Ajker Patrika

রোকিয়া আফজাল রহমানের মৃত্যুতে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির শোক প্রকাশ

আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ২২: ৪৬
রোকিয়া আফজাল রহমানের মৃত্যুতে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির শোক প্রকাশ

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারপারসন রোকিয়া আফজাল রহমানের (৮২) মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আজ বুধবার সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় বেলা দুইটায় মাউন্ট এলিজাবেথ নোভেনা হাসপাতালে তিনি মারা যান।

বিশিষ্ট উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের নেত্রী রোকিয়া আফজাল রহমান কর্মজীবনে বেশ সুপরিচিত ছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান, মিডিয়াওয়ার্ল্ড লিমিটেডের চেয়ারপারসন, এবিসি রেডিওর শেয়ারহোল্ডার ডিরেক্টর, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব উইমেন এন্টারপ্রেনার্স প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং মাইডাস ফাইন্যান্স লিমিটেডের চেয়ারপারসন হিসেবে ব্যবসায়িক খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে কথা বলেছেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রোকিয়া আফজাল রহমানের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তিনি দুই মেয়ে, এক ছেলেসহ আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন /আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (ডানে) ও শিল্পপতি গৌতম আদানি (বাঁয়ে)। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (ডানে) ও শিল্পপতি গৌতম আদানি (বাঁয়ে)। ছবি: সংগৃহীত

নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় যখন বিদেশি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গৌতম আদানিকে ঋণ দিতে দ্বিধাগ্রস্ত তখন পাশে দাঁড়িয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা লাইফ ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন (এলআইসি) অব ইন্ডিয়াকে ব্যবহার করে এই বিতর্কিত শিল্পপতির ঋণগ্রস্ত সংস্থাকে বাঁচাতে গোপনে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩৯০০ কোটি রুপি) বিনিয়োগের পরিকল্পনা তৈরি করেছিল। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের হাতে আসা অভ্যন্তরীণ নথি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাসে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়, আর্থিক পরিষেবা বিভাগ (ডিএফএস), এলআইসি এবং নীতি নির্ধারণী সংস্থা নীতি আয়োগ সমন্বিতভাবে এই বিনিয়োগ কৌশল তৈরি করে। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য ছিল আদানি গ্রুপের বন্ড ও ইক্যুইটিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢালা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আদানি পোর্টসের একটি ৫৮৫ মিলিয়ন ডলারের বন্ড ইস্যুতে এলআইসি একা অর্থায়ন করে। মে মাসের ৩০ তারিখে আদানি গ্রুপ ঘোষণা করে, এই পুরো বন্ডটির অর্থায়ন করেছে একটি মাত্র বিনিয়োগকারী—এলআইসি। সমালোচকেরা এই পদক্ষেপকে জনগণের অর্থের অপব্যবহার বলে অভিহিত করেছেন।

পরিকল্পনাটির ঘোষিত লক্ষ্য ছিল আদানির প্রতি ‘আস্থার বার্তা’ দেওয়া এবং অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা। যদিও এর ঠিক এক বছর আগে আদানি গ্রুপের ঋণ ২০ শতাংশ বেড়েছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে গুরুতর দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল।

আদানি গ্রুপ বর্তমানে একাধিক আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় তদন্তের মুখোমুখি।

মার্কিন বিচার বিভাগ এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) আদানি এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি ডলারের ঘুষ এবং জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে। অভিযোগ, জ্বালানি চুক্তি জেতার জন্য মিথ্যা বিবৃতি ও ২৫০ মিলিয়ন ডলারের অবৈধ লেনদেন করা হয়েছিল। যদিও আদানি এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

২০২৩ সালে মার্কিন শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে স্টক ম্যানিপুলেশন এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তোলে। এই প্রতিবেদনের পর বেশ কয়েকটি বড় আমেরিকান ও ইউরোপীয় ব্যাংক আদানির ঋণ সংক্রান্ত বিষয়ে সহায়তা করতে ইতস্তত করছিল।

এই পরিস্থিতিতে ডিএফএস-এর অভ্যন্তরীণ নথিতে ভারতীয় কর্মকর্তারা আদানিকে ‘দূরদর্শী উদ্যোক্তা’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তাঁরা মনে করেন, বন্দর, জ্বালানি এবং অবকাঠামোসহ আদানির ব্যবসাগুলো জাতীয় অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এলআইসি, লাখ লাখ ভারতীয়র জীবন বিমা করে এবং তাদের গ্রাহকদের বেশির ভাগই নিম্ন আয়ের, এমন একটি প্রতিষ্ঠান একটি রাজনৈতিকভাবে ঘনিষ্ঠ বেসরকারি সংস্থায় এত বেশি বিনিয়োগ করে উচ্চ ঝুঁকি নিচ্ছে।

প্রতিবেদনে উদ্ধৃত স্বাধীন বিশ্লেষক হেমিন্দ্র হাজারি বলেন, ‘একটি বেসরকারি করপোরেট সত্তায় এলআইসি-এর এত বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করা অস্বাভাবিক। এলআইসি-এর যদি কিছু হয়...তবে একমাত্র সরকারই এটিকে উদ্ধার করতে পারে।’

এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিরোধী দলগুলো প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং আদানি গ্রুপের ওপর তীব্র আক্রমণ শুরু করেছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র ধারাবাহিক টুইটে মোদি সরকার এবং আদানি গ্রুপের সমালোচনা করে বলেন, ‘ভারতীয় করদাতাদের ৩০ হাজার কোটি রুপি কীভাবে আদানিদের “পিগিব্যাঙ্ক” হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেদিকে মনোযোগ দিন।’ তিনি অভিযোগ করেন, মোদি সরকার আদানিকে অর্থায়ন করে চলেছে এবং উল্টো ভারতীয় জনগণকেই তাঁকে উদ্ধার করতে হচ্ছে।

কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এক্স প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করে বলেন, ২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর গৌতম আদানি এবং তাঁর সাত সহযোগীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযোগ ওঠার পর মাত্র চার ঘণ্টার ট্রেডিংয়ে এলআইসি-এর ৭ হাজার ৮৫০ কোটি রুপি লোকসান হয়েছিল। তিনি এই ঘটনাকে ‘মোদানি মেগাস্ক্যাম’-এর অংশ বলে অভিহিত করেন। যেখানে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে—জোরপূর্বক সম্পদ বিক্রি, কারচুপি করে রাষ্ট্রীয় সংস্থা বেসরকারীকরণ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চুক্তির মতো ক্ষমতার অপব্যবহার।

ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া বিবৃতিতে আদানি গ্রুপ সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাদের যে কোনো ভূমিকার কথা ‘সুস্পষ্টভাবে অস্বীকার’ করেছে। তারা রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছে এবং জোর দিয়ে বলেছে, তাদের উত্থান নরেন্দ্র মোদির জাতীয় নেতা হয়ে ওঠার বহু আগের ঘটনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের আগাম সবজি, কমছে দামও

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ১৮
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে মিলছে শীতের আগাম সবজি। গতকাল মতিঝিল এজিবি কলোনি বাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে মিলছে শীতের আগাম সবজি। গতকাল মতিঝিল এজিবি কলোনি বাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে আগাম শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সরবরাহও বেড়েছে বেশ। এতে কমতে শুরু করেছে পণ্যটির দাম। সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরলেও দুঃসংবাদ এসেছে পেঁয়াজে। চলতি সপ্তাহে মসলা পণ্যটির দাম কেজিপ্রতি ন্যূনতম ৫ টাকা বেড়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে আগাম জাতের শিম, মুলা, ফুলকপি ও লাউয়ের সরবরাহ গত এক সপ্তাহে ব্যাপক বেড়েছে। এতে অন্যান্য সবজির চাহিদা ও দাম দুটোই কমছে। আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে টমেটো, শালগম, গাজর, ব্রোকলি ও লালশাকসহ অন্যান্য শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়ে যাবে, তখন দাম আরও কমে আসবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর খিলগাঁও, মালিবাগ, মুগদা, মানিকনগর, সেগুনবাগিচাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতের সবজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। এক সপ্তাহ আগেও এটি বিক্রি হয়েছিল ২২০-২৪০ টাকা কেজি।

গত সপ্তাহে যে ফুলকপি প্রতিটি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, গতকাল তা ৪০-৫০ টাকায় পাওয়া গেছে। মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি, গত সপ্তাহে যা ছিল ৫০-৬০ টাকা। ভালো মানের লাউ এখন পাওয়া যাচ্ছে প্রতিটি ৫০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বাজারের অন্যান্য সবজির মধ্যে ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৬০, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা কেজি। বেগুন ৮০, যা ছিল ১০০ টাকা কেজি। করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০, যা ছিল ৮০ টাকা কেজি। বরবটি ৭০-৮০, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯০-১০০ টাকা কেজি। কমেছে জলপাইয়ের দামও। জলপাই পাওয়া যাচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজিতে, গত সপ্তাহে যা ছিল ১০০ টাকার আশপাশে।

পরিসংখ্যান ব্যুরো ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, শীত মৌসুমে দেশে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, শালগম, টমেটো, আলু, গাজর, বেগুন, মুলা, লাউ, শিম, পালংশাক, লালশাকসহ ৩০ ধরনের সবজি উৎপাদন হয়। আর গ্রীষ্মকালে হয় ১৬ ধরনের সবজি। দেশে শীত এবং গ্রীষ্ম মিলে বছরে মোট ৫৫ দশমিক ৫০ লাখ টনের বেশি সবজি উৎপাদন হয়, যার মধ্যে প্রায় ৪০ লাখ টনই উৎপাদন হয় শীত মৌসুমে। বাকিটা গ্রীষ্মকালে।

অপরিবর্তিত রয়েছে কাঁচা মরিচ, টমেটো, কচুর মুখীসহ কিছু সবজির দাম। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০, টমেটো-১২০ ও কচুর মুখী প্রতি কেজি ৫০ টাকায়। কিছুটা বেশি দেখা গেছে শসার দাম। বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০ টাকা কেজি।

পেঁয়াজের দাম আগে থেকেই বেশি ছিল। তার ওপর এখন আবার একটু একটু করে বাড়ছে। ভালো মানের পেঁয়াজ কিনতে এখন ৮৫-৯০ টাকা কেজি লাগছে, যা এক সপ্তাহ আগে ৮০-৮৫ টাকায় পাওয়া যেত। অবশ্য আকারে কিছুটা ছোট পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা কেজি, যা ৭০-৭৫ টাকা ছিল।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. খলিলুর রহমান বলেন, পাবনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকেরা গত বছরের পেঁয়াজ বিক্রি করে নতুন আবাদ করছেন। ফলে পেঁয়াজের সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যদি আমদানি না হয়, তবে আগামী এক-দেড় মাস দাম বেশিই থাকবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, দেশে দুই ধরনের পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে প্রধান পেঁয়াজ হলো ‘হালি’ পেঁয়াজ, যা সংরক্ষণ করা যায় এবং সারা বছরের চাহিদা পূরণ হয়। ডিসেম্বরে এই পেঁয়াজের আবাদ হয়ে ফেব্রুয়ারি-মার্চে বাজারে আসে। এর আগে অক্টোবরে মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজ আবাদ হয়. যা ডিসেম্বরের শুরুতেই বাজারে আসে। এই পেঁয়াজের উৎপাদন অল্প হলেও মধ্যবর্তী চাহিদা পূরণে সহায়তা করে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে গত মৌসুমের হালি পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষের দিকে। আগামী ডিসেম্বরে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসার আগপর্যন্ত দাম কিছুটা চড়া থাকবে।

সবজি ও পেঁয়াজ ছাড়া ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, আটা ও ময়দাসহ অন্যান্য মুদিপণ্য গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে।

এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহের মতোই ১৭০-১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিমের দাম কিছুটা বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছেন বিক্রেতারা। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা ডজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড: বিমা সুবিধা পাচ্ছেন না ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা

  • মালামাল বিমাকৃত ছিল ‘এয়ার রিস্ক অনলি ক্লজ’-এর আওতায়
  • বিমান থেকে পণ্য আনলোডের পর আর কোনো সুরক্ষা থাকে না
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২৯
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লেগেছে আগুন। এতে বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠানামা। গত শনিবার  ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লেগেছে আগুন। এতে বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠানামা। গত শনিবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত আমদানিকারকেরা বিমা থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। আমদানি চালানে তাঁদের মালামাল বিমাকৃত ছিল ‘এয়ার রিস্ক অনলি ক্লজ’-এর আওতায়, এই বিধান অনুযায়ী বিমান থেকে পণ্য আনলোড হওয়ার পর আর ওই মালামালের কোনো সুরক্ষা থাকে না। বিমা কোম্পানি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।

বিমা কোম্পানির তথ্য অনুযায়ী, ‘এয়ার রিস্ক অনলি’ বিমা মূলত শুধু বিমানে পরিবহনের সময়কার ঝুঁকি; যেমন বিমান দুর্ঘটনা, হাইজ্যাক বা জোরপূর্বক অবতরণজনিত ক্ষতি কভার করে। ফলে কার্গো ভিলেজে পুড়ে যাওয়া মালামালের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ পাওয়া সম্ভব নয়।

এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আজকের পত্রিকাকে জানালেন, অগ্নিকাণ্ডে রপ্তানিকারকদের আনুমানিক ক্ষতি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। তিনি বলেন, ‘আইনের কারণে আমদানিকারকেরা বিমা করেছেন, কিন্তু অধিকাংশই ক্ষতিপূরণ পাবেন না। সরকারের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের সহায়তা করা, কারণ সরকারি জিম্মায় মালামাল পুড়ে তাঁরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন।’

রংপুরের মেসার্স মহুবর রহমান পার্টিকেল মিলস লিমিটেড ৭ লাখ ৮৩ হাজার টাকার মালামাল চীন থেকে আমদানি করেছিল। এলসি শর্ত অনুযায়ী বিমা বাধ্যতামূলক হওয়ায় তিনি ‘এয়ার রিস্ক অনলি’ ক্লজের আওতায় বিমা করেন। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্যাংকের মাধ্যমে বিমা করা হয়। দালালেরাই করিয়ে দেয়, আমরা সবটা জানি না।’

একই অবস্থায় আছে টাঙ্গাইলের ইউনিগ্লোরি পেপার অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড। তাদের ৯৪ হাজার টাকার মালামাল সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার কায়সার আলম জানান, বিমা কোম্পানি প্রিমিয়াম কম হওয়ায় ‘এয়ার রিস্ক অনলি’ ক্লজে বিমা দিয়েছে, ফলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ নেই।

সিএনএফ এজেন্ট ও এসজিএস কোম্পানির মাসুদ বকুল বলেন, ‘এ ধরনের দুর্ঘটনা আগে হয়নি। খরচ কমাতে আমরা এয়ার রিস্ক অনলি ক্লজই ব্যবহার করি।’

বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, সেক্টরে এখন পর্যন্ত ৩০০ চালানের কনসাইনমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ‘আমদানিকারকেরা বিমা করেছেন, কিন্তু বিমা কোম্পানিগুলো গোপন শর্তে দাবি পরিশোধ করছে না। ফলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাচ্ছে না।’

আইন অনুযায়ী, আমদানিকারকেরা স্থানীয়ভাবে বিমা করা বাধ্যতামূলক হলেও ব্যবসায়ীরা প্রিমিয়াম কমাতে বিদেশে, বিশেষত সরবরাহকারীর দেশে বিমা করেন। ইস্টার্ন ইনস্যুরেন্সের সিইও হাসান তারেক বলেন, ‘কম প্রিমিয়ামের কারণে অনেকে এয়ার রিস্ক অনলি নেন, কিন্তু এতে কভারেজ সীমিত। নিরাপত্তার জন্য এয়ার অল রিস্ক পলিসি নেওয়াই উত্তম।’

বিমা বিশেষজ্ঞ এ কে এম এহসানুল হক (এফসিআইআই) বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সাধারণত ইনস্টিটিউট কার্গো ক্লজ (এয়ার) ব্যবহৃত হয়, যেখানে ওয়্যারহাউস টু ওয়্যারহাউস পর্যন্ত কভারেজ থাকে। ‘এয়ার রিস্ক অনলি’ ক্লজ আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত নয়।

সরকারি প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশনের (এসবিসি) জেনারেল ম্যানেজার শাহ আলম বলেন, ‘আগুনে পোড়ার ঘটনায় হয়তো ১০০-১৫০ কোটি টাকার বিমা দাবি হতে পারে। কোনোভাবে এটা ১০-১২ হাজার কোটি টাকা হবে না।’ এ ছাড়া বেবিচকের কার্গো ভিলেজে সর্বোচ্চ বিমা রয়েছে মাত্র ২০ লাখ টাকা।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) জানায়, অগ্নিকাণ্ডে নাশকতার অভিযোগ প্রমাণিত হলে কেউ বিমা দাবি করতে পারবে না। আইডিআরএর মুখপাত্র সাইফুন্নাহার সুমি বলেন, ‘বিমা দাবি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার জন্য বিমা কোম্পানিগুলোকে শিগগির চিঠি পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডলারের দর ফের ঊর্ধ্বমুখী

  • গ্লোবাল ইসলামী ও কমিউনিটি ব্যাংকে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২৪.২৫ টাকায়
  • খোলাবাজারে ডলারের ক্রয়মূল্য ছিল ১২৪ টাকা, বিক্রয়মূল্য ১২৫ টাকা ২০ পয়সা
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রমজানকে কেন্দ্র করে আমদানির জন্য এলসি খোলার চাপ বেড়ে যাওয়ায় চলতি সপ্তাহে ডলারের দর ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেসরকারি খাতের গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও কমিউনিটি ব্যাংকে নগদ ডলার বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২৪ টাকা ২৫ পয়সায়, যা দেশের ইতিহাসে ব্যাংকে ঘোষিত সর্বোচ্চ রেকর্ড। একই দিনে খোলাবাজারে ডলারের ক্রয়মূল্য ছিল ১২৪ টাকা, বিক্রয়মূল্য ১২৫ টাকা ২০ পয়সা। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন পর ব্যাংক ও খোলাবাজারের ডলারের রেট কাছাকাছি অবস্থান করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ন্যাশনাল ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, আইএফআইসি, কমিউনিটি ব্যাংক ও সিটিজেন ব্যাংকের নগদ ডলার বিক্রিমূল্য ছিল ১২৪ টাকা। আর এবি ব্যাংক ও উত্তরা ব্যাংকের রেট যথাক্রমে ১২৩ টাকা ৯৫ পয়সা ও ১২৩ টাকা ৯০ পয়সা। অন্যদিকে অগ্রণী ব্যাংকের বিক্রিমূল্য সর্বোচ্চ ১২২ টাকা ৯০ পয়সা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের বিক্রিমূল্য ছিল ১২২ টাকা ৭০ পয়সা। একই সময়ে আন্তব্যাংক রেট ছিল ১২২ টাকা ৫০ পয়সা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘সাময়িক হলেও হঠাৎ প্রবাসীদের রেমিট্যান্স কিছুটা মন্থর হয়ে গেছে অথচ রমজানকে কেন্দ্র করে এলসি খোলার চাপ বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ডলারের দরে। বিষয়টির প্রতি আমরা নজর রাখছি, জানান তিনি।’

বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি তিন মাসে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার কিনেছে। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন,ডলারের দাম কিছুটা বেশি রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকই ইঙ্গিত দিয়েছে। এ ছাড়া আমদানির ও সরকারি পেমেন্ট বেড়ে যাওয়ায় দরও বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত