Ajker Patrika

অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য আইইএলটিএস লাগবে ৬.৫-৭ স্কোর

মালিহা আরোশা হাসান
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২১, ১৭: ২৯
অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য আইইএলটিএস লাগবে ৬.৫-৭ স্কোর

ঢাকার মেয়ে মালিহা আরোশা হাসান। ইকোনমিকস ও ফিন্যান্স বিষয়ে স্কলারশিপ পেয়ে এখন পড়াশোনা করছেন অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতার গল্প জানিয়েছেন তিনি।

দেশ বাছাই

ছোট থেকেই বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন ছিল। অস্ট্রেলিয়া বেছে নেওয়ার কারণ, সেখানকার উন্নত জীবনব্যবস্থা, ছিমছাম ও দূষণমুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে থাকেন আমার আত্মীয়স্বজন। তাই বেছে নিই সেখানের গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়।

আইইএলটিএস প্রস্তুতি

আমার স্কুল ও কলেজ দুটোই ছিল ইংরেজি ভার্সনের। সে জন্য আইইএলটিএসের প্রস্তুতি নেওয়া আমার জন্য সহজ ছিল। বিশেষ প্রস্তুতির জন্য মেন্টরসের এক মাসের একটি ক্র্যাশ কোর্স শেষ করি। ফলে আইইএলটিএস পরীক্ষায় আমার স্কোর হলো ৮। আইইএলটিএস স্কোরের গ্রহণযোগ্যতা আসলে নির্ভর করে আপনি যে বিষয় বা ডিগ্রির জন্য আবেদন করছেন, তার ওপর। অর্থাৎ, ডিগ্রি ও বিষয়ভেদে শর্ত আলাদা হতে পারে। তবে সর্বনিম্ন স্কোর ৬.৫-৭-এর মধ্যে থাকে। আমার নির্বাচিত বিষয়ের জন্য আইইএলটিএস স্কোরের শর্ত ছিল ৬.৫। আরও একটি বিষয় খেয়াল রাখা উচিত। ভালো স্কোর তোলার জন্য সঠিক ব্যাকরণ, বানান ও উচ্চারণসহ ইংরেজি বলা ও লেখা খুব জরুরি।

আবেদন–প্রক্রিয়া

অস্ট্রেলিয়ার বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন কনসাল্টিং এজেন্সি। এসব এজেন্সির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশন বা পার্টনারশিপ রয়েছে। আমি আবেদনের জন্য প্যাক এশিয়া এজেন্সির দ্বারস্থ হয়েছিলাম। এজেন্সির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট, আইইএলটিএস স্কোর এবং স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি) জমা দিই। এসওপিতে বেশ কিছু বিষয়ের খোলাসা করতে হয়েছে আমাকে। যেমন: ব্যক্তিগত অর্জনের বিবরণ, গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দের কারণ, বিষয় বাছাই ইত্যাদি। গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা কীভাবে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারে সাহায্য করতে পারে, ডিগ্রি অর্জনের পর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ইত্যাদি বিষয়ও স্টেটমেন্ট অব পারপাসে উল্লেখ করতে হয়েছে। 

ভর্তির সুযোগ

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের কিছুদিন পরই অফার লেটার পাই। অফার লেটারে কনফার্মেশন অব এনরোলমেন্ট (সিওই)-এর শর্ত ছিল কমপক্ষে ১২ মাসের ফান্ডের ডকুমেন্টারি প্রমাণ। সিওই পাওয়ার পরই ভিসার জন্য আবেদন করি। সে জন্য জমা দিতে হয়েছে পাসপোর্ট, ভিসা আবেদন ফি, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের অনুমতিপত্র, হেলথ ইনস্যুরেন্স পলিসি, ইংরেজি ভাষার দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে আইইএলটিএস পরীক্ষার রেজাল্টের ডকুমেন্টস। ফিন্যান্সিয়াল ডকুমেন্টসহ বেশ কিছু কাগজপত্র। তবে ভিসার জন্য আলাদা করে ইন্টারভিউ দিতে হয়নি।

স্কলারশিপ

সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইটে চোখ রাখলেই মেলে বিভিন্ন এক্সটার্নাল স্কলারশিপের খোঁজ। সেখান থেকেই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেছিলাম। আবেদনের চিঠিতে নতুন করে নিজের প্রাতিষ্ঠানিক ফলাফল ও স্কলারশিপের আবেদনটি আরেকটু বেশি জোরালো করতে নিজের ব্যক্তিগত অর্জনের বিবরণও তুলে ধরতে হয়েছে। কেন আমি স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করছি নিজেকে এবং স্কলারশিপটি কীভাবে আমাকে সাহায্য করতে পারে, লিখতে হয়েছে এসব কথাও। শেষমেশ ২০১৮ সালে স্কলারশিপ পাই।

ভর্তির সময়

অস্ট্রেলিয়ার সব বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকে সাধারণত দুটো সেশনে। ফেব্রুয়ারি এবং জুলাই মাসে। তবে গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি সেশন রয়েছে। ফেব্রুয়ারি, জুলাই এবং নভেম্বর। এ ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি সেশনে ভর্তি হওয়ার সময়সীমা আগের বছরের অক্টোবর-নভেম্বর এবং জুলাই সেশনে ভর্তি হওয়ার সময়সীমা এপ্রিল-মে মাস।

জবের সুযোগ

অস্ট্রেলিয়ায় পড়ালেখার খরচ বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে বিভিন্ন রকম। টিউশন ফি বাবদ একজন শিক্ষার্থীর বছরে খরচ হতে পারে বিশ থেকে চল্লিশ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার। এ ছাড়া আবাসন ও খাবার খরচ বাবদ মাসে এক থেকে দুই হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলারই যথেষ্ট। খরচ জোগানোর জন্য স্টুডেন্ট ভিসার শর্ত অনুযায়ী সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা এবং প্রতি পনেরো দিনে ৪০ ঘণ্টা পার্টটাইম জবের সুযোগ রয়েছে। 

শ্রুতিলিখন: মুনতাসির সিয়াম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত