রেজাউর রহিম, ঢাকা
আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য প্রচলিত বাজারের পাশাপাশি নতুন বাজার সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে সরকার। বিশেষ করে তৈরি পোশাকের চাহিদা আছে—এমন দেশের দিকে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে লাতিন আমেরিকার বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ব্রাজিলে রপ্তানি বৃদ্ধিতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সম্পাদনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র।
দক্ষিণ আমেরিকার বড় দেশ ব্রাজিলের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির বিপুল সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে দেশটিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বিপুল চাহিদা আছে। এ ছাড়া দেশটিতে পাট ও পাটজাত দ্রব্য, জুতা, মাছসহ বেশ কিছু বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা রয়েছে। তবে অত্যধিক শুল্কের কারণে দেশটিতে বাংলাদেশ সেভাবে পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না। এদিকে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় রপ্তানি বাড়াতে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর বাণিজ্য জোট মারকোসুরের যৌথ কাস্টমস ইউনিয়ন।
ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর বাণিজ্য জোট ‘মারকোসুর’ এর সদস্য। এ জোটের যৌথ কাস্টমস ইউনিয়নের মাধ্যমে ব্রাজিলের বৈদেশিক বাণিজ্যের একটি বড় অংশ পরিচালিত হয়। এই কাস্টমস ইউনিয়নের কারণে ব্রাজিলের সঙ্গে এককভাবে বাণিজ্য চুক্তি করার সুযোগ অপেক্ষাকৃত কঠিন। এই জোটের পূর্ণ সদস্যভুক্ত দেশগুলোর জনসংখ্যা প্রায় ৩০ কেটি। দেশগুলোর গড় মাথাপিছু আয় প্রায় ১০ হাজার ডলার।
তবে মারকোসুর জোটের সঙ্গে কোনো চুক্তি করা সম্ভব হলে ব্রাজিলের পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে জোটের অন্য সদস্য—আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়েতেও রপ্তানি সম্প্রসারণ সম্ভব হবে। এ ছাড়া দক্ষিণ আমেরিকার বলিভিয়া, চিলি, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, গায়ানা, পেরু ও সুরিনাম এ জোটের সহযোগী সদস্য।
এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ ব্রাজিলসহ লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী। তবে ব্রাজিল তাদের দেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সে দেশ থেকে গরুর মাংস, পোলট্রিসহ বেশ কিছু পণ্য আমদানির শর্ত দিয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে আমাদের দেশের গরু পালন এবং পোলট্রি শিল্পের স্বার্থের বিষয় জড়িত। এসব বিষয় নিয়ে দেশটির সঙ্গে আলোচনা চলছে।
অতিরিক্ত সচিব আরও জানান, দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক বাণিজ্য জোট মারকোসুরের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর যৌথ কাস্টমস ইউনিয়নের কারণে এসব দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে বড় ধরনের বাধা রয়েছে। তিনি বলেন, এ জন্য আমরা ‘মারকোসুর’-এর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য বেশ আগে থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে মহামারি করোনার কারণে বিষয়টি বিলম্বিত হয়েছে। এখন করোনা পরিস্থিতি অনেকটা কমে আসায় আমরা এ বিষয়ে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি।
জানা গেছে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্রাজিলে ১৭৬ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। একই সময়ে দেশটি থেকে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ ১৫২০ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ হতে পারে বাংলাদেশের রপ্তানির সম্ভাবনাময় বড় বাজার। আর ব্রাজিলের সঙ্গে বাংলাদেশে বাণিজ্য বৃদ্ধির বড় ধরনের সুযোগ রয়েছে। তবে উচ্চ শুল্কহারের কারণে দেশটিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আশানুরূপভাবে রপ্তানি হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে, তা সমাধান করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
এদিকে সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়া তাবাজারা ডি ওলিভেরিয়া জুনিয়র পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তাঁর দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়াতে চায় বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত। বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানিতে তাঁর দেশের ব্যবসায়ী-আমদানিকারকদের আগ্রহের কথাও জানান তিনি।
পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকেরা জানান, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এবং রপ্তানিতে বড় বাধা উচ্চ হারের শুল্ক। বর্তমানে ব্রাজিলে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে প্রায় ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এই উচ্চ শুল্কহার কমানো হলে দেশটিতে রপ্তানি বাড়বে। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে ব্রাজিলের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ রয়েছে বলে জানান তাঁরা। বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-রপ্তানিকারকদের দিক থেকে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।
এদিকে ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে এবং রপ্তানি বৃদ্ধিতে বিজিএমইএর পক্ষ থেকেও ‘অ্যাপারেলস ডিপ্লোমেসি’ চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে রপ্তানিকারকেরা। ব্রাজিলের ব্যাপারে রপ্তানিকারকদের আগ্রহ বেশি। তবে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দুই দেশের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। রপ্তানির পাশাপাশি ব্রাজিলের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করানো সম্ভব হলে রপ্তানি ও কর্মসংস্থান বাড়বে, যা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীতের ক্ষেত্রে ইতিবাচক হবে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে আমরা বেশ আগে থেকেই লাতিন আমেরিকার ব্রাজিল, চিলি, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশের আমদানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তবে শুল্কজনিত বাধা এবং অতিরিক্ত শুল্কের কারণে এসব দেশে রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।’
ব্রাজিলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা রয়েছে উল্লেখ করে বিজিএমইএ সহসভাপতি আরও বলেন, ‘ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের বাণিজ্য জোট মারকোসুরের যৌথ কাস্টমস ইউনিয়নের একটি বড় বাধা রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে এ বাধা অতিক্রমের জন্য “অ্যাপারেলস ডিপ্লোমেসি” চালানো হচ্ছে। তবে বিষয়টিতে সরকারের জরুরি কূটনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এই বাজারও বিশেষ সুবিধার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। অবশ্য এসব দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি (অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা) সুবিধা বন্ধ রেখেছে। আর ইইউভুক্ত দেশগুলোতে জিএসপি সুবিধা ২০২৯ সাল পর্যন্ত বহাল থাকলেও তার পর থেকে এসব দেশে পণ্য রপ্তানিতে সুবিধা পেতে হলে বাংলাদেশকে ‘জিএসপি প্লাস’-এর বেশ কিছু কঠিন শর্ত পরিপালন করতে হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য প্রচলিত বাজারের পাশাপাশি নতুন বাজার সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে সরকার। বিশেষ করে তৈরি পোশাকের চাহিদা আছে—এমন দেশের দিকে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে লাতিন আমেরিকার বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ব্রাজিলে রপ্তানি বৃদ্ধিতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সম্পাদনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র।
দক্ষিণ আমেরিকার বড় দেশ ব্রাজিলের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির বিপুল সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে দেশটিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বিপুল চাহিদা আছে। এ ছাড়া দেশটিতে পাট ও পাটজাত দ্রব্য, জুতা, মাছসহ বেশ কিছু বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা রয়েছে। তবে অত্যধিক শুল্কের কারণে দেশটিতে বাংলাদেশ সেভাবে পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না। এদিকে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় রপ্তানি বাড়াতে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর বাণিজ্য জোট মারকোসুরের যৌথ কাস্টমস ইউনিয়ন।
ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর বাণিজ্য জোট ‘মারকোসুর’ এর সদস্য। এ জোটের যৌথ কাস্টমস ইউনিয়নের মাধ্যমে ব্রাজিলের বৈদেশিক বাণিজ্যের একটি বড় অংশ পরিচালিত হয়। এই কাস্টমস ইউনিয়নের কারণে ব্রাজিলের সঙ্গে এককভাবে বাণিজ্য চুক্তি করার সুযোগ অপেক্ষাকৃত কঠিন। এই জোটের পূর্ণ সদস্যভুক্ত দেশগুলোর জনসংখ্যা প্রায় ৩০ কেটি। দেশগুলোর গড় মাথাপিছু আয় প্রায় ১০ হাজার ডলার।
তবে মারকোসুর জোটের সঙ্গে কোনো চুক্তি করা সম্ভব হলে ব্রাজিলের পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে জোটের অন্য সদস্য—আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়েতেও রপ্তানি সম্প্রসারণ সম্ভব হবে। এ ছাড়া দক্ষিণ আমেরিকার বলিভিয়া, চিলি, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, গায়ানা, পেরু ও সুরিনাম এ জোটের সহযোগী সদস্য।
এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ ব্রাজিলসহ লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী। তবে ব্রাজিল তাদের দেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সে দেশ থেকে গরুর মাংস, পোলট্রিসহ বেশ কিছু পণ্য আমদানির শর্ত দিয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে আমাদের দেশের গরু পালন এবং পোলট্রি শিল্পের স্বার্থের বিষয় জড়িত। এসব বিষয় নিয়ে দেশটির সঙ্গে আলোচনা চলছে।
অতিরিক্ত সচিব আরও জানান, দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক বাণিজ্য জোট মারকোসুরের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর যৌথ কাস্টমস ইউনিয়নের কারণে এসব দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে বড় ধরনের বাধা রয়েছে। তিনি বলেন, এ জন্য আমরা ‘মারকোসুর’-এর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য বেশ আগে থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে মহামারি করোনার কারণে বিষয়টি বিলম্বিত হয়েছে। এখন করোনা পরিস্থিতি অনেকটা কমে আসায় আমরা এ বিষয়ে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি।
জানা গেছে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্রাজিলে ১৭৬ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। একই সময়ে দেশটি থেকে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ ১৫২০ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ হতে পারে বাংলাদেশের রপ্তানির সম্ভাবনাময় বড় বাজার। আর ব্রাজিলের সঙ্গে বাংলাদেশে বাণিজ্য বৃদ্ধির বড় ধরনের সুযোগ রয়েছে। তবে উচ্চ শুল্কহারের কারণে দেশটিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আশানুরূপভাবে রপ্তানি হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে, তা সমাধান করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
এদিকে সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়া তাবাজারা ডি ওলিভেরিয়া জুনিয়র পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তাঁর দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়াতে চায় বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত। বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানিতে তাঁর দেশের ব্যবসায়ী-আমদানিকারকদের আগ্রহের কথাও জানান তিনি।
পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকেরা জানান, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এবং রপ্তানিতে বড় বাধা উচ্চ হারের শুল্ক। বর্তমানে ব্রাজিলে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে প্রায় ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এই উচ্চ শুল্কহার কমানো হলে দেশটিতে রপ্তানি বাড়বে। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে ব্রাজিলের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ রয়েছে বলে জানান তাঁরা। বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-রপ্তানিকারকদের দিক থেকে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।
এদিকে ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে এবং রপ্তানি বৃদ্ধিতে বিজিএমইএর পক্ষ থেকেও ‘অ্যাপারেলস ডিপ্লোমেসি’ চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে রপ্তানিকারকেরা। ব্রাজিলের ব্যাপারে রপ্তানিকারকদের আগ্রহ বেশি। তবে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দুই দেশের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। রপ্তানির পাশাপাশি ব্রাজিলের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করানো সম্ভব হলে রপ্তানি ও কর্মসংস্থান বাড়বে, যা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীতের ক্ষেত্রে ইতিবাচক হবে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে আমরা বেশ আগে থেকেই লাতিন আমেরিকার ব্রাজিল, চিলি, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশের আমদানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তবে শুল্কজনিত বাধা এবং অতিরিক্ত শুল্কের কারণে এসব দেশে রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।’
ব্রাজিলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা রয়েছে উল্লেখ করে বিজিএমইএ সহসভাপতি আরও বলেন, ‘ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের বাণিজ্য জোট মারকোসুরের যৌথ কাস্টমস ইউনিয়নের একটি বড় বাধা রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে এ বাধা অতিক্রমের জন্য “অ্যাপারেলস ডিপ্লোমেসি” চালানো হচ্ছে। তবে বিষয়টিতে সরকারের জরুরি কূটনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এই বাজারও বিশেষ সুবিধার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। অবশ্য এসব দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি (অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা) সুবিধা বন্ধ রেখেছে। আর ইইউভুক্ত দেশগুলোতে জিএসপি সুবিধা ২০২৯ সাল পর্যন্ত বহাল থাকলেও তার পর থেকে এসব দেশে পণ্য রপ্তানিতে সুবিধা পেতে হলে বাংলাদেশকে ‘জিএসপি প্লাস’-এর বেশ কিছু কঠিন শর্ত পরিপালন করতে হবে।
সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) পাওয়ার লড়াইয়ে এখন কঠিন সময় পার করছে দেশ। এক দিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, অন্য দিকে বৈদেশিক মুদ্রার চাপ—সব মিলিয়ে দেশের বিনিয়োগের মাঠ যেন ক্রমেই শুষ্ক হয়ে উঠছে। ২০২৪ সালে দেশে নিট এফডিআই নেমেছে মাত্র ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলারে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে...
৩ ঘণ্টা আগেঅর্থনৈতিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিনিয়োগ স্থবিরতার প্রেক্ষাপটে এখনো এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের জন্য প্রস্তুত নয় বাংলাদেশ—এমন মত দিয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মতে, প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কার, নীতিগত প্রস্তুতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তির..
৩ ঘণ্টা আগেমৌলভীবাজারের হাওরাঞ্চলে বোরো মৌসুমের শুরুতেই স্পষ্ট হয়েছে লোকসানের সংকেত। সেচের অভাব, পানির সংকট ও রোগবালাইয়ে ফলন অনেক কম, বিনিয়োগ তুলতে না পারার শঙ্কায় দিশেহারা কৃষকেরা। এনজিও ও স্থানীয় ঋণদাতার কাছ থেকে ধার করা টাকাই এখন চাপ হয়ে ফিরছে। এই ক্ষতি কৃষকপাড়া ছাড়িয়ে প্রভাব ফেলছে স্থানীয় অর্থনীতিতে..
৪ ঘণ্টা আগেবিশ্বব্যাপী উদ্যোক্তারা পুঁজি সংগ্রহের জন্য পুঁজিবাজারের দিকে হাত বাড়ান। পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহের মাধ্যম হলো প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও। কিন্তু দেশের পুঁজিবাজারে এক বছরের বেশি সময় ধরে কোনো আইপিও অনুমোদন হয়নি। ফলে এই সময়ে বাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করতে পারেনি কোনো কোম্পানি।
৪ ঘণ্টা আগে