Ajker Patrika

বিশ্বব্যাপী অনলাইন কেনাকাটা বেড়েছে

সাখাওয়াত সুজন
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২১, ১৬: ২৪
বিশ্বব্যাপী অনলাইন কেনাকাটা বেড়েছে

কোভিড–১৯ বৈশ্বিক মহামারির কারণে গোটা বিশ্বেই জীবনযাত্রা অনেক বদলে গেছে। দেশে দেশে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানার সরকারি নির্দেশনার কারণে সশরীরে শপিংমলে গিয়ে কেনাকাটা কমেছে ব্যাপকভাবে। কিন্তু মানুষের নিত্যপণ্য থেকে শুরু কররে বিলাস সামগ্রী কেনা চলছে বরাবরের মতোই। এ ক্ষেত্রে ভরসার স্থল হয়ে দেখা দিয়েছে অনলাইন। সারা বিশ্বে ২০২০ সালে অনলাইনে খুচরা কেনাকাটায় বাড়তি ৯০ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছেন ভোক্তারা। মাস্টারকার্ডের ‘রিকভারি ইনসাইটস’ নামে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে পৃথিবীব্যাপী বেশির ভাগ ক্রেতা বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। এ জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স বা বিলাসপণ্য কিনতে হয়েছে অনলাইন থেকে। এ সম্পর্কিত পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে মাস্টারকার্ড জানায়, সারা বিশ্বে ২০২০ সালে অনলাইনে খুচরা কেনাকাটায় বাড়তি ৯০ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছেন ভোক্তারা। এই সময়ে প্রতি পাঁচ ডলার খুচরা ব্যয়ের এক ডলার ব্যয় হয়েছে ই-কমার্সে। ২০১৯ সালে এই হার ছিল প্রতি সাত ডলারে এক ডলার। ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত কেনাকাটার এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির এই ঊর্ধ্বগতি থাকলে এই বছরের অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইন কেনাকাটা বাড়বে।

মাস্টারকার্ডের রিকভারি ইনসাইট প্রতিবেদনমতে, মহামারির কারণে সশরীরে উপস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ায় খুচরা বিক্রেতা, রেস্তোরাঁসহ বড় ও ছোট ব্যবসায়ী ও সেবাদাতারা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ভোক্তাদের কাছে পণ্য বা সেবা পৌঁছে দিয়েছেন। করোনা মহামারির কারণে ডিজিটাল খাতে নতুন করে সম্পৃক্ত হওয়া ২০ থেকে ৩০ শতাংশ নতুন ব্যবস্থা বা উদ্যোগ স্থায়ী হতে পারে।

মাস্টারকার্ডের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও হেড অব দ্য মাস্টারকার্ড ইকোনমিকস ইনস্টিটিউট ব্রিকলিন ডাওয়ের বলেন, ‘যখন ভোক্তারা ঘরবন্দী থাকছেন, ই-কমার্স ব্যবস্থার কারণে তখনো তাঁদের অর্থ বহু দূর ছড়িয়ে পড়ছে। যেসব দেশ বা কোম্পানি ডিজিটাল খাতকে গুরুত্ব দিয়েছে, তারা দ্রুত সুবিধা নিতে পেরেছে। আমাদের বিশ্লেষণে দেখা যায়, এমনকি খুব ছোট ব্যবসাও ডিজিটাল সেবায় গিয়ে প্রসার ঘটাতে পারে। যদিও ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক পার্থক্যের কারণে ডিজিটাল রূপান্তর সার্বজনীন বা ধ্রুব নয়। তবে এই প্রতিবেদনে কিছু বহুল প্রচলিত প্রবণতা উঠে এসেছে।’

ই-কমার্স খাতের বিবর্তনে সবচেয়ে শক্তিশালী অঞ্চলগুলো হচ্ছে এশিয়া প্যাসিফিক, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো, যারা আগে থেকেই ডিজিটাল খাতে এগিয়ে, তারা দেশের ভেতরে ডিজিটাল খাতে বড় ধরনের রূপান্তর দেখেছে। তবে আর্জেন্টিনা ও মেক্সিকোর মতো দেশ যাদের ই-কমার্স খাতে অংশীদারি আগে থেকে কম, তারা এই তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে থাকবে।

মাস্টারকার্ডের প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বজুড়ে ওয়েবসাইট ও অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে আগের চেয়ে কেনাকাটা বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে ইতালি ও সৌদি আরবের মতো দেশের বাসিন্দারা ই-কমার্সের মাধ্যমে গড়ে ৩৩ শতাংশ বেশি কেনাকাটা করছেন। এরপরই কাছাকাছি অবস্থান রয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশের।
যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯-এর কারণে এমনকি দোকানেও ডিজিটাল লেনদেন বেড়েছে। ভোক্তারা স্পর্শ এড়িয়ে যেতে চাওয়ায় লেনদেনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি বেছে নিচ্ছেন। সেখানে নগদ লেনদেনের চেয়ে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট বেড়েছে। এটি কলম্বিয়া, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কানাডা, পশ্চিম ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিসর, তুরস্ক, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং ও সিঙ্গাপুরের জন্যও সত্য।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আকতার নিশা বলেন, ‘বাংলাদেশেও অনলাইন কেনাকাটা বেড়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাই অনলাইন কেনাকাটার জন্য নিজেদের তৈরি করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত