Ajker Patrika

ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি ক্যাবের

নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি ক্যাবের

ভোক্তাদের স্বার্থে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়েছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংগঠনটি এই দাবি জানায়। 

ক্যাব জানায়, ‘ভোক্তা শ্রেণি’ দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক গোষ্ঠী। প্রতিবেশী দেশ ভারত ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও কল্যাণে ১৯৯৭ সালে ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করেছে। দুইটি বিভাগ নিয়ে গঠিত এই মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন একজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে দুইটি বিভাগ নিয়ে গঠিত এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। 

মানববন্ধনে ক্যাব আরও জানায়, সরকার প্রতিনিয়ত নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অনেক ক্ষেত্রেই সরকারের সিদ্ধান্ত ভোক্তাদের ওপর কি প্রভাব ফেলবে সে বিবেচনা উপেক্ষিত হয়। এমতাবস্থায় ভোক্তা স্বার্থ বিবেচনা, সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ভোক্তাদের স্বার্থের বিষয়টি তুলে ধরা, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রমে সমন্বয় সাধন, ভোগ্যপণ্যের চাহিদা, উৎপাদন, আমদানির সঠিক পরিসংখ্যান সংরক্ষণ এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল থেকে দরিদ্র, স্বল্প আয় এবং নিম্ন মধ্যবিত্তের ভোক্তারা যাতে বঞ্চিত না হোন সে লক্ষ্যে জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে রাখার উদ্দেশ্যে ১৫ থেকে ২০টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি সন্তোষজনক পর্যায়ে ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার দায়িত্ব অর্পণ করে অবিলম্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি পৃথক বিভাগ অথবা একটি স্বতন্ত্র ‘ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠন করতে হবে। 

ক্যাব আরও জানায়, এই দাবি দেশের ১৮ কোটি ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য। আমরা আশা করি, আমাদের এই দাবির প্রতি আপনারা অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে ক্যাবের আন্দোলনকে আরও বেগবান ও সাফল্যমণ্ডিত করবেন। 

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কর্মসূচিতে বলা হয়, বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ফলে সব ধরনের ভোক্তারা বিশেষ করে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের ভোক্তারা এক কঠিন সময় অতিবাহিত করছে। ভোক্তাদের নাভিশ্বাস দিনদিন বাড়ছে। 

মানববন্ধনে বলা হয়, একদিকে সরকার বলছে দেশে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের যথেষ্ট মজুত আছে, দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। অন্যদিকে পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এলসি সংকট, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি কথা অসাধু ব্যবসায়ীরা বারবার বলে আসছেন। 

বাজার কারসাজি ও সিন্ডিকেটের কথা উল্লেখ করে মানববন্ধনে বলা হয়, বাজার কারসাজি বা সিন্ডিকেট তৈরি করে পণ্যের দাম অসাধু ব্যবসায়ীরা বৃদ্ধি করছেন। চাল, চিনি, তেল, পেঁয়াজ, আলু, মসলা, আটা-ময়দা, বোতলজাত পানি, ডিম, মাংস কোনো ব্যবসাই এখন আর সিন্ডিকেটের বাইরে নেই। একেক সময় একেক সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ভোক্তাদের নিকট হতে কোটি কোটি টাকা লুণ্ঠন করা হচ্ছে। হাত বদল হয়েও পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্যাব মনে করে, বাজারের এই অবৈধ সিন্ডিকেট ভাঙার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে করতে হবে। তা না হলে সিন্ডিকেটের কারণে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। অসহায় ভোক্তাদের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। 

ওষুধের বাজার প্রসঙ্গে ক্যাবের মানববন্ধনে বলা হয়, দুই বছর আগে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হলেও বাজারে থাকা ৯০ শতাংশের বেশি ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল। এখন আবারও নতুন করে ওষুধের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বেশ কিছু ওষুধের দাম এক লাফে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম সব শ্রেণির ভোক্তাদের জন্য সহনীয় রাখতে হবে। 

ক্যাব আরও জানায়, ঢাকা ওয়াসা পানির দাম বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রস্তাব করা হয়েছে, এলাকাভেদে ঢাকায় ২৪ থেকে ১৪৭ শতাংশ পানির দাম বৃদ্ধি করা হবে। ঢাকা ওয়াসার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অযৌক্তিক ব্যয়, পানি সরবরাহ ব্যবস্থার ত্রুটি সংশোধন, পানির গুণগত মান খারাপ ইত্যাদি অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নিয়ে পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব অযৌক্তিক। পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন সেবাকে জনকল্যাণমুখী করার জন্য এই খাতকে সেবা হিসেবে সরকারকে আগে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত