Ajker Patrika

মালয়েশিয়ার হালাল শিরোপা কেড়ে নিতে পারে বৌদ্ধ থাইল্যান্ড

আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১৭: ৪১
মালয়েশিয়ার হালাল শিরোপা কেড়ে নিতে পারে বৌদ্ধ থাইল্যান্ড

করোনা মহামারির পর থেকে অর্থনীতির চাকা সচল করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে পর্যটননির্ভর অর্থনীতির দেশ থাইল্যান্ড। মুসলিম পর্যটক টানতে হালাল খাবার ও রেস্তোরাঁর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটি। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে এশিয়ার ‘হালাল শিরোপা’ ধরে রাখা প্রতিবেশী মুসলিমপ্রধান মালয়েশিয়াকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ছে বৌদ্ধপ্রধান থাইল্যান্ড। হালাল খাবারের বাজার বিকশিত হলে ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি চাঙা হবে বলে দেশটির আশা। 

তবে মালয়েশিয়াকে টেক্কা দেওয়া অতটা সহজ হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মুসলিম দেশ ও পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বিপদ ডেকে আনতে পারে থাইল্যান্ড। কেননা হালাল পণ্য বিক্রির সনদ জালিয়াতি করে বা মান নিয়ন্ত্রণ না করে বাজারে নকল হালাল পণ্য বিক্রি হতে পারে। সেক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হতে পারে থাই সরকারের এই উদ্যোগ। তাছাড়া, মুসলিম দেশ হিসেবে মালয়েশিয়ায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হালাল বাজারের সুদৃঢ় ভিত্তি আছে।      

চলতি বছরের জুলাই মাসে থাই সরকার ‘হালাল শিল্প’ পরিকল্পনা উন্মোচন করেছে, যার লক্ষ্য থাই পণ্যের প্রচার এবং এ শিল্পের মানকে শক্তিশালী করা। চার বছর মেয়াদি এ পরিকল্পনার আওতায় একটি থাই দ্বীপকে ‘হালাল উপত্যকা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। এটি থাইল্যান্ডের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণের কোনো প্রদেশ হতে পারে। এ পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

222আন্তর্জাতিক অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ এবং ইন্টেলিজেন্ট রিসার্চ কনসালটেন্সি কোম্পানির উপদেষ্টা আত পিসানওয়ানিচ আল-জাজিরাকে বলেন, খাদ্য, পানীয় ও কৃষি খাতে থাইল্যান্ডের শক্ত ভিত্তি থাকলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় হালাল খাদ্যের বাজার হিসেবে ‘শিরোপা’ দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ার দখলে। মুসলিমপ্রধান দেশ হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের পর্যটকদের কাছে দেশটির বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। এমন আস্থা ও স্বীকৃতি পেতে থাইল্যান্ডের বেশ সময় লাগবে। 

ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, থাইল্যান্ডে হালাল সনদধারী প্রায় ১৫ হাজার কোম্পানি ১ লাখ ৬৬ হাজার পণ্য বাজারজাত করে। আর হালাল রেস্তোরাঁ রয়েছে  ৩ হাজার ৫০০টি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোতে হালাল পণ্য রপ্তানিতে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার পরেই থাইল্যান্ডের অবস্থান। 

সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের প্রথম আট মাসে ওআইসি দেশগুলোর বাজারে চিনি, চাল এবং হিমায়িত মুরগিসহ অন্যান্য হালাল পণ্য রপ্তানি করে প্রায় ৪ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ৪১০ কোটি ডলার আয় করেছে থাইল্যান্ড। দেশটির প্রায় ৯৩ শতাংশ মানুষ বৌদ্ধ। হালাল পণ্যের বিকাশমান চাহিদাকে কাজে লাগাতে সংখ্যালঘু মুসলিম দেশগুলোকে অনুসরণ করছে দেশটি। 

হালাল অর্থনীতি বিষয়ে ওআইসির ২০২২ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, হালাল পণ্যের বৃহত্তম রপ্তানিকারক ব্রাজিল, চীন, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ওআইসিবহির্ভূত দেশগুলো। ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর আমদানির মোট ৮০ শতাংশেরও বেশি এসেছে এসব দেশ থেকে। 

333২০৬০ সালের মধ্যে পৃথিবীতে মুসলিমদের সংখ্যা ৩ বিলিয়ন বা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ হবে বলে ওআইসির প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

থাই মুসলিম ব্যবসায়ীদের সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াদ গানসুন আল জাজিরাকে বলেন, থাইল্যান্ড হলো সরবরাহের কেন্দ্র। মালয়েশিয়ার মতো মুসলিম দেশগুলোতে যেসব খাদ্য উৎপাদন করা হয়, প্রতিযোগিতা বাড়াতে এখানেও সেসব হালাল খাদ্য উৎপাদন করা হচ্ছে।

গানসুন বলেছেন, থাইল্যান্ডের এ যাত্রায় সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক রাস্তার পাশের খাবারের দোকানগুলো। এসব দোকান ভুয়া হালাল সনদ লাগিয়ে থাইল্যান্ডের ওপর মুসলিম পর্যটকদের আস্থা বিনষ্ট করতে পারে। 

মাস্টারকার্ড-ক্রিসেন্ট্রেটিং গ্লোবাল মুসলিম ট্রাভেল ইনডেক্সের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মুসলিমবান্ধব গন্তব্যের মধ্যে নন-ওআইসি ক্যাটাগরিতে থাইল্যান্ড নেতৃস্থানীয়। এছাড়া সামগ্রিকভাবে নন-ওআইসি গন্তব্যের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, তাইওয়ান ও হংকংয়ের পরে মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে দেশটি। 

ওই সূচকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বছরের পর বছর ধরে মুসলিম পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে থাইল্যান্ড। হালাল খাদ্য উৎপাদন ও হালাল পণ্য পরিবেশনায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে দেশটি মুসলিম সম্প্রদায়ের উপকার করেছে। প্রায় সবখানে বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য পর্যটন হটস্পটগুলোতে হালাল খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। 

ফুয়াদ গানসুন আরও বলেন, প্রতুনামে (ব্যাংককের পাইকারি বাজার) যদি অপারেটররা হালাল খাবার বিক্রি না করে, তবে তাদের গ্রাহক— যারা বেশির ভাগই পর্যটক— অর্ধেক কমে যেতে পারে। পর্যটকেরা থাইল্যান্ডে ভ্রমণে আস্থা রাখে। বেশির ভাগ মুসলিম পর্যটকেরা রাস্তার খাবারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকেন। তবে কখনো কখনো শপিং মলেও এটি ঘটে।’ 

44তিনি বলেন, জনপ্রিয় ফাস্ট ফুড চেইনসহ কিছু বড় খাদ্য কোম্পানি হালাল পণ্য উৎপাদনে বিনিয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিছু ফ্রায়েড চিকেনের দোকান দেখে মনে হতে পারে, এটি অপচয়ের বিনিয়োগ। কিন্তু অর্থনৈতিক সুবিধা নিতে চাইলে এমন ধারণা পোষণ ভুল হবে। কারণ, থাইল্যান্ড পর্যটনের শীর্ষ দেশ হতে চাইলে এমন মনোভাব বাধা হয়ে দাঁড়াবে। 

থাইল্যান্ডের প্রধান মুরগি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সাহা ফার্মস। হালাল সনদ অর্জনে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রচেষ্টা চালিয়েছে, তাঁদের অন্যতম এটি। সাহা ফার্মস গ্রুপের রপ্তানি ও বিপণনের সভাপতি জারুওয়ান ছোটতাওয়ান বলেন, হালাল মুরগির চাহিদা থেকেই কোম্পানিটি সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে প্রবেশ করেছে। 

আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের মুরগির খাবার ও ঘাস থাইল্যান্ডের হালাল সনদ পাওয়া। উপরন্তু, মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমাদের নিরীক্ষা করা হয়। এ বছর আমরা হালাল ব্র্যান্ডিং জোরদার করতে চাই, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের বিপণন পদ্ধতির অংশ হিসেবে।’ 

থাইল্যান্ডের সেন্ট্রাল ইসলামিক কাউন্সিলের অফিস পরিচালিত ওয়েবসাইট হালাল ডটকম থাইল্যান্ড। এই সাইটে নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে মরিচ বাটা, মাছ ভর্তা, বাদামের দুধ ও বাবল গামসহ হাজার হাজার থাই হালাল পণ্য পাওয়া যায়। 

ব্যাংককের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স কমিটির মতে, হালাল সনদের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ১০ হাজার বাথ বা ৩০০ ডলার খরচ করতে হয়। এছাড়াও পর্যায়ক্রমিক সনদ যাচাই, সনদের মেয়াদ বৃদ্ধিসহ কাগজপত্রের জন্য বাড়তি ফি নেওয়া হয়। 

পিসানওয়ানিচ বলেন, ‘হালাল সার্টিফিকেট থাকা যুক্তিযুক্ত। কিন্তু থাইল্যান্ড রাতারাতি ‘হালাল হাব’ হিসেবে মুসলিম পর্যটকদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে পারবে না।’

আল–জাজিরা থেকে অনুবাদ করেছেন আবদুল বাছেদ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও কর্মীদের সাফল্য উদ্‌যাপনে আবুল খায়ের স্টিলের ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইস্পাত উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের স্টিল (একেএস) ৬ ডিসেম্বর তাদের সব কর্মীকে নিয়ে ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। দিনব্যাপী এই উৎসবমুখর ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে দেশের প্রতিটি স্থান থেকে আবুল খায়ের স্টিলের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। নামাজ ও খাবারের বিরতির পর একেএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবার উদ্দেশে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন। বক্তব্যে কোম্পানির সাম্প্রতিক অর্জন ও মাইলফলকগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রড একেএস টিএমটি বি৭০০ সি-আরের সফল উৎপাদন। বিশ্বের দ্রুততম রোলিং মিল স্থাপন। একেএস এবং কাউ ব্র্যান্ড কালার কোটেড স্টিলের মর্যাদাপূর্ণ সুপারব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন।

এই আলোচনায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং কর্মীদের সম্মিলিত সাফল্যের প্রতিচ্ছবিও উঠে আসে।

সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‍্যাফেল ড্র পর্বটি উদ্‌যাপনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কিংবদন্তি শিল্পী জেমসের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ও লেজার শো উপস্থিত সবাইকে মাতিয়ে রাখে।

সমাপনী ভাষণে একেএস পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান হয়। এরপর নৈশভোজ ও ডিজে সেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (৮ ডসিম্বের) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন, শরী’আহ সুপারভাইজরি কাউন্সলিরে সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যাংকের নিট মুনাফা ছাড়া উৎসাহ বোনাস বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

কর ও সঞ্চিতি সংরক্ষণের পর নিট মুনাফা অর্জন না করলে কোনো ব্যাংকই আর উৎসাহ বোনাস দিতে পারবে না। পাশাপাশি মূলধন সংরক্ষণ ঘাটতি, প্রভিশন ঘাটতি বা পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকেই বোনাস দেওয়ার পথও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে আনরিয়েলাইজড বা নগদায়ন না করা আয়ের ভিত্তিতে বোনাস দেওয়া আর্থিক শৃঙ্খলা ও সুশাসনের পরিপন্থী। তাই এখন থেকে শুধু নির্ধারিত নিট মুনাফা অর্জন করতে পারলেই উৎসাহ বোনাস দেওয়ার অনুমতি পাবে ব্যাংকগুলো।

আরও বলা হয়, পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে কোনো ধরনের উৎসাহ বোনাস দেওয়া যাবে না। রেগুলেটরি মূলধন বা প্রভিশনের ঘাটতি থাকলে বোনাস দেওয়া নিষিদ্ধ। প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় পাওয়া ব্যাংকগুলোও সেই সময়কাল মুনাফা হিসাবের ক্ষেত্রে দেখাতে পারবে না। বোনাস প্রদানে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন কর্মসূচির উন্নতি ও খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে দৃশ্যমান সাফল্য বিবেচনায় নিতে হবে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে, যেখানে নিট মুনাফা ছাড়া বোনাস না দেওয়ার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। তবে কোনো ব্যাংক নির্দিষ্ট সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে বিশেষ বোনাসের জন্য আবেদন করতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৩
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভ্যাটব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটাল ও সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক নতুন পর্যায়ে এগোচ্ছে। মাত্র একটি ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধের সুযোগ ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে এবং বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহারও শুরু করেছে।

এনবিআর জানিয়েছে, শিগগির এ পদ্ধতি সারা দেশে চালু করা হবে, যাতে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাটের আওতায় আসে এবং নিবন্ধন ছাড়া আর কেউ ব্যবসা চালাতে না পারে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

মো. আবদুর রহমান বলেন, দেশের বড় একটি অংশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনো ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে। আগামী বছর এমন একটি মেকানিজম চালু করা হবে, যার মাধ্যমে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসার সুযোগ থাকবে না। বর্তমানে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠান ৬ লাখ ৪৪ হাজার; লক্ষ্য আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে তা ৩০ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করা। শুধু চলতি মাসেই ১ লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য—‘সময়মতো নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’—ধরে আগামীকাল বুধবার সারা দেশে ভ্যাট দিবস পালিত হবে। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর চলবে ভ্যাট সপ্তাহ। তবে নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় এ বছরও স্থগিত থাকছে ভ্যাট পুরস্কার।

রিটার্ন জমাদানেও বড় পরিবর্তন আসছে বলে জানান মো. আবদুর রহমান খান। গত অর্থবছরে ১৭ লাখ ই-রিটার্ন জমা পড়লেও চলতি অর্থবছরে তা ৪০ লাখে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জমা পড়েছে ২২ লাখ রিটার্ন। ভ্যাট আদায়েও গতি এসেছে—গত অর্থবছরে মোট রাজস্বের ৩৮ শতাংশ এসেছে ভ্যাট থেকে আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই ভ্যাট আদায় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২২ শতাংশ।

করদাতাদের ঝামেলা কমাতে ই-রিটার্নে ব্যবহৃত ব্যাংকসংক্রান্ত চারটি তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান আবদুর রহমান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করদাতারা মনে করেন, রাজস্ব কর্মকর্তারা এসব তথ্য দেখতে পারবেন—এটি ভুল ধারণা।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে কেন—এ প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বাস্তব প্রয়োজন থেকেই এ লক্ষ্য নির্ধারণ। তবে কারও ওপর হয়রানি বা অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হবে না; মূলত যাঁরা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই কঠোরতা বাড়ানো হবে।

আমদানি করা মোবাইল ফোনে কর কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত; এককভাবে এনবিআর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) মো. আজিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত