Ajker Patrika

পণ্য রপ্তানি বহুমুখী করাই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্দেশ্য: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ১৭
পণ্য রপ্তানি বহুমুখী করাই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্দেশ্য: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

 

দেশীয় পণ্যের রপ্তানি বহুমুখী করাই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্দেশ্য। রপ্তানিকে বহুমুখী করার মাধ্যমে বাণিজ্য বাড়ানো মূল লক্ষ্য। আজ শনিবার দুপুরে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এ কথা বলেছেন। 

 
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য রপ্তানিকে বহুমুখী করার মাধ্যমে রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ানো। গত ১৫ বছরে ছয় গুণ রপ্তানি বাণিজ্য বাড়াতে পেরেছি। আমরা সেখানে বসে থাকতে চাই না। আমরা যদি পণ্যে বহুমুখীকরণ করতে পারি, তাহলে আমাদের রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।’ 
 
আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে আন্তর্জাতিক স্টলের থেকে দেশীয় স্টলগুলো যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাণিজ্য করতে পারে, রপ্তানি করতে পারে, এটাই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য।’ 
 
আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রচুর ইলেকট্রনিকস পণ্য মেলায় অংশ নিয়েছে। এই খাত অনেক এগিয়েছে। আগামী দিনে স্থানীয় শিল্প, হস্তশিল্প, ফার্নিচার, হিমায়িত খাদ্যপণ্য ফোকাস করা হবে। এ ছাড়া চামড়া, পাটশিল্পকে গার্মেন্টসের মতো বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার একটা প্রতিফলন মেলায় দেখতে পারবেন।’ 
 
এবারের বাণিজ্য মেলায় ভোক্তাদের প্রতারিত হওয়ার কোনো সুযোগ রাখা হবে না জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের মেলায় যাতে কোনোভাবে দর্শনার্থী বা ভোক্তারা প্রতারিত না হন, এ জন্য অভিযোগ বক্স ও হেল্প ডেস্ক রাখা হবে। অভিযোগের ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 
 
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুবাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ভেন্যুতে তৃতীয়বারের মতো এই মেলার আয়োজন করতে যাচ্ছি। এ বছর মেলা প্রাঙ্গণকে দৃষ্টিনন্দন, উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা সামনে আনার জন্য মেলার প্রবেশদ্বার করা হয়েছে কর্ণফুলী টানেলের আদলে। আর একপাশে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, অপর পাশে বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল রয়েছে। এগুলো দৃশ্যমান করা হয়েছে উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত রাখতে। প্রবেশের পরেই রয়েছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। যেখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন বইসহ অনেক ছবি রয়েছে। 
 
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘উন্নয়ন একটি দর্শনের ওপর নির্ভর করে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে এখন স্মার্ট বাংলাদেশে প্রবেশ করছি। আমরাও এবারের মেলা স্মার্টভাবে করার চেষ্টা করেছি। এ বছর অনেক ডিজিটাল প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা আরও বেশি উদ্যোগ নিয়ে করতে পারব।’ 
 
এই মেলাকে কতটা আন্তর্জাতিক মেলা বলতে পারি, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা বলার চেষ্টা করছি এ জন্য যে, আমাদের লোকাল শিল্পগুলো যাতে আন্তর্জাতিক বাজারে যাওয়ার সুযোগ পায়। এখানে প্রদর্শনী হয় যে আমাদের কী কী আন্তর্জাতিক মানের পণ্য রয়েছে। আমরা বেশি উৎসাহিত করে আনছি না এ কারণে যে বিদেশিরা এক মাসের মেলায় আসতে চায় না। আমাদের লক্ষ্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ। আর পণ্যগুলো বিদেশিদের দেখানোই উদ্দেশ্য। মূলত এটা একটা শোকেস, শুধু মেলার আদলে করা হয়।’ 
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার মেলায় তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, ইরান, ভারত, পাকিস্তানসহ ১৬ থেকে ১৮টি বিদেশি প্যাভিলিয়ন থাকবে। এ ছাড়া একটি হেল্প ডেস্ক, অভিযোগ বুথ করে দেওয়া হবে। 
 
আহসানুল ইসলাম বলেন, এবার মেলায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য মেট্রোরেল ও এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ফার্মগেট থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে উত্তরা থেকে যারা মেলায় আসবে তারা মেট্রোরেলে এসে ফার্মগেট থেকে বাসে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সোজা মেলায় চলে আসতে পারেন। গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যত বেশি দর্শনার্থী আসবে, তত বেশি লোকাল শিল্প উৎসাহিত হবে। মিডিয়ার জন্য আলাদা মিডিয়া সেন্টার করা হয়েছে। 
 
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘গত দুই বছর রাস্তার কিছুটা সমস্যা ছিল। এবার রাস্তা অনেক ভালো, ফলে অনেক দর্শনার্থী আসবে বলে আশা করছি। আমরা চেষ্টা করেছি একটি ভালো মেলা অনুষ্ঠানের জন্য। প্রতিবছর ১ জানুয়ারি মেলার আয়োজন করলেও এবার নির্বাচনের কারণে কিছুটা পিছিয়েছে। এই মেলা মানুষের জন্য বার্ষিক একটা ঐতিহ্যবাহী মেলায় পরিণত হচ্ছে। 
 
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, মেলাকে কেন্দ্র করে সিকিউরিটির ইস্যু থাকে। সে জন্য আমরা ৫০ জনের আউটসোর্সিং করে নিরাপত্তার জন্য লোকবল নিয়োগ দিয়েছি। এ ছাড়া পুলিশ-আনসার থাকবে। প্রয়োজনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র‍্যাব কাজ করবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ১০০ জন ক্লিনার নিয়োগ করা হয়েছে। যাতায়াতের জন্য বিআরটিসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের বাস থাকবে। এবার ফার্মগেট থেকেও বাসে ওঠা যাবে। ফলে খুব অল্প সময়ে মেলা কেন্দ্রে আসা যাবে।’
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত