কাজ করবে। এটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের নারী ও কিশোরীদের যেমন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে, ঠিক তেমনি ওই অঞ্চলে তৈরি হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ। বড় কোনো প্রতিষ্ঠান এটি বাস্তবায়নে সহায়তা করলে দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে এই ব্যানানা প্যাড।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশ নারীর মধ্যে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীর সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রায় ৯৪ শতাংশ নারী তাঁদের ঋতুচক্র ব্যবস্থাপনার বাইরে। তাঁরা এখনো পুরোনো কাপড় ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাবের পাশাপাশি বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত প্যাডের দাম। বর্তমান বাজারে বিক্রীত স্যানিটারি প্যাডগুলোর বেশির ভাগে একটি ভয়ংকর রাসায়নিক উপাদান ডাই-অক্সিন ব্যবহার করা হয়। এটি মানবদেহে ক্যানসারের মতো গুরুতর রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
স্যানিটারি প্যাডকে সহজলভ্য ও ক্ষতিকর রাসায়নিক থেকে মুক্ত করতে কাজ করছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ আলম ও তাঁর দল। তাঁরা কলাগাছের তন্তু দিয়ে তৈরি করছেন বিশেষ ধরনের স্যানিটারি প্যাড। এর নাম রেখেছেন ‘ব্যানানা প্যাড’। এটি সাধারণ কাপড়ের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ বেশি পানি শোষণে সক্ষম। আসিফ আলম একা শুরু করলেও এখন এই প্রজেক্টে কাজ করছেন আরও দুজন। তাঁরা হলেন পুরকৌশল বিভাগের আতিফ আলম ও তড়িৎকৌশল বিভাগের ইশরাত জাহান। তিনজনের মিলিত প্রচেষ্টায় প্রজেক্টটি এখন আশার আলো দেখছে। চুয়েটে তাঁরা এখন প্যাডম্যান হিসেবে পরিচিত।
আসিফ আলম প্রথমে প্যাডটিকে বারবার ব্যবহার উপযোগী করতে অধিক শোষণক্ষম একধরনের চিপ ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে দাম বেড়ে যাওয়াসহ স্বাস্থ্যঝুঁকিও থেকে যাচ্ছিল। ফলে ব্যর্থতার অন্ধকারে চাপা পড়ে যায় প্রকল্পটির অগ্রগতি। এরপর তৈরি প্যাডে দ্রুত তরল শুষে নেওয়ার উপযোগী একটি চিপ লাগিয়ে বারবার ব্যবহার উপযোগী করা যায় কি না, সেই চেষ্টা করে তিনি সফল হন। কিন্তু তাতেও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি ও দামের সমস্যা থেকেই যাচ্ছিল। পরে বান্দরবান ঘুরতে গিয়ে আসিফ লক্ষ করলেন, সেখানে কলাগাছের প্রাচুর্য আছে। কলাগাছ একবার কেটে ফেললে সেটা দিয়ে আর তেমন কিছু করা যায় না। কলাগাছের তন্তু দিয়ে স্যানিটারি প্যাড তৈরির কথা ভাবতে শুরু করেন আসিফ।
তবে কলাগাছের আঁশ দিয়ে কাপড় তৈরি করতে বেশ কয়েকটি ধাপ পার হতে হয়। এর প্রথম ধাপ কলাগাছের পানি নিষ্কাশন। বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে এ কাজ করতে গেলেও বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হবে। অনেক ভেবে আসিফ হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্টের টারবাইনকে কাজে লাগিয়ে রিসাইক্লারের মাধ্যমে কাজটি করতে সক্ষম হন। এতে বিদ্যুতের জন্য অর্থ ব্যয় বন্ধ করা যায়। এর মাধ্যমে তৈরি করা আঁশের পানি শোষণক্ষমতা প্রাকৃতিকভাবেই ভালো। সেই আঁশকে আরও তিনটি ট্রিটমেন্টের মধ্য দিয়ে নিয়ে গেলে সেগুলো সাধারণ কাপড়ের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ বেশি শোষণক্ষম হয়ে উঠতে পারে। সেই প্রক্রিয়াগুলো ব্যয়বহুল নয় বলে প্যাডের দামও থাকবে সীমিত। এই চিন্তা আসিফ ও তাঁর দলকে আশার আলো দেখাতে শুরু করে।
রাসায়নিক উপাদান বাদ দিয়ে এখন ব্যানানা প্যাড তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যানানা প্যাডে সংক্রমণরোধী যে চেম্বার স্থাপন করা হবে এর জন্য বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসের (বিআরআইসিএম) সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দলটি। প্রজেক্ট ডেভেলপমেন্ট, টেস্টিং, ট্রান্সপোর্টেশনে সার্বিকভাবে দলটিকে সহযোগিতা করছে ইডুকেশন এটি চট্টগ্রাম এবং ব্রাইট উইনস।
প্রজেক্ট ব্যানানা প্যাড বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অর্জন করেছে অনেক পুরস্কার। বছর গড়াতেই পাঁচটির বেশি জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে প্রকল্পটি। গত ডিসেম্বর মাসে ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইইই) বাংলাদেশ সেকশনের আয়োজনে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাকটিভিটিস শাখায় উদ্যোক্তাদের আইডিয়া প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়বারের মতো প্রথম স্থান অর্জন করে ব্যানানা প্যাড। এর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটি কর্তৃক আয়োজিত পরিবেশবিষয়ক উদ্ভাবন প্রতিযোগিতা-২০২৩-এর জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন, চট্টগ্রামের ইস্ট ডেলটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে প্রজেক্ট শোকেসে প্রথম হয় প্রকল্পটি। এ বছরের শুরুতে হাল্ট প্রাইজ চুয়েট ২০২৩-২৪ সেশনে এই প্রকল্প অর্জন করেছে ধারাবাহিক সাফল্য।
আসিফ আলম জানান, ব্যানানা প্যাডটি একজন নারীর ষষ্ঠ মৌলিক অধিকার হিসেবে কাজ করবে। এটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের নারী ও কিশোরীদের যেমন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে, ঠিক তেমনি ওই অঞ্চলে তৈরি হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ। বড় কোনো প্রতিষ্ঠান এটি বাস্তবায়নে সহায়তা করলে দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে এই ব্যানানা প্যাড।
বিশ্ববিদ্যালয় কেবল উচ্চশিক্ষা অর্জনের জায়গা নয়, এটি জীবনের বৃহত্তর পাঠশালা। পাঠ্যবইয়ের জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি এখানে শেখার আছে নেতৃত্বের দক্ষতা, আত্ম-উন্নয়নের কৌশল এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি।
২ দিন আগেইউরোপের দেশ সুইডেন। দেশটির মেরিন জেট পাওয়ার কোম্পানির টেস্ট অ্যান্ড ভ্যালিডেশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন প্রবাসী বাংলাদেশি মুহাম্মদ শাকিরুল্লাহ। সুইডেনে বাংলাদেশিদের ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা...
২ দিন আগেসব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) নিয়মিত পরিচালনা পর্ষদ গঠনের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ রোববার (২৭ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-১) সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
২ দিন আগেএই তালিকায় সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সারিতে না থাকলেও বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় জায়গা করে নিয়েছে। প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যৌথভাবে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
২ দিন আগে