জালে ইলিশ ধরা পড়ছে কম
রোকন উদ্দীন, ঢাকা
নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ১ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ইলিশ ধরার মৌসুম, যা চলবে আগস্টের শেষ পর্যন্ত। কিন্তু অবাক করার মতো বিষয় হলো—ভরা মৌসুমেও সাগর-নদী থেকে জেলেরা প্রত্যাশিত ইলিশ পাচ্ছেন না। প্রতিবছর এই সময় দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জেলেরা রুপালি ইলিশ শিকারে ব্যস্ত সময় কাটান। এখানকার নিঝুম দ্বীপ, বন্দরটিলা, সুইজের ঘাট, মোক্তারিয়া, দানারদোল, সূর্যমুখী, কাজিরবাজার, বাংলাবাজার, চেয়ারম্যান ঘাটসহ বড় ২০টি ঘাটে ছোট-বড় প্রায় ১০ হাজার জেলে নৌকা নিয়ে নদীতে নামেন। এবারও জেলেরা আগের মতোই প্রস্তুতি নিয়ে শিকারে নেমেছেন, কিন্তু বিচরণ এলাকায় জালে মাছ ধরা পড়ছে অনেক কম। ইলিশ বিচরণের অন্যান্য এলাকাতেও একই চিত্র। সর্বত্রই ইলিশ না পাওয়ার হতাশা।
এর প্রভাব পড়ছে সারা দেশের সরবরাহে। পাইকারি বাজারগুলোতেও যেন ইলিশের হাহাকার। এতে সুযোগ নিচ্ছেন আড়তদারেরা—ক্রেতা বেশি দেখলেই নিলামে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। যাঁরা বেশি দাম দিচ্ছেন, ইলিশ যাচ্ছে তাঁদের হাতেই। এরপর পরিবহন খরচসহ অন্যান্য ব্যয় যোগ করে পাইকারি বিক্রেতারা দাম তুলছেন আরও ওপরে। সেই ইলিশ যখন খুচরা বাজারে পৌঁছায়, তখন দরিদ্র বা নিম্নবিত্ত তো দূরের কথা, মধ্যবিত্তের পক্ষেও কেনা কঠিন হয়ে পড়ছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, ইলিশ এখন বাজারে একধরনের ‘বিলাসী পণ্য’, যার স্বাদ কেবল ধনী শ্রেণিই নিতে পারছে।
ভরা মৌসুমে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মৎস্য অধিদপ্তরের সামুদ্রিক মৎস্য জরিপ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা আজকের পত্রিকা'কে বলেন, এ বছর অতিবৃষ্টির প্রভাব স্পষ্ট। মৌসুম শুরুর আগে প্রচুর জাটকা দেখে মনে হয়েছিল ইলিশে ভরপুর মৌসুম আসছে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সাগর-নদী বেশির ভাগ সময় উত্তাল থাকায় জেলেরা গভীরে নামতে পারেননি। কেউ নামলেও উত্তাল পানিতে শিকার ও ব্যবস্থাপনা ঠিকভাবে করতে পারেননি। জলবায়ু পরিবর্তন ও নদীদূষণে পানির গুণমানও ক্রমেই খারাপ হচ্ছে, যা ইলিশ না পাওয়ার বড় কারণ। এ প্রভাব শুধু পরিমাণে নয়, আকারেও পড়ছে—ইলিশ ছোট হয়ে যাচ্ছে, এমনকি অল্প বয়সী ছোট মাছেও ডিম পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই এই প্রবণতা বাড়ছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ইলিশ আহরণ হয়েছিল ৫ লাখ ৭১ হাজার টন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা নেমে এসেছে ৫ লাখ ২৯ হাজার টনে—মানে কমেছে ৪২ হাজার টন। চলতি অর্থবছরে এ সংখ্যা আরও কমতে পারে।
ইলিশ শিকারের অন্যতম বড় জোন হাতিয়া উপজেলা। উপজেলার সূর্যমুখী ঘাট মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়েজুর রহমান নান্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৯৯৩ সাল থেকে মাছের ব্যবসায় আছি, কিন্তু এমন খারাপ অবস্থা কখনো দেখিনি। মৌসুমের শুরু থেকেই মাছ নেই। অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে চলে গেছেন। ঘাটে পড়ে আছে অসংখ্য নৌকা, জেলেরা অন্যত্র চলে গেছেন। সবার মুখে হতাশা।’
বিজ্ঞানীদের মতে, সামুদ্রিক মাছ হলেও ডিম ছাড়তে ইলিশ স্রোতস্বিনী নদীতে আসে। কিন্তু এটি খুব সংবেদনশীল মাছ—প্রতিকূল আবহাওয়ায় ঘন ঘন গতিপথ বদলায়। হাতিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান জানান, নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠা, কলকারখানার বর্জ্য পড়া, মা ইলিশ ধরা এবং জাটকা নিধন ঠেকাতে না পারা—সব মিলিয়েই কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ার জন্য দায়ী।
বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃত। ওয়ার্ল্ড ফিশের হিসাবে, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশই উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। অথচ এখন সেই ইলিশের দেখা মিলছে বাজারে খুব কম।
রাজধানীর রামপুরা বাজারের বিক্রেতা মো. ইয়াকুব বলেন, ‘১৫ বছর ধরে মাছ বিক্রি করছি, ভরা মৌসুমে এমন দাম আর সরবরাহ ঘাটতি আগে দেখিনি।’ সেখানে ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশ কেজি ১,৪০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রামের ইলিশ ১,৮০০ টাকা, ২৫০ গ্রামের জাটকা ৯০০ টাকা, আর এক কেজি ওজনের ইলিশ বিরল—পেলেই দাম ২,২০০-২,৪০০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, চলতি বছর খুচরায় গত বছরের চেয়ে গড়ে ১৬ শতাংশ বেশি দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীতে এখন কেজি ৮০০-২,০০০ টাকায় ইলিশ মিলছে, যেখানে গত বছর দাম ছিল ৮০০-১,৬০০ টাকা।
মুগদা টাওয়ার বাজারের ক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বেড়াতে এসেছেন, তাই বাধ্য হয়ে কিনেছি। যে দামে একটা ইলিশ কিনেছি, তাতে তিন কেজির বেশি গরুর মাংস পাওয়া যেত।’
নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ১ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ইলিশ ধরার মৌসুম, যা চলবে আগস্টের শেষ পর্যন্ত। কিন্তু অবাক করার মতো বিষয় হলো—ভরা মৌসুমেও সাগর-নদী থেকে জেলেরা প্রত্যাশিত ইলিশ পাচ্ছেন না। প্রতিবছর এই সময় দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জেলেরা রুপালি ইলিশ শিকারে ব্যস্ত সময় কাটান। এখানকার নিঝুম দ্বীপ, বন্দরটিলা, সুইজের ঘাট, মোক্তারিয়া, দানারদোল, সূর্যমুখী, কাজিরবাজার, বাংলাবাজার, চেয়ারম্যান ঘাটসহ বড় ২০টি ঘাটে ছোট-বড় প্রায় ১০ হাজার জেলে নৌকা নিয়ে নদীতে নামেন। এবারও জেলেরা আগের মতোই প্রস্তুতি নিয়ে শিকারে নেমেছেন, কিন্তু বিচরণ এলাকায় জালে মাছ ধরা পড়ছে অনেক কম। ইলিশ বিচরণের অন্যান্য এলাকাতেও একই চিত্র। সর্বত্রই ইলিশ না পাওয়ার হতাশা।
এর প্রভাব পড়ছে সারা দেশের সরবরাহে। পাইকারি বাজারগুলোতেও যেন ইলিশের হাহাকার। এতে সুযোগ নিচ্ছেন আড়তদারেরা—ক্রেতা বেশি দেখলেই নিলামে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। যাঁরা বেশি দাম দিচ্ছেন, ইলিশ যাচ্ছে তাঁদের হাতেই। এরপর পরিবহন খরচসহ অন্যান্য ব্যয় যোগ করে পাইকারি বিক্রেতারা দাম তুলছেন আরও ওপরে। সেই ইলিশ যখন খুচরা বাজারে পৌঁছায়, তখন দরিদ্র বা নিম্নবিত্ত তো দূরের কথা, মধ্যবিত্তের পক্ষেও কেনা কঠিন হয়ে পড়ছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, ইলিশ এখন বাজারে একধরনের ‘বিলাসী পণ্য’, যার স্বাদ কেবল ধনী শ্রেণিই নিতে পারছে।
ভরা মৌসুমে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মৎস্য অধিদপ্তরের সামুদ্রিক মৎস্য জরিপ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা আজকের পত্রিকা'কে বলেন, এ বছর অতিবৃষ্টির প্রভাব স্পষ্ট। মৌসুম শুরুর আগে প্রচুর জাটকা দেখে মনে হয়েছিল ইলিশে ভরপুর মৌসুম আসছে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সাগর-নদী বেশির ভাগ সময় উত্তাল থাকায় জেলেরা গভীরে নামতে পারেননি। কেউ নামলেও উত্তাল পানিতে শিকার ও ব্যবস্থাপনা ঠিকভাবে করতে পারেননি। জলবায়ু পরিবর্তন ও নদীদূষণে পানির গুণমানও ক্রমেই খারাপ হচ্ছে, যা ইলিশ না পাওয়ার বড় কারণ। এ প্রভাব শুধু পরিমাণে নয়, আকারেও পড়ছে—ইলিশ ছোট হয়ে যাচ্ছে, এমনকি অল্প বয়সী ছোট মাছেও ডিম পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই এই প্রবণতা বাড়ছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ইলিশ আহরণ হয়েছিল ৫ লাখ ৭১ হাজার টন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা নেমে এসেছে ৫ লাখ ২৯ হাজার টনে—মানে কমেছে ৪২ হাজার টন। চলতি অর্থবছরে এ সংখ্যা আরও কমতে পারে।
ইলিশ শিকারের অন্যতম বড় জোন হাতিয়া উপজেলা। উপজেলার সূর্যমুখী ঘাট মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়েজুর রহমান নান্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৯৯৩ সাল থেকে মাছের ব্যবসায় আছি, কিন্তু এমন খারাপ অবস্থা কখনো দেখিনি। মৌসুমের শুরু থেকেই মাছ নেই। অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে চলে গেছেন। ঘাটে পড়ে আছে অসংখ্য নৌকা, জেলেরা অন্যত্র চলে গেছেন। সবার মুখে হতাশা।’
বিজ্ঞানীদের মতে, সামুদ্রিক মাছ হলেও ডিম ছাড়তে ইলিশ স্রোতস্বিনী নদীতে আসে। কিন্তু এটি খুব সংবেদনশীল মাছ—প্রতিকূল আবহাওয়ায় ঘন ঘন গতিপথ বদলায়। হাতিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান জানান, নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠা, কলকারখানার বর্জ্য পড়া, মা ইলিশ ধরা এবং জাটকা নিধন ঠেকাতে না পারা—সব মিলিয়েই কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ার জন্য দায়ী।
বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃত। ওয়ার্ল্ড ফিশের হিসাবে, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশই উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। অথচ এখন সেই ইলিশের দেখা মিলছে বাজারে খুব কম।
রাজধানীর রামপুরা বাজারের বিক্রেতা মো. ইয়াকুব বলেন, ‘১৫ বছর ধরে মাছ বিক্রি করছি, ভরা মৌসুমে এমন দাম আর সরবরাহ ঘাটতি আগে দেখিনি।’ সেখানে ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশ কেজি ১,৪০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রামের ইলিশ ১,৮০০ টাকা, ২৫০ গ্রামের জাটকা ৯০০ টাকা, আর এক কেজি ওজনের ইলিশ বিরল—পেলেই দাম ২,২০০-২,৪০০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, চলতি বছর খুচরায় গত বছরের চেয়ে গড়ে ১৬ শতাংশ বেশি দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীতে এখন কেজি ৮০০-২,০০০ টাকায় ইলিশ মিলছে, যেখানে গত বছর দাম ছিল ৮০০-১,৬০০ টাকা।
মুগদা টাওয়ার বাজারের ক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বেড়াতে এসেছেন, তাই বাধ্য হয়ে কিনেছি। যে দামে একটা ইলিশ কিনেছি, তাতে তিন কেজির বেশি গরুর মাংস পাওয়া যেত।’
টেকসই কৃষি উন্নয়নের অংশ হিসেবে রংপুর অঞ্চলে ‘আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে টেকসই কৃষি উন্নয়ন’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রংপুর বিভাগের ৫ জেলার গ্রামীণ দারিদ্র্য কমবে, টেকসই কৃষি...
৪ ঘণ্টা আগেব্র্যাক ব্যাংকের স্মার্ট ব্যাংকিং অ্যাপ ‘আস্থা’ সম্প্রতি ১০ লাখ গ্রাহকের মাইলফলক অর্জন করেছে। একই সঙ্গে, ২০২৫ সালের জুলাই মাসে এই অ্যাপের মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে মাসিক অ্যাপ-ভিত্তিক লেনদেনের একটি নতুন রেকর্ড।
৪ ঘণ্টা আগেআমাদের দেশে ড্রাইভিংয়ের অভিজ্ঞতা অন্যান্য দেশের চেয়ে ভিন্ন। এখানকার রাস্তা, আবহাওয়া আর ট্রাফিকের ধরন গাড়ির ইঞ্জিনের ওপর বেশ লোড বাড়িয়ে দেয়। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে এমজেএল বাংলাদেশ পিএলসি বাজারে নিয়ে এসেছে Mobil Super™ All-In-One Protection 0 W-16।
৬ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি ৩৯টি নির্দেশনামূলক পদক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (১৩ আগস্ট) গ্রিন রোডে পানি ভবনে বোর্ডের কার্যালয়ে সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে সংস্থার মহাপরিচালক মো. এনায়েত উল্লাহর এক মতবিনিময় সভায় এসব নির্দেশনা উপস্থাপন কর
৯ ঘণ্টা আগে