Ajker Patrika

খেলাপি বন্ধে কঠোর নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
খেলাপি বন্ধে কঠোর নির্দেশনা

বেনামি ঋণ, তারল্যসংকট, উচ্চ খেলাপির হার, পরিচালক নিয়োগে পারিবারিক দৌরাত্ম্যে ব্যাংক খাত সংকটে পড়েছে। অধিকাংশ ব্যাংক ধারদেনা করে চলছে। পাশাপাশি ব্যাংকে সুশাসনের অভাব দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনে ব্যাংকে খাতে দুর্ভোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এমনকি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (আইএমএফ) ব্যাংকের তারল্যসংকট, পরিচালক নিয়োগ, উচ্চমাত্রার খেলাপি এবং বেনামি ঋণ বন্ধ করতে সংস্কার পরামর্শ দিয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ব্যাংকগুলোকে কার্যকর সংশোধনমূলক পদক্ষেপ (পিসিএ) ফ্রেমওয়ার্ক বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। 

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বিপর্যয়ের হাত থেকে ব্যাংকিং খাতকে উদ্ধার করতে সংশোধনীমূলক পরিকল্পনা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সংশোধনী পরিকল্পনায় ব্যাংকগুলোকে ক্যাপিটাল টু রিস্ক অ্যাসেট রেশিও (সিআরএআর), ক্যাপিটাল রেশিও (সিআর), কমন ইক্যুইয়িটি (সিইটি), নেট নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) এবং করপোরেট সুশাসনকে ভিত্তি করে চার ক্যাটাগরিতে ভাগ করে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এসব সংশোধনী কার্যাবলি ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ থেকে বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ প্রদান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দেশের অভ্যন্তরে সব তফসিলি ব্যাংক ও বিদেশি ব্যাংককে কেন্দ্র থেকে শাখা পর্যন্ত প্রয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। আর গৃহীত সংশোধনী কার্যাবলি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভার অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে নতুন করে সংশোধনী কার্যাবলি আগামী ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরভিত্তিক নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে করার কথা জানানো হয়, যা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সামনের নির্ধারিত পর্ষদ সভায় পরিচালকদের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। এ নীতিমালা ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৭৭/ক ধারা, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার এবং তফসিলি ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের এমওইউর আলোকে করতে হবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে। 

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং খাতে এখন বড় সমস্যা সুশাসনের অভাব। সুশাসনের ঘাটতি মেটাতে পারলে অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে। জাল-জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ব্যাংকার, গ্রাহক ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। এর মাধ্যমে একটি বার্তা দিতে হবে। আর তারল্যসংকট, ঋণের গুণগত মান, খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি, পরিচালকদের বেপরোয়া ঋণগ্রহণ—এসব সমস্যা সুশাসন প্রতিষ্ঠা হলে কমে যেতে বাধ্য থাকবে। 

সূত্র জানায়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য বর্তমানে সুনির্দিষ্টভাবে মার্জার নীতিমালা নেই। দুর্বল ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে বাধ্যতামূলকভাবে একে অন্যের সঙ্গে একীভূত হতে পারে, সেজন্য গত বছর ব্যাংক উদ্ধার পরিকল্পনা করা হয়। আর ব্যাংক খাতের ভবিষ্যৎ বিপর্যয় ঠেকাতে সংশোধনী কার্যাবলি নিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তফসিলি ব্যাংক সংশোধনী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গৃহীত পদক্ষেপ নিজেরা বাংলাদেশ ব্যাংকে লিখিতভাবে জানাতে বাধ্য থাকবে। যদি কোনো ব্যাংক একই সঙ্গে চারটির বেশি বিভাগের অধীনে পড়ে, তবে সেই ব্যাংক খারাপ ক্যাটাগরিটিতে রয়েছে বলে বিবেচনা করা হবে। পিসিএ শুরু করার পর সংশোধনমূলক নির্দেশক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিকা নামে ব্যাংক কোম্পানির জন্য জারি করা হবে। ব্যাংকের অবনতিশীল আর্থিক ও পরিচালন সূচক অবস্থার স্বাভাবিক উন্নতি বছরের মধ্যে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে একটি গ্যারান্টি প্রদান করতে হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত