Ajker Patrika

রেকর্ড চিনি উৎপাদনের পথে ভারত, বিশ্ববাজারে কমতে পারে দাম

আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪: ৩৯
এবার বিপুল সংখ্যক কৃষক আখ চাষ করেছেন। ছবি: এএফপি
এবার বিপুল সংখ্যক কৃষক আখ চাষ করেছেন। ছবি: এএফপি

ভারত আগামী অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া পরবর্তী বিপণন বছরে রেকর্ড পরিমাণ চিনি উৎপাদনের আশা করছে। এর প্রধান কারণ যথেষ্ট পানির সরবরাহ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য অর্থকরী ফসলে কম দাম পাওয়ার কারণে এবার আখ চাষে ঝুঁকেছেন বিপুলসংখ্যক কৃষক।

স্থানীয় কৃষক ও চিনি শিল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি উৎপাদক দেশ ভারত। কম বৃষ্টিপাতের কারণে আখের ফলন কমে যাওয়ায় দুই বছরের জন্য রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটি। তবে ব্যাপক উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় ২০২৫–২৬ সালে আবার রপ্তানি শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত পুরোদমে রপ্তানি শুরু করলে বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমে আসতে পারে। কারণ দেশটি এমন এক সময়ে বিশ্ববাজারে চিনি সরবরাহ বাড়াবে, যখন শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে শীর্ষ উৎপাদক ব্রাজিল থেকে রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মহারাষ্ট্র রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলীয় সোলাপুর জেলার কৃষক অমর চবন এবার ৬ একর জমিতে আখ লাগিয়েছেন। তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘গত বছর আমরা আখ লাগাতে পারিনি, কারণ সেচের জন্য পানি ছিল না। এবার প্রচুর পানি রয়েছে, কারণ বৃষ্টিপাত ভালো হয়েছে।’

সোলাপুরের কৃষকেরা উজ্জানি বাঁধের ওপর নির্ভর করেন। এই বাঁধ এখন ১০০ শতাংশ সক্ষমতায় রয়েছে, যেখানে গত ডিসেম্বরে ছিল মাত্র ২৫ শতাংশে।

মহারাষ্ট্র ও পার্শ্ববর্তী কর্ণাটকের জলাধারগুলো একত্রে ভারতের প্রায় অর্ধেক চিনি উৎপাদনের জন্য পানি সরবরাহ করে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় এখন অনেক বেশি পানি ধরে রেখেছে এসব জলাধার।

ভারতের বার্ষিক মৌসুমি বৃষ্টিপাত আখের মতো সেবানির্ভর ফসলগুলোর আবাদ ও ফলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ বছর মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটকের আখের আবাদ অঞ্চলগুলো গড়ে ৩৯ শতাংশ বেশি বৃষ্টি পেয়েছে।

ন্যাশনাল ফেডারেশন অব কো-অপারেটিভ সুগার ফ্যাক্টরিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকাশ নায়কনাভারে বলেন, ‘কৃষকেরা পূর্ণ উদ্যমে আখ রোপণ করছেন। এই রোপণ কার্যক্রম আগামী মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ চিনি উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরি করছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, এ বছর রোপণ করা আখ আগামী বিপণন বছরে ফসল কাটার জন্য প্রস্তুত হবে।

ফেডারেশনের হিসাবে, বর্তমান মৌসুমে ভারতের চিনি উৎপাদন ২ কোটি ৮০ লাখ টনে নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে, যা গত বছরের ৩ কোটি ১৯ লাখ টনের চেয়ে কম, যেখানে ভারতের অভ্যন্তরীণ বার্ষিক চাহিদাই প্রায় ২ কোটি ৯৬ লাখ টন।

এদিকে প্রচুর পানি পাওয়ার কারণেই যে ভারতের কৃষকেরা এবার আখ চাষের ঝুঁকেছেন এমন নয়। অনেক কৃষক সয়াবিন ও তুলার মতো বিকল্প ফসল থেকে এবার কম মুনাফা পাওয়া আখ চাষে ফিরে এসেছেন।

মহারাষ্ট্রভিত্তিক সুগার মিল ন্যাচারাল সুগার অ্যান্ড অ্যালাইড ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বি. বি. থোম্বারে রয়টার্সকে বলেন, গত বছর কৃষকেরা পানির অভাবে আখ বাদ দিয়ে অন্যান্য ফসলে ঝুঁকেছিলেন। কিন্তু তাঁরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এখন তাঁরা এমন একটি ফসল খুঁজছেন, যা নিশ্চিত লাভ দেবে।

এবারের বর্ধিত আখ রোপণ ভারতের পরবর্তী মৌসুমে ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টন চিনি রপ্তানি করতে সক্ষম করবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং পোকামাকড়ের তেমন সংক্রমণ না ঘটলে এমনটি খুবই সম্ভব বলে আশা আশা করছেন ফিলিপ ক্যাপিটাল ইন্ডিয়ার পণ্য গবেষণার ভাইস প্রেসিডেন্ট অশ্বিনী বানসোড।

ভারতের চিনি রপ্তানি বাজারের মধ্যে রয়েছে—ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০২২–২৩ পর্যন্ত পাঁচ বছর বিশ্বের ২ নম্বর রপ্তানিকারক ছিল ভারত, যেখানে তাদের বার্ষিক গড় রপ্তানি ৬৮ লাখ টন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ০৩
সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

বিশ্ববাজারে সোনার বড় দরপতনের পরদিন দেশের বাজারেও বেশ বড় অঙ্কে সোনার দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। টানা আট দফা বাড়ানোর পর সোনার দাম ভরিতে একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমানো হয়েছে।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। আজ বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০১, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭০ হাজার ৯৯৪ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪২ হাজার ২১৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

সর্বশেষ গত রোববার (১৯ অক্টোবর) দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়িয়েছিল বাজুস। সেদিন ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ৭ হাজার ৫০৩, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫৩ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা কার্যকর হয়েছিল পরদিন ২০ অক্টোবর থেকে।

চলতি বছর মোট ৬৭ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো সোনার দাম। দাম বাড়ানো হয়েছে ৪৮ বার আর কমেছে মাত্র ১৯ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। তখন ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিশ্ববাজারে সোনার দামে পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন হয়। মার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেওয়া শুরু করায় এই দরপতন দেখা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের গতকাল দুপুরে স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্সে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমে এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১১৫ দশমিক ২৬ ডলারে দাঁড়ায়, যা ২০২০ সালের আগস্টের পর সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন।

অথচ আগের দিন সোমবার সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারে উঠেছিল। এ বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে, যা মূলত ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সুদের হার কমার সম্ভাবনা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রমাগত সোনা কেনার কারণে সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশের সোনার বাজারের সঙ্গে সরাসরি বিশ্ববাজারের সম্পৃক্ততা নেই। তবে বাজুসের দাম সমন্বয়ে বিশ্ববাজারের গতি অনুসরণের প্রবণতা দেখা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিকেএমইএ প্রাঙ্গণে আইএফআইসি ব্যাংকের নতুন এটিএম বুথ উদ্বোধন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গ্রাহকদের আর্থিক লেনদেন আরও সহজ ও দ্রুততর করতে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রাঙ্গণে এটিএম বুথ স্থাপন করেছে আইএফআইসি ব্যাংক।

আজ বুধবার বুথটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. মেহমুদ হোসেন এবং বিকেএমইএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইএফআইসি ব্যাংকের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফা; ডিএমডি, সিআইও ও সিআরও মো. মনিতুর রহমান; হেড অব অপারেশনস হেলাল আহমেদ এবং নারায়ণগঞ্জ ব্র্যাঞ্চের চিফ ম্যানেজার আব্দুর রহমান।

অন্যদিকে বিকেএমইএর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট ফজলে শামীম এহসান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অমল পোদ্দার, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফাইন্যান্স) মো. মোরশেদ সারোয়ার ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রাশেদ। এ ছাড়া আইএফআইসি ব্যাংক ও বিকেএমইএ প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মকর্তারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বুথটির মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংকের গ্রাহকেরা সহজে বিভিন্ন সেবা নিতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে টাকা উত্তোলন, আইএফআইসি বা অন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ও কার্ডে ফান্ড ট্রান্সফার, ব্যালন্স চেক ও মিনি স্টেটমেন্ট, কার্ড অ্যাকটিভ, পিন পরিবর্তনসহ অন্যান্য এটিএম-সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা।

আইএফআইসি ব্যাংক জানিয়েছে, তারা এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে গ্রাহকদের সুবিধা দেওয়া ও দেশের আর্থিক খাতে ডিজিটাল রূপান্তরের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩৫৯৫ কোটির চাল, সার, বই কিনবে সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি

নতুন করে আতপ ও সেদ্ধ চাল, সার, পাঠ্যবই, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও ই-পাসপোর্টের মালামাল কেনার পাশাপাশি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার বেশি। আজ বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

চাল ও সার আমদানি

আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র ও জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে দুবাই ও মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন চাল আমদানি করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৪৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫০ হাজার টন আতপ চাল এবং ৫০ হাজার টন বাসমতী ছাড়া অন্য সেদ্ধ চাল।

এ ছাড়া রাশিয়া, মরক্কো ও সৌদি আরব থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইউরিয়া, ডিএপি ও এমওপি সার ক্রয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

মাধ্যমিকে সাড়ে ১২ কোটি বই

২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), দাখিল ও কারিগরির ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ১২ কোটি ৫৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৭১টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৪৪৪ কোটি ৮০ লাখ ৮৭ হাজার ৬৬১ টাকা।

বাফার গুদাম নির্মাণ

বরগুনায় ৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় ১০ হাজার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন বাফার গুদাম নির্মাণকাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যৌথভাবে এমবিএল ও আরএফএল কোম্পানিকে।

দরপত্র ছাড়া জ্বালানি তেল ও ই-পাসপোর্ট ক্রয়

অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির আরেক বৈঠকে ২০২৬ সালে ২৮ লাখ ৫ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল সরাসরি ক্রয় (দরপত্র ছাড়া) পদ্ধতিতে আমদানি করার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জিটুজি ভিত্তিতে আট দেশের ১০ প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের তেল আমদানি হবে।

একই বৈঠকে এক কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল ও ৫৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরাসরি জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ কোম্পানি থেকে ক্রয় করারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৯২ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

মিরসরাইয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণে ২০৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) বাস্তবায়িত ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের মিরসরাই-২-এ ও ২বি অর্থনৈতিক অঞ্চল, প্যাকেজ-৩-এর আওতায় প্রবেশপথ নির্মাণে এই অর্থ ব্যয় হবে। উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নেওয়া সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কারিগরি ও আর্থিকভাবে সর্বনিম্ন দরদাতা মনিকো লিমিটেডকে কাজটি দেওয়ার সুপারিশ করে টেন্ডার ইভালুয়েশন কমিটি (টিইসি)। পরে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়।

বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ

খুলনা বিভাগে পাঁচটি নতুন জিআইএস টাইপ উপকেন্দ্র নির্মাণে ১৪০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার ব্যয় অনুমোদন পেয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচিত সরকার এলে কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেবে আইএমএফ: গভর্নর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ডিসেম্বরে নির্ধারিত ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় অংশ নিতে সেখানে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি গতকাল বুধবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আইএমএফ চায় নির্বাচনের পর গঠিত নতুন সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে এখনো সম্মতি বা আপত্তি কোনোটি জানায়নি। আমাদের তেমন আর্থিক চাপ নেই, তাই এটি কোনো সমস্যা নয়।’

গভর্নর আরও বলেন, ‘অর্থ ছাড়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পর্যালোচনা (রিভিউ) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। আমরা চাই নীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। সে কারণেই আলোচনা চলছে। নির্বাচন সামনে থাকায় এখন পূর্ণাঙ্গ রিভিউ করা যৌক্তিক নয়। কারণ, রিভিউয়ের সঙ্গে আইএমএফের আর্টিকেল-৪ মিশনও সম্পৃক্ত থাকে। সংস্থাটি চায় নতুন সরকার গঠনের পর তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত রিভিউ সম্পন্ন করতে।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, আইএমএফের আর্টিকেল-৪ মিশন অক্টোবরেই আসবে। তারা আংশিকভাবে ঋণ প্যাকেজের অগ্রগতি মূল্যায়ন করবে, তবে চূড়ান্ত রিভিউ হবে না। ফেব্রুয়ারিতে বোর্ডের সভায় সেটি উপস্থাপন করা হবে, তখন জাতীয় নির্বাচনও শেষ হয়ে যাবে।

আইএমএফের ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতির মধ্যে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৬০ কোটি ডলার পেয়েছে। ডিসেম্বর মাসে পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের কথা রয়েছে, আর ষষ্ঠ কিস্তি নির্ধারিত আছে আগামী বছরের জুনে। সাধারণত প্রতিটি কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফ দুই সপ্তাহব্যাপী মূল্যায়ন মিশন পাঠায়, যাতে সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি যাচাই করা হয়। সে অনুযায়ী, পঞ্চম কিস্তির মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু করতে ২৯ অক্টোবর ঢাকায় আসছে আইএমএফ মিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত