Ajker Patrika

কিস্তি ও প্রভিশনে ছাড়ের জন্য বাড়ল খেলাপি ঋণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২: ৩২
কিস্তি ও প্রভিশনে ছাড়ের জন্য বাড়ল খেলাপি ঋণ

বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের শর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) দেশের সরকারি ব্যাংকে খেলাপির হার মোট ঋণের ১০ শতাংশ এবং বেসরকারি ব্যাংকে তা ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে সময় বেঁধে দিয়েছে। খেলাপি কমাতে চুক্তিও করেছে ব্যাংকগুলো। কিন্তু ফলাফল প্রায় শূন্য। উল্টো খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর পেছনে কিস্তি পরিশোধে গ্রাহককে ও প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যাংকগুলোর ছাড় দেওয়াকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকিং খাতে নাজুক অবস্থা চলছে। এর কারণ, খেলাপি গ্রাহক ও ব্যাংককে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। আবার অর্থঋণ আদালতের সুযোগ নিয়ে অনেকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হচ্ছে, যা খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়াচ্ছে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণে যত বেশি উদারতা দেখাচ্ছে, খেলাপি তত বাড়ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে কোনো চুক্তি বা আইএমএফের শর্ত কাজে লাগবে না।

জানা গেছে, ২০১২ সালের দিকে গ্রাহকদের কিস্তি পরিশোধে কয়েক বছরের ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৮ সালেও ঋণগ্রহীতাদের ছাড় দেওয়া হয়। করোনাকালে ঋণ পরিশোধের কিস্তিতে মরাটরিয়াম সুবিধা পায় গ্রাহক। এরপর ২০২২ সালে ব্যাংকগুলোর হাতে ঋণ পুনঃ তফসিলের ক্ষমতা দেওয়া হয়। এ ছাড়া চলতি বছর আরেক সুবিধা দিয়ে বলা হয়, কিস্তির ৫০ শতাংশ শোধ করলে খেলাপি নয়; পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রক্ষায় বিশেষ ছাড় পায়।

গ্রাহক ও ব্যাংকগুলোকে দেওয়া একের পর এক এমন ছাড়ই খেলাপি বাড়িয়ে তুলেছে। এখন এসব সুবিধা বন্ধ করে খেলাপিদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে অর্থনীতি বিশ্লেষক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খাতাকলমে দেখানো হচ্ছে ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, কিন্তু বাস্তবে এই ঋণের অঙ্ক অনেক বেশি। খেলাপি ঋণ ধারাবাহিক বাড়তে থাকা মানে ব্যাংকিং খাতে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে। এতে করে ব্যাংকগুলোর ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা কমবে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগও কমে যাবে। ফলে কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে। সর্বোপরি দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে, যা আমাদের কাম্য নয়। এখন সুবিধা বন্ধ করে খেলাপিদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করতে হবে। কঠোর অবস্থায় যাওয়া ছাড়া এখন আর কোনো বিকল্প উপায় নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত