Ajker Patrika

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী, শেয়ারবাজারে পতন

এএফপি, নিউইয়র্ক
ছবি: আনাদোলু
ছবি: আনাদোলু

ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের গত বৃহস্পতিবার রাতের বিধ্বংসী হামলার জবাবে ইরানও ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। তারপর থেকে পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল শুক্রবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম একপর্যায়ে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। দিনশেষে তা কিছুটা কমলেও, বৃদ্ধি এখনো ৭ শতাংশের ঘরে। ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দর দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ২৩ ডলার এবং ডব্লিউটিআইয়ের ৭২ দশমিক ৯৮ ডলার। জ্বালানির এই মূল্যবৃদ্ধি নতুন করে বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা উসকে দিয়েছে।

এদিকে ইউরোপ ও এশিয়ার শেয়ারবাজারে দরপতনের পর নিউইয়র্কের ওয়াল স্ট্রিটেও একই চিত্র দেখা যায়। শুক্রবার দিনের শেষ দিকে শেয়ারবাজারের সূচক ১ শতাংশের বেশি পড়ে যায়।

মার্কিন সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি বি. রাইলি ওয়েলথের প্রধান বাজার বিশ্লেষক আর্ট হোগান বলেন, ‘মে ও জুনের প্রথম ভাগে বাজারে ইতিবাচক গতি দেখা গেলেও বিনিয়োগকারীরা এখন লাভ তুলে নিতে অস্থির হয়ে পড়েছেন।’

মধ্যপ্রাচ্যের অনেক গন্তব্যে ফ্লাইট স্থগিত বা বাতিল হওয়ায় বড় বড় এয়ারলাইনসের শেয়ারে ব্যাপক দরপতন ঘটে।

পরিস্থিতির অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে ডলারের মান বেড়েছে এবং সোনার দাম পৌঁছে গেছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ডলার প্রতি আউন্সে। এটি এপ্রিলের রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি। বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত সোনার মূল্য বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।

ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার ট্রেড নেশনের জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক ডেভিড মরিসন বলেন, ‘দরপতন ও নিরাপদ সম্পদের দিকে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকে পড়া প্রমাণ করে বাজার কতটা দুর্বল এবং ভূরাজনৈতিক ঘটনাবলির প্রভাবে কতটা আতঙ্কিত। এখন প্রশ্ন হলো, এ সংঘর্ষ কি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি এটি মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ভয়াবহ সংকটের সূচনা ঘটাবে?’

ইন্টার‍্যাকটিভ ব্রোকারসের স্টিভ সসনিক বলেন, বাজারে এখন ঠিক আতঙ্ক নয়, বরং ‘অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণের’ মনোভাব চলছে। তবে যেকোনো মুহূর্তে উত্তেজনা বাড়লে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে।

এবুরির মার্কেট স্ট্র্যাটেজি প্রধান ম্যাথিউ রায়ান বলেন, ‘সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হলো—এ সংঘর্ষ দীর্ঘ মেয়াদে চলতে থাকলে ইরানের তেল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে, যার প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘তেলের মূল্যবৃদ্ধি শুধু মুদ্রাস্ফীতির জন্যই হুমকি নয়, এটি বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতিও কমিয়ে দিতে পারে। এতে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর নীতিনির্ধারণ আরও কঠিন হয়ে পড়বে—তারা সুদের হার বাড়াবে নাকি কমাবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত