Ajker Patrika

সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমে সোনালি অধ্যায়

আসিফ বায়েজিদ 
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০: ২০
সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমে সোনালি অধ্যায়

ভাষাদক্ষতা    
অধিকাংশ আন্তর্জাতিক স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের ভাষার মাধ্যম ইংরেজি। তাই আবেদন গ্রহণের সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের থেকে নিশ্চয়তা চেয়ে থাকে যে তাঁরা স্বচ্ছন্দে ইংরেজি বই বা প্রবন্ধ পড়তে পারবেন, শিক্ষকের বলা ভারী বিষয়বস্তু বুঝতে পারবেন, একাডেমিক ছাঁচে লিখতে পারবেন এবং প্রয়োজনে জ্ঞানগর্ভ বাক্যালাপও চালিয়ে যেতে পারবেন। ইংরেজিতে সেই দখলটুকু নির্ণয় করে দেবে আইইএলটিএস পরীক্ষা। এতে চারটি ভাগ– listening, reading, writing এবং speaking; প্রতিটি ভাগে ৯ করে নম্বর। চারটি ভাগের গড় করে চূড়ান্ত নম্বর নির্ধারণ হয়। অনেকের ধারণা, ৮.৫ বা ৯ পেলে বাইরে পড়তে যাওয়ার বেশ সুযোগ পাওয়া যাবে। ধারণাটি আংশিক সত্য–আইইএলটিএসে ভালো নম্বর থাকলে ভর্তি বা বৃত্তির একটি শর্তে এগিয়ে থাকা যায়। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ৬ বা ৬.৫-এর নিচে আইইএলটিএসের নম্বর গ্রহণ করতে চায় না, তবে ব্যতিক্রম যে নেই, তেমনটিও নয়। আইইএলটিএস সনদের মেয়াদ দুই বছর। তবে প্রথম বছরের নম্বর দিয়েই ভর্তির আবেদন করা অধিক গ্রহণযোগ্য। ইউরোপের বেশ কিছু দেশ ইংরেজির পাশাপাশি তাদের নিজস্ব ভাষা দক্ষতাকেও প্রাধান্য দিয়ে থাকে। যেমন ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন ইত্যাদি। তাই, ভাষাশিক্ষা যদি আপনার শখ হয়ে থাকে, তাতে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। 
 
সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রম,  নেতৃত্ব এবং স্বেচ্ছাসেবা    
অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, বিশেষ করে বৃত্তির আবেদনপত্রে শিক্ষার্থীকে সহশিক্ষাক্রমিক বা নেতৃত্ব প্রদানের কার্যক্রম প্রমাণসহ উপস্থাপন করতে বলা হয়। কেন? কারণ শিক্ষাক্রমের বাইরের কার্যক্রম শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতাই কেবল সমৃদ্ধ করে না; বরং তার দক্ষতা ও যোগ্যতারও বিকাশ ঘটায়, যা অন্য কোনো উপায়ে সম্ভব নয়। তার মধ্যে অন্যতম– স্বাধীন এবং স্বপ্রণোদিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করার ক্ষমতা তৈরি করে। অর্থাৎ শিক্ষার্থী কারও সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান ছাড়াই সত্যিকারের কোনো একটা সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হবে। এ ছাড়া দলবদ্ধভাবে কাজ করা, উদ্ভাবন করা, যোগাযোগের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, জটিল আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা, ছোট-বড় দল সংগঠিত করা, আর্থিক হিসাব-নিকাশে সক্ষম হওয়া, চারপাশের বিভিন্ন সমস্যা-দুর্যোগ-দুর্দশায় সমব্যাথি হয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবে। সর্বোপরি মানবিক গুণাবলির চর্চা করা। এটি প্রমাণ করার জন্য সহশিক্ষাক্রমিক বা স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের কোনো বিকল্প নেই। কমনওয়েলথ, কমনওয়েলথ শেয়ারড, শেভনিং, সুইডিশ ইনস্টিটিউট, এমনকি ইরাসমাস মুন্ডুসর মতো মর্যাদাসম্পন্ন শিক্ষাবৃত্তিগুলোর আবেদনপত্র মূল্যায়নের ষোলো আনার চার আনা চলে যায় সহশিক্ষাক্রমিকের ভাগে। সুতরাং, যেসব শিক্ষার্থী বিভিন্ন গঠনমূলক শিক্ষার্থী সংগঠন, সামাজিক উন্নয়নমূলক উদ্যোগ, খেলাধুলা, সংগীত, চিত্রকলা এমনকি পর্বতারোহণের মতো কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা পড়াশোনার পাশাপাশি সানন্দে সেসব কাজ চালিয়ে যান। এই ছোট ছোট অভিজ্ঞতা, সাফল্য আপনার বিজয়মাল্যের একেকটি ফুল হিসেবেই গণ্য হবে।

আসিফ বায়েজিদ 
ইরাসমাস মুন্ডুস স্নাতকোত্তর গবেষক, গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়; শিক্ষানবিশ গবেষণা সহযোগী, টুয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয় ও ডেপুটি ম্যানেজার (শিক্ষা ছুটি), ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি।

[২৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রথম অংশের পর] চলবে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত