Ajker Patrika

রেস্তোরাঁ-মিষ্টির দোকান ও বেকারির গ্রেডিং সেবা আধুনিকায়ন করছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)। ছবি: উইকিপিডিয়া
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)। ছবি: উইকিপিডিয়া

রেস্তোরাঁ, মিষ্টির দোকান ও বেকারির গ্রেডিং সেবা আধুনিকায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)। ভালো সেবা না পেলে ভোক্তাদের অভিযোগের সুযোগ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন বিএসএসএর উপপরিচালক রুহুল আমিন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত গ্রেডিং সেবা ডিজিটালাইজেশন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

রুহুল আমিন বলেন, গ্রেডিংপ্রাপ্ত হোটেল-রেস্তোরাঁয় কোনো ভোক্তা প্রতারিত হলে কিংবা যে কোনো অভিযোগ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কাছে করতে পারবেন। সেটি ইমেইল কিংবা লিখিত যেকোনো উপায়ে করার সুযোগ রয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর খাদ্য পরিদর্শক সরাসরি সেখানে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।

হোটেল-রেস্তোরাঁ কিংবা মিষ্টির দোকানে এই গ্রেডিং পদ্ধতিকে তিন বছর অন্তর নবায়নের দাবি জানান হোটেল রেস্তোরাঁ মালিকেরা। প্রতিবছর এটি নবায়ন করতে গেলে বেশি সময় থাকে না। এতে সমস্যায় পড়তে হয় তাদের।

বাংলাদেশ হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান চৌধুরী বলেন, বর্তমানে ট্রেড লাইসেন্স থেকে শুরু করে বিভিন্ন লাইসেন্স সেবা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স সেবা প্রায় বন্ধই রেখেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।

এ প্রসঙ্গে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, অনেকেই বিভিন্ন বাড়িতে কিংবা ছাদে হোটেল বা রেস্তোরাঁ গড়ে তুলেছেন। অনেক স্থানে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এজন্য কিছু এলাকায় লাইসেন্স নবায়ন করছে না। তবে যথাযথ স্থানে হোটেল-রেস্তোরাঁ করলে লাইসেন্স পেতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, গ্রেডিং সেবাকে ভোগান্তি কমাতে হবে। বিভিন্ন ইউটিলিটি সেবায় ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন তিনি। বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ কোনো নোটিশ ছাড়াই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। পরে তাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ও সংযোগের ফিও আদায় করা হচ্ছে। এজন্য সেবাকে সহজীকরণ করতে হবে যাতে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা উভয় উপকৃত হয়।

বক্তারা বলেন, হোটেল-রেস্তোরাঁ এবং মিষ্টি দোকানগুলোকে গ্রেডিং পদ্ধতিতে আনা গেলে সেখানে ভোক্তার আস্থা তৈরি হবে। এতে প্রতিষ্ঠান লাভবান হবে। তবে শুরুতে কিছু খরচ বাড়লেও ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ভালো হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

তাঁরা আরও বলেন, দেশের আনাচে-কানাচে অসংখ্য হোটেল-রেস্তোরাঁ-মিষ্টির দোকান রয়েছে যেগুলো কোনো গ্রেডিং অনুসরণ করছে না। এসব প্রতিষ্ঠানকে ট্রেডিংয়ের আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হোটেল-রেস্তোরাঁকে ভোক্তা বান্ধব এবং সেখানকার সঠিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। ১০০ নম্বরের মধ্যে যে প্রতিষ্ঠানটি ৯০+ নম্বর পাবে সেটি উত্তম এবং সেটি সবুজ সংকেতের স্টিকার পাবে। এটি এ+ গ্রেডের প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। ৮০-৮৯ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান এ গ্রেড ভালো মানের ও স্টিকার নীল রঙের, ৭০-৮৯ পর্যন্ত এটি মধ্যম মানের বি গ্রেড ও স্টিকার হলুদ রংয়ের এবং সর্বশেষ সত্তরের নিচে যে সব নম্বর পাবে সেগুলো সি গ্রেড এবং এগুলো স্টিকার পাবে কমলা রঙের।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মোট গ্রেডিং পেয়েছিল ৫৭টি প্রতিষ্ঠান। ২০২১-২০২২ সালে তাদের ৬০টি দেওয়া হয়, ২০২২-২০২৩ সালে ১৫৭ টি, ২০২৩-২০২৪ পর্যন্ত ৫৪৬টি এবং চলতি অর্থবছরে ২০২৪-২০২৫ পর্যন্ত ১ হাজার ১৫৮টি প্রতিষ্ঠানকে গ্রেডিং স্টিকার দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত