Ajker Patrika

ছেলেদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা, উল্টো পুলিশকে অভিযুক্ত করে বাবার সংবাদ সম্মেলন

হবিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২২, ২০: ২১
Thumbnail image

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উত্তম কুমার দাসের বিরুদ্ধে মাদক মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউসুফ আলী নামের এক ব্যক্তি। আজ বুধবার সকালে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ইউসুফ আলীর বাড়ি উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামের।

অভিযোগ মতে, তাঁর দুই ছেলে আব্দুস সালাম ও আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে মাদক মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উত্তম কুমার দাশ। এ ছাড়া তিনি নানা ধরনের অভিযোগ তোলেন উত্তমের বিরুদ্ধে। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, ইউসুফ আলী নিজেকে ও তাঁর দুই ছেলেকে নিরীহ নাগরিক হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করলেও প্রকৃতভাবে তাঁর দুই ছেলেই চিহ্নিত মাদক কারবারি। দুই ছেলের বিরুদ্ধেই রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। এ ছাড়া মাদকসহ সিলেট ও হবিগঞ্জে আটক হয়েছেন দুজনই। 

জানা যায়, ইউসুফ আলীর বড় ছেলে আইয়ুব আলীর (৩৭) বিরুদ্ধে রয়েছে দুটি মাদক মামলা। এ ছাড়া ছোট ছেলে আব্দুস সালামের (৩৫) বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৫ টি। 

গত ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর মাদকসহ দুই ভাই সিলেট এয়ারপোর্ট থানা-পুলিশের হাতে মাদকসহ আটক হন। এ ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে এয়ারপোর্ট থানা। তাঁর ছোট ছেলে আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে বাকি চারটি মামলা হয় মাধবপুর থানায়। এগুলো করা হয়, ২০১৮ সালের ২ মে,২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ সালের ৬ আগস্ট এবং ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। 

আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে ২০২০ সালের সিলেট এয়ারপোর্ট থানা ছাড়াও ২০২১ সালের ১৮মে চুনারুঘাট থানায় একটি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। 

রওশন আলী বলেন, ‘আমার বাড়ি আলী নগর। তবে মোহনপুর ও আলী নগর পাশাপাশি গ্রাম, বলতে গেলে একই। ইউসুফ আলীর দুই ছেলে আইয়ুব আলী ও আব্দুস সালামকে আমি ভালোভাবেই চিনি। তাঁদের নিয়মিত যাতায়াত আমাদের বাড়ির ওপর দিয়েই। এলাকায় তাঁরা মাদক ব্যবসায়ী হিসেবেই পরিচিত। তবে আমি কোনো দিন তাঁদের সরাসরি এসবে পাইনি। আবার তারা যদি বলে পুলিশ তাঁদের হয়রানি করছে তাহলে সেটা ভুল হবে। কারণ পুলিশ কোন নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করে না। তাদের বিরুদ্ধে ৫/৭টা করে মামলা আছে। তাই মাঝে মধ্যে তাদের বাড়িতে পুলিশ এসে তদন্ত করতে দেখেছি।’ 

ইউসুফ আলীর প্রতিবেশী আবু বখর বলেন, ‘এলাকার মানুষ ইউসুফ আলী দুই ছেলেকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে জানে। তবে আমি সরাসরি তাঁদের কোনো দিন মাদক ব্যবসা করতে দেখিনি। তবে আমার মনে হয় তারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের চলাচলে অনেক সমস্যা আছে। এ ছাড়া মাদক ব্যবসা না করলে পুলিশ কেন অযথা হয়রানি করবে? কোন নিরীহ মানুষকে পুলিশ হয়রানি করতে দেখিনি।’ 

ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মামুন মিয়া বলেন, ‘সত্যটাতো গোপন করা যাবে না। ইউসুফ আলীর ছেলেদের বিরুদ্ধে ৫ /৭টা মামলা রয়েছে। সেটাতো অস্বীকার করা যাবে না। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে।’ 

ইউসুফ আলী সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি এসআই উত্তম কুমার দাস তাঁর বাড়িতে গিয়ে তদন্তের নামে লুটপাট করে। এ সময় গরু বিক্রির দুই লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যান উত্তম কুমার। 

তার এই অভিযোগ কতটুকু সত্য জানতে চাইলে ইউপি সদস্য বলেন, ‘এটা একদম মিথ্যা কথা। তারা কোন গরু বিক্রি করেছে বলে আমি জানি না। এ ছাড়া দুই লাখ টাকা নিয়ে গেলেও মেম্বার হিসেবে আমাকে জানানোর কথা। কিন্তু সেদিনতো তারা এমন কিছু বলেনি। আজ কেন বলবে?’ 

কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই উত্তম কুমার দাস বলেন, ‘তাঁরা এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁদের বিরুদ্ধে সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকায় মামলা রয়েছে। আমি কাশিমনগর ফাঁড়িতে যোগদান করি ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর। অথচ তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ২০১৮ সালের আগ থেকে। তাহলে সেগুলোও কি আমি করেছিলাম। এ ছাড়া সিলেটও তাঁরা দুই ভাই মাদকসহ আটক হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

‘মধ্যমপন্থী’ দল গড়ছেন অভ্যুত্থানের নেতারা, আলোচনায় ইলিশ প্রতীক

রাজধানীর প্রেসক্লাব এলাকায় লিফলেট বিতরণ করল আ.লীগ

লিবিয়ার সৈকতে ২০ জনের গলিত লাশ, সবাই বাংলাদেশি বলে ধারণা

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, বিচার চাইল বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত