Ajker Patrika

অধিকাংশ ব্যাংকের অডিট প্রতিবেদনে বানোয়াট তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, ০০: ৩৪
ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত
ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

দেশের অধিকাংশ ব্যাংকের অডিট প্রতিবেদনে বাস্তবতার প্রতিফলন নেই। এসব প্রতিবেদনের অনেকটা কাল্পনিক বা বানোয়াট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফের চাপে নয়, বরং নিজেদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও বিনিয়োগ আস্থার জন্যই আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও সংস্কার জরুরি।

আজ বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং সামিটে এসব মন্তব্য উঠে আসে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর সৌলেমানে কুলিবালি এবং দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। সভাপতিত্ব করেন অর্থসচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এফআরসির চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আর্থিক খাতের সংস্কারে অনেক বাধা ও জটিলতা থাকলেও সরকার নিজ উদ্যোগে তা বাস্তবায়নে কাজ করছে। অনেকে মনে করছেন, শুধু বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের চাপেই আর্থিক খাত সংস্কার হচ্ছে; বাস্তবে এমনটি নয়। সরকারের নিজস্ব উদ্যোগেও সংস্কার হচ্ছে।

একটি ব্যাংকের রিপোর্টে দেখা যায়, তাদের খেলাপি ঋণ ৪ শতাংশ। কিন্তু আমরা অডিট করে দেখেছি ৯৬ শতাংশ। আহসান এইচ মনসুর গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘দেশের অধিকাংশ ব্যাংকের অডিট প্রতিবেদনে কাল্পনিক বা বানোয়াট (ফিকশন) তথ্য পাওয়া গেছে। একটি ব্যাংকের রিপোর্টে দেখা যায়, তাদের খেলাপি ঋণ ৪ শতাংশ। কিন্তু আমরা অডিট করে দেখেছি ৯৬ শতাংশ।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, অধিকাংশ ব্যাংকের অডিট রিপোর্টে গরমিল পাওয়া যায়। ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি (রিস্ক-বেসড সুপারভিশন) পুরোপুরি কার্যকর হবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে বিশ্বাস অর্জন করতে গেলে অডিট রিপোর্টে স্বচ্ছতা ও সঠিক তথ্য দিয়ে রিপোর্ট সাবমিট করতে হবে। এর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে কাজ করবে। পাওনা নিয়ে চার সরকারি প্রতিষ্ঠানে অডিট করতে গেলে তারা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেনি। যদি অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড কোনো প্রতিষ্ঠান অনুসরণ না করে, তাদের ওপর শাস্তি আরোপ করা উচিত।

অনুষ্ঠানে দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমানে আমি যদি অডিট রিপোর্ট দিয়ে বিচার করি, তাহলে স্বচ্ছ অডিটর পাওয়া যাবে না। আইএফআইসি ব্যাংকে প্রচুর কেলেঙ্কারি হয়েছে। সালমান এফ রহমান অডিটরের সহায়তায় একটা পেপার কোম্পানির তথ্য ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়ে অর্থ নিয়েছেন। গত শাসনামলে ব্যাংক খাতে একের পর এক আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য লুকানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েকটি শীর্ষ অডিট ফার্মকে চিহ্নিত করেছে, এটা প্রশংসার দাবিদার। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’

এফআরসির চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশ যখন একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সুসংগঠিত প্রতিষ্ঠান ও সুশাসনের প্রয়োজনীয়তা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত