Ajker Patrika

স্বাধীনতার পর যত বাজেট, অন্তর্বর্তী সরকারগুলোর বাজেট যেভাবে আলাদা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০২ জুন ২০২৫, ১৫: ২০
স্বাধীনতার পর যত বাজেট, অন্তর্বর্তী সরকারগুলোর বাজেট যেভাবে আলাদা

১৯৭১ সাল থেকে বর্তমান ২০২৫ সাল পর্যন্ত, বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট দেশের অর্থনৈতিক যাত্রার এক বিশাল চিত্র তুলে ধরে। এই দীর্ঘ সময়ে বাজেট শুধু আকারের দিক থেকেই বাড়েনি, বরং এর দর্শন, অগ্রাধিকার এবং অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটও বহুলাংশে পরিবর্তিত হয়েছে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাজেট সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকে, যা নির্বাচিত সরকারের বাজেট থেকে ভিন্ন। নিচে বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকে এ যাবৎ অর্থ বাজেটের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হলো:

প্রথম দশক: যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন (১৯৭১-৮০)

১৯৭১-৭২ অর্থবছর: এটি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট। তাজউদ্দীন আহমদ অর্থমন্ত্রী হিসেবে এই বাজেট পেশ করেন। এটি মূলত ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে ৩০ জুন ১৯৭২ পর্যন্ত সময়ের জন্য ছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের পুনর্গঠন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন ছিল এর মূল লক্ষ্য।

১৯৭২-৭৩ অর্থবছর: স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট এটি, পেশ করেন তাজউদ্দীন আহমদ। আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা (উন্নয়ন বাজেট ৫০১ কোটি টাকা)।

১৯৭৩-৭৪ অর্থবছর: তাজউদ্দীন আহমদ, ৯৯৫ কোটি টাকা।

১৯৭৪-৭৫ অর্থবছর: তাজউদ্দীন আহমদ, ১, ০৮৪ কোটি টাকা।

১৯৭৫-৭৬ অর্থবছর: ড. আজিজুর রহমান মল্লিক, ১, ৫৪৯ কোটি টাকা।

১৯৭৬-৭৭ অর্থবছর: মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ১, ৯৮৯ কোটি টাকা।

১৯৭৭-৭৮ অর্থবছর: লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান, ২, ১৮৪ কোটি টাকা।

১৯৭৮-৭৯ অর্থবছর: প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, ২, ৪৯৯ কোটি টাকা।

১৯৭৯-৮০ অর্থবছর: ড. এম. এন. হুদা, ৩, ৩১৭ কোটি টাকা।

১৯৮০-৮১ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ৪, ১০৮ কোটি টাকা।

এই দশকে বাজেট মূলত কৃষি, গ্রামীণ উন্নয়ন, অবকাঠামো পুনর্গঠন এবং শিল্প খাতের প্রাথমিক বিকাশের ওপর জোর দেয়। যুদ্ধকালীন ক্ষতির প্রভাব কাটিয়ে অর্থনীতিকে দাঁড় করানোর চেষ্টাই ছিল প্রধান।

দ্বিতীয় দশক: সামরিক শাসন ও অর্থনৈতিক উদারীকরণ শুরু (১৯৮১-৯০)

১৯৮১-৮২ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ৪, ৬৭৭ কোটি টাকা।

১৯৮২-৮৩ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ৪, ৭৩৮ কোটি টাকা। (এরশাদ সরকারের প্রথম বাজেট)

১৯৮৩-৮৪ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ৫, ৮৯৬ কোটি টাকা।

১৯৮৪-৮৫ অর্থবছর: এম. সাইদুজ্জামান, ৬, ৬৯৯ কোটি টাকা।

১৯৮৫-৮৬ অর্থবছর: এম. সাইদুজ্জামান, ৭, ১৩৮ কোটি টাকা।

১৯৮৬-৮৭ অর্থবছর: এম. সাইদুজ্জামান, ৮, ৫০৪ কোটি টাকা।

১৯৮৭-৮৮ অর্থবছর: এম. সাইদুজ্জামান, ৮, ৫২৭ কোটি টাকা।

১৯৮৮-৮৯ অর্থবছর: মেজর জেনারেল মুনিম, ১০, ৫৬৫ কোটি টাকা।

১৯৮৯-৯০ অর্থবছর: ড. ওয়াহিদুল হক, ১২, ৭০৩ কোটি টাকা।

১৯৯০-৯১ অর্থবছর: মেজর জেনারেল মুনিম, ১২, ৯৬০ কোটি টাকা।

এই দশকে সামরিক সরকারের অধীনে বাজেট পেশ করা হয়। ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক উদারীকরণ এবং বেসরকারি খাতের প্রতি কিছুটা মনোযোগ দেখা যেতে শুরু করে। বাজেটের আকার ধীর গতিতে বৃদ্ধি পায়।

তৃতীয় দশক: গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও সংস্কারের যাত্রা (১৯৯১-২০০০)

১৯৯১-৯২ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ১৫, ৫৮৪ কোটি টাকা। (গণতন্ত্রে ফেরার পর প্রথম বাজেট)

১৯৯২-৯৩ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ১৭, ৬০৭ কোটি টাকা।

১৯৯৩-৯৪ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ১৯, ০৫০ কোটি টাকা।

১৯৯৪-৯৫ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ২০, ৯৪৮ কোটি টাকা।

১৯৯৫-৯৬ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ২৩, ১৭০ কোটি টাকা।

১৯৯৬-৯৭ অর্থবছর: শাহ এ. এম. এস. কিবরিয়া, ২৪, ৬০৩ কোটি টাকা।

১৯৯৭-৯৮ অর্থবছর: শাহ এ. এম. এস. কিবরিয়া, ২৭, ৭৮৬ কোটি টাকা।

১৯৯৮-৯৯ অর্থবছর: শাহ এ. এম. এস. কিবরিয়া, ২৯, ৫৩৭ কোটি টাকা।

১৯৯৯-০০ অর্থবছর: শাহ এ. এম. এস. কিবরিয়া, ৩৪, ২৫২ কোটি টাকা।

২০০০-০১ অর্থবছর: শাহ এ. এম. এস. কিবরিয়া, ৩৮, ৫২৪ কোটি টাকা।

গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর বাজেট প্রণয়নে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। সংস্কার কর্মসূচি, যেমন বেসরকারীকরণ এবং বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা বাজেটে প্রতিফলিত হয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতের গুরুত্ব বাড়তে থাকে।

চতুর্থ দশক: প্রবৃদ্ধি ও চ্যালেঞ্জ (২০০১-১০)

২০০১-০২ অর্থবছর: শাহ এ. এম. এস. কিবরিয়া, ৪২, ৩০৬ কোটি টাকা।

২০০২-০৩ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ৪৪, ৮৫৪ কোটি টাকা।

২০০৩-০৪ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ৫১, ৯৮০ কোটি টাকা।

২০০৪-০৫ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ৫৭, ২৪৮ কোটি টাকা।

২০০৫-০৬ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ৬১, ০৫৮ কোটি টাকা।

২০০৬-০৭ অর্থবছর: এম. সাইফুর রহমান, ৬৯, ৭৪০ কোটি টাকা।

২০০৭-০৮ অর্থবছর: মির্জা আজিজুল ইসলাম (তত্ত্বাবধায়ক সরকার), ৯৯, ৯৬২ কোটি টাকা।

২০০৮-০৯ অর্থবছর: মির্জা আজিজুল ইসলাম (তত্ত্বাবধায়ক সরকার), ৯৯, ৯৬২ কোটি টাকা।

২০০৯-১০ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ১, ১৩,৮১৫ কোটি টাকা। (আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম বাজেট)

২০১০-১১ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ১, ৩২,১৭০ কোটি টাকা।

এই দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গতি পায়। তবে ২০০৭-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বাজেট প্রণয়নে ভিন্নতা দেখা যায়, যেখানে নীতিগত বড় পরিবর্তন পরিহার করা হয়। ২০০৯ সালে নতুন সরকার আসার পর বাজেটের আকার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলোর বাজেটের সাধারণ বৈশিষ্ট্য:

তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলো সাধারণত একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে গঠিত হয়। তাদের প্রধান কাজ দৈনন্দিন কার্যাবলি সম্পাদন এবং নীতি-নির্ধারণী কোনো বড় সিদ্ধান্ত না নেওয়া। এই কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলোর বাজেট সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য ধারণ করে:

নীতি-নির্ধারণী পরিবর্তন পরিহার: তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলো সাধারণত বড় ধরনের নীতি-নির্ধারণী পরিবর্তন বা নতুন কোনো জনমুখী প্রকল্প গ্রহণ থেকে বিরত থাকে। তাদের বাজেট মূলত সরকারের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখা এবং অপরিহার্য ব্যয় নির্বাহের ওপর জোর দেয়।

সংযমী বাজেট: যেহেতু তাদের মেয়াদ সীমিত এবং তাদের প্রধান কাজ নির্বাচন আয়োজন, তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলো সাধারণত একটি সংযমী বা সংকোচনমূলক বাজেট উপস্থাপন করে। এতে বাজেটের আকার খুব বেশি বৃদ্ধি পায় না এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর চেষ্টা করা হয়।

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর জোর: অর্থনীতির মৌলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো ঠিক রাখা তাদের বাজেটের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য থাকে। তারা অর্থনৈতিক সংস্কারের বদলে বিদ্যমান ধারাকে স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করে।

ঘাটতি ব্যবস্থাপনা: নির্বাচিত সরকারের মতো তারাও বাজেট ঘাটতি পূরণের জন্য দেশি-বিদেশি ঋণ এবং অন্যান্য উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা করে, তবে সাধারণত সতর্কতার সঙ্গে।

সংসদের বাইরে বাজেট পেশ: যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কোনো নির্বাচিত সংসদ থাকে না, তাই তাদের বাজেট সাধারণত সংসদ ভবনের বাইরে, যেমন টেলিভিশন ও বেতারে সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে পেশ করা হয়। ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর অর্থ উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম সেভাবেই বাজেট পেশ করেছিলেন।

পঞ্চম দশক: মেগা প্রকল্প ও উন্নয়ন অগ্রাধিকার (২০১১-২০২০)

২০১১-১২ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ১, ৬১,২১৪ কোটি টাকা।

২০১২-১৩ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ১, ৯১,৭৩৮ কোটি টাকা।

২০১৩-১৪ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ২, ২২,৪৯১ কোটি টাকা।

২০১৪-১৫ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ২, ৫০,৫৬০ কোটি টাকা।

২০১৫-১৬ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ২, ৯৫,১০০ কোটি টাকা।

২০১৬-১৭ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ৩, ৪০,৬০৫ কোটি টাকা।

২০১৭-১৮ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ৪, ০০,২৬৬ কোটি টাকা।

২০১৮-১৯ অর্থবছর: এ. এম. এ. মুহিত, ৪, ৬৪,৫৭৩ কোটি টাকা।

২০১৯-২০ অর্থবছর: আ হ ম মুস্তফা কামাল, ৫, ২৩,১৯০ কোটি টাকা।

২০২০-২১ অর্থবছর: আ হ ম মুস্তফা কামাল, ৫, ৬৮,০০০ কোটি টাকা।

এই দশকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে যায়। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা বাজেটে প্রতিফলিত হয়। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ানো হয়। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বাজেটে স্বাস্থ্য খাত এবং প্রণোদনা প্যাকেজের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

ষষ্ঠ দশক: কোভিড-১৯ পরবর্তী পুনরুদ্ধার ও বর্তমান চ্যালেঞ্জ (২০২১-২৪)

২০২১-২২ অর্থবছর: আ হ ম মুস্তফা কামাল, ৬, ০৩,৬৮১ কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থবছর: আ হ ম মুস্তফা কামাল, ৬, ৭৮,০৬৪ কোটি টাকা।

২০২৩-২৪ অর্থবছর: আ হ ম মুস্তফা কামাল, ৭, ৬১,৭৮৫ কোটি টাকা। (সংশোধিত হতে পারে)

২০২৪-২৫ অর্থবছর (প্রস্তাবিত) : আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ৭, ৯৭,০০০ কোটি টাকা।

এই দশকে কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলা করা বাজেটের প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ডলার সংকট, রেমিট্যান্স হ্রাস, জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ বাজেটের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশের বাজেটের বিবর্তন: একটি সামগ্রিক চিত্র

  • আকারের বৃদ্ধি: ১৯৭১ সালের মাত্র ৭০০ কোটি টাকার বাজেট থেকে ২০২৫ সালে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছানো বাংলাদেশের অর্থনীতির বিশাল সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দেয়।
  • উন্নয়ন অগ্রাধিকার: প্রথম দিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের মৌলিক চাহিদা পূরণ এবং অবকাঠামো নির্মাণে জোর দেওয়া হলেও, পরবর্তীতে সামাজিক খাত, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং মেগা প্রকল্পগুলোতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • অর্থনীতিতে সরকারের ভূমিকা: প্রথম দিকে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ বেশি থাকলেও, নব্বইয়ের দশক থেকে ধীরে ধীরে মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং বেসরকারি খাতের ভূমিকা বাড়ানো হয়েছে, যা বাজেটের নীতিতেও প্রতিফলিত হয়েছে।
  • চ্যালেঞ্জ: উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বাজেট ঘাটতি, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের ব্যবস্থাপনা, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা সর্বদা বাংলাদেশের বাজেটের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।

এই দীর্ঘ যাত্রায় বাংলাদেশের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, নীতিগত পরিবর্তন এবং বিভিন্ন সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের প্রচেষ্টার একটি দলিল হিসেবে কাজ করেছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (২০২৫-২৬) এবং বাজেট:

যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ (এটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হয়ে ভিন্ন প্রকৃতির বলে মনে করা হচ্ছে) আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করতে যাচ্ছে।

২০২৫-২৬ অর্থবছর (প্রস্তাবিত) বাজেট পেশ করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এই বাজেটের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

  • সংকোচনমূলক বাজেট: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট হবে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি একটি সংকোচনমূলক বাজেট।
  • মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: অন্তর্বর্তী সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাকে বাজেটে প্রাধান্য দেবে।
  • সংসদের বাইরে পেশ: যেহেতু বর্তমানে নির্বাচিত সংসদ নেই, তাই এই বাজেটও সংসদের বাইরে পেশ করা হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলোর বাজেট সাধারণত দেশের তৎকালীন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল রাখা, অপরিহার্য কার্যক্রম বজায় রাখা এবং বড় নীতিগত পরিবর্তন পরিহার করার ওপর কেন্দ্রীভূত থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাড়ি থেকে ভিজিএফের চাল উদ্ধার দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার

অপমানিত সহকর্মীর ছাদ থেকে লাফ, শ্রমিক বিক্ষোভে রণক্ষেত্র শ্রীপুর, আহত শতাধিক

দেশ টিভির কার্যালয়ে ১২০০ বস্তা চাল পাঠানো প্রয়োজন: উপদেষ্টা আসিফ

সরকারি কর্মচারীদের ১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

জি-৭ সম্মেলন: টানা ৫ বছর বিশেষ অতিথি, এবার আমন্ত্রণ পেলেন না মোদি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত