Ajker Patrika

তুলা আমদানির অগ্রিম কর সোমবারের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি বিটিএমএর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
তুলা আমদানির অগ্রিম কর সোমবারের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি বিটিএমএর

তুলা আমদানিতে সরকার ঘোষিত ২ শতাংশ অগ্রিম কর (এআইটি) বাস্তবায়ন হলে দেশের টেক্সটাইল মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে—এমন আশঙ্কায় আগামী সোমবারের মধ্যে এই কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন টেক্সটাইল মিলমালিকেরা।

আজ শনিবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) নেতারা এ দাবি জানান।

তাঁরা বলেন, বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ ও সমস্যাগুলো বিভিন্ন সময়ে সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় এবং সংশ্লিষ্ট অন্য দপ্তরসমূহকে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিলেও দেশের বস্ত্র খাত এখনো অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট সমিতির সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই গত ২৪ জুন এসআরও জারি করে সরকার তুলা আমদানির ওপর ২ শতাংশ অগ্রিম কর আরোপ করে, যা আপাতদৃষ্টিতে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহে সহায়ক মনে হলেও এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী এবং এর ফলে দেশের টেক্সটাইল খাত অধিকতর সংকটাপন্ন হবে।

বিটিএমএ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘আগামী সোমবারের মধ্যে যদি এই ট্যাক্স প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে সরকার যে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নিয়েছে তার ফল হিতে বিপরীত হবে। ইতিমধ্যে বন্দরে থেকে কেউ তুলা খালাস করছেন না। সরকার এই কর সমন্বয়যোগ্য বললেও তা বাস্তবে ফেরত পাওয়ার নজির নেই। এই কর পরিশোধ করতে গেলে আমাদের নতুন করে ব্যাংক ঋণ নিতে হবে।’

বর্তমানে টেক্সটাইল খাতে করপোরেট ট্যাক্সের হার ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ হলেও নতুন এই এআইটির কারণে কার্যকর কর হার প্রায় ৫৯ শতাংশে পৌঁছে যাবে বলেও জানান তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘আমার নিজের একটি টেক্সটাইল মিল আছে, যেখান থেকে সুতা নিয়ে আমি নিজস্ব ডেনিম ফ্যাক্টরিতে ব্যবহার করতাম। কিন্তু এখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখানে আমাকে সুতা কিনতে হবে ভারত থেকে।’

এই পরিস্থিতিতে দেশের কোনো টেক্সটাইল মিল টিকে থাকতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি অবিলম্বে নতুন ট্যাক্স ও ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান।

বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ সরকারের কাছে তিনটি দাবি তুলে ধরেন। প্রথমত, তুলা আমদানিতে ২ শতাংশ এআইট অবিলম্বে প্রত্যাহার করা।

দ্বিতীয়ত, বস্ত্র উৎপাদনে জড়িত কোনো সুতা উৎপাদন, সুতা ডাইয়িং, ফিনিশিং, কোনিং, কাপড় তৈরি, কাপড় ডাইয়িং, প্রিন্টিং অথবা এ ধরনের এক বা একাধিক প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত কোনো মিলের ব্যবসা থেকে অর্জিত আয়ের ওপর প্রদেয় আয়করের হার একই শিল্প খাত হিসেবে আরএমজি সেক্টরের সমপরিমাণ (১২ শতাংশ) ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা।

তৃতীয়ত, দেশীয় টেক্সটাইল মিলে উৎপাদিত কটন সুতা, কৃত্রিম আঁশ ও অন্য আঁশের সংমিশ্রণে তৈরি সুতার ওপর উৎপাদন পর্যায়ে কেজিপ্রতি সুনির্দিষ্ট কর পাঁচ টাকা অব্যাহতি দেওয়া।

বিটিএমএর সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট, দামের ঊর্ধ্বগতি, শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধি, রপ্তানি প্রণোদনা কমানোসহ নানা চাপে শিল্প খাত ইতিমধ্যে বিপর্যস্ত। তার ওপর নতুন করে ট্যাক্স-ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। অথচ প্রতিবেশী দেশগুলো টেক্সটাইল খাতে নানা সুবিধা দিচ্ছে।

‘এভাবে চলতে থাকলে আমাদের দেশের শিল্প কারখানা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। এখন অন্তত ৯০ শতাংশ মালিক তাদের কারখানা বিক্রি করে দিতে আগ্রহী।’

সংগঠনের আরেক ভাইস প্রেসিডেন্ট সালেউদ্দিন জামান খান অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য কেউ এই ধরনের কাজ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল অ্যান্ড লিনেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারাও বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বদলির আদেশ ছিঁড়ে বরখাস্ত হলেন এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা

দরপত্র ছাড়াই জুলাই স্মৃতি জাদুঘরের কাজ পেল দুই প্রতিষ্ঠান, এরা কারা

ট্রাকে করে ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার নথি ইসিতে জমা দিয়েও নিবন্ধন পেল না এনসিপি

বিধি লঙ্ঘন করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হলেন এনসিপি নেতা

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত