Ajker Patrika

অনলাইনেই হবে আমদানি-রপ্তানি শুল্ক-কর পরিশোধ, পণ্য খালাস হবে দ্রুত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১৫: ০১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অনলাইনে স্বয়ংক্রিয় চালানের (a-chalan) মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সব শুল্ক-কর বা রাজস্ব সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করল সরকার। আজ শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল-আমিন শেখ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অর্থ বিভাগ ও এনবিআরের উদ্যোগে নতুন অর্থবছরের শুরুতে আমদানিকারক, রপ্তানিকারক এবং তাঁদের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্তৃক আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট শুল্ক-করাদি অটোমেটেড চালান-এর মাধ্যমে অনলাইনে সরাসরি সরকারি ট্রেজারিতে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। কাস্টমসের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড (Asycuda World) সিস্টেমের সঙ্গে অটোমেটেড চালান সিস্টেমের ইন্টিগ্রেশনের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানিকারকের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অফলাইন অথবা অনলাইন পদ্ধতিতে সরাসরি সরকারি ট্রেজারিতে শুল্ক-কর জমা দেওয়ার সূচনা করেছে এনবিআরের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড এবং অর্থ বিভাগের আইবাস (iBAS++) টিম।

অটোমেটেড চালান বলতে বোঝায় অটোমেটেড চালান সিস্টেম বা স্বয়ংক্রিয় চালান ব্যবস্থা। এটি সরকারের অর্থ বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এতে অনলাইন পেমেন্ট, চালান নম্বর জেনারেশন ও ট্র্যাকিং সহজতর হয়েছে।

এনবিআর বলছে, বিদ্যমান ব্যবস্থায় করদাতারা দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে আরটিজিএস (RTGS) পদ্ধতিতে যে শুল্ক-কর জমা দেন, তা সরকারি ট্রেজারিতে জমা হতে কয়েক দিন সময় লেগে যায়। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়। এখন থেকে যেকোনো সময় (২৪/৭), যেকোনো স্থান থেকে ঘরে বসে অটোমেটেড চালানের (অ্যা-চালান) মাধ্যমে অনলাইনে কাস্টমস শুল্ক জমা দিয়ে দ্রুততম সময়ে পণ্য খালাস করা যাবে। এর মাধ্যমে জমা দেওয়া অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে সরকারের ট্রেজারিতে জমা হবে। ফলে সরকার তাৎক্ষণিকভাবে নগদ অর্থ খরচ করতে পারবে।

এনবিআর বলছে, অর্থ বিভাগের iBAS++ স্কিমের অ্যা-চালান সিস্টেম ও এনবিআরের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের মধ্যে ইন্টিগ্রেশন সম্পন্ন করে গত ১ ও ২ জুলাই চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অধীন আমদানি-রপ্তানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এবং কাস্টমস হাউসের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ৩ জুলাই সোনালী ব্যাংক কাস্টমস হাউসসহ সব তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে শুল্ক-কর সরাসরি সরকারি ট্রেজারিতে জমা করা শুরু হয়েছে। এদিন ৭৫টি বিল এন্ট্রির বিপরীতে ১৩ কোটি টাকার বেশি কাস্টমস শুল্ক তাৎক্ষণিক সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে।

অ্যা-চালান সরকারি রাজস্ব আহরণের একটি ওয়েবভিত্তিক সিস্টেম যার মাধ্যমে আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট যে কেউ ঘরে বসে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের (ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, এমএফএস/রকেট/বিকাশ/নগদ/উপায়/এমক্যাশ/ট্রাস্ট পে ইত্যাদি) মাধ্যমে কাস্টমস ডিউটি জমা দিয়ে সিস্টেম জেনারেটেড রিসিপ্ট নম্বর দিয়ে বন্দর থেকে পণ্য খালাস করতে পারবেন। পাশাপাশি যেকোনো ব্যাংকের (৬১টি ব্যাংকের ১১ হাজার ৭০০ শাখা) যে কোনো কাউন্টারেও অ্যাকাউন্ট ডেবিট অথবা চেক ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে শুল্ক-কর পরিশোধ করে আমদানি পণ্য দ্রুততম সময়ে খালাস করতে পারবেন।

গত ২৩ এপ্রিলে আইসিডি কমলাপুর কাস্টমস হাউসে প্রথম এই পদ্ধতিতে শুল্ক-কর আদায়ের পাইলটিং শুরু হয়। পরবর্তীতে, পানগাঁও কাস্টমস হাউসে তা চালু করা হয়। তৃতীয় স্টেশন হিসেবে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস ৩ জুলাই একই পদ্ধতিতে শুল্ক-কর জমা নেওয়া চালু করেছে।

আগামী ৭ জুলাই থেকে ঢাকা কাস্টমস হাউসসহ অন্য সব কাস্টমস হাউস একইভাবে অ্যা-চালানের মাধ্যমে অনলাইনে সরাসরি সরকারি ট্রেজারিতে শুল্ক-কর জমার ব্যবস্থা চালু করবে। সরাসরি সরকারি ট্রেজারিতে শুল্ক-কর জমা হওয়ার ফলে রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতসহ এ আদায় প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে এবং সরকারের আর্থিক খাত হবে আরও সুশৃঙ্খল হবে বলে আশা করছে এনবিআর।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জিটুজি চুক্তিতে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে সরকার

বাসস, ঢাকা  
জিটুজি চুক্তিতে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে সরকার

সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।

অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটি আজ বুধবার দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে আরেকটি হলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের উপকরণ সংগ্রহ।

চলতি বছরের ৩৪তম অর্থনৈতিকবিষয়ক কমিটির সভায় এসব সুপারিশ করা হয়। আজ অনুষ্ঠিত এ সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

প্রথম প্রস্তাবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন চায়।

কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করার পর নীতিগতভাবে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করে। দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটাতে স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করার গুরুত্ব বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দ্বিতীয় প্রস্তাবটি আসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। এটি ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ প্রকল্পের আওতায়।

প্রস্তাব অনুযায়ী ১ কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে ৫০ লাখ কাঁচামাল বইয়ে রূপান্তর করা যাবে। এ ছাড়া ৫৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বই ও সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ প্যাকেজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হবে।

বিস্তারিত আলোচনার পর কমিটি প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছে। কমিটি উল্লেখ করে, ই-পাসপোর্ট বিতরণ অব্যাহত রাখা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য এই প্রকল্প কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা কাস্টমসে ২৪ ঘণ্টা বিরতিহীন চলবে শুল্ক কার্যক্রম

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৩০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি, রপ্তানি ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা কাস্টম হাউস। দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে বিমানবন্দরের অধিক্ষেত্রাধীন এয়ারফ্রেইট ইউনিট ও এক্সপ্রেস সার্ভিস ইউনিটে ২৪ ঘণ্টা তিন শিফটে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে।

ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনারের নির্দেশক্রমে জয়েন্ট কমিশনার সুমন দাশ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোতে সহকারী কমিশনার ও উপকমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রভাতি, দিবা ও নৈশ—এই তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত সংখ্যক রাজস্ব কর্মকর্তা, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, সাব-ইন্সপেক্টর ও সিপাই নিয়োজিত রেখে শুল্ক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা কাস্টম হাউসের একটি সূত্র জানায়, ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম চালুর ফলে বিমানবন্দর এলাকায় পণ্য খালাস, পরীক্ষা ও ছাড়পত্র প্রক্রিয়া আরও সহজ ও দ্রুততর হবে। এতে আমদানিকারক, রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের জন্যও বাড়তি সুবিধা তৈরি হবে।

ঢাকা কাস্টম হাউস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভুইয়া মিঠু বলেন, ‘এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। এতে সবাই উপকৃত হবে এবং পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া আরও গতিশীল হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুদে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে বড় আশা

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ০০
খুদে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে বড় আশা

শিক্ষার খরচ মেটাতে কিংবা একটু একটু করে নিজের টাকায় কিছু করার স্বপ্নে খুদে শিক্ষার্থীরা এখন ব্যাংকের সঙ্গী। আগে যেখানে সঞ্চয়ের মানে ছিল মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানো, এখন সেটি ডিজিটাল পর্দায় ব্যালেন্স হিসাবে দেখা যায়। দেশের ব্যাংকগুলো এখন শিশু-কিশোরদের সেই হাতেখড়ির জায়গা হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫ লাখ ১৫ হাজার ২৫টি। এর মধ্যে ২৩ লাখ ছেলে, আর ২২ লাখের বেশি মেয়ে শিক্ষার্থীর নামে হিসাব খোলা হয়েছে। গ্রামে এই উদ্যোগের বিস্তার আরও বড়—২৩ লাখ ৯১ হাজার শিক্ষার্থীর হিসাব গ্রামাঞ্চলে, শহরে ২১ লাখ ২৩ হাজার।

এখন পর্যন্ত এসব খুদে সঞ্চয়কারীর ব্যাংকে জমা স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে শহরের শিক্ষার্থীদের ১ হাজার ৪৪৫ কোটি, গ্রামের শিক্ষার্থীদের ৬৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ সংখ্যা অনুযায়ী গ্রাম এগিয়ে থাকলেও সঞ্চয়ের অঙ্কে পিছিয়ে তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এই পুরো উদ্যোগই মূলত আর্থিক অন্তর্ভুক্তির একটি নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। করোনাকালে কিছুটা ভাটা পড়লেও এখন আবার উল্টো স্রোত—স্কুল ব্যাংকিং দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। এর পেছনে বড় কারণ, ব্যাংকগুলোর ডিজিটাল সেবা। এখন অনেক স্কুলেই ব্যাংক প্রতিনিধি গিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সঞ্চয় হিসাব খুলে দেন। তাতে স্কুলের ফি, বৃত্তি বা উপবৃত্তির টাকা সহজে জমা বা উত্তোলন করা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এ বিষয়ে বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির কোনো জাদুকরি যন্ত্র নেই। প্রত্যেক স্কুলশিক্ষার্থীর ব্যাংক হিসাব নিশ্চিত করা গেলে সেটাই হবে শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ার ভিত্তি।’

২০১১ সালে মাত্র ১০০ টাকা জমা দিয়ে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য শুরু হয় স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম। সে সময় কয়েকটি ব্যাংকে সীমিতভাবে হিসাব খোলা হতো। এখন দেশের ৬১ ব্যাংকের মধ্যে ৫৯টিতেই রয়েছে স্কুল ব্যাংকিং এবং এর ৭১ শতাংশ হিসাব বেসরকারি ব্যাংকে। শুধু বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেই শিক্ষার্থীদের আমানত পৌঁছেছে ১ হাজার ৭২৮ কোটিতে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ভাগে এসেছে ৩৮০ কোটি টাকা।

সবচেয়ে সক্রিয় ব্যাংকগুলোর তালিকায় রয়েছে ডাচ্‌-বাংলা, ইসলামী, অগ্রণী, সোনালী ও রূপালী ব্যাংক। বিশেষ করে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের ডিজিটাল স্কুল ব্যাংকিং সেবা সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীর নাগাল পেয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘এই উদ্যোগ শুধু সঞ্চয় নয়, শিক্ষার্থীদের অর্থনীতির ধারায় যুক্ত করছে। এতে অভিভাবকের ওপর চাপ কমে, আর ব্যাংকও দীর্ঘমেয়াদি আমানতের ভিত্তি পায়। এই খুদে আমানতই পরোক্ষভাবে জাতীয় বিনিয়োগের জ্বালানি।’

অন্যদিকে, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্কুল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিশুরা এখন থেকেই টাকা ব্যবস্থাপনার কৌশল শিখছে। এতে সঞ্চয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিমা, বৃত্তি গ্রহণ বা স্কুল ফি পরিশোধের সুবিধাও পাচ্ছে তারা।’

মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র আইমান জানায়, ‘উৎসবে পাওয়া টাকা আর টিফিনের কিছু অংশ ব্যাংকে রাখি। পরীক্ষার সময় সেই টাকা তুলে খরচ করেছি। ভালো লাগছে; কারণ, বাবার ওপর চাপ পড়েনি।’

বাংলাদেশ ব্যাংক এখন এই উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত করতে মাঠে নেমেছে। চলতি বছরের মার্চে একটি নির্দেশনা জারি করে বলা হয়, প্রতিটি ব্যাংকের শাখা অন্তত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুল ব্যাংকিং চালু করবে। এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিং জগতে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা পাবে, অন্যদিকে দেশের চার লাখের বেশি স্কুল হয়ে উঠবে আর্থিক শিক্ষার মাঠ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এই উদ্যোগে সবাই লাভবান হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সঞ্চয় করছে, অভিভাবকেরা স্বস্তি পাচ্ছেন, ব্যাংকও আমানত বাড়াচ্ছে। সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে খুদে শিক্ষার্থীরাও এখন অবদান রাখছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাক্ষাৎকার: এম. শামসুল আরেফিন

টেকসই অর্থনীতি বিনির্মাণে স্কুল ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৪৮
টেকসই অর্থনীতি বিনির্মাণে স্কুল ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই

আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিংয়ের অগ্রযাত্রা কীভাবে শুরু হয়?

এম. শামসুল আরেফিন: স্কুল ব্যাংকিং মূলত শিক্ষার্থীদের ছোটবেলা থেকে সঞ্চয়ী করে তোলার একটি উদ্যোগ। এটি প্রথম শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে, ১৮৭০ সালের শেষ দিকে। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১১ সালে এটি চালু হয়।

আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিংয়ে এনসিসি ব্যাংকের শেয়ার কত?

এম. শামসুল আরেফিন: চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এনসিসি ব্যাংকে প্রায় ৩০ হাজার স্কুল ব্যাংকিং হিসাব রয়েছে। প্রতিনিয়ত এ সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

আজকের পত্রিকা: বয়সের সীমা কি কোনো অন্তরায়?

এম. শামসুল আরেফিন: মোটেও না। এটা বরং বাড়তি সুযোগ। ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের সহায়তা নিয়ে হিসাব খুলতে পারছে। বড়দের অ্যাকাউন্টে যেসব বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তার কোনোটাই এখানে নেই।

আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিংয়ের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাই।

এম. শামসুল আরেফিন: প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। আর দেশে মোট স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের সংখ্যা সব মিলিয়ে ৪৪ লাখের বেশি। স্কুল ব্যাংকিং হিসাবে জমা আছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর সবই ছোট ছোট পকেটমানি কিংবা নাশতার টাকা কিংবা উপহারের টাকা। এটিএম কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা নিয়ে শিক্ষার্থীরা শুধু নিজেদের নয়, দেশের অর্থনীতিতেও সরাসরি ভূমিকা রাখার সুযোগ পাচ্ছে।

আজকের পত্রিকা: শিক্ষার্থীদের জন্য আগামীতে আর কী কী সুবিধা থাকছে?

এম. শামসুল আরেফিন: এনসিসি ব্যাংক ভবিষ্যতে ‘ইয়ংস্টার ম্যাক্সিমাস’ বা শিক্ষার্থীদের স্থায়ী আমানতকে (এফডিআর) আরও নমনীয় ও বৈচিত্র্যময় মেয়াদে রাখার সুযোগ দেবে। এ ছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই হিসাব খোলা যাবে।

আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিং নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

এম. শামসুল আরেফিন: স্কুল ব্যাংকিং শুধু আর্থিক পণ্য বা সেবা নয়, এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার অন্যতম হাতিয়ার। অর্থ ব্যবস্থাপনা, সঞ্চয়, বিনিয়োগ আর আধুনিক ব্যাংকিংয়ে অভ্যস্ততা এই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা ও সফলতা নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশের জন্য একটি টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি নির্মাণে যার কোনো বিকল্প নেই।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এনসিসি ব্যাংক পিএলসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত