Ajker Patrika

১৫ বছরে রেলের ২১ হাজার কোটি টাকা লোকসান

জমির উদ্দিন
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬: ৩৯
১৫ বছরে রেলের ২১ হাজার কোটি টাকা লোকসান

বছরের পর বছর লোকসান গুনছে রেল। অথচ দুই যুগের কিছু বেশি সময় আগেও এই খাত ছিল লাভজনক। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গত ১৫ বছরে রেলে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৮৮ হাজার কোটি এবং লোকসান হয়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ রেলকে প্রতিবছর গড়ে লোকসান গুনতে হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে বর্তমানে রেলের আয়ের চেয়ে ব্যয় আড়াই গুণের বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেলওয়ের লোকসানের অন্যতম কারণ দুর্নীতি ও অপরিকল্পিত ব্যয়। এ ছাড়া বিনা টিকিটে ভ্রমণ এবং প্রায় সব ট্রেনে অর্ধেকের কম কোচ (বগি) নিয়ে চলাচলের কারণে লোকসানের পরিমাণ বেড়েছে। অর্থাৎ শতভাগ কোচ নিয়ে যদি ট্রেন চলত এবং জনপ্রিয় রুটে যদি ট্রেনের সংখ্যা বাড়ত, তাহলে অপারেটিং রেশিও কমে যেত। পাশাপাশি অপারেশন বাড়াতে হবে পণ্য পরিবহনে। এতে রেলের আয় বাড়বে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক—সুজনের (চট্টগ্রাম) সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ভারতে বাংলাদেশের চেয়ে দুর্নীতি অনেকাংশে কম। তারা অতিরিক্ত ব্যয় খুব কমই করে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রকল্প মানেই লুটপাট আর অতিরিক্ত ব্যয়। এসব যত দিন না কমবে, তত দিন রেলে লাভ হবে না। 

অপারেটিং রেশিও হলো একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বাস্থ্যের মূল্যায়নের একটি পরিমাপ। অপারেটিং রেশিও যত কম হবে, আয় তত বাড়বে। এটি মূলত একটি নির্দিষ্ট সময়ে মোট ব্যয়কে মোট আয় দিয়ে ভাগ করে নিরূপণ করা হয়। কোনো সংস্থা বা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কতটা দক্ষ, তা সহজে যাচাই করা যায় অপারেটিং রেশিওর মাধ্যমে। এই রেশিও যত বেশি হয়, প্রতিষ্ঠানের পরিচালন দক্ষতা তত দুর্বল হিসেবে গণ্য করা হয়।

রেলের লোকসানের চিত্র
ভারতীয় রেলে এক দশক ধরে অপারেটিং রেশিও ৯৫-৯৮ শতাংশের ঘরে। ফলে সে দেশে রেলওয়ে লাভজনক অবস্থায় আছে। বর্তমানে ১ টাকা আয় করতে খরচ করতে হচ্ছে ৯৮ পয়সা। অন্যদিকে ২৪ বছর ধরে বাংলাদেশে রেলওয়ের অপারেটিং রেশিও বেড়েই চলছে। ফলে বাড়ছে লোকসান। বর্তমানে ১ টাকা আয় করতে খরচ করতে হচ্ছে ২ টাকা ৫৮ পয়সা। 

রেলওয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে রেলের সবচেয়ে ভালো অপারেটিং রেশিও ছিল ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে, ৯৫ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ওই অর্থবছরে প্রতি ১ টাকা আয় করতে রেলের ব্যয় হয়েছিল ৯৫ দশমিক ৯ পয়সা। এরপর থেকে রেলের অপারেটিং রেশিও কেবল বেড়েই চলেছে।রেলওয়ের গত ১৫ বছরে কী পরিমাণ ব্যয় হয়েছে, তার একটি তালিকা পাওয়া গেছে। সেটি বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই সময়ে রেলের অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকা। ২০০৯ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৮৯টি প্রকল্পে খরচ হয়েছে ২১ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। চলমান আছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকার ৩২টি প্রকল্প। এসব প্রকল্পে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৬৬ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। সমাপ্ত ও চলমান প্রকল্প মিলিয়ে গত ১৫ বছরে রেলওয়ের উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে মোট ৮৭ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা।

রেলওয়ের তথ্য বলছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছর সংস্থাটির অপারেটিং রেশিও ছিল ১৫৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। অর্থাৎ ওই অর্থবছরে ১ টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয়েছে ১ টাকা ৫৯ পয়সা। অপারেটিং রেশিও নিয়ে সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরের তথ্য প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এতে দেখা যায়, ওই অর্থবছরে অপারেটিং রেশিও বেড়ে ২৫৮ শতাংশ হয়েছে। অর্থাৎ এ সময়ে ১ টাকা আয় করতে ব্যয় হয়েছে ২ টাকা ৫৮ পয়সা। ওই সময় সব মিলিয়ে রেলের লোকসান হয়েছে ১ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। 

যে কারণে লোকসানে রেল
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেলকে যদি দুর্নীতিমুক্ত করা যায়, অপরিকল্পিত ব্যয় বন্ধ করা যায়, তাহলে লোকসান অনেকাংশে কমে আসবে। এ ছাড়া বিনা টিকিটে ভ্রমণ শূন্যের কোঠায় নামাতে হবে। শতভাগ কোচ নিয়ে ট্রেন পরিচালনা করতে হবে, জনপ্রিয় রুটে ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি পণ্য পরিবহনে মনোযোগী হতে হবে। তাহলে রেলকে আবার লাভজনক করা সম্ভব হবে।

 

ফাইল ছবি

সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, পণ্য পরিবহন করে এক ট্রেনে যে পরিমাণ আয় হয়, দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালিয়েও তা হয় না। ১৯৯৯-৯৮ অর্থবছরে দেশের মোট আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ১২ শতাংশ রেলের মাধ্যমে পরিবহন হতো। এখন পণ্য পরিবহন হয় মাত্র ৩ শতাংশ। 

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন সরকার এসেছে। সবাই এখন কাজ করছে। এখন আমাদের ব্যয় সংকোচনের দিকে নজর দিতে হবে। দেখেন, আয়ের সীমা কিন্তু সীমিত। যেমন একটি ট্রেন থেকে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১২৫ টাকা আয় করতে পারবেন। পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। আমাদের এমন প্রকল্প হাতে নিতে হবে, যেন না করলেই নয়। তবেই রেল লোকসান থেকে বের হবে।’

কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাত্রীবাহী আন্তনগর ট্রেন যেতে সময় লাগে মাত্র ৫-৬ ঘণ্টা। কিন্তু একই দূরত্বে পণ্য পরিবহনে লেগে যায় দুদিন। পণ্য পরিবহনের সময় কমানো গেলে এই উৎস থেকে আয় বাড়ানো যেত। কয়েক বছর ধরে আয় বাড়াতে ম্যাংগো, ক্যাটল ও পার্সেল ট্রেন চালু করা হয়েছিল। এ তিন উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। পার্সেল ট্রেনে নামমাত্র পণ্য পরিবহন হচ্ছে। অথচ ভারতে রেলওয়ে বছরে শুধু পণ্য পরিবহনে ৫৫ থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করছে। লাভের বড় অংশ তারা ভর্তুকি দিচ্ছে যাত্রী পরিবহনে।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওমর ইমাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, রেলে লোকসানের কারণ অপরিকল্পিত প্রকল্প। মানে, যাচাই-বাছাই না করেই প্রকল্প হাতে নিচ্ছে রেলওয়ে। নতুন রেলপথ নির্মাণে যে ব্যয়, তা বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। এর কারণ খোঁজার সময় এসেছে। ক্রয় থেকে শুরু করে পরিচালনা—সব বিভাগের সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি। তবেই লাভের মুখ দেখবে রেল। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রয়টার্সের প্রতিবেদন /ইরান ও রাশিয়ার ‘নিষিদ্ধ’ তেল বাণিজ্যের নেপথ্যে নিউজিল্যান্ডের বিমা সংস্থা, মালিক ব্রিটিশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তেল বাণিজ্য করতে ইরান ও রাশিয়াকে সহায়তা করছে পশ্চিমের কোম্পানিই। ছবি: এএফপি
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তেল বাণিজ্য করতে ইরান ও রাশিয়াকে সহায়তা করছে পশ্চিমের কোম্পানিই। ছবি: এএফপি

পশ্চিমা বিশ্বের কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরান ও রাশিয়ার তেল রপ্তানি থেমে নেই। এমনকি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাশিয়ার তেল বাণিজ্যে আয় বৃদ্ধির খবরও এসেছে। আর এই কাজে সহায়তা করছে যেসব প্রতিষ্ঠান, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম নিউজিল্যান্ড-ভিত্তিক ছোট বিমা প্রতিষ্ঠান ম্যারিটাইম মিউচুয়াল। এটির মালিকানা আবার এক ব্রিটিশ পরিবারের। কোম্পানিটি এখন আন্তর্জাতিক তদন্তের মুখে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ বা ছায়া বহরের ট্যাংকারগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বিমা পরিষেবা দিয়ে আসছে। এই জাহাজগুলো অবস্থান সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেয়, জাল নথিপত্র এবং নাম ব্যবহার করে গোপনে তেল বাণিজ্য চালিয়ে যায়।

ম্যারিটাইম মিউচুয়ালের মূল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ম্যারিটাইম মিউচুয়াল ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন, অকল্যান্ডে একটি কার্যালয় থেকে এটি পরিচালিত হয়। সংস্থাটি গত দুই দশকে ফেরি থেকে শুরু করে পণ্যবাহী জাহাজ পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার জাহাজকে বিমা সুবিধা দিয়েছে। তবে রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এটি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত প্রায় এক-ষষ্ঠাংশ ছায়া বহরের ট্যাংকারকে এই সুবিধা দিয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে ইরান ও রাশিয়ার তেল পরিবহনকারী জাহাজ।

দৃষ্টান্ত হিসেবে রয়টার্স উল্লেখ করেছে, গত বড়দিনের সময়, ইয়ুগ (Yug) নামে একটি ট্যাংকার চীনের কিংদাও বন্দর থেকে ২ কোটি ব্যারেল ইরানি তেল খালাস করে যাত্রা শুরু করে। একই সময়ে, রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল বহনকারী একটি জাহাজ বরফের মধ্য দিয়ে ভারতে যাচ্ছিল। তিনটি ভিন্ন ট্যাংকারের মালিক ভিন্ন হলেও, এগুলোর বিমাকারী ছিল নিউজিল্যান্ডের সংস্থাটি।

এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ)-এর হিসাব অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর থেকে ম্যারিটাইম মিউচুয়ালের কভারেজপ্রাপ্ত জাহাজগুলো কমপক্ষে ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলারের ইরানি তেল এবং ১ হাজার ৬৭০ কোটি ডলারের রুশ জ্বালানি পণ্য পরিবহন করেছে। সে হিসাবে মোট বাণিজ্য হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারেরও বেশি।

ম্যারিটাইম মিউচুয়ালের মূল পরিষেবা হলো সুরক্ষা ও ক্ষতিপূরণ (পিঅ্যান্ডআই) বিমা। এই বিমা জাহাজের কোনো দুর্ঘটনা, পরিবেশগত ক্ষতি বা তৃতীয় পক্ষের কারণে ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার কভার করে। সাবেক মার্কিন ট্রেজারি নিষেধাজ্ঞাবিদ ডেভিড ট্যানেনবাউম-এর মতে, এই বিমা ছাড়া ছায়া বহরের জাহাজগুলো ‘পানিতে নিথর’ হয়ে থাকত, কারণ রাশিয়া বা ইরানের বন্দরেও বিমাবিহীন জাহাজ প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।

এই সংস্থাটি পরিচালনা করে ৭৫ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক পল র‍্যাঙ্কিন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কোম্পানির ওয়েবসাইটে তাঁর দুই কন্যা (ক্লেয়ার ও সারাহ) এবং এক জামাতা (স্টিভেন জয়েস) সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই, ২০১৬ সাল থেকে ম্যারিটাইম মিউচুয়াল ইরানি ব্যবসা আকৃষ্ট করার চেষ্টা শুরু করে। তারা ‘নিউজিল্যান্ড পিঅ্যান্ডআই ক্লাব’ নামে একটি সমিতি খোলে। ইরানে নিষেধাজ্ঞার কারণে বিপাকে পড়া গ্রাহকদের নিয়ে এই সমিতি গঠন করা হয়। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে তারা ইরানি শিপিং ফার্ম ‘শিরাজ মেরিন’কে ইরানে এই সমিতির স্বার্থ প্রচার এবং সদস্যদের পরিচিত করার কর্তৃত্ব দেয়।

ইরান ও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর এই কোম্পানির রাজস্বে বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে তাদের বিমা বিক্রি গড়ে বছরে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়লেও, ২০১৯ সাল থেকে (ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর) তা গড়ে বছরে ৪১ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়ে গত বছর ১০ কোটি ৮৫ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। ২০২৩ সালে রুশ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার প্রথম বছরে এই প্রবৃদ্ধি ৬০ শতাংশে পৌঁছায়।

নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সহায়তা এবং অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে ব্যর্থতার অভিযোগে নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে বিমা কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। রুশ নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগের অংশ হিসেবে, গত ১৬ অক্টোবর নিউজিল্যান্ড পুলিশ ম্যারিটাইম মিউচুয়ালের অকল্যান্ড ও ক্রাইস্টচার্চের কার্যালয় এবং অকল্যান্ডের একটি বাসভবনে তল্লাশি চালিয়ে নথি ও রেকর্ড জব্দ করে। পুলিশের আর্থিক অপরাধ বিভাগ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, যদিও এখনো কোনো ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

এই তদন্তে নিউজিল্যান্ড সরকার অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে।

এর মধ্যে ম্যারিটাইম মিউচুয়াল তাদের বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণের ঝুঁকি কমানোর জন্য পুনর্বিমা পদ্ধতির আশ্রয় নিয়েছে। যেহেতু পুনর্বিমা সংস্থাগুলোও নিষেধাজ্ঞার নিয়ম মানতে বাধ্য, তাই ম্যারিটাইম মিউচুয়াল যদি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে থাকে, তবে তাদের সহযোগী বৈশ্বিক সংস্থাগুলোও ঝুঁকিতে পড়বে।

ম্যারিটাইম মিউচুয়ালের পুনর্বিমা প্রদানকারী প্রধান সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে লন্ডনভিত্তিক বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিমা বাজার লয়েডস অব লন্ডনের সদস্যরা। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: জার্মানির মিউনিখ রি গ্রুপ (বিশ্বের বৃহত্তম পুনর্বিমা সংস্থা) ; জার্মানির আরেক প্রতিষ্ঠান হ্যানোভার রি; ব্রিটেনের এমএস অ্যামলিন এবং অ্যাট্রিয়াম।

এ ছাড়া, ব্রিটিশ-আমেরিকান বিমা কোম্পানি এওন (Aon) এবং আমেরিকার লকটনও সংস্থাটির ব্রোকার হিসেবে কাজ করেছে।

রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ম্যারিটাইম মিউচুয়াল আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারী কোনো কার্যকলাপে জড়িত থাকার বিষয়টি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, তাদের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনে ‘শূন্য-সহনশীলতা নীতি’ রয়েছে।

তবে, ২১ অক্টোবর, সংস্থাটি ঘোষণা করে, তারা শিপিং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দ্বারা চিহ্নিত কোনো ‘ছায়া বহরের’ জাহাজ বা রুশ তেল বহনকারী জাহাজের জন্য কভারেজ দেবে না।

ম্যারিটাইম মিউচুয়াল এর আগে জানিয়েছিল, তারা ২০১২ সাল থেকে ৯২টি জাহাজের কভারেজ বাতিল করেছে, কারণ সেগুলোকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইরানে বিপুল ঋণ রেখে বিলুপ্ত হলো সরকারি আশীর্বাদপুষ্ট বেসরকারি ব্যাংক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
টাকা ছাপিয়েও আয়েন্দে ব্যাংক রক্ষা করতে পারল না ইরান সরকার। ছবি: এএফপি
টাকা ছাপিয়েও আয়েন্দে ব্যাংক রক্ষা করতে পারল না ইরান সরকার। ছবি: এএফপি

মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট এবং পশ্চিমা বিশ্বের ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে, ইরানের বৃহৎ বেসরকারি ঋণদাতা ব্যাংকগুলোর অন্যতম ‘আয়েন্দে ব্যাংক’ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক ‘ব্যাংক মেল্লি’-এর সঙ্গে এটিকে একীভূত করে সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপ ইরানের ব্যাংক খাতের গভীর অস্থিরতাকে প্রকট করেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এই পরিস্থিতির চূড়ান্ত মূল্য দিতে হবে সাধারণ নাগরিকদের।

গত বৃহস্পতিবার ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষণা করে, দেশটির অন্যতম ধনী পরিবারের মালিকানাধীন বেসরকারি আয়েন্দে ব্যাংক বিলুপ্ত করা হবে এবং এটি রাষ্ট্র-পরিচালিত ব্যাংক মেল্লির সঙ্গে একীভূত হবে। রোববার থেকে আয়েন্দে-এর শাখাগুলো ব্যাংক মেল্লির শাখা হিসেবে কাজ করবে। গ্রাহকদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, তাঁদের অ্যাকাউন্ট ও আমানত নিরাপদ রয়েছে এবং সমস্ত চুক্তি আগের শর্তেই বহাল থাকবে।

তবে দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহজনক পরিচালনা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বারবার হস্তক্ষেপের কারণে আয়েন্দে ব্যাংকের ওপর যে বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝা চেপেছে, তা ইরানের সামষ্টিক অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।

বিশেষজ্ঞরা আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, ২০১০-এর দশকে দুর্নীতি এবং দুর্বল তদারকির কারণে ইরানের ব্যাংকিং খাতে যে সংকট তৈরি হয়, তার মধ্যেই আয়েন্দে ব্যাংকের উত্থান। সে সময় জাতিসংঘে পরমাণু কর্মসূচির নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান টালমাটাল ছিল। এই সুযোগে সামরিক বা ধর্মীয় ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত শত শত লাইসেন্সবিহীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান সারা দেশে গজিয়ে ওঠে। তারা আমানতকারীদের আকৃষ্ট করতে অস্বাভাবিক উচ্চ হারে সুদের লোভ দেখাত, কিন্তু পরবর্তীতে অনেক গ্রাহক আমানতের টাকা তুলতেই ব্যর্থ হন।

২০১৭ সালের মধ্যে সরকার এই লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো অভ্যন্তরীণ ঋণ বিতরণ অর্থাৎ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরই ঋণ নেওয়া এবং স্থাবর সম্পত্তিতে অর্থ বিনিয়োগের কারণে তহবিল প্রায় শূন্য হয়ে পড়েছিল। এই বিপুল পরিমাণ ঋণ মেটানোর জন্য সরকারকে নতুন করে টাকা ছাপাতে হয়েছে, যার ফলে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে এবং সাধারণ ইরানিদের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে।

আয়েন্দে ব্যাংক ২০১৩ সালে ‘তাত ব্যাংক’ এবং দুটি রাষ্ট্র-সংযুক্ত আর্থিক সত্তা—সালেহিন ক্রেডিট ইনস্টিটিউশন ও আতি ক্রেডিট ইনস্টিটিউশন—একীভূত হওয়ার মাধ্যমে গঠিত হয়। এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবসায়ী আলি আনসারি, যার পরিবার ইরানের অন্যতম ধনী পরিবার হিসেবে পরিচিত।

আয়েন্দে ব্যাংক বহু বছর ধরে রাষ্ট্রের নজরদারিতে ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরবর্তীতে শেয়ারহোল্ডারদের ভোটাধিকার বাতিল করে। সরকারি হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও, ব্যাংকটি টিকে থাকার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে থাকে।

বিলুপ্তির ঘোষণায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, আয়েন্দে ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ৫ কোয়াড্রিলিয়ন রিয়াল (বর্তমান খোলা বাজারে বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৪৬৭ কোটি ডলার), যেখানে জনগণের আমানত ছিল ২ দশমিক ৫ কোয়াড্রিলিয়ন রিয়াল (প্রায় ২৩৪ কোটি ডলার)।

আইন অনুযায়ী, আয়েন্দে ব্যাংক তার প্রমাণিত মূলধনের ওপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ ২০০ ট্রিলিয়ন রিয়াল (১৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার) ঋণ দিতে পারত। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংকটি বছরের পর বছর সেই পরিমাণের প্রায় ১০ গুণ বেশি অর্থ ব্যক্তি ও বিভিন্ন সত্তাকে (নামে-বেনামে কোম্পানি) ঋণ দিয়েছে। এর মধ্যে ১ দশমিক ৩ কোয়াড্রিলিয়ন রিয়াল (১২১ কোটি ডলার) সরাসরি আয়েন্দে ব্যাংক এবং এর অভ্যন্তরীণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত অল্প কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। তবে এই সুবিধাভোগীদের পরিচয় প্রকাশ করতে কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে।

অর্থনীতিবিদ বিজান খাজেহপুর উল্লেখ করেছেন, বেশির ভাগ ঋণই অনাদায়ি, সেগুলো উদ্ধারের সম্ভাবনাও কম। তাঁর মতে, ‘ক্ষমতার নেটওয়ার্কের মধ্যে কোনো নিয়ন নীতির তোয়াক্কা না করে লেনদেন, এবং জামানত সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করেই গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার ফলেই এই সংকট তৈরি হয়েছে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের দুর্বল ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ অতিরিক্ত ঋণ (Overdrafts) নিয়েছে তার ৪২ শতাংশই পেয়েছে আয়েন্দে ব্যাংক। পুরো ব্যাংক খাতের মূলধন অসামঞ্জস্যের ৪১ শতাংশের কারণও এই ব্যাংক। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, ব্যাংকের মূলধন পর্যাপ্ততার অনুপাত (সিএআর) ন্যূনতম ৮ শতাংশ হওয়া বাধ্যতামূলক হলেও আয়েন্দে-এর অনুপাত ছিল ঋণাত্মক ৬০০ শতাংশ! এর বিলুপ্তি ইরানের ব্যাংক খাতের গড় সিএআর ১.৩৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশে উন্নীত করবে।

আয়েন্দে ব্যাংকের বিলুপ্তির ঘোষণা আসে বিচার বিভাগের প্রধান, কট্টরপন্থী ধর্মগুরু গোলাম হোসেন মোহসেনি এজেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর মোহাম্মদ রেজা ফারজিনকে সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়ার একদিন পর। এই বিলুপ্তি নিয়ে কট্টরপন্থী রাজনীতিবিদরা, যারা সংস্কারপন্থীদের অর্থনৈতিক উদারীকরণের নীতির বিরোধী, তাঁরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ বাগের গালিবফ এই বিলুপ্তিকে ‘দেশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও পরিচালনা ব্যবস্থার জন্য একটি বিরাট সাফল্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

আয়েন্দে-এর পতনের ফলে এর সম্পত্তি—যার মধ্যে পশ্চিম তেহরানে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম শপিং মল ইরান মলও রয়েছে—সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে এই বিপুল সম্পত্তি বিক্রি করা সময়সাপেক্ষ।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বিপুল লোকসানের কারণে রাষ্ট্র এবং ব্যাংক মেল্লিকে মোট ঋণের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের হিসাব মেটাতে হবে। এই ঘাটতি পূরণের একটি অংশের সংস্থান করতে টাকা ছাপাতে হবে। এই অতিরিক্ত টাকা ছাপানোই মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম প্রধান কারণ, যা বর্তমানে ৪০ শতাংশের বেশি এবং কয়েক দশক ধরে বিশ্বের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির দেশগুলোর মধ্যে ইরান অন্যতম।

সহজ কথায়, আগামী মাস ও বছরগুলোতে ক্রয়ক্ষমতা হ্রাসের কারণে কোটি কোটি ইরানিকে এর মূল্য পরিশোধ করতে হবে।

এদিকে, আয়েন্দে-এর প্রতিষ্ঠাতা আনসারি বিবৃতিতে দাবি করেছেন, ব্যাংকের দেউলিয়াত্ব ‘ব্যাংকটি তাঁদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ও নীতির ফল’। তাঁর দাবি, তিনি জনকল্যাণের জন্য তাঁর সব শক্তি ও সক্ষমতা উৎসর্গ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোম্পানি লোকসানে, তবু শেয়ারের লেনদেন

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
কোম্পানি লোকসানে, তবু শেয়ারের লেনদেন

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৪৬টি কোম্পানি বহু বছর ধরে লোকসানে চলছে। এগুলোর মধ্যে অন্তত ১৩টি কোম্পানি টানা এক দশক কিংবা এর বেশি সময় ধরে মুনাফা করতে পারেনি। এ ছাড়া আরও ৩৩টি প্রতিষ্ঠান অন্তত পাঁচ বছর ধরে টানা লোকসানে রয়েছে। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার এখনো বাজারে কেনাবেচা হচ্ছে—কখনো কখনো দরবৃদ্ধির তালিকার শীর্ষেও উঠে আসে।

ডিএসইর তথ্যানুসারে, এই লোকসানি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭টির পুঞ্জীভূত লোকসান প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। বাকি কোম্পানিগুলোর হিসাব এখনো অজানা। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকে বছরের পর বছর শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেয়নি, সময়মতো বার্ষিক সাধারণ সভাও (এজিএম) করে না। ফলে তাদের স্থান হয়েছে ‘জাঙ্ক’ বা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে।

নিয়ম অনুযায়ী, জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কেনাবেচায় বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে সেই সতর্কতা খুব একটা দেখা যায় না।

বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের দেনা সম্পদের চেয়ে বেশি, তাদের বাজারে রাখা বিনিয়োগকারীদের জন্য বিপজ্জনক। এমন কোম্পানিগুলোকে হয় তালিকা থেকে বাদ দেওয়া (ডিলিস্টিং) উচিত, নয়তো লিকুইডেশন প্রক্রিয়ায় নিয়ে গিয়ে বিনিয়োগকারীদের অন্তত কিছু অর্থ ফেরানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

ডিলিস্টিং মানে কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ারকে সাধারণ বাজার থেকে সরিয়ে দেওয়া। তখন শেয়ারহোল্ডাররা কাগজে শেয়ারধারী থাকলেও তা বেচাকেনা করা যায় কেবল ‘ওভার দ্য কাউন্টার’ (ওটিসি) বাজারে; যেখানে লেনদেন সীমিত হলেও ঝুঁকি অনেক বেশি।

ডিএসইর নিয়মে বলা আছে, কোনো কোম্পানি টানা তিন বছর এজিএম না করলে, পাঁচ বছর লভ্যাংশ না দিলে কিংবা তিন বছর উৎপাদন বন্ধ রাখলে সেটি ডিলিস্ট করা যেতে পারে। তবু এই প্রক্রিয়া খুব কমই ব্যবহার করা হচ্ছে।

বর্তমানে ডিএসইর তালিকাভুক্ত এসব দুর্বল কোম্পানির মধ্যে ১৩টি ১০ বছর কিংবা এর বেশি সময় ধরে লোকসানে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, পিপলস লিজিং, সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ, শ্যামপুর সুগার মিলস, উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি, জিল বাংলা সুগার মিলস, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, জুট স্পিনার্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি, বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইন্ডাস্ট্রিজ, বিডি সার্ভিসেস ও অ্যাটলাস বাংলাদেশ।

এ ছাড়া আরও ৩৩টি প্রতিষ্ঠান অন্তত পাঁচ বছর ধরে টানা লোকসানে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাপোলো ইস্পাত, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, ফ্যামিলিটেক্স বিডি, কেয়া কসমেটিকস, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, রিং শাইন টেক্সটাইলস, আরএসআরএম স্টিল, সুরিদ ইন্ডাস্ট্রিজ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, ইয়াকিন পলিমার, জাহিন স্পিনিং মিলস ও জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ।

২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ২৭টি কোম্পানির জমা লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকায়। অনেক প্রতিষ্ঠান তো এখন কোনো আর্থিক তথ্যই প্রকাশ করে না। অ্যাটলাস বাংলাদেশ ২০২১ সালের পর থেকে ডিএসই ওয়েবসাইটে তাদের যোগাযোগের তথ্য আপডেট করেনি। একই অবস্থা মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ও বিডি ওয়েল্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও।

সিএফএ সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি আসিফ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্টক মার্কেটে শত শত কোম্পানি থাকলেও আসলে বিনিয়োগযোগ্য কোম্পানি খুবই কম। বিনিয়োগযোগ্য প্রতিষ্ঠানের অভাব এতটাই প্রকট যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিকল্প পাচ্ছে না।’

আসিফ খান আরও বলেন, ‘যদি নিশ্চিত হওয়া যায়, এসব প্রতিষ্ঠানের আর কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাহলে তাদের ডিলিস্ট বা লিকুইডেট করা উচিত, যাতে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা ফেরত পান।’

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই টক্সিক স্টকগুলো অনেক আগে ডিলিস্ট করা উচিত ছিল। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা মনে করে, খারাপ কোনো কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে ফেলে রাখলেই দায়িত্ব শেষ।’

সাইফুল ইসলামের মতে, বিএসইসি ও ডিএসইর এখন উচিত বাজার পরিষ্কার করা এবং দীর্ঘদিনের লোকসানি কোম্পানিগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে বাজার থেকে বাদ দেওয়া।

যাদের ভবিষ্যৎ নেই, তাদের রেখে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির মুখে ঠেলে দেওয়া অন্যায়।

দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ৪০০ কোম্পানির মধ্যে বিনিয়োগযোগ্যের সংখ্যা খুব কম। ফলে মিউচুয়াল ফান্ড বা বিমা কোম্পানির মতো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিকল্প সীমিত। গত মে মাসে বিএসইসি সব জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিকে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। যদিও এতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

এ প্রসঙ্গে বিএসইসির মুখপাত্র আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিএসই যদি এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়, কমিশন অবশ্যই সহযোগিতা করবে। প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক হিসেবে ডিএসইর এই ক্ষমতা রয়েছে।’

ডিএসইর চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ডিলিস্ট করলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হন। তা ছাড়া ডিএসই এখনো কোনো প্রতিষ্ঠানকে লিকুইডেট করার আইনি ক্ষমতা পায়নি। আমরা সেই ক্ষমতা যুক্ত করতে আইনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বন্ড মার্কেটে জোর

বন্ধ হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি ব্যাংকঋণের পথ

  • ব্যাংকের বিকল্প উৎস হচ্ছে বন্ড মার্কেট।
  • বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন ও প্রসারে একটি বিশেষ কমিটি কাজ করছে।
  • আগামী বছরেই বন্ড মার্কেট থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন চালুর পরিকল্পনা।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ১৩
বন্ধ হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি ব্যাংকঋণের পথ

দেশের ব্যাংকগুলো থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ বন্ধ হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য ব্যাংকের বিকল্প হিসেবে বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন ও প্রসারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য একটি বিশেষ কমিটি কাজ করছে। এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আগামী বছরই ব্যাংকের পরিবর্তে শুধু বন্ড মার্কেট থেকেই দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন চালু করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বন্ড মার্কেট থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন একটি স্বীকৃত আন্তর্জাতিক চর্চা। বাংলাদেশও এই চর্চা শুরু করতে চায়। এ জন্যই ব্যাংকের পরিবর্তে বন্ড মার্কেট থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নির্দেশনায় একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সমন্বয়ে গঠিত এই কমিটি বন্ড মার্কেট থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পদ্ধতি, প্রসার এবং ঝুঁকিসংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে। সরকারও বাংলাদেশে বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন, চ্যালেঞ্জ এবং সুপারিশসংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের তাগিদ দিয়েছে।

সূত্র জানায়, গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈঠক করেছে বিশেষ এই কমিটি। বৈঠকে বন্ড মার্কেট উন্নয়ন, চ্যালেঞ্জ ও সুপারিশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। গভর্নর দেশে না থাকায় ভার্চুয়ালি নানা পরামর্শ দিয়েছেন কমিটিকে। তাঁর পরামর্শের আলোকে বন্ড মার্কেটের নীতিমালা, ঝুঁকি, নিরাপত্তা, গ্রাহকের স্বার্থ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গভর্নর দেশে ফিরলে প্রতিবেদন আকারে সুপারিশগুলো জমা দেওয়া হবে। তাঁর কাছে থেকে সংযোজন, সংশোধনী এবং পরামর্শ এলে তা ঠিক করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে এবং নিয়মমাফিক তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখানে থেকে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে যাবে সুপারিশমালা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুন নাগাদ বন্ড মার্কেট থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন শুরু হবে।

এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে বড় বড় প্রকল্পের অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভর না করে পুঁজিবাজারে যেতে হবে। সেখান থেকে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর মতো বড় বড় প্রজেক্ট করা সম্ভব। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বন্ড মার্কেটকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হবে।

বাংলাদেশে ক্যাপিটাল মার্কেট এখনো উন্নত হয়নি জানিয়ে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, সরকারি বন্ড সেগমেন্ট থাকলেও সেখানে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ খুবই কম, আর শেয়ারবাজার প্রায় নগণ্য। ফলে অর্থায়নের ক্ষেত্রে বড় প্রকল্পগুলো ঝুঁকি ভাগাভাগি না করে শুধু ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছে। এতে ঋণখেলাপি ও তহবিল অপব্যবহারের ঘটনা ঘটছে, যা দেশের জন্য বড় ট্র্যাজেডি। প্রকৃতপক্ষে ঝুঁকি ভাগাভাগি করতে হলে মানুষকে বন্ড, ডিবেঞ্চার ও শেয়ারে বিনিয়োগ করতে হবে। ব্যাংক থেকে শুধু ঋণ নেওয়া এবং পরে তা ভুল খাতে ব্যবহার করা কোনো সমাধান নয়। তাই ক্যাপিটাল মার্কেটে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং বিনিয়োগকারীদেরও বুঝতে হবে যে এখানে ঝুঁকি যেমন আছে, তেমনি লভ্যাংশ বা মুনাফার সম্ভাবনাও আছে।

বাংলাদেশের বন্ড মার্কেট উন্নয়নে গত ১১ মে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বন্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড রিকমেন্ডেশন’ শীর্ষক একটি বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। সেই প্রতিবেদনে বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করা হয়। সেই সঙ্গে প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু নিয়ে বাংলাদেশের বন্ড মার্কেট উন্নয়নের লক্ষ্যেই গঠনমূলক আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ , চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইনস্যুরেন্স কোম্পানি, ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি, করপোরেট প্রতিষ্ঠান, বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ও থিংকট্যাংকগুলোকে নিয়ে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি জাতীয় সেমিনারের কথা বলা হয়েছে। সেই সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টাকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়ে ৭ অক্টোবর চিঠি দিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন ও প্রসারে গঠিত কমিটির একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দেশে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সুযোগ ও সম্ভাবনাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে কাজ চলছে।

পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন তথা পুঁজি উত্তোলনের সুযোগকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাংকঋণের ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ ও ঝুঁকি হ্রাসের মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে দেশের বৃহৎ কোম্পানিগুলোকে ব্যাংকঋণের পরিবর্তে বন্ড ও সিকিউরিটিজ ইস্যুর মাধ্যমে অর্থায়নের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে নানা উদ্যোগে সুপারিশ করা হবে। একই সঙ্গে দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা ও বন্ড মার্কেটের তারল্য বৃদ্ধি করা হবে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে ২০ বছর মেয়াদে সরকারের বন্ড ইস্যু করছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনও চাইলে ৩০ বছর মেয়াদি বন্ড ইস্যু করতে পারে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও মাসরুর রিয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ বন্ড মার্কেটে একেবারে সীমিত। দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পাওয়া যায় না বললেই চলে। প্রযুক্তিভিত্তিক আধুনিক শিল্পায়ন এবং বড় শিল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন জরুরি। সে জন্য বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন প্রয়োজন। এটি যত দ্রুত প্রসার হবে, তত বেশি লাভ হবে। বর্তমানে সরকার কিছু বন্ড ছাড়ে, সেটা বাড়াতে হবে। বেসরকারি কোম্পানিকে এগিয়ে আসত হবে। আর বিনিয়োগে ঝুঁকি থাকে, সেটা মার্কেটেও রয়েছে। এ জন্য সংস্কার ও নীতিমালা করতে হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে মাত্র ১৬টি করপোরেট বন্ড চালু রয়েছে। আর সুকুক বন্ড রয়েছে ২৩৩টি। সরকারি বন্ড সেকেন্ডারি মার্কেটে আসেনি। সব মিলিয়ে স্টক মার্কেটের বন্ডের মূল্য ৬ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে ইক্যুইটি ৩ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা, সিকিউরিটিজ ২ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় পরপর মুনাফা পাওয়া যায়। সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি বন্ডের ক্ষেত্রে সরকারি বন্ড, করপোরেট বন্ড এবং অন্যান্য বন্ড রয়েছে। বন্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সরকার, ব্যাংক বা করপোরেশন। বন্ড কেনার জন্য একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। বন্ডের জন্য ন্যূনতম এক লাখ টাকা জমা রাখতে হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত