Ajker Patrika

চালসহ খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে পুষ্টিহীনতার ঝুঁকি, জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক
জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার (১ জুলাই) দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে খানির সদস্য সংগঠনগুলো। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার (১ জুলাই) দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে খানির সদস্য সংগঠনগুলো। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পরপরই চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিসহ সার্বিক মূল্যস্ফীতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক- খানি। এই সংকট নিরসনে সরকারকে জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার (১ জুলাই) দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে খানির সদস্য সংগঠনগুলো।

“ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও” স্লোগান নিয়ে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ ও নোয়াখালীতে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বেশ কয়েকটি দাবি উত্থাপন করে নেটওয়ার্কটি।

পরিকল্পনা কমিশনের জুন ২০২৫-এর হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের সামগ্রিক খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে এককভাবে চালের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। বোরো মৌসুমে চালের উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকা সত্ত্বেও প্রত্যাশিত স্বস্তি আসেনি বাজারে।

ভাতের চাহিদা মেটানোর দাবি নিয়ে ময়মনসিংহে ফুলপুর থানার সম্মুখে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন কৃষক, শ্রমজীবী মানুষ, অধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

মানববন্ধনে উপস্থিত কৃষকেরা অভিযোগ করেন, তাঁদের উৎপাদিত ধান সস্তায় বেচতে হয়। আবার সেই ধানের চাল মহাজনদের কাছ থেকে উচ্চমূল্যে কিনতে হয়।

আর শ্রমজীবী মানুষেরা বলেন, তাঁদের দৈনিক আয়ের অর্ধেকই চলে যাচ্ছে চাল কেনার পেছনে। তাঁরা ৪০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে চান।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে খানির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদ বলেন, 'আয় ও ক্রয়ক্ষমতার ভারসাম্য না থাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা থেকে পুষ্টিকর উপাদান যেমন মাছ, মাংস, ডাল বা সবজি বাদ দিয়ে শুধু ভাত-নির্ভর খাবার খাচ্ছেন, যা দীর্ঘমেয়াদে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্যহীনতা মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।'

জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রতি ১০ জনে ৩ জন প্রয়োজনীয় খাদ্য সংস্থান করতে পারছেন না। নিম্ন আয়ের মানুষের ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ৩৬ শতাংশ। পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ২৯ শতাংশ মানুষ খাবারে ব্যয় সংকোচন করছেন।

বরিশাল অশ্মীনিকুমার টাউনহলের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে ক্যাবের সম্পাদক রণজিৎ দত্ত বলেন, 'মিল পর্যায়ে খরচ বৃদ্ধি, ধানের দামে অস্থিরতা, অবৈধ মজুতদারি এবং বাজার নজরদারির অভাবে চালের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। এর ফলে কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, অথচ ভোক্তাকে চড়া মূল্যে চাল কিনতে হচ্ছে।'

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিছু পরামর্শ তুলে ধরেছে খানি। তাদের পরামর্শগুলোর মধ্যে রয়েছে: কৃষকের কাছ থেকে সরকারের সরাসরি চাল কেনার আওতা বৃদ্ধি করা; দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা; বাজার, উৎপাদন, মূল্য নির্ধারণ এবং ভোগের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ; ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তার সহায়তায় টিসিবি এবং ওএমএস কর্মসূচির আওতাবৃদ্ধির মাধ্যমে প্রয়োজনভিত্তিক সহায়তার উদ্যোগ গ্রহণ এবং যথাযথ মনিটরিং এবং সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা রোধ করার মাধ্যমে দ্রুত বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে চালের মূল্য ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তির পরই অস্ত্রের লাইসেন্স পান উপদেষ্টা আসিফ

চীনের নতুন হাইপারসনিক এয়ারক্র্যাফট, গতি ঘণ্টায় প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এনপিবি পিস্তল কী ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র

জুলাই নিয়ে ফেসবুকে পুলিশ সদস্যের আপত্তিকর পোস্ট, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

১৬ জুলাই নিয়ে নাটক করা হয়েছে: শহীদ আবু সাঈদের ভাই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত