Ajker Patrika

৩ ডলারের চামড়া রপ্তানি ৮০ সেন্টে, ইউরোপ হাতছাড়া হওয়ার পর বাজার শুধু চীন

রিফাত মেহেদী, সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৩, ২২: ০৩
৩ ডলারের চামড়া রপ্তানি ৮০ সেন্টে, ইউরোপ হাতছাড়া হওয়ার পর বাজার শুধু চীন

গতবারের মতো এবারও ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়ার দাম পাওয়া গেল না। গরুর চামড়া নামমাত্র মূল্যে বিক্রি হয়েছে। ছাগলের চামড়া বিনা মূল্যেও নিতে চাননি ফড়িয়ারা। ফড়িয়ারা বলছেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম কমিয়েছেন। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্যানারির মালিকেরা বকেয়া পরিশোধ করছেন না। সেই সঙ্গে রয়েছে লবণ ও শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির অজুহাত। চীন ছাড়া বিকল্প রপ্তানি বাজার না থাকাও বড় কারণ। নানা পক্ষের এই টানাপোড়েনের মধ্যে সরকার নির্ধারিত দামে দেশের কোথাও চামড়া বিক্রি হয়নি। 

এ নিয়ে কথা হয় সাভারের চামড়া শিল্প নগরীর ট্যানারিমালিকদের সঙ্গে। তাঁরা বলছেন, বিনা মূল্যে পাওয়া বা ফেলে দেওয়া চামড়া কুড়িয়ে আনলেও তা বিক্রি করে তাঁদের লাভ হবে না। রাসায়নিক ও লবণের বাড়তি দামের কারণে চামড়া প্রক্রিয়া করতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। 

শুক্রবার (৩০ জুন) সাভারের চামড়া শিল্পের সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত ঈদের দিন ও ঈদের পরদিন কাঁচা চামড়াগুলো প্রবেশ করে ট্যানারিগুলোতে। দু-তিন দিন পর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লবণ দেওয়া চামড়া আসতে শুরু করে। এ বছর কোরবানির ঈদে সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে এক কোটি পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। 

গোল্ডেন লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি ট্যানারিতে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকেরা চামড়ার অপ্রয়োজনীয় মাংস, শিং ও লেজ কাটার কাজ করছেন। এরপর চামড়াগুলোতে লবণ লাগানো হচ্ছে। 

সাভার শিল্পনগরীতে চামড়া প্রক্রিয়া শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকাট্যানারিমালিক জাফর চৌধুরী বলেন, ‘মানুষ যে চামড়ার দাম না পেয়ে ফেলে দেয় আমরা ড্রেন থেকে যদি সেই চামড়াও কুড়িয়ে নিয়ে আসি, তা-ও আমাদের লাভ হবে না! কারণ চামড়ার দাম যদি হয় ১০ টাকা, সেই চামড়া প্রসেস করতে আরও ৪০ টাকার কেমিক্যাল প্রয়োজন হয়। এই কারণে চামড়া যদি আরও কম দামেও কেনা হয় বা ফ্রি পাই তা-ও লাভ নিয়ে সন্দেহ আছে।’ 

প্রাথমিকভাবে লবণের পাশাপাশি আরও কয়েক ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার হয় চামড়ার প্রক্রিয়াকরণে। এই পণ্যগুলোর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন গোল্ডেন লেদার ইন্ডাস্ট্রিজের সুপারভাইজার নূর হোসেন। তিনি বলেন, ‘এত দাম দিয়ে কেমিক্যাল কিনে কীভাবে আমরা কাজ করব? দিন দিন যদি দাম বাড়ায় কেমিক্যাল কোম্পানিগুলো তাহলে আমরা কী করতে পারি! আমরা চাই সরকার একটু এদিকেও দৃষ্টি দিক।’ 

এ নিয়ে কথা হয় চামড়া প্রক্রিয়াকরণে প্রয়োজনীয় রাসায়নিকের বিক্রেতাদের সঙ্গে। তাঁরা বলছেন, বহির্বিশ্বে কেমিক্যালের দাম বেড়েছে, তাই দেশে কমানোর সুযোগ নেই। সাভার চামড়া শিল্প নগরীর কেমিক্যাল ব্যবসায়ী খায়রুল বাশার সোহেল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে কেমিক্যালের দাম বেড়েছে। ডলারের দামও বেশি। আমাদের হাতে তো কিছু নেই। গত এক বছরে কেমিক্যালের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। সরকারেরও আসলে তেমন কিছু করার নেই।’ 

সাভার শিল্পনগরীতে চামড়া প্রক্রিয়া শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকাব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একেবারেই যে সিন্ডিকেট হয় না, তা বলব না। তবে দামের ক্ষেত্রে তা খুব একটা প্রভাব ফেলে না।’ 

কয়েক বছর ধরে চামড়ার ভালো দাম পাচ্ছেন না সারা দেশের বিক্রেতারা। এ প্রসঙ্গে রপ্তানিবাজার ছোট হয়ে আসার কারণও বলছেন ব্যবসায়ীরা। এত বছরেও পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠতে পারেনি চামড়াশিল্প। কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে না পারায় মেলেনি ইউরোপের লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ। ফলে ইউরোপের বাজারে প্রক্রিয়াজাত চামড়া রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। 

ট্যানারির মালিকেরা বলছেন, ২০১৭ সালের দিকে একটি প্রক্রিয়াজাত চামড়া প্রতি বর্গফুট রপ্তানি করা হতো দু-তিন ডলার। সেই চামড়া এখন চীনাদের কাছে প্রতি বর্গফুট ৭০-৮০ সেন্টে বিক্রি করতে হচ্ছে। 

এর মধ্যে সরকারও চামড়ার দাম কমিয়ে নির্ধারণ করেছে। ২০১৩ সালে সরকার-নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া ৮৫-৯০ টাকা, আর ঢাকার বাইরে ৭৫-৮০ টাকা দরে কেনা হয়। তখন সারা দেশে প্রতি বর্গফুট ছাগলের চামড়ার দাম ছিল ৫০-৫৫ টাকা। কিন্তু ৯ বছরের ব্যবধানে কাঁচা চামড়ার দাম কমিয়ে অর্ধেকে নিয়ে এসেছে সরকার। গত বছর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া ঢাকায় ৪৭-৫২ টাকা ও ঢাকার বাইরে ছিল ৪০-৪৪ টাকা। আর ছাগলের চামড়া সারা দেশে প্রতি বর্গফুট ১৮-২০ টাকা ঠিক করে দেওয়া হয়। এ বছর ৫ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সরকার-নির্ধারিত এই দামেও চামড়া কেনার মতো ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। 

সাভার শিল্পনগরীতে চামড়া প্রক্রিয়া শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকাএ প্রসঙ্গে ঢাকার হাজারীবাগের চামড়া ক্রেতা সুলতান লেদার গ্যালারির স্বত্বাধিকারী মোফাজ্জল ইবনে মাসুদ বলেন, ‘স্পষ্ট দুটি কারণ আছে চামড়ার দাম কমার জন্য। একটি হচ্ছে আমাদের রপ্তানি করার জায়গা হচ্ছে চায়না। আগে ইউরোপে যেত, তখন দাম বেশি পাওয়া যেত। এখন শুধু চায়না। যেই দামে চামড়া বিক্রি করা হয় তার চেয়ে বেশি খরচ হয়ে যায় চামড়া প্রসেস করতে। চামড়া যদি ইউরোপে পাঠানোর সুযোগ হয়, তাহলে আবার চামড়ার দাম বাড়বে। এ ছাড়া কেমিক্যাল ও লবণের বাড়তি দাম তো আছেই। এই দাম না কমালে ফ্রি চামড়া নিলেও লাভ নিয়ে সন্দেহ আছে। তাই সবাই চেষ্টা করে যত সম্ভব কম দামে চামড়া সংগ্রহ করতে।’ 

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের এ বছরের টার্গেট ১ কোটি পিস। ঈদের দিন আমরা প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার পিস চামড়া সংগ্রহ করেছি। এখন ট্যানারিতে সাধারণ শ্রমিকদের পাশাপাশি মৌসুমি শ্রমিকেরা কাজ করছেন। আশা করছি, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে এবার। গতবার আমরা প্রায় ৯০ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহ করেছিলাম।’ 

চামড়া শিল্প পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠতে না পারা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দিন দিন ট্যানারি নগরীর পরিবেশ ভালো হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বেশ কিছু কারখানাকে পরিবেশ ছাড়পত্র দিয়েছে। এ ছাড়া অনেক কারখানার পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়ন হচ্ছিল না, এখন সেগুলো নবায়ন হচ্ছে। আমাদের মূল লক্ষ্য এলডব্লিউজি সনদ। আশা করছি, দু-এক বছরের মধ্যে ২০টি ট্যানারি এই সনদ পাবে। তখন বেশি দাম পাওয়া পেলে বেশি দামে চামড়া কিনতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ০৩
সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

বিশ্ববাজারে সোনার বড় দরপতনের পরদিন দেশের বাজারেও বেশ বড় অঙ্কে সোনার দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। টানা আট দফা বাড়ানোর পর সোনার দাম ভরিতে একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমানো হয়েছে।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। আজ বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০১, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭০ হাজার ৯৯৪ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪২ হাজার ২১৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

সর্বশেষ গত রোববার (১৯ অক্টোবর) দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়িয়েছিল বাজুস। সেদিন ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ৭ হাজার ৫০৩, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫৩ ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা কার্যকর হয়েছিল পরদিন ২০ অক্টোবর থেকে।

চলতি বছর মোট ৬৭ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো সোনার দাম। দাম বাড়ানো হয়েছে ৪৮ বার আর কমেছে মাত্র ১৯ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। তখন ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিশ্ববাজারে সোনার দামে পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন হয়। মার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেওয়া শুরু করায় এই দরপতন দেখা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের গতকাল দুপুরে স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্সে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমে এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১১৫ দশমিক ২৬ ডলারে দাঁড়ায়, যা ২০২০ সালের আগস্টের পর সবচেয়ে বড় দৈনিক পতন।

অথচ আগের দিন সোমবার সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারে উঠেছিল। এ বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে, যা মূলত ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সুদের হার কমার সম্ভাবনা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রমাগত সোনা কেনার কারণে সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশের সোনার বাজারের সঙ্গে সরাসরি বিশ্ববাজারের সম্পৃক্ততা নেই। তবে বাজুসের দাম সমন্বয়ে বিশ্ববাজারের গতি অনুসরণের প্রবণতা দেখা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিকেএমইএ প্রাঙ্গণে আইএফআইসি ব্যাংকের নতুন এটিএম বুথ উদ্বোধন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গ্রাহকদের আর্থিক লেনদেন আরও সহজ ও দ্রুততর করতে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রাঙ্গণে এটিএম বুথ স্থাপন করেছে আইএফআইসি ব্যাংক।

আজ বুধবার বুথটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. মেহমুদ হোসেন এবং বিকেএমইএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইএফআইসি ব্যাংকের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফা; ডিএমডি, সিআইও ও সিআরও মো. মনিতুর রহমান; হেড অব অপারেশনস হেলাল আহমেদ এবং নারায়ণগঞ্জ ব্র্যাঞ্চের চিফ ম্যানেজার আব্দুর রহমান।

অন্যদিকে বিকেএমইএর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট ফজলে শামীম এহসান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অমল পোদ্দার, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফাইন্যান্স) মো. মোরশেদ সারোয়ার ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রাশেদ। এ ছাড়া আইএফআইসি ব্যাংক ও বিকেএমইএ প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মকর্তারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বুথটির মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংকের গ্রাহকেরা সহজে বিভিন্ন সেবা নিতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে টাকা উত্তোলন, আইএফআইসি বা অন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ও কার্ডে ফান্ড ট্রান্সফার, ব্যালন্স চেক ও মিনি স্টেটমেন্ট, কার্ড অ্যাকটিভ, পিন পরিবর্তনসহ অন্যান্য এটিএম-সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা।

আইএফআইসি ব্যাংক জানিয়েছে, তারা এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে গ্রাহকদের সুবিধা দেওয়া ও দেশের আর্থিক খাতে ডিজিটাল রূপান্তরের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩৫৯৫ কোটির চাল, সার, বই কিনবে সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি

নতুন করে আতপ ও সেদ্ধ চাল, সার, পাঠ্যবই, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও ই-পাসপোর্টের মালামাল কেনার পাশাপাশি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার বেশি। আজ বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

চাল ও সার আমদানি

আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র ও জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে দুবাই ও মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন চাল আমদানি করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৪৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫০ হাজার টন আতপ চাল এবং ৫০ হাজার টন বাসমতী ছাড়া অন্য সেদ্ধ চাল।

এ ছাড়া রাশিয়া, মরক্কো ও সৌদি আরব থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার টন সার কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইউরিয়া, ডিএপি ও এমওপি সার ক্রয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

মাধ্যমিকে সাড়ে ১২ কোটি বই

২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), দাখিল ও কারিগরির ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ১২ কোটি ৫৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৭১টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৪৪৪ কোটি ৮০ লাখ ৮৭ হাজার ৬৬১ টাকা।

বাফার গুদাম নির্মাণ

বরগুনায় ৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় ১০ হাজার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন বাফার গুদাম নির্মাণকাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যৌথভাবে এমবিএল ও আরএফএল কোম্পানিকে।

দরপত্র ছাড়া জ্বালানি তেল ও ই-পাসপোর্ট ক্রয়

অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির আরেক বৈঠকে ২০২৬ সালে ২৮ লাখ ৫ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল সরাসরি ক্রয় (দরপত্র ছাড়া) পদ্ধতিতে আমদানি করার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জিটুজি ভিত্তিতে আট দেশের ১০ প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের তেল আমদানি হবে।

একই বৈঠকে এক কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল ও ৫৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরাসরি জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ কোম্পানি থেকে ক্রয় করারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৯২ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

মিরসরাইয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রবেশপথ নির্মাণে ২০৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) বাস্তবায়িত ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের মিরসরাই-২-এ ও ২বি অর্থনৈতিক অঞ্চল, প্যাকেজ-৩-এর আওতায় প্রবেশপথ নির্মাণে এই অর্থ ব্যয় হবে। উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নেওয়া সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কারিগরি ও আর্থিকভাবে সর্বনিম্ন দরদাতা মনিকো লিমিটেডকে কাজটি দেওয়ার সুপারিশ করে টেন্ডার ইভালুয়েশন কমিটি (টিইসি)। পরে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়।

বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ

খুলনা বিভাগে পাঁচটি নতুন জিআইএস টাইপ উপকেন্দ্র নির্মাণে ১৪০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার ব্যয় অনুমোদন পেয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচিত সরকার এলে কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেবে আইএমএফ: গভর্নর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ডিসেম্বরে নির্ধারিত ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় অংশ নিতে সেখানে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি গতকাল বুধবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আইএমএফ চায় নির্বাচনের পর গঠিত নতুন সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে এখনো সম্মতি বা আপত্তি কোনোটি জানায়নি। আমাদের তেমন আর্থিক চাপ নেই, তাই এটি কোনো সমস্যা নয়।’

গভর্নর আরও বলেন, ‘অর্থ ছাড়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পর্যালোচনা (রিভিউ) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। আমরা চাই নীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। সে কারণেই আলোচনা চলছে। নির্বাচন সামনে থাকায় এখন পূর্ণাঙ্গ রিভিউ করা যৌক্তিক নয়। কারণ, রিভিউয়ের সঙ্গে আইএমএফের আর্টিকেল-৪ মিশনও সম্পৃক্ত থাকে। সংস্থাটি চায় নতুন সরকার গঠনের পর তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত রিভিউ সম্পন্ন করতে।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, আইএমএফের আর্টিকেল-৪ মিশন অক্টোবরেই আসবে। তারা আংশিকভাবে ঋণ প্যাকেজের অগ্রগতি মূল্যায়ন করবে, তবে চূড়ান্ত রিভিউ হবে না। ফেব্রুয়ারিতে বোর্ডের সভায় সেটি উপস্থাপন করা হবে, তখন জাতীয় নির্বাচনও শেষ হয়ে যাবে।

আইএমএফের ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতির মধ্যে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৬০ কোটি ডলার পেয়েছে। ডিসেম্বর মাসে পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের কথা রয়েছে, আর ষষ্ঠ কিস্তি নির্ধারিত আছে আগামী বছরের জুনে। সাধারণত প্রতিটি কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফ দুই সপ্তাহব্যাপী মূল্যায়ন মিশন পাঠায়, যাতে সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি যাচাই করা হয়। সে অনুযায়ী, পঞ্চম কিস্তির মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু করতে ২৯ অক্টোবর ঢাকায় আসছে আইএমএফ মিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত